নদী

নদী (River)  নদী যে অঞ্চলে উৎপত্তি লাভ করে তাকে নদীর উৎস এবং যে স্থানে সমুদ্রে বা হ্রদে মিলিত হয় সেই স্থানকে মোহনা বলে। নদীর চলার পথে কখনও কখনও ছোট ছোট অন্যান্য নদী বা জলধারা এসে মিলিত হয়ে প্রবাহ দান করে- এগুলো উপনদী নামে পরিচিত। একটি নদী এবং এর উপনদীসমূহ একত্রে একটি নদীপ্রণালী বা নদীব্যবস্থা (river system) গঠন করে। ভূ-পৃষ্ঠ কখনও পুরোপুরি সমতল নয়। ফলে বর্ষণসৃষ্ট জলধারা ঢালুতম পথে ভূ-পৃষ্ঠের একাধিক ঢাল পরিচ্ছেদনের ফলে সৃষ্ট অবতল-নিচু অংশে প্রবাহিত হওয়ার প্রবণতা প্রদর্শন করে। নদী গঠনের জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত আয়তন ও গতিবেগসম্পন্ন একাধিক প্রবাহের মিলিত ধারা যা অন্তঃস্থ ভূমি ও শিলাকে ক্ষয় করে খাতের সৃষ্টি করে এগিয়ে যেতে পারে। নদীর একটি উৎস আধার (source reservoir) থাকে যা নদীকে নিয়মিত প্রবাহ যোগান দেয়। যেমন: গঙ্গা নদীর উৎস গঙ্গোত্রী নামক হিমবাহ এবং ব্রহ্মপুত্র নদের উৎস মানস সরোবর।

বাংলাদেশের প্রধান নদনদী

নদীর নাম দৈর্ঘ্য (কিমি) প্রবাহিত এলাকা (বৃহত্তর জেলা) এবং দৈর্ঘ্য (কিমি)
আড়িয়াল খাঁ ১৬০ ফরিদপুর (১০২), বরিশাল (৫৮)
বংশী ২৩৮ ময়মনসিংহ (১৯৮) ঢাকা (৪০)
বেতনা-খোলপটুয়া ১৯১ যশোর (১০৩) খুলনা (৮৮)
ভদ্রা ১৯৩ যশোর (৫৮) খুলনা (১৩৫)
ভৈরব ২৫০ যশোর, খুলনা
ভোগাল-কংস ২২৫ ময়মনসিংহ (২২৫)
ব্রহ্মপুত্র-যমুনা (যমুনা ২০৭) ২৭৬ রংপুর (১৪০) পাবনা (১৩৬)
বুড়িগঙ্গা ২৭ ঢাকা (২৭)
চিত্রা ১৭০ কুষ্টিয়া (১৯) যশোর (১৫১)
ডাকাতিয়া ২০৭ কুমিল্লা (১৮০) নোয়াখালী (২৭)
ধলেশ্বরী ১৬০ ময়মনসিংহ, ঢাকা
ধনু-বৌলাই-ঘোড়াউত্রা ২৩৫ ময়মনসিংহ (১২৬), সিলেট (১০৯)
দোনাই-চরলকাটা-যমুনেশ্বরী-করতোয়া ৪৫০ রংপুর (১৯৩), বগুড়া (১৫৭), পাবনা (১০০)
গঙ্গা-পদ্মা (গঙ্গা ২৫৮, পদ্মা ১২০) ৩৭৪ রাজশাহী (১৪৫), পাবনা (৯৮), ঢাকা এবং ফরিদপুর (১৩৫)
গড়াই-মধুমতি-বলেশ্বর ৩৭১ কুষ্টিয়া (৩৭), ফরিদপুর (৭১), যশোর (৯২), খুলনা (১০৪), বরিশাল (৬৭)
ঘাঘট ২৩৬ রংপুর (২৩৬)
করতোয়া-আত্রাই-গুর-গুমানি-হুরাসাগর ৫৯৭ দিনাজপুর (২৫৯), রাজশাহী (২৫৮), পাবনা (৮০)
কর্ণফুলি ১৮০ পার্বত্য চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম
কপোতাক্ষ ২৬০ যশোর (৮০) খুলনা (১৮০)
কুমার ১৬২ যশোর, ফরিদপুর
কুশিয়ারা ২২৮ সিলেট (২২৮)
ছোট ফেনী-ডাকাতিয়া ১৯৫ নোয়াখালী (৯৫), কুমিল্লা (১০০)
লোয়ার মেঘনা ১৬০ চাঁদপুর থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত
মাতামুহুরী ২৮৭ পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রাম
মাথাভাঙ্গা ১৫৬ রাজশাহী (১৬), কুষ্টিয়া (১৪০)
নবগঙ্গা ২৩০ কুষ্টিয়া (২৬), যশোর (২০৪)
পুরাতন ব্রহ্মপুত্র ২৭৬ ময়মনসিংহ (২৭৬)
পুনর্ভবা ১৬০ দিনাজপুর (৮০), রাজশাহী (৮০)
রূপসা-পসুর ১৪১ খুলনা (১৪১)
সাঙ্গু ১৭৩ পার্বত্য চট্টগ্রাম (৯৩), চট্টগ্রাম (৮০)
সুরমা-মেঘনা ৬৭০ সিলেট (২৯০), কুমিল্লা (২৩৫), বরিশাল (১৪৫)
তিস্তা   ১১৫ রংপুর (১১৫)

