লাহিড়ী, তুলসী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''লাহিড়ী, তুলসী '''(১৮৯৭-১৯৫৯)'''  '''নাট্যকার, অভিনেতা।  [[গাইবান্ধা জেলা|গাইবান্ধা]] (বৃহত্তর  [[রংপুর বিভাগ|রংপুর]]) জেলার নলডাঙ্গায় এক জমিদার পরিবারে তাঁর জন্ম। বিএ ও বিএল পাস করে তিনি প্রথমে রংপুর শহরে এবং পরে কলকাতার আলিপুর কোর্টে ওকালতি করেন।
'''লাহিড়ী, তুলসী '''(১৮৯৭-১৯৫৯) নাট্যকার, অভিনেতা।  [[গাইবান্ধা জেলা|গাইবান্ধা]] (বৃহত্তর  [[রংপুর বিভাগ|রংপুর]]) জেলার নলডাঙ্গায় এক জমিদার পরিবারে তাঁর জন্ম। বিএ ও বিএল পাস করে তিনি প্রথমে রংপুর শহরে এবং পরে কলকাতার আলিপুর কোর্টে ওকালতি করেন।


[[Image:LahiriTulsi.jpg|thumb|right|400px|তুলসী লাহিড়ী]]
এ সময়ে তাঁর রচিত দুটি গান  [[খাঁ, ওস্তাদ জমিরুদ্দিন|জমিরুদ্দিন খাঁ]] রেকর্ড করলে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তিনি পরিচিত হয়ে ওঠেন। এর ফলে হিজ মাস্টার্স ভয়েস ও মেগাফোন  [[গ্রামোফোন|গ্রামোফোন]] কোম্পানিতে তিনি সঙ্গীত পরিচালকের পদ লাভ করেন। এক সময় তিনি আইনব্যবসা ত্যাগ করে চলচ্চিত্র ও নাট্যাভিনয়ে যোগ দেন এবং ক্রমে মঞ্চাভিনেতা, চিত্রাভিনেতা, নাট্যকার ও চিত্র পরিচালক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন।
এ সময়ে তাঁর রচিত দুটি গান  [[খাঁ, ওস্তাদ জমিরুদ্দিন|জমিরুদ্দিন খাঁ]] রেকর্ড করলে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তিনি পরিচিত হয়ে ওঠেন। এর ফলে হিজ মাস্টার্স ভয়েস ও মেগাফোন  [[গ্রামোফোন|গ্রামোফোন]] কোম্পানিতে তিনি সঙ্গীত পরিচালকের পদ লাভ করেন। এক সময় তিনি আইনব্যবসা ত্যাগ করে চলচ্চিত্র ও নাট্যাভিনয়ে যোগ দেন এবং ক্রমে মঞ্চাভিনেতা, চিত্রাভিনেতা, নাট্যকার ও চিত্র পরিচালক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন।


তুলসী লাহিড়ী যখন চিত্রজগতে প্রবেশ করেন তখন ছিল চলচ্চিত্রের নির্বাক যুগ। ক্রমে সবাক যুগের প্রচলন হয় এবং তিনি পঞ্চাশটিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেন। পঞ্চাশের মন্বন্তরের পটভূমিকায় গ্রামবাংলার দরিদ্র মানুষের অভাব-অনটন, দ্বন্দ্ব-সংঘাত ও তাদের ওপর ধর্মীয় ও সামাজিক নিপীড়নের আলেখ্য অবলম্বনে দুঃখীর ইমান (১৯৪৭) ও ছেঁড়া তার (১৯৫০) নাটক রচনা করে তিনি ব্যাপক সুনাম অর্জন করেন।এ নাটকদুটি তখন বাস্তব জীবনভিত্তিক নাট্যচর্চার গোড়াপত্তনে সহায়তা করে।
তুলসী লাহিড়ী যখন চিত্রজগতে প্রবেশ করেন তখন ছিল চলচ্চিত্রের নির্বাক যুগ। ক্রমে সবাক যুগের প্রচলন হয় এবং তিনি পঞ্চাশটিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেন। পঞ্চাশের মন্বন্তরের পটভূমিকায় গ্রামবাংলার দরিদ্র মানুষের অভাব-অনটন, দ্বন্দ্ব-সংঘাত ও তাদের ওপর ধর্মীয় ও সামাজিক নিপীড়নের আলেখ্য অবলম্বনে দুঃখীর ইমান (১৯৪৭) ও ছেঁড়া তার (১৯৫০) নাটক রচনা করে তিনি ব্যাপক সুনাম অর্জন করেন।এ নাটকদুটি তখন বাস্তব জীবনভিত্তিক নাট্যচর্চার গোড়াপত্তনে সহায়তা করে।


