পল্লী উন্নয়ন
পল্লী উন্নয়ন উৎপাদন বৃদ্ধি, সম্পদের সুষম বণ্টন ও ক্ষমতায়নের মাধ্যমে গ্রামীণ দরিদ্র জনগণের অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবনমান উন্নয়নের জন্য এক পরিকল্পিত পরিবর্তন। সাধারণত এ পরিবর্তনকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়, পল্লী প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও প্রযুক্তিগত। উদার অর্থনীতিবিদদের দৃষ্টিতে এটি পল্লীর জনগণের ক্রমবর্ধমান কল্যাণকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে পরিচালিত ব্যাষ্টিক ও সামষ্টিক প্রয়াসের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রযুক্তিগত, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের গোটা বিষয়টির প্রতি নিবদ্ধ।
আজকের বাংলাদেশে পল্লী উন্নয়নের নির্দিষ্ট লক্ষ্য হচ্ছে গ্রামীণ বিত্তহীনদের, বিশেষ করে পশ্চাৎপদ মহিলা ও শিশুদের পারিপার্শিতক পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে সক্ষম করা, এবং সে নিয়ন্ত্রণের ফলশ্রুতি হিসেবে প্রাপ্ত সুযোগ সুবিধার যথাযথ বন্টন। বাংলাদেশে পল্লী উন্নয়নের চাবিকাঠি হলো (ক) দারিদ্র্য দূরীকরণ, গ্রামীণ দরিদ্রদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, (খ) আয় ও সম্পদের সুষম বন্টন, (গ) ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, (ঘ) পরিকল্পনা প্রণয়ন, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন, সুযোগ সুবিধার অংশীদারিত্ব, পল্লী উন্নয়ন কর্মসূচির মূল্যায়নে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ; (ঙ) অপ্রতুল সম্পদের ব্যবহার ও বন্টন নিয়ন্ত্রণের জন্য গ্রামীণ জনগণকে অধিকতর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রদান।
১৯৭১ সালের পূর্বে এদেশে কয়েক ধরনের পল্লী উন্নয়ন সংস্থা বিদ্যমান ছিল। গ্রাম সরকারের উৎপত্তি হয়েছে অতি প্রাচীনকাল থেকে। গ্রাম সরকারের প্রধান দায়িত্ব ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে কর আদায় এবং এর পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটানো। সীমিত আকারে পল্লী অবকাঠামো গঠন এবং জরুরি ত্রাণ তৎপরতা চালানো ছাড়া মধ্যযুগের শাসনামল পল্লী উন্নয়নের সুবিন্যস্ত ও প্রাতিষ্ঠানিক ধারণার তেমন কোনো দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে নি।
১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত আইনের মাধ্যমে ব্রিটিশ এক ধরনের আজ্ঞাবহ জমিদার শ্রেণী সৃষ্টি করে। এই জমিদারি ব্যবস্থা বাংলার স্থানীয় পল্লী সংস্থাসমূহ বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় শাসকগোষ্ঠীকে রাজস্ব আদায়ের উত্তম মাধ্যম ও রাজনৈতিক সমর্থনের ভিত্তিভূমি তৈরি করে দিয়েছিল। কতক সমাজহিতৈষী ব্যক্তি কিছু সরকারি কর্মকর্তাসহ স্থানীয়ভাবে এবং সীমিত আকারে হলেও পল্লী উন্নয়নের বেশ কিছু কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯২১ সালে পল্লীবাসীর মধ্যে সহযোগিতার মানসিকতা সৃষ্টির জন্য ‘শ্রীনিকেতন’ নামে একটি সংস্থা গঠন করেন। এ প্রতিষ্ঠানের অনুসরণে বিভিন্ন পল্লীমঙ্গল সমিতি, স্বাস্থ্য সমবায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং হস্তজাত শিল্প প্রশিক্ষণকেন্দ্র স্থাপিত হয়। রাজনীতি ও সমাজসেবা ব্যক্তিত্ব এ.