বন্দ্যোপাধ্যায়, কৃষ্ণধন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''বন্দ্যোপাধ্যায়, কৃষ্ণধন '''(১৮৪৬-১৯০৪)  সঙ্গীতশিল্পী, সঙ্গীত শাস্ত্রকার। উনিশ শতকে যে তিনজন সঙ্গীতজ্ঞের প্রচেষ্টায় বাংলা গানে নবজাগরণ সূচিত হয়, কৃষ্ণধন তাঁদের অন্যতম; অপর দুজন  [[গোস্বামী, ক্ষেত্রমোহন|ক্ষেত্রমোহন গোস্বামী]] এবং শৌরীন্দ্রমোহন ঠাকুর।
'''বন্দ্যোপাধ্যায়, কৃষ্ণধন''' (১৮৪৬-১৯০৪)  সঙ্গীতশিল্পী, সঙ্গীত শাস্ত্রকার। উনিশ শতকে যে তিনজন সঙ্গীতজ্ঞের প্রচেষ্টায় বাংলা গানে নবজাগরণ সূচিত হয়, কৃষ্ণধন তাঁদের অন্যতম; অপর দুজন  [[গোস্বামী, ক্ষেত্রমোহন|ক্ষেত্রমোহন গোস্বামী]] এবং শৌরীন্দ্রমোহন ঠাকুর।


