কাব্য

কাব্য  বাংলা কাব্যের ঐতিহ্য হাজার বছরের। খ্রিস্টীয় নয় থেকে বারো শতকের মধ্যে রচিত  চর্যাপদ বাংলা কাব্য তথা বাংলা সাহিত্যের প্রথম নিদর্শন। এতে বৌদ্ধধর্মীয় সহজিয়াপন্থিদের জীবনদর্শন বর্ণিত হয়েছে। এ ছাড়া সে সময়ের বাঙালি জীবনের নানা দিক, যেমন: বাঁচার আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্ন ও স্বপ্নভঙ্গের বেদনা, দারিদ্র্যযন্ত্রণা ইত্যাদিও ব্যক্ত হয়েছে। গীতিকবিতার আঙ্গিকে এর পদগুলি রচনা করেছেন তৎকালীন বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যগণ, যাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন লুইপা,  কাহ্নপা, শবরপা, ঢেন্ডণপা, ভুসুকুপা প্রমুখ। চর্যাপদের পাশাপাশি আর যেসব কাব্যধারার পরিচয় পাওয়া যায় সেগুলির মধ্যে রয়েছে  শূন্যপুরাণ, ময়নামতীর গান,  গোরক্ষবিজয় ইত্যাদি।

মধ্যযুগের প্রারম্ভকালীন দেড়-দুশ বছর অর্থাৎ তেরো ও চৌদ্দ শতকে সামাজিক, রাজনীতিক বিপর্যয় ও অস্থিতিশীলতা এবং লেখ্য ভাষা হিসেবে বাংলা পুরোপুরি গড়ে না ওঠার কারণে বাঙালির কাব্যচর্চার ক্ষেত্রে বন্ধ্যাসময় অতিবাহিত হয়। চৌদ্দ শতকের শেষার্ধে অর্থাৎ ১৩৫০-এর পরবর্তী সময়ে  শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য রচনার মধ্য দিয়ে মধ্যযুগের বাংলা কাব্যধারার সূচনা হয়। বড়ুু চন্ডীদাস রচিত এ কাব্য বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম কাহিনিকাব্য হিসেবে স্বীকৃত। রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলাবিষয়ক এ কাব্যের উৎস শ্রীমদ্ভাগবত হলেও বড়ু চন্ডীদাস এতে রাধাকৃষ্ণভিত্তিক বাংলার লোককাহিনিকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। ফলে এ কাব্যে রাধার বিরহের মধ্য দিয়ে মূলত বাঙালি নারীর প্রেমকাতরতা ও আর্তিই মূর্ত হয়ে উঠেছে। সর্বোপরি চরিত্রচিত্রণে দক্ষতা, নাটকীয়তা ও বিরহআর্তিসমৃদ্ধ শিল্পবৈশিষ্ট্যের দ্বারা এ কাব্য বাংলা কাব্যধারায় চিরায়ত সাহিত্যের মর্যাদা লাভ করেছে।

ইউসুফ-জোলেখা বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম মুসলিম কবি। তিনি বাংলার মুসলিম কবিদের মধ্যে প্রাচীনতম। তিনি গিয়াসউদ্দীন আজম শাহের রাজত্বকালে ইউসুফ জোলেখা নামে একটি কাব্য রচনা করেন।

শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের পর থেকে বাংলা কাব্যে বহুমুখী রূপ, রস ও জীবনভাবনাসমৃদ্ধ এক অনন্য ও বহুমাত্রিক কাব্যধারা লক্ষ্যযোগ্য। এ ধারার শ্রেষ্ঠ নিদর্শন  মঙ্গলকাব্য। পনেরো শতক থেকে শুরু করে আঠারো শতকের প্রান্তসীমা পর্যন্ত অর্থাৎ প্রায় সমগ্র মধ্যযুগ ব্যাপী বিভিন্ন লৌকিক দেবদেবীর পূজা প্রচলনের কাহিনি অবলম্বনে এগুলি রচিত। মঙ্গলকাব্যগুলি উদ্দীষ্ট দেবতাদের নামানুসারে  মনসামঙ্গলচন্ডীমঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, কালিকামঙ্গল ইত্যাদি শাখায় বিভক্ত। এসব কাব্যে সংশ্লিষ্ট দেবদেবীদের মাহাত্ম্য প্রচার প্রসঙ্গে তৎকালীন সমাজ ও জনজীবন রূপায়িত হয়েছে। মঙ্গলকাব্যের কবিদের মধ্যে  মুকুন্দরাম চক্রবর্তী শ্রেষ্ঠ।

