শোরা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
৫ নং লাইন: ৫ নং লাইন:


শোরা রপ্তানির পরিমাণ সম্পর্কিত ঐতিহাসিক প্রমাণাদি নেহাতই অপ্রতুল। তবে ১৭৩৩ সাল থেকে পাঁচ বছর ধরে ইংরেজ  [[ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি|ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি]] কর্তৃক রপ্তানিকৃত শোরা সম্পর্কিত উপাত্ত থেকে ওই সময়ে রপ্তানির পরিমাণের প্রবণতা বোঝা যায়:
শোরা রপ্তানির পরিমাণ সম্পর্কিত ঐতিহাসিক প্রমাণাদি নেহাতই অপ্রতুল। তবে ১৭৩৩ সাল থেকে পাঁচ বছর ধরে ইংরেজ  [[ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি|ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি]] কর্তৃক রপ্তানিকৃত শোরা সম্পর্কিত উপাত্ত থেকে ওই সময়ে রপ্তানির পরিমাণের প্রবণতা বোঝা যায়:
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
| বছর || পরিমাণ (মণ)
|-
| ১৭৩৩  || ৩৬,২৪৬
|-
| ১৭৩৫  || ৩১,৭৭৮
|-
| ১৭৩৬  || ২৪,১৯০
|-
| ১৭৩৭  || ৩১, ৬৯৮
|-
| ১৭৩৮ || ৪৬,৭৪৬
|}


'''বছর'''''' ''' '''#''''''পরিমাণ .মণ'''''') '''
''উৎস''  সুকুমার ভট্টাচার্য, দি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অ্যান্ড দি ইকোনমি অব বেঙ্গল, ১৭০৪-১৭৪০, (লন্ডন, ১৯৫৪), পৃ. ১৫১।
 
১৭৩৩ #৩৬,২৪৬
 
১৭৩৫ #৩১,৭৭৮
 
১৭৩৬ #২৪,১৯০
 
১৭৩৭ #৩১, ৬৯৮
 
১৭৩৮ #৪৬,৭৪৬
 
উৎস  সুকুমার ভট্টাচার্য, দি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অ্যান্ড দি ইকোনমি অব বেঙ্গল, ১৭০৪-১৭৪০, (লন্ডন, ১৯৫৪), পৃ. ১৫১।


ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ছাড়াও অপরাপর সকল ইউরোপীয় কোম্পানি কমবেশি ওই একই পরিমাণে শোরা রপ্তানি করত। সাধারণত শোরার মূল্য মণপ্রতি ৩ থেকে ৪ টাকায় ওঠা-নামা করত। তবে উনিশ শতকের শুরুতে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থায় এর দাম বেড়ে প্রতি মণ সর্বোচ্চ ১০ টাকায় দাঁড়ায়। আধুনিক রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহারের ফলে উনিশ শতকের শেষদিকে শোরার রাসায়নিক ব্যবহার বস্ত্তত বন্ধ হয়ে যায়। [সিরাজুল ইসলাম]
ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ছাড়াও অপরাপর সকল ইউরোপীয় কোম্পানি কমবেশি ওই একই পরিমাণে শোরা রপ্তানি করত। সাধারণত শোরার মূল্য মণপ্রতি ৩ থেকে ৪ টাকায় ওঠা-নামা করত। তবে উনিশ শতকের শুরুতে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থায় এর দাম বেড়ে প্রতি মণ সর্বোচ্চ ১০ টাকায় দাঁড়ায়। আধুনিক রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহারের ফলে উনিশ শতকের শেষদিকে শোরার রাসায়নিক ব্যবহার বস্ত্তত বন্ধ হয়ে যায়। [সিরাজুল ইসলাম]

