ইন্দো-বার্মান পর্বতসারী

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১৮:৫৬, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

ইন্দো-বার্মান পর্বতসারী (Indo-Burman Range)  মধ্য বার্মান অববাহিকা থেকে বার্মার পশ্চিম সীমারেখাসহ বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় অঞ্চল ও  উপকূলবর্তী দ্বীপ সমূহের বর্মীয় এলাকাজুড়ে অবস্থিত। ভূসংস্থানিকভাবে উঁচু এ এলাকা মধ্য-বার্মান নিম্নভূমি এবং  বঙ্গীয় বদ্বীপ এর মাঝে একটি প্রধান ভূ-প্রাকৃতিক ও জলবায়ুগত সীমা নির্দেশ করে। ইন্দো-বার্মান পর্বতসারির পূর্ব সীমারেখা সাধারণত বিচ্ছিন্ন অফিওলাইট শিলাসারি কিংবা অফিওলাইট উদ্ভূত শিলাখন্ড দ্বারা গঠিত। এ ভূখন্ডে শিলার সঞ্চয়ন ও বিকৃতায়ন একটি  অধোগমন পরিবেশে ঘটে। মহাসাগরীয় ভূত্বকের (ভারতীয় প্লেটের) অধোগমন এবং বার্মা প্লেটলেটের ভারতীয় প্লেটের উপর ঊর্ধ্বারোহণ এ পরিবেশের সৃষ্টি করে। বাংলাদেশের পূর্বাংশে চিটাগাং-ত্রিপুরা বলিত বলয়টি ইন্দো-বার্মান পর্বতসারির’ই পশ্চিমে সম্প্রসারিত অংশ। ভারীয় প্লেটের উপর বার্মাপ্লেটের উধ্বারোহণের ফলে পূর্বদিক হতে সংকোচনশীল শক্তি এ অঞ্চলে উধ্বভাজসমূহের সৃষ্টি করেছে পশ্চিমে এই ভাঁজসমূহের তীব্রতা ধীরে ধীরে হ্রাস পায়।

ইন্দো-বার্মান পর্বতসারিকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়, যথা উত্তরের নাগা পাহাড়, মধ্যের চীন পাহাড় ও দক্ষিণের আরাকান ইয়োমা পাহাড়। শিলাসমূহ বয়সে ক্রমাগতভাবে পূর্ব থেকে পশ্চিমদিকে নবীন। অফিওলাইট শিলাদলসহ নবীন ক্রিটেসিয়াস পাললিক শিলাস্তর ইন্দো-বার্মান পর্বতসারির সবচেয়ে পুরাতন  শিলা। এ শিলাসমূহ কারনিয়ান (নবীন ট্রায়াসিক) সময়ের পললের উপর অসঙ্গতভাবে অধিশায়িত। অন্যদিকে কারনিয়ান সময়ের পললসমূহ গাঠনিকভাবে পুরাতন সিস্টসমূহের উপর অধিশায়িত। ইন্দো-বার্মান পর্বতসারির এ পুরাতন শিলাসমূহের পশ্চিমে ক্রিটেসিয়াস থেকে প্রবীন-টারশিয়ারী পর্যন্ত পুরু সামুদ্রিক পাললিক শিলা ও বিভিন্ন আকারের শিলার সঙ্গে নবীন-টারশিয়ারী সামুদ্রিক পাললিক শিলা ও কর্দমের সমাবেশ ঘটে। টারশিয়ারী সামুদ্রিক পাললিক শিলা মূলত বেলেপাথর ও কর্দম শিলার ঘনস্রোত অবক্ষেপ। আরাকানের উপকূলীয় অঞ্চল ও উপকূলীয় দ্বীপ সমূহে  প্রাকৃতিক গ্যাস ক্ষরণের ফলে সম্ভবত উত্তর-মায়োসিন সময়ে ছোট আগ্নেয়রোধক ও অসংখ্য কর্দম আগ্নেয়গিরির সৃষ্টি হয়। ইন্দো-বার্মান পর্বতসারির পূর্বদিকে ক্রিটেসিয়াস সামুদ্রিক পাললিক শিলাসমূহ বিভিন্ন আকৃতির ও শিলালক্ষণযুক্ত ওলিসটোলিথসহ সারপেনটিনাইটের খন্ড, গ্যাবরো, ব্যাসল্ট, ট্রায়াসিক বেলেপাথর এবং সিস্ট ধারণ করে।  [আফতাব আলম খান]

মানচিত্রের জন্য দেখুন ভূ-গাঠনিক রূপরেখা