কে ফজলুল হক (১৯৩৭ সালে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী) বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন এবং বাংলার কৃষকদের ঋণ-সমস্যা ও নিরক্ষরতা দূরীকরণের জন্য বেশ কিছু আইন পাস করান। মহাত্মা গান্ধী ‘রামরাজ’ নামক আদর্শ গ্রামের স্থপতি ছিলেন। এসব গ্রামের ভিত্তি ছিল ক্ষুদ্রায়তন কৃষি ও কুটির শিল্প যা স্বনির্ভর নীতিমালার ভিত্তিতে পরিচালিত হতো। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকদের অধীনে উচ্চপদে আসীন সরকারি কর্মকর্তা যেমন গুরুসদয় দত্ত, এন.এম খান, টি.আই.এম চৌধুরী প্রমুখ নিজ নিজ এখতিয়ারে পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়েছেন।
১৯৫৩ সালে মার্কিন সরকারের সহায়তায় পল্লী কৃষি ও শিল্প উন্নয়ন কর্মসূচি ভিলেজ এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট (ভি-এইড) চালু করা হয়। পাকিস্তান আমলে পল্লী উন্নয়নের স্তরে জনতার অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে এটাই ছিল প্রাথমিক প্রয়াস। পল্লী উন্নয়নের সকল প্রধান ক্ষেত্র যেমন কৃষি, প্রাথমিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পয়ঃব্যবস্থা, সমবায়, ভূমি পুনরুদ্ধার, ভৌত অবকাঠামো এবং সামাজিক ও বিনোদনমূলক কর্মকান্ড এই কর্মসুচির অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে কর্মসূচিটি স্বীয় ভিত রচনায় ব্যর্থ হয়, কারণ প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও তৃণমূল পর্যায়ে সমাজকে সংগঠিত করার ক্ষেত্রে তেমন উদ্যোগ নেওয়া হয় নি এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে ১৯৬১ সালে প্রকল্পটির প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করা হয়। তবে এই কর্মসূচির সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এটি পল্লী উন্নয়নের কুমিল্লা মডেলের ধারণাগত ভিত্তি রচনা ও অগ্রগতির জন্য যথেষ্ট অবদান রেখেছে। পাকিস্তান একাডেমী অব রুরাল ডেভেলপমেন্ট কর্তৃক কুমিল্লা মডেল পরিকল্পিত হয়। পরবর্তী সময়ে এর নামান্তর হয়েছে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমী (বার্ড)। মডেলটির ছিল চারটি মৌল ভিত: (ক) পল্লী কর্মপ্রকল্প : স্থানীয় জনশক্তি ব্যবহার করে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও পানিনিষ্কাশন প্রণালীর উন্নয়ন; (খ) থানা প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন কেন্দ্র : কৃষি, কারিগরি, সমবায়, নাগরিকদের অধিকার ও কর্তব্য ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দান; (গ) থানা সেচ প্রকল্প: চাষীদের সেচ সুবিধা দান এবং পাওয়ার পাম্প ও টিউবওয়েলের সামষ্টিক ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনা; (ঘ) দ্বি-স্তর সমবায়: থানা ও মফস্বল পর্যায়ে পরিপূরক দুটি সমবায় কাঠামোর মাধ্যমে পল্লীর জনগণের মধ্যে সহযোগিতার মানসিকতা সৃষ্টি করা।