১০:৩৪, ১৬ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

শোরা  বাংলার বালুকাময় অঞ্চল এবং বিশেষত বিহার থেকে সংগৃহীত একটি খনিজ পদার্থ। এটি ছিল ঊনিশ শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত বাংলা থেকে রপ্তানিকৃত একটি গুরুত্বপূর্ণ পণ্য। বারুদ, কাঁচের জিনিসপত্র, রঞ্জক ও কোন কোন ঔষধ তৈরির প্রয়োজনীয় উপাদান ছিল শোরা। বিভিন্ন ধরনের পানীয় শীতল করার সহায়ক উপকরণ হিসেবেও এটি ব্যবহূত হতো। জাহাজ সুস্থিত রাখার জন্য এর তলায় ভার হিসেবে ব্যবহূত হওয়ার কারণে এর জন্য কোন জাহাজে ভাড়া দাবী করা হতো না। স্বাভাবিক কারণেই এর বাজার মূল্য ছিল সস্তা, কিন্তু এর ব্যবহার ছিল ব্যাপক।  ইউরোপে শোরার ব্যাপক চাহিদা ছিল এবং আঠারো শতকের শেষভাগ পর্যন্ত বাংলা থেকে ইউরোপীয়দের সবচেয়ে বড় রপ্তানি পণ্য ছিল শোরা।

ইউরোপীয় বাজারে বাংলার শোরার ব্যাপক চাহিদা থাকায় ওলন্দাজ, ইংরেজফরাসি কোম্পানিগুলির মধ্যে এর তীব্র প্রতিযোগিতা ছিল এবং এসব কোম্পানি ‘আসামী’ বা শোরা শ্রমিকদের কাছ থেকে যত বেশি সম্ভব শোরা সংগ্রহের চেষ্টা করত। এই প্রতিযোগিতা শুধু ইউরোপীয় কোম্পানিগুলির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। সুবাহ বাংলার সরকার ও উচ্চপদস্থ অভিজাতবর্গ শোরা ক্রয়বিক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রায়শ ‘আসামী’ ও ইউরোপীয় ক্রেতাদের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করার চেষ্টা করত। কিন্তু এই চেষ্টায় তারা সবসময় সফলকাম হতে পারে নি, কারণ পণ্যের মূল্য কম রাখার উদ্দেশ্যে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলি স্থানীয় প্রতিযোগীদের বাজার থেকে হটিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে নিজেরাই সম্মিলিত সংস্থা গড়ে তুলত।

শোরা রপ্তানির পরিমাণ সম্পর্কিত ঐতিহাসিক প্রমাণাদি নেহাতই অপ্রতুল। তবে ১৭৩৩ সাল থেকে পাঁচ বছর ধরে ইংরেজ  ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক রপ্তানিকৃত শোরা সম্পর্কিত উপাত্ত থেকে ওই সময়ে রপ্তানির পরিমাণের প্রবণতা বোঝা যায়:

বছর পরিমাণ (মণ)
১৭৩৩ ৩৬,২৪৬
১৭৩৫ ৩১,৭৭৮
১৭৩৬ ২৪,১৯০
১৭৩৭ ৩১, ৬৯৮
১৭৩৮ ৪৬,৭৪৬

উৎস  সুকুমার ভট্টাচার্য, দি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অ্যান্ড দি ইকোনমি অব বেঙ্গল, ১৭০৪-১৭৪০, (লন্ডন, ১৯৫৪), পৃ. ১৫১।

ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ছাড়াও অপরাপর সকল ইউরোপীয় কোম্পানি কমবেশি ওই একই পরিমাণে শোরা রপ্তানি করত। সাধারণত শোরার মূল্য মণপ্রতি ৩ থেকে ৪ টাকায় ওঠা-নামা করত। তবে উনিশ শতকের শুরুতে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থায় এর দাম বেড়ে প্রতি মণ সর্বোচ্চ ১০ টাকায় দাঁড়ায়। আধুনিক রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহারের ফলে উনিশ শতকের শেষদিকে শোরার রাসায়নিক ব্যবহার বস্ত্তত বন্ধ হয়ে যায়। [সিরাজুল ইসলাম]