উৎস  স্ট্যাটিসটিকাল ইয়ার বুক অব বাংলাদেশ ১৯৯৮।

উৎস থেকে ভিত্তিতলে প্রবাহিত গতিপথে নদী সকল প্রকার বাধা ও অসমতা এড়িয়ে সুষম ও মসৃণ নতিমাত্রা অনুসরণ করে থাকে। সমতল ভিত্তিতে পৌঁছার পর নদীর তলদেশের ক্ষয় অপেক্ষা পার্শ্বক্ষয়ের পরিমাণ বাড়ে। ফলে নদীর তলদেশ এবং উপত্যকা প্রশস্ত হতে থাকে। এসময় গতিবেগ হ্রাস পাওয়ায় নদী অাঁকাবাঁকা সর্পিল পথে প্রবাহিত হয় এবং নদীতে অসংখ্য বাঁকের সৃষ্টি হয়। বক্র গতিপথে নদীর সর্পিল বাঁকের মুখদুটি ক্ষয়ক্রিয়ার ফলে কাছাকাছি চলে এলে একপর্যায়ে নদী-ছেদনের ফলে বাঁকাপথ পরিত্যাগ করে নদী অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ সৃষ্টি করে নতুন সোজা পথে প্রবাহিত হয়।

নদীর গতিবেগ নদী কর্তৃক পরিবাহিত  পলল ও শিলাখন্ডের আকৃতি নির্ণয় করে থাকে। ঢালের পরিবর্তন অথবা কোনো জলরাশি কিংবা সাগর বা হ্রদের সঙ্গে মিলনের ফলে নদীর গতিবেগ বাধাপ্রাপ্ত হলে অথবা নদীর জলরাশি দুকূল ছাপিয়ে প্রবাহিত হলে নদী কর্তৃক পরিবাহিত ভার বা বস্ত্তকণার অংশবিশেষ নদী তলদেশে অথবা নদীখাতের দুই পাড়ে সঞ্চিত হয়। এভাবেই নদীর সঞ্চয়কার্যের ফলে বদ্বীপ, প্লাবনভূমি, চর এবং পলিজ পাখা (alluvial fan) ও পলিজ কোণ (alluvial cone) প্রভৃতি ভূমিরূপ গড়ে ওঠে।