আইয়ুব খানের সামরিক সরকার ১৯৫৯ সালে মৌলিক গণতন্ত্র নামে চার স্তর বিশিষ্ট এক স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার প্রবর্তন করে, যার অন্তর্ভুক্ত ছিল ইউনিয়ন, থানা, জেলা ও বিভাগীয় কাউন্সিল। মৌলিক গণতন্ত্র ও ভি-এইড কর্মসূচির মধ্যে সমন্বয় সাধনের জন্য স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে জাতীয় পর্যায়ে বড় ধরনের এক উন্নয়ন সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়। মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থার সমর্থকরা এই ব্যবস্থাকে নাগরিকদের গণতান্ত্রিক স্বশাসিত সরকার পরিচালনার সঙ্গে পরিচিত করার উপায়রূপে চিহ্নিত করলেও এ পদ্ধতির বিরোধীদের মতে এর অন্তর্নিহিত লক্ষ্য ছিল একদল সুবিধাভোগী নিবার্চকমন্ডলী তৈরি করে এবং বিশ্বস্ত ভোট ব্যংকে পরিণত করে ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠির রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধন।
বাংলাদেশ এর জন্মলগ্ন থেকেই পল্লী উন্নয়ন সম্পর্কিত নানা মতবাদের অব্যাহত পরীক্ষা নিরীক্ষা প্রত্যক্ষ করে যাচ্ছে। যুদ্ধ বিধ্বস্ত অর্থনীতি ও সমাজ গড়ে তোলার লক্ষ্যে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বহুসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবী ও সরকারি সংস্থা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকান্ড পরিচালনা করে। দেশের অন্যান্য অংশে কুমিল্লা মডেলের পুনঃপ্রচলন ও সম্প্রসারণের জন্য ১৯৭২ সালে সরকার সমন্বিত পল্লী উন্নয়ন কর্মসূচিকে তৎপর করে তোলে। পরবর্তী সময়ে কর্মসূচিটি বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড নামীয় নতুন এক সংস্থায় রূপান্তরিত হয়। শেষ পর্যন্ত এটি পল্লী উন্নয়নের বৃহত্তম সরকারি সংস্থায় পরিণত হয়। এর প্রধান কাজ পল্লী দারিদ্র্য দূরীকরণ, উৎপাদনমুখী প্রকল্প গ্রহণ, দ্বি-স্তর সমবায়ের ব্যাপ্তি ঘটানো, পল্লী মহিলা প্রকল্প ও দারিদ্র দূরীকরণ প্রকল্পের মতো টার্গেট গ্রুপ ভিত্তিক প্রকল্প ও কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন। স্বনির্ভর আন্দোলনের একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ছিল স্বাধীনতা ও স্বনির্ভর মতবাদের প্রতিফলন ঘটিয়ে পল্লী উন্নয়নের প্রশ্নে জনগণের দৃষ্টি থানা থেকে ফিরিয়ে গ্রাম পর্যায়ে নিবদ্ধকরণ, গ্রামের প্রাপ্ত বয়স্ক সদস্যদের সমন্বয়ে ‘গ্রামসভা’ নামক প্রতিষ্ঠান গঠন এবং উন্নয়ন কর্মকান্ড সম্পর্কিত অংশীদারিত্বমূলক পল্লী পরিকল্পনা প্রণয়ন। স্বনির্ভর আন্দোলনের বড় ধরনের এক দৃষ্টান্তমূলক প্রকল্প যশোর জেলার উলশী-যদুনাথপুর খালখনন কর্মসূচি। এ কর্মসূচির মাধ্যমে ১৮,০০০ একর জলাভূমিকে চাষাবাদের আওতায় আনা হয়। এ জন্য প্রয়োজন হয়েছে দীর্ঘ ৪.২৬ কি.মি সেচ খাল খনন।
প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর আওতায় জনগণের আর্থসামাজিক মান উন্নয়নের প্রধান লক্ষ্যকে সামনে রেখে বার্ড ১৯৭৫ সালে পল্লী উন্নয়ন খাতওয়ারী ধারণা থেকে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন নিবিড় পল্লী উন্নয়ন কর্মসূচি শুরু করে। ১৯৯৩ সালে বার্ড একটি পরীক্ষামূলক কর্মসূচির উদ্যোগ গ্রহণ করে। সেটি ছিল ক্ষুদ্র চাষী উন্নয়ন কর্মসূচি, যার সকল তৎপরতার লক্ষ্য ক্ষুদ্র কৃষক। এর উদ্দেশ্য ছিল চাষী ও ভূমিহীন শ্রমিকদের উৎপাদন ও প্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় অন্তর্বর্তীকালীন সহায়তা ও অন্যান্য সেবা দিয়ে সংগঠিত করা। অপরাপর সরকারি বৃহৎ পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প হলো দুঃস্থ শ্রেণীর উন্নয়ন প্রকল্প, থানা সম্পদ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান প্রকল্প, পল্লী সমাজসেবা কর্মসূচি, সমাজ উন্নয়ন কর্মসূচি, গ্রামীন মহিলাদের স্বনির্ভর কর্মসূচি এবং পল্লী কর্মসংস্থান বিষয়ক প্রযুক্তি।
