তালেব, খন্দকার আবু: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(fix: image tag)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
(একই ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত ২টি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না)
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:Banglapedia]]
[[Category:Banglapedia]]
'''তালেব'''''', ''''''খন্দকার আবু '''(১৯২১-১৯৭১)  সাংবাদিক, শহীদ বুদ্ধিজীবী। ১৯২১ সালের ২৩ মার্চ সাতক্ষীরা জেলার সাতানী গ্রামে তাঁর জন্ম। তাঁর পিতা খন্দকার আবদুর রউফ এবং মাতা রোকেয়া খাতুন। ১৯৪৪ সালে তিনি সাতক্ষীরা পি.এন হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৪৬ সালে কলকাতা রিপন কলেজ (বর্তমানে সুরেন্দ্রনাথ কলেজ) থেকে আইএ পাশ করেন। আবু তালেব ১৯৪৮ সালে বিকম এবং ১৯৫৬ সালে এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন।
[[Image:TalebKhondekarAbu.jpg|thumb|400px|right|খন্দকার আবু তালেব]]
'''তালেব', খন্দকার আবু''' (১৯২১-১৯৭১)  সাংবাদিক, শহীদ বুদ্ধিজীবী। ১৯২১ সালের ২৩ মার্চ সাতক্ষীরা জেলার সাতানী গ্রামে তাঁর জন্ম। তাঁর পিতা খন্দকার আবদুর রউফ এবং মাতা রোকেয়া খাতুন। ১৯৪৪ সালে তিনি সাতক্ষীরা পি.এন হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৪৬ সালে কলকাতা রিপন কলেজ (বর্তমানে সুরেন্দ্রনাথ কলেজ) থেকে আই.এ পাশ করেন। আবু তালেব ১৯৪৮ সালে বি.কম এবং ১৯৫৬ সালে এল.এল.বি ডিগ্রি লাভ করেন।


খন্দকার আবু তালেব কলকাতায় তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর তিনি ঢাকায় এসে সাংবাদিকতায় আত্মনিয়োগ করেন এবং দৈনিক [[১০০১৪৭|আজাদ]], দৈনিক ইনসাফ, পাকিস্তান অবজারভার, দৈনিক [[১০৫৭৫২|সংবাদ]]'','' [[১০০৫০৯|ইত্তেফাক]] ও পয়গাম প্রভৃতি পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন। ১৯৬১-৬২ সালে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত তিনি দৈনিক ইত্তেফাকের চিফ রিপোর্টারের দায়িত্ব পালন করেন।
খন্দকার আবু তালেব কলকাতায় তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর তিনি ঢাকায় এসে সাংবাদিকতায় আত্মনিয়োগ করেন এবং দৈনিক [[আজাদ, দৈনিক|আজাদ]], দৈনিক ইনসাফ, পাকিস্তান অবজারভার, দৈনিক [[সংবাদ, দৈনিক|সংবাদ]], [[ইত্তেফাক, দৈনিক|ইত্তেফাক]] ও পয়গাম প্রভৃতি পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন। ১৯৬১-৬২ সালে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত তিনি দৈনিক ইত্তেফাকের চিফ রিপোর্টারের দায়িত্ব পালন করেন।


রিপোর্টিংয়ের পাশাপাশি খন্দকার আবু তালেব ‘লুব্ধক’ ছদ্মনামে খোশনসিব, দে গরুর গা ধুইয়ে, ভোট রঙ্গ প্রভৃতি জনপ্রিয় কলাম লিখতেন। ১৯৬৬ সালে সরকার ইত্তেফাক পত্রিকা বন্ধ করে দিলে তিনি ব্যবস্থাপক পরিচালক হিসেবে আবদুল গাফফার চৌধুরী সম্পাদিত দৈনিক সন্ধ্যা আওয়াজ পত্রিকা প্রকাশ করেন। এ পত্রিকায় তিনি কাগজের মানুষ শীর্ষক ধারাবাহিক নিবন্ধ প্রকাশের মাধ্যমে সাংবাদিকতা পেশার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। সন্ধ্যা আওয়াজ পত্রিকাতেই সর্বপ্রথম ৬-দফার মূল ইংরেজি ভাষ্যের বাংলা অনুবাদ প্রকাশিত হয় এবং তিনি ছিলেন এর অনুবাদক। ১৯৬৯ সালে তিনি বিএনআর অ্যাডভাইজিং ফার্মে আইনজীবী হিসেবে যোগদান করেন। একই সাথে তিনি দৈনিক পয়গাম পত্রিকার ফিচার এডিটরের দায়িত্ব পালন করেন এবং অন্যান্য কয়েকটি পত্রিকার কোর্ট রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেন।  
রিপোর্টিংয়ের পাশাপাশি খন্দকার আবু তালেব ‘লুব্ধক’ ছদ্মনামে খোশনসিব, দে গরুর গা ধুইয়ে, ভোট রঙ্গ প্রভৃতি জনপ্রিয় কলাম লিখতেন। ১৯৬৬ সালে সরকার ইত্তেফাক পত্রিকা বন্ধ করে দিলে তিনি ব্যবস্থাপক পরিচালক হিসেবে আবদুল গাফফার চৌধুরী সম্পাদিত দৈনিক সন্ধ্যা আওয়াজ পত্রিকা প্রকাশ করেন। এ পত্রিকায় তিনি কাগজের মানুষ শীর্ষক ধারাবাহিক নিবন্ধ প্রকাশের মাধ্যমে সাংবাদিকতা পেশার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। সন্ধ্যা আওয়াজ পত্রিকাতেই সর্বপ্রথম ৬-দফার মূল ইংরেজি ভাষ্যের বাংলা অনুবাদ প্রকাশিত হয় এবং তিনি ছিলেন এর অনুবাদক। ১৯৬৯ সালে তিনি বিএনআর অ্যাডভাইজিং ফার্মে আইনজীবী হিসেবে যোগদান করেন। একই সাথে তিনি দৈনিক পয়গাম পত্রিকার ফিচার এডিটরের দায়িত্ব পালন করেন এবং অন্যান্য কয়েকটি পত্রিকার কোর্ট রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেন।  
<nowiki>#</nowiki> #[[Image:তালেব, খন্দকার আবু_html_88407781.png]]
[[Image:TalebKhondekarAbu.jpg|thumb|400px]]
# #খন্দকার আবু তালেব