প্রথাগতভাবে নদীকে পূর্ণতার ধাপ অনুসারে ‘যৌবন’, ‘পরিণত’ এবং ‘বার্ধক্য’ – এ তিনটি শ্রেণিতে বিন্যস্ত করা হয়ে থাকে। যৌবন অবস্থায় নদীকে খাড়াপার্শ্ববিশিষ্ট উপত্যকা, খাড়া ঢাল এবং অসম তলদেশ দ্বারা শনাক্ত করা যায়। নদীর মধ্যগতিতে বা পরিণত অবস্থায় প্রশস্ত নদী উপত্যকা, প্রশস্ত নদীপাড়, উপনদীসমূহ দ্বারা অগ্রসরমাণ সম্মুখ ক্ষয়কার্য এবং সুষম নদীতলদেশ প্রভৃতি ভূমিরূপ পরিলক্ষিত হয়। বার্ধক্য অবস্থায় নদী ভিত্তি সমতলে উপনীত হয় এবং প্রশস্ত সমতল অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। বাংলাদেশের অধিকাংশ নদ-নদীই বার্ধক্য পর্যায়ে পৌঁছে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে।

নদীপথে যাতায়াত সুবিধা এবং নদী উপত্যকাসমূহের পলিমাটি উৎকৃষ্ট কৃষিভূমি হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ সভ্যতাসমূহ নদী উপত্যকায় গড়ে উঠেছে। নাব্য নদ-নদীসমূহ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নগর গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে প্রভাবকের ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের প্রায় সকল প্রধান শহর, নগর ও বাণিজ্যকেন্দ্রসমূহ বিভিন্ন নদীর তীরে গড়ে উঠেছে; যেমন- বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে ঢাকা মহানগরী, শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে নারায়ণগঞ্জ শহর ও বন্দর, কর্ণফুলি নদীর তীরে চট্টগ্রাম, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে ময়মনসিংহ শহর গড়ে উঠেছে। পর্যাপ্ত প্রবাহ, গতিবেগ এবং নতিমাত্রাবিশিষ্ট নদী থেকে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। কাপ্তাই নামক স্থানে কর্ণফুলি নদীতে বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হচ্ছে। এটি বাংলাদেশের একমাত্র জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র।

বাংলাদেশের নদীমালা এর গর্ব। এখানে প্রায় ৭০০টি নদী-উপনদী সমন্বয়ে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ নদীব্যবস্থা গড়ে ওঠেছে। বাংলাদেশের নদ-নদীর মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ২৪,১৪০ কিমি। ছোট ছোট পাহাড়ি ছড়া, অাঁকাবাঁকা মৌসুমি খাড়ি, কর্দমপূর্ণ খালবিল, যথার্থ দৃষ্টিনন্দন নদ-নদী ও এদের উপনদী এবং শাখানদী সমন্বয়ে বাংলাদেশের বিশাল নদীব্যবস্থা গড়ে ওঠেছে। কিছু কিছু স্থানে যেমন, পটুয়াখালী, বরিশাল এবং সুন্দরবন অঞ্চলে নদীনালা এতো বেশি যে সে অঞ্চলে প্রকৃতই নদীজালিকার সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশের নদীনালাগুলো স্বাভাবিকভাবেই দেশের সর্বত্র সমভাবে বণ্টিত নয়। দেশের উত্তরভাগের উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ক্রমান্বয়ে দক্ষিণভাগের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে নদ-নদীর সংখ্যা এবং আকার দুইই বৃদ্ধি পেতে থাকে। নদীব্যবস্থার দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশের নদীমালাকে চারটি প্রধান নদীব্যবস্থা বা নদী প্রণালীতে বিভক্ত করা যেতে পারে: ১) ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদী প্রণালী ২) গঙ্গা-পদ্মা নদী প্রণালী ৩) সুরমা-মেঘনা নদী প্রণালী এবং ৪) চট্টগ্রাম অঞ্চলের নদ-নদীসমূহ। বাংলাদেশের নদীমালার মধ্যে দৈর্ঘ্যের দিক থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ বিশ্বের ২২তম (২,৮৫০ কিমি) এবং গঙ্গা নদী ৩০তম (২,৫১০ কিমি) স্থানের অধিকারী।

