কর্দম
কর্দম (Clay) মিহি দানাবিশিষ্ট (৩ মাইক্রো মিটার থেকেও মিহি) বিচূর্ণিত অবক্ষেপে গঠিত এঁটেল মৃত্তিকা শিলা; স্ফটিকীয় শিলার রাসায়নিক বিচূর্ণীভবনে গঠিত মণিকের অতিসূক্ষ্ম স্ফটিক। এর আঠালো ও নমনীয় ধর্ম পাতময় স্ফটিক কণিকা আবৃতকারী পাতলা পানির সর থেকে উদ্ভূত। উচ্চতাপে পানি শুকিয়ে গেলে এটি শক্ত ও পাথর সদৃশ হয়ে ওঠে। এটির পরিশোষন ও আয়ন বিনিময়ের গুণ রয়েছে এবং ভিন্নভিন্ন পরিমাণের কোয়ার্টজ, ফেল্ডস্পার, অন্যান্য সিলিকেট, কার্বনেট ও লৌহিক বা জৈববস্ত্তর সমাহারে কর্দম খনিজে গঠিত।
বাংলাদেশে পার্মীয় ও টারশিয়ারী কাদার মূখ্য উপাদান হিসেবে কোয়ার্টজ, ইলাইট, কেওলিনাইট, ক্লোরাইট ও ইলাইট/স্মেকটাইট ইত্যাদির মিশ্র স্তর; গৌণ উপাদান হিসেবে ফেল্ডস্পার এবং খুবই সামান্য পরিমাণে ক্যালসাইট, ডলোমাইট ও সিডারাইট রয়েছে। অবশ্য পার্মীয় কাদায় ইলাইট-স্মেকটাইট মিশ্র স্তর বিদ্যমান নয়। বিক্ষিপ্তভাবে অন্তঃস্তরীয় ডায়াজিনিসিসের প্রভাবে ইলাইট/স্মেকটাইট মিশ্র স্তর কর্দম ইলাইটে রুপান্তরিত হতে থাকে অর্থাৎ কর্দমের ভূ-অভ্যন্তরে স্তরতাত্ত্বিক গভীরতা বৃদ্বির সঙ্গে সঙ্গে ইলাইট/স্মেকটাইট মিশ্র স্তর কর্দমের প্রসারণ কমতে থাকে এবং ১৭° গ্লাইকোলেটেড নকশার চূড়ার তীব্রতা হ্রাস পায়। এ পর্যায়ে স্মেকটাইট অন্তঃস্তর থেকে রন্ধ্র জল ব্যবস্থায় (pore water system) উল্লেখযোগ্য পরিমাণ স্মেকটাইট ডায়াজিনিস উদ্ভূত জল প্রাপ্যতা স্বাভাবিক। ধারণা করা হয় এ জল অধিচাপ উৎপাদনে যেমন অবদান রেখেছে, তেমনি বঙ্গীয় পুরঃখাত ও বলিত বলয় অঞ্চলের ভূ-অভ্যন্তরে অবস্থিত কর্দমশিলা থেকে হাইড্রোকার্বনের প্রাথমিক অভিপ্রয়াণে (migration) সহায়তা করেছে। [সিফাতুল কাদের চৌধুরী]
আরও দেখুন ইটখোলা; ইটের মাটি; চীনামাটি; মৃৎপাত্র; সিমেন্ট শিল্প।