কারমাইকেল কলেজ, রংপুর
কারমাইকেল কলেজ, রংপুর বাংলার গভর্নর লর্ড কারমাইকেল এর নামানুসারে ১৯১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। রংপুরের কয়েকজন জমিদার কলেজটির নির্মাণ কাজের জন্য সাড়ে সাত লাখ টাকা সংগ্রহ করেন। কলেজটি ৩২১ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়। ড. ওয়াটকিন্স নামীয় এক জার্মান নাগরিক এর অধ্যক্ষ ছিলেন। ৬১০ ফুট দীর্ঘ ও ৬০ ফুট প্রশস্ত কলেজ ভবনটি বাংলার জমিদারি স্থাপত্যকলার এক অনুপম নিদর্শন। কলেজটি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়-এর অধিভুক্ত হয়। ১৯১৭ সালে এটি আই.এ ও বি.এ শ্রেণি এবং ১৯২২ ও ১৯২৫ সালে আই.এসসি ও বি.এসসি খোলার অনুমতি লাভ করে। ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত কলেজে ১৩টি বিষয় পড়ানো হতো। ১৯৫৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়ার পূর্বপর্যন্ত এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর অধিভুক্ত ছিল। ১ জুলাই ১৯৬৩ সালে কলেজটি সরকারিকরণ করা হয়। ১৯৯২ সাল পর্যন্ত এটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এর অধীনে থাকে। অতঃপর কলেজটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়-এর আওতাভুক্ত হয়।
বর্তমানে এটি একটি স্নাতকোত্তর কলেজ যেখানে ১৫টি বিষয়ে অনার্স ও স্নাতকোত্তর (শেষপর্ব) পড়ানো হয় এবং প্রাইভেট স্নাতক (পাশ) পরীক্ষার সুযোগ রয়েছে। কলেজের গ্রন্থাগারটি সমৃদ্ধ। এতে লক্ষাধিক গ্রন্থ রয়েছে। প্রতিটি বিভাগের জন্য সেমিনার লাইব্রেরি (বিভাগীয় লাইব্রেরি) আছে। কর্মরত শিক্ষকের সংখ্যা ১৫০ জন। কলেজে ছাত্রছাত্রী সংখ্যা ২০,০০০। বিস্তৃত পরিসর নিয়ে কলেজের অফিস রুম, কনফারেন্স রুম, শিক্ষক ক্লাব, কর্মচারীদের ক্লাব, ছাত্রছাত্রীদের পৃথক বিশ্রামাগার, ক্যান্টিন, শিক্ষকদের বাসভবন, অধ্যক্ষের বাসভবন, ৪টি একাডেমিক ভবন, শহীদ মিনার ও মসজিদ প্রতিষ্ঠিত। ছাত্রদের জন্য রয়েছে জি.এল ছাত্রাবাস, কে.বি ছাত্রাবাস, সি.এম ছাত্রাবাস ও ওসমানী ছাত্রাবাস এবং ছাত্রীদের জন্য রয়েছে বেগম রোকেয়া ছাত্রীনিবাস, তাপসী রাবেয়া ছাত্রীনিবাস ও শহীদ জননী জাহানারা ইমাম ছাত্রীনিবাস।
এ কলেজের ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষার পাশাপাশি রোভার স্কাউট ও বাংলাদেশ জাতীয় ক্যাডেট কোর কর্মসূচি এবং খেলাধুলা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। [মুহম্মদ মনিরুজ্জামান]