মঙ্গলকাব্যের মতোই মধ্যযুগের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা হচ্ছে বৈষ্ণবপদাবলি। রাধাকৃষ্ণের প্রেমকাহিনীর রূপকে মূলত এ গীতিকবিতাগুলিতে বৈষ্ণবতত্ত্বের পরমাত্মা ও জীবাত্মার দর্শনকেই রূপায়িত করা হয়েছে। চৈতন্য-পূর্ববর্তী তথা সমগ্র বৈষ্ণবপদাবলি ধারার শ্রেষ্ঠ কবি হচ্ছেন বিদ্যাপতি ও  চন্ডীদাস। মৈথিলি কবি বিদ্যাপতি ব্রজবুলি নামক কোমল ভাষায় পদাবলি রচনার মাধ্যমে রাধার বিরহিণী মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে স্বাতন্ত্র্যের পরিচয় দিয়েছেন। আর বিরহ-বেদনার কবি চন্ডীদাস সরল ও সাবলীল ভাষায় বাঙালি হূদয়ের গভীরতম ভাবের আবেদনকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এ দুজন ব্যতীত পদাবলি সাহিত্যে অন্য শ্রেষ্ঠ কবিরা হচ্ছেন দ্বিজ চন্ডীদাস, দীন চন্ডীদাস, জ্ঞানদাস, গোবিন্দদাস প্রমুখ।

সংস্কৃত  রামায়ণ ও  মহাভারত মহাকাব্যদুটির শ্রেষ্ঠ অনুবাদক কবি হচ্ছেন যথাক্রমে  কৃত্তিবাস ওঝা ও  কাশীরাম দাস। এঁদের স্বাতন্ত্র্য এখানেই যে, এঁরা সংস্কৃত রামায়ণ ও মহাভারত অনুবাদ করলেও তার মধ্যে বাঙালির সমাজ, সংস্কৃতি ও জীবনধারা রূপায়ণে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। অন্যান্য অনুবাদক হচ্ছেন  কবীন্দ্র পরমেশ্বর, শ্রীকর নন্দী,  চন্দ্রাবতী, অদ্ভুতাচার্য, ভবানীদাস প্রমুখ।

বাংলা সাহিত্যে মধ্যযুগে মুসলমান রচিত শ্রেষ্ঠ কাব্যধারা হচ্ছে রোমান্সমূলক কাব্য। বাংলার প্রান্তবর্তী অঞ্চল  আরাকান রাজসভায় উদ্ভূত ও বিকশিত এ ধারার কবিরা মৌলিক গ্রন্থ রচনা না করে বরং আওধি, ফারসি ও আরবি ভাষার শ্রেষ্ঠ কাব্যসমূহের অনুবাদ ও ভাবানুবাদ করেন এবং এর মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে প্রথম মানবীয় প্রেমভাবনা, যুদ্ধকাহিনি ইত্যাদি বিষয় সংযোজন করেন। শাহ মুহম্মদ সগীর রচিত  ইউসুফ-জুলেখা এ ধারার প্রথম কাব্য এবং আলাওলের  পদ্মাবতী, মুহাম্মদ কবীরের মধুমালতী, দৌলত কাজীর সতীময়না-লোরচন্দ্রানী, দৌলত উজির বাহরাম খানের  লায়লী-মজনু প্রভৃতি এ ধারার প্রতিনিধিত্বমূলক কাব্য।

উপরিউক্ত কবিদের মধ্যে  আলাওল রোমান্সমূলক ধারার শ্রেষ্ঠ কবি। পদ্মাবতী কাব্যে ছন্দ-অলঙ্কারের চমৎকার প্রয়োগ এবং বাঙালির জীবনযাত্রা চিত্রণে তিনি পারদর্শিতা দেখিয়েছেন। মধ্যযুগে এর পাশাপাশি জীবনীকাব্য, শাক্তপদাবলি,  দোভাষী পুথি ইত্যাদি ধারার উদ্ভব ও বিকাশের মাধ্যমে বাংলা কাব্য পরিপুষ্টি লাভ করে। এ সকল ধারার উল্লেখযোগ্য কবিরা হচ্ছেন বৃন্দাবন দাস,  কৃষ্ণদাস কবিরাজরামপ্রসাদ, দাশু রায়,  সৈয়দ হামজা, ফকির গরীবুল্লাহ প্রমুখ।