কৃষ্ণধনের জন্ম কলকাতায়। তাঁর পিতার নাম গোবিন্দচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ও মাতার নাম উমাসুন্দরী দেবী। মেধাবী ছাত্র কৃষ্ণধন বৃত্তিসহ এন্ট্রান্স পাস করে হিন্দু কলেজে অধ্যয়ন করেন। কিশোর বয়স থেকেই তাঁর সঙ্গীতশিক্ষা শুরু হয়। বেলগাছিয়া নাট্যমঞ্চে শর্মিষ্ঠা নাটকে অভিনয় করতে গিয়ে তাঁর পরিচয় হয় নাট্যশালার সঙ্গীতাচার্য ক্ষেত্রমোহন গোস্বামীর সঙ্গে। শর্মিষ্ঠার ভূমিকায় অভিনয় করার সময় কৃষ্ণধনের কণ্ঠে গান শুনে ক্ষেত্রমোহন তাঁর মধ্যে সঙ্গীতপ্রতিভা আবিষ্কার করেন। তখন থেকেই প্রায় ছয়-সাত বছর ক্ষেত্রমোহন কণ্ঠসঙ্গীতে তাঁকে তালিম দেন। পরে পাথুরিয়াঘাটার প্রখ্যাত সঙ্গীতগুণী ধ্রুপদী ও বীণাবাদক হরপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিকটও কৃষ্ণধন  [[ধ্রুপদ|ধ্রুপদ]] শিক্ষা করেন।
কৃষ্ণধনের জন্ম কলকাতায়। তাঁর পিতার নাম গোবিন্দচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ও মাতার নাম উমাসুন্দরী দেবী। মেধাবী ছাত্র কৃষ্ণধন বৃত্তিসহ এন্ট্রান্স পাস করে হিন্দু কলেজে অধ্যয়ন করেন। কিশোর বয়স থেকেই তাঁর সঙ্গীতশিক্ষা শুরু হয়। বেলগাছিয়া নাট্যমঞ্চে শর্মিষ্ঠা নাটকে অভিনয় করতে গিয়ে তাঁর পরিচয় হয় নাট্যশালার সঙ্গীতাচার্য ক্ষেত্রমোহন গোস্বামীর সঙ্গে। শর্মিষ্ঠার ভূমিকায় অভিনয় করার সময় কৃষ্ণধনের কণ্ঠে গান শুনে ক্ষেত্রমোহন তাঁর মধ্যে সঙ্গীতপ্রতিভা আবিষ্কার করেন। তখন থেকেই প্রায় ছয়-সাত বছর ক্ষেত্রমোহন কণ্ঠসঙ্গীতে তাঁকে তালিম দেন। পরে পাথুরিয়াঘাটার প্রখ্যাত সঙ্গীতগুণী ধ্রুপদী ও বীণাবাদক হরপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিকটও কৃষ্ণধন  [[ধ্রুপদ|ধ্রুপদ]] শিক্ষা করেন।
১০ নং লাইন: ১০ নং লাইন:
সঙ্গীতের প্রতি সম্পূর্ণ মনোযোগ আকৃষ্ট হওয়ায় কৃষ্ণধন চাকরি ছেড়ে ১৮৭৪ সালে  [[কলকাতা|কলকাতা]] চলে আসেন। নিজের সঙ্গীতসাধনা এবং স্বীয় আদর্শ অনুযায়ী ছাত্রদের কণ্ঠসঙ্গীত ও  [[যন্ত্রসঙ্গীত|যন্ত্রসঙ্গীত]] শিক্ষা দেওয়ার জন্য কলকাতায় তিনি একটি সঙ্গীত শিক্ষায়তন স্থাপন করেন। কিন্তু এতে সফলতা না আসায় কিছুকাল ইন্ডিয়ান  [[ন্যাশনাল থিয়েটার|ন্যাশনাল থিয়েটার]] পরিচালনা করেন। এতেও বিফল হয়ে তিনি পুনরায় কুচবিহার গিয়ে এক্সাইজ অফিসে চাকরি নেন এবং ১৮৯৯ সাল পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করেন। এ সময়ের মধ্যে প্রকাশিত হয় তাঁর বিখ্যাত সঙ্গীতগ্রন্থ গীতসূত্রসার। গ্রন্থটি কুচবিহারের মহারাজ নৃপেন্দ্রনারায়ণ ভূপ বাহাদুরের সহায়তায় ১৮৮৫ ও ১৮৮৬ সালে দুই খন্ডে প্রকাশিত হয়। এটি তাঁর সঙ্গীতসাধনার শ্রেষ্ঠ নিদর্শন। সঙ্গীতজগতে গ্রন্থটি এতই গুরুত্ববহ ছিল যে, কেবল এ বই পড়ার জন্যই বিখ্যাত সঙ্গীতবিদ ভাতখন্ডে বাংলা শিখেছিলেন। পরে ১৮৯৯ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর সর্বশেষ গ্রন্থ হারমোনিয়াম শিক্ষা। এটি  [[হারমোনিয়াম|হারমোনিয়াম]] শিক্ষা বিষয়ে দ্বিতীয় গ্রন্থ। মৃত্যুর আগে কয়েক বছর কৃষ্ণধন আসামের গৌরীপুর রাজ্যের রাজা এবং বিখ্যাত চলচ্চিত্রাভিনেতা প্রমথেশ বড়ুয়ার পিতা প্রভাতচন্দ্র বড়ুয়ার সঙ্গীতশিক্ষকরূপে নিযুক্ত ছিলেন।
সঙ্গীতের প্রতি সম্পূর্ণ মনোযোগ আকৃষ্ট হওয়ায় কৃষ্ণধন চাকরি ছেড়ে ১৮৭৪ সালে  [[কলকাতা|কলকাতা]] চলে আসেন। নিজের সঙ্গীতসাধনা এবং স্বীয় আদর্শ অনুযায়ী ছাত্রদের কণ্ঠসঙ্গীত ও  [[যন্ত্রসঙ্গীত|যন্ত্রসঙ্গীত]] শিক্ষা দেওয়ার জন্য কলকাতায় তিনি একটি সঙ্গীত শিক্ষায়তন স্থাপন করেন। কিন্তু এতে সফলতা না আসায় কিছুকাল ইন্ডিয়ান  [[ন্যাশনাল থিয়েটার|ন্যাশনাল থিয়েটার]] পরিচালনা করেন। এতেও বিফল হয়ে তিনি পুনরায় কুচবিহার গিয়ে এক্সাইজ অফিসে চাকরি নেন এবং ১৮৯৯ সাল পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করেন। এ সময়ের মধ্যে প্রকাশিত হয় তাঁর বিখ্যাত সঙ্গীতগ্রন্থ গীতসূত্রসার। গ্রন্থটি কুচবিহারের মহারাজ নৃপেন্দ্রনারায়ণ ভূপ বাহাদুরের সহায়তায় ১৮৮৫ ও ১৮৮৬ সালে দুই খন্ডে প্রকাশিত হয়। এটি তাঁর সঙ্গীতসাধনার শ্রেষ্ঠ নিদর্শন। সঙ্গীতজগতে গ্রন্থটি এতই গুরুত্ববহ ছিল যে, কেবল এ বই পড়ার জন্যই বিখ্যাত সঙ্গীতবিদ ভাতখন্ডে বাংলা শিখেছিলেন। পরে ১৮৯৯ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর সর্বশেষ গ্রন্থ হারমোনিয়াম শিক্ষা। এটি  [[হারমোনিয়াম|হারমোনিয়াম]] শিক্ষা বিষয়ে দ্বিতীয় গ্রন্থ। মৃত্যুর আগে কয়েক বছর কৃষ্ণধন আসামের গৌরীপুর রাজ্যের রাজা এবং বিখ্যাত চলচ্চিত্রাভিনেতা প্রমথেশ বড়ুয়ার পিতা প্রভাতচন্দ্র বড়ুয়ার সঙ্গীতশিক্ষকরূপে নিযুক্ত ছিলেন।


