মসজিদকুড় মসজিদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''মসজিদকুড় মসজিদ'''  খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার কপোতাক্ষ নদের পূর্ব তীরে মসজিদকুড় গ্রামে অবস্থিত। বর্তমানে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে সংরক্ষিত একটি স্থাপত্য নিদর্শন।
'''মসজিদকুড় মসজিদ'''  খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার কপোতাক্ষ নদের পূর্ব তীরে মসজিদকুড় গ্রামে অবস্থিত। বর্তমানে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে সংরক্ষিত একটি স্থাপত্য নিদর্শন।
বর্গাকার বহুগম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটি ইটের তৈরি। মসজিদটির আয়তন ভিতরে ১২.১৯ মিটার এবং বাহিরে ১৬.৭৬ মিটার। বাইরের চারকোণের গোলাকার বুরুজ ছাদ পর্যন্ত উঠে গেছে। কিবলা প্রাচীর ব্যতীত অন্য তিন দিকের প্রতি দিকে রয়েছে তিনটি করে খিলানযুক্ত প্রবেশপথ। তিনটি খিলানের কেন্দ্রীয়টি পার্শ্ববর্তী দুটি থেকে অপেক্ষাকৃত বড়। পূর্ব দিকের খিলানযুক্ত প্রবেশপথের সাথে মিল রেখে কিবলা প্রাচীরে রয়েছে তিনটি অর্ধবৃত্তাকার মিহরাব-কুলুঙ্গি। কেন্দ্রীয় মিহরাবটি একটু বড় এবং পেছনের দিকে প্রসারিত। ভবনের কার্নিস সামান্য বক্র। মসজিদের অভ্যন্তরভাগ চারটি প্রস্তর স্তম্ভ দ্বারা নয়টি সমমাপের বর্গক্ষেত্রে বিভক্ত, প্রতিটি বিভাগ উল্টানো পেয়ালা সদৃশ গম্বুজ দ্বারা আচ্ছাদিত।


[[Image:MasjidkurMosquePlan.jpg|thumb|right|ভূমি নকশা, মসজিদকুড় মসজিদ]]
[[Image:MasjidkurMosquePlan.jpg|thumb|right|ভূমি নকশা, মসজিদকুড় মসজিদ]]
 
বর্গাকার বহুগম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটি ইটের তৈরি। মসজিদটির আয়তন ভিতরে ১২.১৯ মিটার এবং বাহিরে ১৬.৭৬ মিটার। বাইরের চারকোণের গোলাকার বুরুজ ছাদ পর্যন্ত উঠে গেছে। কিবলা প্রাচীর ব্যতীত অন্য তিন দিকের প্রতি দিকে রয়েছে তিনটি করে খিলানযুক্ত প্রবেশপথ। তিনটি খিলানের কেন্দ্রীয়টি পার্শ্ববর্তী দুটি থেকে অপেক্ষাকৃত বড়। পূর্ব দিকের খিলানযুক্ত প্রবেশপথের সাথে মিল রেখে কিবলা প্রাচীরে রয়েছে তিনটি অর্ধবৃত্তাকার মিহরাব-কুলুঙ্গি। কেন্দ্রীয় মিহরাবটি একটু বড় এবং পেছনের দিকে প্রসারিত। ভবনের কার্নিস সামান্য বক্র। মসজিদের অভ্যন্তরভাগ চারটি প্রস্তর স্তম্ভ দ্বারা নয়টি সমমাপের বর্গক্ষেত্রে বিভক্ত, প্রতিটি বিভাগ উল্টানো পেয়ালা সদৃশ গম্বুজ দ্বারা আচ্ছাদিত। প্রস্তর-স্তম্ভের উপর স্থাপিত খিলানের উপর গম্বুজগুলি স্থাপিত। খিলানগুলির পাশের কোণা ভরাট করা হয়েছে ইটের নির্মিত পেন্ডেন্টিভ দ্বারা।
 
প্রস্তর-স্তম্ভের উপর স্থাপিত খিলানের উপর গম্বুজগুলি স্থাপিত। খিলানগুলির পাশের কোণা ভরাট করা হয়েছে ইটের নির্মিত পেন্ডেন্টিভ দ্বারা।