বাংলাদেশের সবগুলো নদীর একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্ত্তত করা বেশ কঠিন। নদীর নামকরণের ক্ষেত্রে এদেশে কোনো ধরনের নীতিমালা অনুসরণ করা হয় না। এখানে একই নদীকে ভিন্ন ভিন্ন এলাকায় ভিন্ন ভিন্ন নামে ডাকার প্রবণতা রয়েছে। এমনকি কোনো একটি নদীর মাত্র পাঁচ/ছয় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের অংশকেও এর উজানের নামের থেকে ভিন্ন নামে ডাকা হয়। নদীটির নতুন নামকরণ কোনো স্থান থেকে শুরু হলো তা নির্ধারণ করা প্রায়ই সম্ভব হয় না। আবার একই নামে ভিন্ন ভিন্ন এলাকায় ভিন্ন ভিন্ন নদীর অস্তিত্ব রয়েছে। বিশেষত দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের নদীগুলো এতবেশি শাখা-প্রশাখায় বিভক্ত যে ভিন্ন ভিন্ন শাখা-প্রশাখাগুলোকে আলাদা নামে চিহ্নিত করা সব ক্ষেত্রে সম্ভব নয়। এসমস্ত অসুবিধা সত্ত্বেও দেশের নদীগুলোর এলাকাভিত্তিক একটি তালিকা নিম্নে সংযোজিত হলো:

রংপুর দুধকুমার, রাইডাক, ধরলা, তিস্তা, স্বাতি, বুড়িখোড়া-চিকি, খারভাজা, ঘাগট, যমুনেশ্বরী, আখির, খারখরিয়া, বাসমাই, দেওনাই, চিকি, নীলকুমার, ভরোলা, গদাধর, সনকোশ, নোয়াডিহিং, ডিসাঙ্গ, ডিখু, কালাঙ্গ, কাপিলি, তিতাস-গিরি, ব্রহ্মপুত্র: (২৬টি)।

দিনাজপুর  পাথরাজ, তালমা, পুনর্ভবা, চেপা, টাঙ্গন, ডাহুক, ঘোড়ামারা, যমুনা, কোরাম, আত্রাই, কুলিকা, বড়াল, গর্ভেশ্বরী, যমুনেশ্বরী, জলঢাকা, তোরসা, কল্যাণী, রাইদক: (১৮টি)।

রাজশাহী ফকিরনী-বারানাই, শিব-বারানাই, মহানন্দা, পাগলা, মুসা খান, গঙ্গা, বারানাই, হোজা, গোদারি, গুমানি: (১০টি)।

পাবনা গুর, বগুড়া-ইছামতী, বড়াল, হুরাসাগর, দুর্গাদহ, সুখদহ, বগুড়া (ইউসিয়াম), তালান: (৮টি)।

বগুড়া  করতোয়া, কথাকলি, বাঙ্গালি, তুলসী গঙ্গা, ছোটো যমুনা, নসার, বাদল: (৭টি)।

ঢাকা বংশী, তুরাগ, টঙ্গীখাল, বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, কালীগঙ্গা, গাজীখাল, বানার, বালু, লক্ষ্যা, লৌহজং, ফুলদি, ভুবনেশ্বরী, কীর্তিনাশা বা শ্রীপুর (শীতলক্ষ্যা), ইছামতী, মালিক বাদের খাল, গাজাহাটার খাল, ইলশামারী: (১৮টি)।

ময়মনসিংহ ঝিনাই, আইমন, সুতিয়া, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, ঘরোটা নদী, সিমাহালি, নরসুন্দর, বোথাই, নিতারী, সোমেশ্বরী, কংশ, গুনাই, কাচামাঠিয়া, পানকুরা, সাইদুল, মোগরা, রাংরা, খারমোরী, মহাদেব, যদুকাটা, ধানু, বোয়ালাই, শিরখালি, চেল্লাখালি, মতিচিক, চালহি, বংশাই, মানস, পুতিয়া, জিনজিরাম, সুবনফিরি, বলেশ্বর, ভোগাই কংসা, কউলাই, ধনু, সিলাই, খারমেনি: (৩৭টি)।