আধুনিক যুগে বাংলা কাব্যের বিষয়ভাবনা ও জীবনচেতনায় যেমন বৈচিত্র্য ও রূপান্তর পরিলক্ষিত হয়, তেমনি আঙ্গিকগত কৌশলেরও পরিবর্তন ও বহুমুখিতা দেখা যায়। এ সময় ইংরেজ শাসনের কারণে বাঙালি জনমানস ভারতীয় তথা প্রাচ্যসাহিত্যের গন্ডি অতিক্রম করে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য পাঠের সুযোগ পায় এবং তার মাধ্যমে পাশ্চাত্য সাহিত্যচেতনা ও আঙ্গিক কৌশল আয়ত্ত করে। ফলে প্রাচীন ও মধ্যযুগের কবিরা যেখানে তাঁদের সাহিত্যের বিষয় হিসেবে মানবাতীত দৈবজীবন ও পারলৌকিকতাকে গ্রহণ করেছেন এবং কদাচিৎ মানবীয় প্রেমকাহিনী প্রযুক্ত করেছেন, সেখানে আধুনিক যুগের কবিরা আধুনিক মানুষের জীবনজটিলতা, তাদের চাওয়া-পাওয়া ইত্যাদিকে আধুনিক পাশ্চাত্য সাহিত্য প্রভাবিত নানা পারিভাষিক বৈশিষ্ট্যের আলোকে ও তত্ত্বের সমন্বয়ে উপস্থাপিত করেছেন। অন্যদিকে মধ্যযুগের কবিরা যেখানে কবিতার আঙ্গিক কৌশলরূপে দ্বিমাত্রিক বা ত্রিমাত্রিক পয়ারকে অবলম্বন করেছেন, সেখানে আধুনিক কবিরা ভাবের মুক্তির লক্ষ্যে মধ্যযুগীয় পয়ার ভেঙ্গে ছন্দের ক্ষেত্রে নানা রূপান্তর এনেছেন। তবে যুগসন্ধিক্ষণের কবি  ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত (১৮১২-১৮৫৯) তাঁর কবিতায় মধ্যযুগীয় পয়ারমাত্রার মধ্যেই আধুনিকতাকে ফুটিয়ে তুলেছেন।

আধুনিক বাংলা কাব্যের ইতিহাসে  মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৮২৪-১৮৭৩) অনন্য প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। তিনি মেঘনাদবধ কাব্যের (১৮৬১) মধ্য দিয়ে বাংলা কাব্যে পাশ্চাত্যের অনুকরণে মহাকাব্য রচনার ধারা প্রবর্তন করেন। এ কাব্যের বিষয়চেতনায় স্বাদেশিকতাবোধ, সৌন্দর্যচেতনা ও ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য প্রয়োগের মাধ্যমে মধুসূদন বাংলা কাব্যে আধুনিকতা তথা পাশ্চাত্য বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তোলেন। ভাবের যথোপযুক্ত প্রকাশের জন্য তিনি মধ্যযুগীয় পয়ারের পরিবর্তে নতুন অমিত্রাক্ষর ছন্দের উদ্ভাবন করেন। এ ছাড়া ইউরোপীয় সনেটের আলোকে তিনি বাংলা কাব্যে চতুর্দশপদী কবিতারও সার্থক রচয়িতা।

বিহারীলাল চক্রবর্তী (১৮৩৫-১৮৯৪) আধুনিক বাংলা কাব্যে ইউরোপীয় রোমান্টিক বৈশিষ্ট্যের প্রথম প্রতিষ্ঠাতা। জীবন ও জগতের প্রতি বীতরাগ, প্রকৃতির প্রতি প্রেম, সংসারধর্মে অনীহা কল্পনাধর্মিতা তাঁর কাব্যের বিষয়। স্বীয় জীবনভাবনায় অপরিমেয় আস্থাসমৃদ্ধ ইউরোপীয় রোমান্টিক জীবনচেতনাকে বাংলা কাব্যে তিনিই প্রথম প্রয়োগ করেন। মূলত তাঁর দ্বারাই প্রভাবিত হয়েছেন  রবীন্দ্রনাথ (১৮৬১-১৯৪১)। রবীন্দ্রনাথ তাঁর রোমান্টিক বৈশিষ্ট্যের আলোকে স্বকীয় ভাবনাপ্রসূত দর্শনের সমন্বয়ে গভীর জীবনচেতনাকে যেমন প্রতিষ্ঠিত করেছেন, তেমনি বাংলা কবিতার বিষয়, আঙ্গিক ও দর্শনকে সমৃদ্ধ করার মাধ্যমে নির্মাণ করেছেন ‘রবীন্দ্র ভাবলোক’, যা একাধারে ‘জীবনদেবতার’ দুর্জ্ঞেয় রহস্যে আচ্ছন্ন, অন্যদিকে দৈনন্দিন জীবন ও পারিপার্শ্বের আবেগ-অনুভূতিসমৃদ্ধ। এভাবে রবীন্দ্রনাথ বাংলা কাব্যে যে সমৃদ্ধ সম্মোহনক্ষেত্র তৈরি করেন, ফলে তাঁর সমকালেই রবীন্দ্রানুসারী একদল কবির উদ্ভব ঘটে, যাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন  সত্যেন্দ্রনাথ দত্তযতীন্দ্রমোহন বাগচী প্রমুখ। এ প্রেক্ষাপটে বিশ শতকের শুরুতে বাংলা কাব্যে বিষয়ভাবনায় রবীন্দ্রবিরোধিতার নতুন সুর নিয়ে আবির্ভূত হন  মোহিতলাল মজুমদারকাজী নজরুল ইসলাম ও  যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত। এঁদের মধ্যে উদ্দাম আবেগ, দ্রোহ ও প্রেমের সমন্বিত আবাহনে বাংলা কাব্যকে প্লাবিত করে নজরুল ইসলাম বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় কবি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন।