সর্বশেষ পরিকল্পনা ও সরকারি কাগজপত্রে লক্ষ্য করা যায় যে, সরকারের চলমান পল্লী উন্নয়ন নীতিমালার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে কর্মসংস্থানমুখী উৎপাদন, উন্নয়ন কর্মকান্ডে জনগণের অংশগ্রহণ, সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে ব্যাপকতর সহায়তা এবং পল্লীর দরিদ্র মহিলা, জাতিগত সংখ্যালঘু, শিশু ও প্রবীণ-প্রবীণা প্রভৃতি প্রশ্চাদপদ জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ সব প্রকল্প প্রণয়ন। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, বেসরকারি সংস্থাসমূহ (এনজিও) আয় ও কর্মসংস্থান, উন্নয়ন, শিক্ষা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন পরিকল্পনা এবং মাতা ও শিশু পরিচর্যামুখি ব্যাপক পল্লী উন্নয়ন কর্মকান্ডে নিয়োজিত। ৮৯টি আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থাসহ এদেশে রয়েছে বহু বেসরকারি সংস্থা (এনজিও)। বেশ কিছু জাতীয় বেসরকারি সংস্থা সত্তরের দশকের প্রথমদিকে ত্রাণ ও পুনর্গঠন কর্মকান্ডকে ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। এনজিওগুলির পল্লী উন্নয়নের সর্বাধিক প্রভাব বিস্তারকারী মতবাদ সাধারণত মাইক্রো ক্রেডিট মডেল বলে পরিচিত, যার ভিত্তি হচ্ছে পল্লীর বিত্তহীন ও ভূমিহীনদের সমন্বয়ে দারিদ্র দূরীকরণ। বেশ কিছু এনজিও এ মতবাদ অনুসরণ করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সুনাম অর্জন করেছে। এদের মধ্যে উল্লেযোগ্য হচ্ছে বাংলাদেশ রুরাল অ্যাডভান্সমেন্ট কমিটি (ব্রাক), গ্রামীণ ব্যাংক, প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র এবং রংপুর দিনাজপুর রুরাল সার্ভিস।
পল্লী উন্নয়ন প্রয়াস সম্পর্কিত অতীত অভিজ্ঞতার বিশ্লেষণ থেকে বড় ধরনের বেশ কিছু সমস্যাকে চিহ্নিত করা যায়, যেগুলি সকল প্রয়াসের সফল সম্পাদনকে ব্যাহত করে আসছে। এসব সমস্যা হচ্ছে: পল্লী উন্নয়ন সংস্থাসমূহের অস্থায়িত্ব, অযোগ্য ও দুর্নীতিপরায়ণ নেতৃত্ব, কেন্দ্রীয় শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক স্থানীয় সরকারগুলিকে অসহযোগিতা, সুবিন্যস্ত পল্লী উন্নয়ন নীতিমালার অভাব, পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প থেকে উদ্ভূত সুযোগ সুবিধার অসম বন্টন, প্রাকৃতিক ও লব্ধ সম্পদের সীমাবদ্ধতা, পল্লী উন্নয়ন কর্মকান্ড ও পরিকল্পনায় উচ্চশ্রেণীর আধিপত্য এবং অসহায়ক এক গ্রামীণ সমাজ। বাংলাদেশের পল্লীর আর্থসামাজিক বুনিয়াদের প্রকৃতিই পল্লী উন্নয়ন কর্মসূচির কার্যকর বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে হুমকি হয়ে দেখা দেয়। সেসব বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পুঁজি গঠনের নিম্নস্তর, কৃষি নির্ভর অর্থনীতি, নিপুণ ও শিক্ষিত জনশক্তির অভাব, বেকারত্ব, মুদ্রাস্ফীতি, বিদেশি সহায়তার উপর ক্রমবর্ধমান নির্ভরশীলতা, দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি, গ্রাম্য রাজনৈতিক দলাদলি, ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অনুন্নত বাজার ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং অনুৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ। [নিয়াজ আহমদ খান]