মসজিদটি মূলত পোড়ামাটির ফলকে অলঙ্কৃত ছিল, যা খিলান পথের স্প্যান্ড্রেল (spandrel) এবং মিহরাব কুলুঙ্গিতে এখনও বিদ্যমান। বিভিন্ন অলঙ্করণ নকশার মধ্যে ফুল (rosettes), জালির কাজ, হীরাকৃতি (lozenges) এবং প্রবহমান লতাপাতা (floral scroll) উল্লেখযোগ্য।
মসজিদটি মূলত পোড়ামাটির ফলকে অলঙ্কৃত ছিল, যা খিলান পথের স্প্যান্ড্রেল (spandrel) এবং মিহরাব কুলুঙ্গিতে এখনও বিদ্যমান। বিভিন্ন অলঙ্করণ নকশার মধ্যে ফুল (rosettes), জালির কাজ, হীরাকৃতি (lozenges) এবং প্রবহমান লতাপাতা (floral scroll) উল্লেখযোগ্য।

০৪:৫৯, ৩ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

মসজিদকুড় মসজিদ  খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার কপোতাক্ষ নদের পূর্ব তীরে মসজিদকুড় গ্রামে অবস্থিত। বর্তমানে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে সংরক্ষিত একটি স্থাপত্য নিদর্শন।

ভূমি নকশা, মসজিদকুড় মসজিদ

বর্গাকার বহুগম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটি ইটের তৈরি। মসজিদটির আয়তন ভিতরে ১২.১৯ মিটার এবং বাহিরে ১৬.৭৬ মিটার। বাইরের চারকোণের গোলাকার বুরুজ ছাদ পর্যন্ত উঠে গেছে। কিবলা প্রাচীর ব্যতীত অন্য তিন দিকের প্রতি দিকে রয়েছে তিনটি করে খিলানযুক্ত প্রবেশপথ। তিনটি খিলানের কেন্দ্রীয়টি পার্শ্ববর্তী দুটি থেকে অপেক্ষাকৃত বড়। পূর্ব দিকের খিলানযুক্ত প্রবেশপথের সাথে মিল রেখে কিবলা প্রাচীরে রয়েছে তিনটি অর্ধবৃত্তাকার মিহরাব-কুলুঙ্গি। কেন্দ্রীয় মিহরাবটি একটু বড় এবং পেছনের দিকে প্রসারিত। ভবনের কার্নিস সামান্য বক্র। মসজিদের অভ্যন্তরভাগ চারটি প্রস্তর স্তম্ভ দ্বারা নয়টি সমমাপের বর্গক্ষেত্রে বিভক্ত, প্রতিটি বিভাগ উল্টানো পেয়ালা সদৃশ গম্বুজ দ্বারা আচ্ছাদিত। প্রস্তর-স্তম্ভের উপর স্থাপিত খিলানের উপর গম্বুজগুলি স্থাপিত। খিলানগুলির পাশের কোণা ভরাট করা হয়েছে ইটের নির্মিত পেন্ডেন্টিভ দ্বারা।

মসজিদটি মূলত পোড়ামাটির ফলকে অলঙ্কৃত ছিল, যা খিলান পথের স্প্যান্ড্রেল (spandrel) এবং মিহরাব কুলুঙ্গিতে এখনও বিদ্যমান। বিভিন্ন অলঙ্করণ নকশার মধ্যে ফুল (rosettes), জালির কাজ, হীরাকৃতি (lozenges) এবং প্রবহমান লতাপাতা (floral scroll) উল্লেখযোগ্য।

হজরত পান্ডুয়ার আদিনা মসজিদ এর পার্শ্বে সিকান্দার শাহ এর বর্গাকার নয়গম্বুজ বিশিষ্ট সমাধিসৌধের সঙ্গে এ মসজিদটির পরিকল্পনার সাথে সাদৃশ্য রয়েছে। বাংলায় এটিই এ ধরনের স্থাপত্যের প্রথম দৃষ্টান্ত। বর্তমান মসজিদটি বাংলায় বহুল পরিচিত বহুগম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ পরিকল্পনার দৃষ্টান্ত। বাগেরহাটের খান জাহান আলীর স্থাপত্যের সাথে মসজিদের যথেষ্ট মিল রয়েছে। খুব সম্ভবত বুড়া খাঁ ও ফতে খাঁর তত্ত্বাবধানে মসজিদকুড় মসজিদ নির্মিত। মনে করা হয়, তাঁরা খান জাহানের প্রতিনিধি হিসেবে খলিফাতাবাদ এর দক্ষিণ-পশ্চিম নিচু এলাকা শাসন করতেন। মসজিদের দক্ষিণে এই দুই কর্মকর্তার কাচারি এবং সমাধি ছিল বলে ধারণা করা হয়। এখন এই অংশের বেশির ভাগই কপোতাক্ষ নদের বুকে নিমজ্জিত। [এম.এ বারি]