বাংলা কাব্যে পরিপূর্ণ রবীন্দ্রবিরোধিতা ও আধুনিক জীবন বিন্যাসের সম্মিলন ঘটান বিশ শতকের প্রথম দিকে বিকাশলাভকারী বাংলা কবিতার পঞ্চপুরুষ  জীবনানন্দ দাশবুদ্ধদেব বসুসুধীন্দ্রনাথ দত্তবিষ্ণু দেঅমিয় চক্রবর্তী। সমকালীন আধুনিক মানুষের দুর্মর জীবনচেতনা, সময়ের ভাঙচুর, নাস্তিভাবনা, নিঃসঙ্গতা ও মানবসৃষ্ট বিপর্যয়ে বিপন্ন মানবতার অভিঘাতে বিশ্বে তখন যে আধুনিক সাহিত্য আন্দোলন ও তত্ত্বগুলি বিকাশ লাভ করছিল, তারই আলোকে বাংলা কবিতাকে তাঁরা অভিব্যঞ্জিত করেন, যা পরবর্তীকালের বাংলা কবিতার দিক নির্দেশনা দিয়েছে।

১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের ফলে বাংলা প্রদেশ বিভক্ত হলে বাংলা কাব্যেরও বিভক্তিকরণ হয় এবং কলকাতার পাশাপাশি ঢাকাকে কেন্দ্র করে শুরু হয় বাংলা কাব্যের নতুন রূপনির্মাণ। ঢাকা কেন্দ্রিক বাংলা কাব্যে চল্লিশের দশকের প্রতিনিধিত্বশীল কবিরা হচ্ছেন  আবুল হোসেন, সৈয়দ আলী আহসান,  ফররুখ আহমদআহসান হাবীব প্রমুখ, যাঁরা কবিতায় নিসর্গচেতনা, নন্দনভাবনা ও ইসলামি জীবনদর্শনকে প্রতিস্থাপিত করতে চেয়েছেন। পঞ্চাশের দশকে এসে বাংলা কবিতায় নতুন জীবনবিন্যাস প্রযুক্ত হয়। পাকিস্তানি নব্য ঔপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠীর নিপীড়নজনিত প্রভাবে বাংলা কবিতায় এ সময় রাজনীতি, সংগ্রাম, আন্দোলন এবং পাশাপাশি বাঙালি জাতীয়তাবাদ, লোকায়ত কৌমজীবন, শেকড়চেতনা, সাম্যবাদ ইত্যাদি প্রবলভাবে মূর্ত হয়ে ওঠে। পঞ্চাশের এ ধারার প্রধান কবিরা হচ্ছেন  হাসান হাফিজুর রহমান, শামসুর রাহমান ও আল মাহমুদ। এঁদের মধ্যে শামসুর রাহমান ও আল মাহমুদ ঢাকা কেন্দ্রিক বাংলা কবিতার দুই প্রধান কবি। নাগরিক চেতনাদীপ্ত কবি শামসুর রাহমানের কবিতায় যেমন বাঙালির সংগ্রাম, আন্দোলন,  মুক্তিযুদ্ধ ইত্যাদি প্রধানভাবে প্রতিভাত হয়ে উঠেছে, তেমনি আল মাহমুদের কবিতায় প্রতিফলিত হয়েছে কৌমজীবনচেতনা, সাম্যবাদ ইত্যাদি। ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলী বাঙালি কবিদের লিখতে নতুন করে উদ্বুদ্ধ করে। তাঁদের কাব্যে যুদ্ধের বিভীষিকা  ও জনগণের বীরত্ব ফুটে ওঠে।

ঢাকা কেন্দ্রিক বাংলা কাব্যের পরবর্তী দশকের কবিরা মূলত পূর্ববর্তী ‘পঞ্চকবি’ প্রভাবিত এবং শামসুর রাহমান ও আল মাহমুদ উদ্দীপ্ত আধুনিকতাবোধ ও তার সৌন্দর্যচেতনাকেই চিত্রিত করেছেন।  [হাকিম আরিফ]