কিসসা

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১৯:৩৯, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

কিসসা (কেচ্ছা)  আঠারো-উনিশ শতকের বাংলা সাহিত্যের একটি শাখা। এর ভাষা আরবি, ফারসি ও উর্দু মিশ্রিত এবং বিষয়বস্ত্ত ও চরিত্র আরবি-ফারসি  লোককাহিনী থেকে গৃহীত। আরবি ‘কিসসা’ শব্দের অর্থ গল্প। কিসসা সাহিত্য প্রধানত মুসলিম লেখকদের সৃষ্ট। এর বিষয়বস্ত্ত প্রেম, যুদ্ধ, বীরত্ব ও ধর্মবিষয়ক। কিসসার ভাষা গদ্য ও পদ্য উভয়ই।

সাহিত্যের এ শাখা জনপ্রিয় হয় আঠারো শতকের শেষাংশে, ফলে উনিশ শতকে এ সাহিত্যের গ্রন্থ প্রকাশ খুব জমজমাট হয়ে ওঠে। কিন্তু উনিশ শতকের শেষ দিকে এর পাঠকসংখ্যা কমতে থাকে এবং বিশ শতকের প্রথমভাগে এর চর্চা এক প্রকার বন্ধ হয়ে যায়। কলকাতার  বটতলা প্রকাশনা শিল্পের একটি প্রধান স্তম্ভ ছিল কিসসা সাহিত্য। তখনকার জনপ্রিয় কিসসাগুলির মধ্যে যেগুলি বাঙালি মুসলমানদের ঘরে ঘরে থাকত সেগুলি হলো: মধুমালতী,  ইউসুফ-জুলেখা, শিরি-ফরহাদ,  লায়লী-মজনুগুলে বকাওলী, তুতিনামা, সখি সোনা, হাতেমতাই, গুলে তরমুজ,  আমীর হামজাজঙ্গনামা এবং আলেফ লায়লা ওয়া লায়লা। সে সময় গ্রন্থস্বত্ব-আইন না থাকায় প্রকাশকরা অধিক বিক্রিত যেকোনো গ্রন্থের নতুন নতুন সংস্করণ প্রকাশ করতে চেষ্টা করত। যেমন গুলে বকাওলী ও ইউসুফ-জুলেখা গ্রন্থদ্বয়ের যথাক্রমে ১১টি ও ১০টি সংস্করণ পাওয়া যায়।

কিসসা সাহিত্যের প্রধান লেখক ছিলেন  দৌলত কাজীসৈয়দ হামজাশাহ্ গরীবুল্লাহ, রওশন আলী, নাসের আলী প্রমুখ। একালের লেখক  মীর মশাররফ হোসেন কিসসা সাহিত্যের আদলে তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ  বিষাদ-সিন্ধু রচনা করেন।  [সিরাজুল ইসলাম]

আরও দেখুন পুথি সাহিত্য