সিলেট  সুরমা, পিয়াইন, সারি গোয়াইন, বাগরা গাঙ, নওয়া গাঙ, শেওলা, ধামালিয়া, মনাই বড়দাল, জুরি, মনু, ধলাই, লাংলা (কারাঙ্গি), খোয়াই, সুতাং, কুশিয়ারা, মাধবপুর, মহাসিং, খাজাঞ্চি, ভট্টখাল, কালনি, জামালপুর, বরাবা, লভা, হরি, বোগাপানি, ইটাখোলা,  ধরিয়ানা, ধোয়াই, যদুকাটা, ধলা-ধলাই গাঙ, গোপলা-লাংলা, মোগাই-চলতি, রক্তি, পৈন্দা, ভেরা, মোহানা, ধনু-বৌলাই: (৩৭টি)।

কুমিল্লা তিতাস, গোমতী, ধনাগোদা, ডাকাতিয়া, দাপলা গাঙ, হাওরা, কাঠালিয়া, সোনাই, তাটনল, বুড়ী, কুলিয়াঝুরি, বাতাকান্দি, মরিচা, আরশি, গোপী, মারজোরা, ঘুঙ্গট, খেরুনদী, বৈজানী, পাগলী, শিরাই, চান্দিনা খাল, কাকড়ি, মালদা, অ্যান্ডারসন খাল, মতলব, উদনন্দি বা উদমধি, কাগনি, হরিমঙ্গল, কুরুলিয়া, জায়দিন্দ, সোনাইমুড়ি, হন্দাচেরা, জাঙ্গালিয়া, দুরদুরিয়া, বুড়ীগঙ্গা বা বিজয়গঙ্গা, কালাডুমুরিয়া, বুড়িগাঙ, বিজয়পুর খাল, চৌদ্দগ্রাম খাল, নলিয়া, বিজলী, ঘুঙ্গর: (৪৪টি)।

নোয়াখালী  মধুখালি খাল, রহমতখালি খাল, মুহুরী, ছোটো ফেনী, সিলোনিয়া, ফেনী, ভুলুয়া, হাতিয়া, আতিয়াবারি খাল, কালির খাল, পাটকাটা খাল, কথাকলি খাল, বাপারাশি খাল, গোয়ালখালি খাল, আত্রা খাল, হুরা খাল, গাহোযাতলি খাল, হালদা, ইছামতী: (১৯টি)।

চট্টগ্রাম  হালদা, কর্ণফুলি, সাঙ্গু, মাতামুহুরী, বাকখালি, সাতাল খাল, ইছামতী, মুহুরী, কাবলং, রাখিয়াং, সত্তা, শিল্পা, তুইবাং, ককা, শ্রীমা, বোয়ালখালি, মগদাই, ডং খাল, নারায়ণগিরি, চিরিঙ্গা, ইছাখালি, কুরসাই, সিঙ্গুর গঙ্গা, কাপ্তাই, রিগারী খিংর, চাঁদখালি, কুমিরাখালি, চেঙ্গি, মাইনী: (৩০টি)।

কুষ্টিয়া  মাথাভাঙা, গড়াই, জলাঙ্গি, মাগরখালি: (৪টি)।

যশোর  আপার ভৈরব, লোয়ার ভৈরব, চিত্রা, বেগবতী, নবগঙ্গা, চন্দনা, কপোতাক্ষ, বারাসিয়া, খোলপটুয়া এলেংখালি, পানগুবি, কবা, কালীগঙ্গা, কাঠিপাতা, দড়াটানার খাল, মরিছোপ, চাঁদখোনি, পাংগানি, নাইনগত্র সমুদ্র, বড় পাঙ্গা, কুমার, বড় গাংদিয়াদহ, আমলা মদরপুর, ডাকোয়া, মরা গড়াই, বারাসিয়া, পালং, আত্রাই। (২৮টি)।