খন্দকার আবু তালেব ১৯৭১ সালের অসহযোগ আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক ছিলেন। অপারেশন সার্চলাইট শুরু হলে ২৯ মার্চ মিরপুরের বিহারিদের সহায়তায় পাকসেনারা তাঁকে ধরে নিয়ে যায়। পরে মিরপুর বধ্যভূমিতে তাঁর মৃতদেহ পাওয়া যায়। ১৯৯৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ডাকবিভাগ তাঁর নামে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করে।  [আরিফা সিদ্দিকা]
খন্দকার আবু তালেব ১৯৭১ সালের অসহযোগ আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক ছিলেন। অপারেশন সার্চলাইট শুরু হলে ২৯ মার্চ মিরপুরের বিহারিদের সহায়তায় পাকসেনারা তাঁকে ধরে নিয়ে যায়। পরে মিরপুর বধ্যভূমিতে তাঁর মৃতদেহ পাওয়া যায়। ১৯৯৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ডাকবিভাগ তাঁর নামে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করে।  [আরিফা সিদ্দিকা]
<!-- imported from file: তালেব, খন্দকার আবু.html-->


[[en:Taleb, Khondakar Abu]]
[[en:Taleb, Khondakar Abu]]

০৯:১১, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

খন্দকার আবু তালেব

তালেব', খন্দকার আবু (১৯২১-১৯৭১)  সাংবাদিক, শহীদ বুদ্ধিজীবী। ১৯২১ সালের ২৩ মার্চ সাতক্ষীরা জেলার সাতানী গ্রামে তাঁর জন্ম। তাঁর পিতা খন্দকার আবদুর রউফ এবং মাতা রোকেয়া খাতুন। ১৯৪৪ সালে তিনি সাতক্ষীরা পি.এন হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৪৬ সালে কলকাতা রিপন কলেজ (বর্তমানে সুরেন্দ্রনাথ কলেজ) থেকে আই.এ পাশ করেন। আবু তালেব ১৯৪৮ সালে বি.কম এবং ১৯৫৬ সালে এল.এল.বি ডিগ্রি লাভ করেন।

খন্দকার আবু তালেব কলকাতায় তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর তিনি ঢাকায় এসে সাংবাদিকতায় আত্মনিয়োগ করেন এবং দৈনিক আজাদ, দৈনিক ইনসাফ, পাকিস্তান অবজারভার, দৈনিক সংবাদ, ইত্তেফাক ও পয়গাম প্রভৃতি পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন। ১৯৬১-৬২ সালে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত তিনি দৈনিক ইত্তেফাকের চিফ রিপোর্টারের দায়িত্ব পালন করেন।

রিপোর্টিংয়ের পাশাপাশি খন্দকার আবু তালেব ‘লুব্ধক’ ছদ্মনামে খোশনসিব, দে গরুর গা ধুইয়ে, ভোট রঙ্গ প্রভৃতি জনপ্রিয় কলাম লিখতেন। ১৯৬৬ সালে সরকার ইত্তেফাক পত্রিকা বন্ধ করে দিলে তিনি ব্যবস্থাপক পরিচালক হিসেবে আবদুল গাফফার চৌধুরী সম্পাদিত দৈনিক সন্ধ্যা আওয়াজ পত্রিকা প্রকাশ করেন। এ পত্রিকায় তিনি কাগজের মানুষ শীর্ষক ধারাবাহিক নিবন্ধ প্রকাশের মাধ্যমে সাংবাদিকতা পেশার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। সন্ধ্যা আওয়াজ পত্রিকাতেই সর্বপ্রথম ৬-দফার মূল ইংরেজি ভাষ্যের বাংলা অনুবাদ প্রকাশিত হয় এবং তিনি ছিলেন এর অনুবাদক। ১৯৬৯ সালে তিনি বিএনআর অ্যাডভাইজিং ফার্মে আইনজীবী হিসেবে যোগদান করেন। একই সাথে তিনি দৈনিক পয়গাম পত্রিকার ফিচার এডিটরের দায়িত্ব পালন করেন এবং অন্যান্য কয়েকটি পত্রিকার কোর্ট রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেন।

খন্দকার আবু তালেব ১৯৭১ সালের অসহযোগ আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক ছিলেন। অপারেশন সার্চলাইট শুরু হলে ২৯ মার্চ মিরপুরের বিহারিদের সহায়তায় পাকসেনারা তাঁকে ধরে নিয়ে যায়। পরে মিরপুর বধ্যভূমিতে তাঁর মৃতদেহ পাওয়া যায়। ১৯৯৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ডাকবিভাগ তাঁর নামে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করে।  [আরিফা সিদ্দিকা]