কৃষ্ণধন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায়োগিক সঙ্গীতে পারদর্শী হলেও সঙ্গীতবিষয়ক তাত্ত্বিক গ্রন্থ রচনায়ই সমধিক খ্যাত ছিলেন। আধুনিক সঙ্গীতশাস্ত্রের জনক কৃষ্ণধন ভারতীয় সঙ্গীতে আন্তর্জাতিক রেখা স্বরলিপি বা ইউনিভার্সেল স্টাফ নোটেশন প্রবর্তনের চেষ্টা করেন। ভারতীয় সঙ্গীতে  [[কোরাস |কোরাস]], ঐকতানিক ও বহুতানিক বাদন, বৃন্দবাদন বা  [[অর্কেস্ট্রা|অর্কেস্ট্রা]], বহুস্বর মিলকরণ বা হারমোনাইজেশন প্রভৃতি বিষয়েও তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। আনুমানিক ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দে তিনিই সর্বপ্রথম এলবার্ট হলে সঙ্গীত সম্পর্কে বক্তৃতা করেন।
কৃষ্ণধন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায়োগিক সঙ্গীতে পারদর্শী হলেও সঙ্গীতবিষয়ক তাত্ত্বিক গ্রন্থ রচনায়ই সমধিক খ্যাত ছিলেন। আধুনিক সঙ্গীতশাস্ত্রের জনক কৃষ্ণধন ভারতীয় সঙ্গীতে আন্তর্জাতিক রেখা স্বরলিপি বা ইউনিভার্সেল স্টাফ নোটেশন প্রবর্তনের চেষ্টা করেন। ভারতীয় সঙ্গীতে  [[কোরাস |কোরাস]], ঐকতানিক ও বহুতানিক বাদন, বৃন্দবাদন বা  [[অর্কেস্ট্রা|অর্কেস্ট্রা]], বহুস্বর মিলকরণ বা হারমোনাইজেশন প্রভৃতি বিষয়েও তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। আনুমানিক ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দে তিনিই সর্বপ্রথম এলবার্ট হলে সঙ্গীত সম্পর্কে বক্তৃতা করেন। [মোবারক হোসেন খান]
 
[মোবারক হোসেন খান]