ফরিদপুর মধুমতী, কুমার, আড়িয়াল খাঁ, আতাই নদী, মাদারিপুর বিল রুট: (৫টি)।

খুলনা  ভদ্রা, আঠারোবাঁকী, আলাইপুর খাল, খোলপটুয়া, শিবসা, রূপসা, বলেশ্বর, গাসিয়াখালি, পশুর, আড়, পাঙ্গানিয়া, ওড়াটমা, ইছামতী, নমুদ সমুদ্র, সোনাগাঙ্গ, ভাঙরা, কুঙ্গা, মালঞ্চ, সাতক্ষীরা, সুতাখালী, রাইমঙ্গল, মারজাত, হরিণভাঙা, মহাভাঙা, গলাঙ্গী, হরিপুর, সোনাই, বুধহাটার গাঙ, ঢাকি, গালঘেমিয়া, উজীরপুর কাটাখাল, গুচিয়াখালি, বদুরগাছা, ডেলুটি, মানস, কয়ারা, আড়-শিবসা, কালিন্দী, মজুদখালি খাল, আকরার খাল, মংলা, সোলা, পায়রা, আন্দ্রনমুখো, মুহুরী, মোদলা, হাড়িয়াভাঙা, গানগুবি, কচা, পাকাশিয়া, মৈয়ার গাং, কাবিপাতা, ঝাঁক, শিয়ালীর খাল, নারায়ণখালী, কদমতলি, বাংরা, শীলা, কলাগাছিয়া, বাঁশতলী, সালখি, শাকবাড়িয়া, আলকি, মানিকদিয়া, চন্দেশ্বর, পানকুশী, বলেশ্বর, বলমার্জার বা মাঞ্জাল, কাগীবাগ, রামপাল: (৭১টি)।

বরিশাল বিষখালি, স্বরূপকাঠী বা সন্ধ্যা, বাবুগঞ্জ, হেমদা, লোহালিয়া, শাহবাজপুর, নয়াভাঙা, রাজগঞ্জ, গণেশপুর, দুবালদিয়া, তোরকি বা তুর্কি, কীর্তনখোলা, ধরমগঞ্জ, ঝিলিনহা, মনকুঠা, মুলতানি, কারখোমা, আলগি, ধুলিয়া, গঙ্গালিয়া, বুড়িশ্বর, কালীগঙ্গা, হরিণঘাটা, পাতুয়া, তেঁতুলিয়া, ধলিয়া, নীলাশী, নবগঙ্গা, ভোলা, পাকাশিয়া, চন্দনা বা পাংশা, জাবনাসবাদ, বলেশ্বর, শশ্মান ঘাট, মৈয়ার গাং, নয়া ভাঙনী, গৌরনদী, কালাবদর, মীরগামারী, কচা বা কোচা, লতা, ইলিশ বা ইলশা, কবাখালি, মধুমতী, আন্ধার মানিক, রাবণাবাদ বা পটুয়া, বুড়া গৌরাঙ্গ, বাকেরগঞ্জ, আমতলা, ধানসিঁড়ি, সুগন্ধা, ঝালকাঠি, চালনা, এলেংখালি, নলবিটি, খরবোরাবাদ, গলাচিপা: (৫৭টি)।