[[Image:LahiriTulsi.jpg|thumb|right|তুলসী লাহিড়ী]]
তাঁর অন্যান্য নাটকের মধ্যে রয়েছে মায়ের দাবি (১৯৪১), পথিক (১৯৫১), লক্ষ্মীপ্রিয়ার সংসার (১৯৫৯), মণিকাঞ্চন, মায়া-কাজল, চোরাবালি, সর্বহারা প্রভৃতি। ধনতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার অসাড়তা প্রমাণ করার উদ্দেশ্য নিয়েই তিনি নাটকগুলি রচনা করেন। তিনি একটি  [[অর্কেস্ট্রা|অর্কেস্ট্রা]] দলও গঠন করেছিলেন, যা ওই সময়ে খুব আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। [জিল্লুর রহমান জন]
 
 
তাঁর অন্যান্য নাটকের মধ্যে রয়েছে মায়ের দাবি (১৯৪১), পথিক (১৯৫১), লক্ষ্মীপ্রিয়ার সংসার (১৯৫৯), মণিকাঞ্চন, মায়া-কাজল, চোরাবালি, সর্বহারা প্রভৃতি। ধনতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার অসাড়তা প্রমাণ করার উদ্দেশ্য নিয়েই তিনি নাটকগুলি রচনা করেন। তিনি একটি  [[অর্কেস্ট্রা|অর্কেস্ট্রা]] দলও গঠন করেছিলেন, যা ওই সময়ে খুব আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।
 
[জিল্লুর রহমান জন]


[[en:Lahiri, Tulsi]]
[[en:Lahiri, Tulsi]]

০৬:০৩, ১১ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

লাহিড়ী, তুলসী (১৮৯৭-১৯৫৯) নাট্যকার, অভিনেতা।  গাইবান্ধা (বৃহত্তর  রংপুর) জেলার নলডাঙ্গায় এক জমিদার পরিবারে তাঁর জন্ম। বিএ ও বিএল পাস করে তিনি প্রথমে রংপুর শহরে এবং পরে কলকাতার আলিপুর কোর্টে ওকালতি করেন।

তুলসী লাহিড়ী

এ সময়ে তাঁর রচিত দুটি গান  জমিরুদ্দিন খাঁ রেকর্ড করলে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তিনি পরিচিত হয়ে ওঠেন। এর ফলে হিজ মাস্টার্স ভয়েস ও মেগাফোন  গ্রামোফোন কোম্পানিতে তিনি সঙ্গীত পরিচালকের পদ লাভ করেন। এক সময় তিনি আইনব্যবসা ত্যাগ করে চলচ্চিত্র ও নাট্যাভিনয়ে যোগ দেন এবং ক্রমে মঞ্চাভিনেতা, চিত্রাভিনেতা, নাট্যকার ও চিত্র পরিচালক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন।

তুলসী লাহিড়ী যখন চিত্রজগতে প্রবেশ করেন তখন ছিল চলচ্চিত্রের নির্বাক যুগ। ক্রমে সবাক যুগের প্রচলন হয় এবং তিনি পঞ্চাশটিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেন। পঞ্চাশের মন্বন্তরের পটভূমিকায় গ্রামবাংলার দরিদ্র মানুষের অভাব-অনটন, দ্বন্দ্ব-সংঘাত ও তাদের ওপর ধর্মীয় ও সামাজিক নিপীড়নের আলেখ্য অবলম্বনে দুঃখীর ইমান (১৯৪৭) ও ছেঁড়া তার (১৯৫০) নাটক রচনা করে তিনি ব্যাপক সুনাম অর্জন করেন।এ নাটকদুটি তখন বাস্তব জীবনভিত্তিক নাট্যচর্চার গোড়াপত্তনে সহায়তা করে।

তাঁর অন্যান্য নাটকের মধ্যে রয়েছে মায়ের দাবি (১৯৪১), পথিক (১৯৫১), লক্ষ্মীপ্রিয়ার সংসার (১৯৫৯), মণিকাঞ্চন, মায়া-কাজল, চোরাবালি, সর্বহারা প্রভৃতি। ধনতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার অসাড়তা প্রমাণ করার উদ্দেশ্য নিয়েই তিনি নাটকগুলি রচনা করেন। তিনি একটি  অর্কেস্ট্রা দলও গঠন করেছিলেন, যা ওই সময়ে খুব আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। [জিল্লুর রহমান জন]