[[en:Banerjee, Krishnadhan]]
[[en:Banerjee, Krishnadhan]]

০৪:০১, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

বন্দ্যোপাধ্যায়, কৃষ্ণধন (১৮৪৬-১৯০৪)  সঙ্গীতশিল্পী, সঙ্গীত শাস্ত্রকার। উনিশ শতকে যে তিনজন সঙ্গীতজ্ঞের প্রচেষ্টায় বাংলা গানে নবজাগরণ সূচিত হয়, কৃষ্ণধন তাঁদের অন্যতম; অপর দুজন  ক্ষেত্রমোহন গোস্বামী এবং শৌরীন্দ্রমোহন ঠাকুর।

কৃষ্ণধনের জন্ম কলকাতায়। তাঁর পিতার নাম গোবিন্দচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ও মাতার নাম উমাসুন্দরী দেবী। মেধাবী ছাত্র কৃষ্ণধন বৃত্তিসহ এন্ট্রান্স পাস করে হিন্দু কলেজে অধ্যয়ন করেন। কিশোর বয়স থেকেই তাঁর সঙ্গীতশিক্ষা শুরু হয়। বেলগাছিয়া নাট্যমঞ্চে শর্মিষ্ঠা নাটকে অভিনয় করতে গিয়ে তাঁর পরিচয় হয় নাট্যশালার সঙ্গীতাচার্য ক্ষেত্রমোহন গোস্বামীর সঙ্গে। শর্মিষ্ঠার ভূমিকায় অভিনয় করার সময় কৃষ্ণধনের কণ্ঠে গান শুনে ক্ষেত্রমোহন তাঁর মধ্যে সঙ্গীতপ্রতিভা আবিষ্কার করেন। তখন থেকেই প্রায় ছয়-সাত বছর ক্ষেত্রমোহন কণ্ঠসঙ্গীতে তাঁকে তালিম দেন। পরে পাথুরিয়াঘাটার প্রখ্যাত সঙ্গীতগুণী ধ্রুপদী ও বীণাবাদক হরপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিকটও কৃষ্ণধন  ধ্রুপদ শিক্ষা করেন।

১৮৬৫ সালে কৃষ্ণধন রাজ-স্কুলে চাকরি নিয়ে গোয়ালিয়র চলে যান। গোয়ালিয়র ভারতবর্ষের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সঙ্গীতকেন্দ্র। তাই এখানে থাকা অবস্থায় তিনি বিখ্যাত সঙ্গীতগুণীদের সঙ্গীত শোনার এবং তাঁদের নিকট সঙ্গীত শেখার সুযোগ লাভ করেন। গোয়ালিয়রের বিখ্যাত সেতারী ওস্তাদ আহম্মদজান খাঁর নিকট তিনি সেতার শেখেন। কৃষ্ণধন পিয়ানোবাদনও শিখেছিলেন এবং এসবের পাশাপাশি নিজের চেষ্টায় পাশ্চাত্য সঙ্গীত ও স্টাফ নোটেশন শিক্ষা করেন। স্বরলিপির সাহায্যে ভারতীয় সঙ্গীতশিক্ষার সম্ভাব্যতা নিয়ে তিনি নানারূপ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন, কারণ এটাই ছিল তাঁর জীবনের অন্যতম লক্ষ্য।

গোয়ালিয়রে থাকাকালে কৃষ্ণধনের প্রথম গ্রন্থ চীনের ইতিহাস (১৮৬৬) প্রকাশিত হয়। পরের বছর ১৮৬৭ সালে  স্বরলিপি সংক্রান্ত তাঁর প্রথম গ্রন্থ বঙ্গৈকতান প্রকাশিত হয়। গোয়ালিয়রে তিন বছর থেকে কৃষ্ণধন কুচবিহার রাজদরবারে চাকরি নিয়ে কুচবিহার চলে যান এবং সেখানে ১৮৭২ সাল পর্যন্ত অবস্থান করেন। এ সময়ের মধ্যে Hindusthani Airs Arranged For The Piano Forte ও সঙ্গীতশিক্ষা নামে তাঁর আরও দুটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। এ সময় তিনি ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের চাকরি নিয়ে দার্জিলিং চলে যান। সেখানে থাকাকালে তাঁর চতুর্থ সঙ্গীতগ্রন্থ সেতারশিক্ষা (১৮৭৩) প্রকাশিত হয়।