সুন্দরবন অঞ্চল  বলেশ্বর, সুমতি, ছাপড়াখালি, বড় শেওলা, হরিণ চীনা, শরনখোলা, আমবাড়ে, চান্দেশ্বর, কাপা, কালিন্দি, সঠকা, জাভো, মরা পশুর, ডাংমারি, বিলে, ছুতোরখালি, চালো বগি, হরমহল, বেড়ি-আদা, বাকির খাল, আড়-শিবসা, হড্ডা, মহিষে, ছাছোন হোগলা, মজ্জত, শাকবাড়ে-সিঙ্গা, গোলখালি, কুকুমারি, কলাগাছে, ডোমরখালি, হংসরাগ, কাগা, নীলকমল, খেজুরদানা, সেজিখালি, বাইনতলা, বাঙ্গাবালী, দোবেকি, ফিরিঙ্গি, মানদো, কেওড়াসুতী, বন্দো, ধকোলা, লতাবেড়ি, ভেটুইপাড়া, বালুইঝাঁকি, কালিকাবাড়ী, বেকারদোন, আন্ধার মানিক, ঝালে, পাটকোষ্টা, বাসে, গোলভকসা, ধানিবুনে, হরিখালি, মনসার বেড়, পুষ্পকাটি, গঙ্গাসাগর, কালী লাই, বগী চেঁচানে, কুঁড়েখালি, ভূয়ের দনে, কাঠেশ্বর, সোনারুপাখালি, দুধমুখ, লাঠিকারা, তেরকাটি, ধানঘরা, আড়বাসে, দক্ষিণচরা, সাপখালি, কদমতলি, বুড়ের ডাবুর, লক্ষ্মী পশুর, মানকি, আশাশুনি, তালতক্তা, ধ্বজিখালি, মন্ডপতলা, নেতোখালি, ভায়েলা, বাগানবাড়ি, ঝাড়াবাগনা, বগাউড়া, বক্সখালি, চাইলতাবাড়ি, সিঙ্গড়তলি, মাথাভাঙা, নারায়ণতলি, কইখালি, মথুরা, খাসিটানা, আগুনজ্বালা, ফুলঝুরী, মালাবগা, খামুরদানা, উবদে, গুবদে, সোনাইপাঁঠী, ধোনাইর গাঙ, কানাইকাঠি, মরিচঝাঁপি, নেতাই তালপাঁঠী, ধনপতি, রাগাখালি, মুক্ত বাঙাল, আরিজাখালি, দুলোর টেক, যিনগিলি, বিবির মাদে, টেকাখালি, দেউর যাঁদে, চামটা কামটা, কুঞ্চে মাঠে, ব্যয়লা কয়লা, মাদার বাড়ে, বয়ার নালা, হানকে, ধনচের নদী, মূল্যে মেঘনা, বাইলো, বেতমুড়ি, বুড়িগোল্লি, চুনকুড়ি, মায়াদি, ফুলবাড়ি, তালতলি, আংরা কনা, গাড়ার নদী, বাদামতলি, ভুতের গাঙ, বৈকুণ্ঠ হানা, করপুরো, ছায়া হলড়ি, আড়ভাঙা, তালকপাঁঠী, খেজুরে কুড়ূলে, ছোটো শেওলা, কাঁচিকাটা, দাইর গাঙ, বৈকিরী, জালঘাটা, ইলিশমারি, ঝলকি, সাতনলা, মকুরনি, হেলার বেড়, কালিন্দে, শাকভাতে, গোন্দা, পালা, তেরবেঁকী, তালবাড়ে, হেড় মাতলা, ভুড়ভুড়ে, ছদনখালি, ফটকের দনে, ভরকুন্ডে, কেঁদাখালি, নওবেঁকী, কলসের বালি, পানির খাল, কুলতলি, বড়বাড়ে, মুকুলে, মধুখালি, পাশকাটি, গোছবা, ঘাট হারানো, গাবান্দারা, লোকের ছিপি, বাহার নদীপার, বড় মাতলা, পায়রা ঠুনী, কালবেয়ারা, ঢুকুনী, পারশে মারী: (১৭৭টি)। [মোহা. শামসুল আলম এবং মাসুদ হাসান চৌধুরী]

আরও দেখুন ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীপ্রণালী; গঙ্গা-পদ্মা নদীপ্রণালী; সুরমা-মেঘনা নদীপ্রণালী; চট্টগ্রাম অঞ্চলের নদীপ্রণালী; আন্তঃসীমান্ত নদী

গ্রন্থপঞ্জি  আব্দুল ওয়াজেদ, বাংলাদেশের নদীমালা, ঢাকা, ১৯৯১; এফ এইচ খাঁন, বাংলাদেশের ভূতত্ত্ব (Geology of Bangladesh), ইউনিভারসিটি প্রেস লিমিটেড, ঢাকা, ১৯৯১; হারুন-অর-রশিদ, বাংলাদেশের ভূগোল (Geography of Bangladesh), ইউনিভারসিটি প্রেস লিমিটেড, ঢাকা, ১৯৯১; সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, আর্থনীতিক ভূগোল: বিশ্ব ও বাংলাদেশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৯৫; হিউগ ব্রামার, বাংলাদেশের মৃত্তিকা ভূগোল (The Geography of the Soils of Bangladesh), ইউনিভারসিটি প্রেস লিমিটেড, ঢাকা, ১৯৯৬; বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), স্ট্যাটিসটিকাল ইয়ারবুক অব বাংলাদেশ ১৯৯৮, বিবিএস, ঢাকা, ১৯৯৯।