সঙ্গীতের প্রতি সম্পূর্ণ মনোযোগ আকৃষ্ট হওয়ায় কৃষ্ণধন চাকরি ছেড়ে ১৮৭৪ সালে  কলকাতা চলে আসেন। নিজের সঙ্গীতসাধনা এবং স্বীয় আদর্শ অনুযায়ী ছাত্রদের কণ্ঠসঙ্গীত ও  যন্ত্রসঙ্গীত শিক্ষা দেওয়ার জন্য কলকাতায় তিনি একটি সঙ্গীত শিক্ষায়তন স্থাপন করেন। কিন্তু এতে সফলতা না আসায় কিছুকাল ইন্ডিয়ান  ন্যাশনাল থিয়েটার পরিচালনা করেন। এতেও বিফল হয়ে তিনি পুনরায় কুচবিহার গিয়ে এক্সাইজ অফিসে চাকরি নেন এবং ১৮৯৯ সাল পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করেন। এ সময়ের মধ্যে প্রকাশিত হয় তাঁর বিখ্যাত সঙ্গীতগ্রন্থ গীতসূত্রসার। গ্রন্থটি কুচবিহারের মহারাজ নৃপেন্দ্রনারায়ণ ভূপ বাহাদুরের সহায়তায় ১৮৮৫ ও ১৮৮৬ সালে দুই খন্ডে প্রকাশিত হয়। এটি তাঁর সঙ্গীতসাধনার শ্রেষ্ঠ নিদর্শন। সঙ্গীতজগতে গ্রন্থটি এতই গুরুত্ববহ ছিল যে, কেবল এ বই পড়ার জন্যই বিখ্যাত সঙ্গীতবিদ ভাতখন্ডে বাংলা শিখেছিলেন। পরে ১৮৯৯ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর সর্বশেষ গ্রন্থ হারমোনিয়াম শিক্ষা। এটি  হারমোনিয়াম শিক্ষা বিষয়ে দ্বিতীয় গ্রন্থ। মৃত্যুর আগে কয়েক বছর কৃষ্ণধন আসামের গৌরীপুর রাজ্যের রাজা এবং বিখ্যাত চলচ্চিত্রাভিনেতা প্রমথেশ বড়ুয়ার পিতা প্রভাতচন্দ্র বড়ুয়ার সঙ্গীতশিক্ষকরূপে নিযুক্ত ছিলেন।

কৃষ্ণধন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায়োগিক সঙ্গীতে পারদর্শী হলেও সঙ্গীতবিষয়ক তাত্ত্বিক গ্রন্থ রচনায়ই সমধিক খ্যাত ছিলেন। আধুনিক সঙ্গীতশাস্ত্রের জনক কৃষ্ণধন ভারতীয় সঙ্গীতে আন্তর্জাতিক রেখা স্বরলিপি বা ইউনিভার্সেল স্টাফ নোটেশন প্রবর্তনের চেষ্টা করেন। ভারতীয় সঙ্গীতে  কোরাস, ঐকতানিক ও বহুতানিক বাদন, বৃন্দবাদন বা  অর্কেস্ট্রা, বহুস্বর মিলকরণ বা হারমোনাইজেশন প্রভৃতি বিষয়েও তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। আনুমানিক ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দে তিনিই সর্বপ্রথম এলবার্ট হলে সঙ্গীত সম্পর্কে বক্তৃতা করেন। [মোবারক হোসেন খান]