আক্কেলপুর উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
(২ জন ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত ২টি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না)
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''আক্কেলপুর উপজেলা''' ([[জয়পুরহাট জেলা|জয়পুরহাট জেলা]])  আয়তন: ১৩৯.৪৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৫১´ থেকে ২৫°০৩´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫৯´ থেকে ৮৯°০৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে [[জয়পুরহাট সদর উপজেলা|জয়পুরহাট সদর]] ও [[ক্ষেতলাল উপজেলা|ক্ষেতলাল]] উপজেলা, দক্ষিণে [[আদমদীঘি উপজেলা|আদমদীঘি]] উপজেলা, পূর্বে [[দুপচাঁচিয়া উপজেলা|দুপচাঁচিয়া]] উপজেলা, পশ্চিমে [[নওগাঁ সদর উপজেলা|নওগাঁ সদর]] ও [[বদলগাছী উপজেলা|বদলগাছী]] উপজেলা।
'''আক্কেলপুর উপজেলা''' ([[জয়পুরহাট জেলা|জয়পুরহাট জেলা]])  আয়তন: ১৫৪.৯৪ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৫১´ থেকে ২৫°০৩´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫৯´ থেকে ৮৯°০৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে [[জয়পুরহাট সদর উপজেলা|জয়পুরহাট সদর]] ও [[ক্ষেতলাল উপজেলা|ক্ষেতলাল]] উপজেলা, দক্ষিণে [[আদমদীঘি উপজেলা|আদমদীঘি]] উপজেলা, পূর্বে [[দুপচাঁচিয়া উপজেলা|দুপচাঁচিয়া]] উপজেলা, পশ্চিমে [[নওগাঁ সদর উপজেলা|নওগাঁ সদর]] ও [[বদলগাছী উপজেলা|বদলগাছী]] উপজেলা।


''জনসংখ্যা'' ১২৮৯৫২; পুরুষ ৬৫২৬৯, মহিলা ৬৩৬৮৩। মুসলিম ১২০১২৯, হিন্দু ৭৬৫৮, বৌদ্ধ ২৪ এবং অন্যান্য ১১৪১। এ উপজেলায় [[সাঁওতাল|সাঁওতাল]], [[মুন্ডা|মুন্ডা]] প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
''জনসংখ্যা'' ১৩৭৬১৯; পুরুষ ৬৮৩৩৩, মহিলা ৬৯২৮৬। মুসলমান ১২৮৩৭১, হিন্দু ৮৭১৮, খ্রিস্টান ৫ এবং অন্যান্য ৫২৫। এ উপজেলায় [[সাঁওতাল|সাঁওতাল]], [[মুন্ডা|মুন্ডা]] প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।


''জলাশয়'' প্রধান নদী: তুলসিগঙ্গা, চিরি ও [[নাগর নদী|নাগর]] নদী।
''জলাশয়'' প্রধান নদী: তুলসিগঙ্গা, চিরি ও [[নাগর নদী|নাগর]] নদী।
১৫ নং লাইন: ১৫ নং লাইন:
|-
|-
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
|-  
|-  
| ১ || ৫ || ১১৬  || ১৪৫ || ২১৬৮৩  || ১০৭২৬৯  || ৯২৫  || ৫৭.৬  || ৫৩.৬
| ১ || ৫ || ১০৩ || ১৪৫ || ২৪২২৭ || ১১৩৩৯২ || ৮৮৮ || ৬৩.|| ৫৫.৬
 
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
২৬ নং লাইন: ২৩ নং লাইন:
|-  
|-  
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড  || মহল্লা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড  || মহল্লা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-  
|-  
| ১৫.৯৬  || ৯ || ১৫ || ২১৬৮৩  || ১৩৫৯  || ৫৭.
| ১৫.৯৯ || ৯ || ১৫ || ২৪২২৭ || ১৫১৫ || ৬৩.
 
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
৪০ নং লাইন: ৩৪ নং লাইন:
| পুরুষ  || মহিলা
| পুরুষ  || মহিলা
|-   
|-   
| গোপিনাথপুর ১৫ || ৬১৫১  || ১১০৫৫ || ১০৯৮১  || ৫৫.৬৩
| গোপিনাথপুর ১৫ || ৬৫১৩ || ১১৬২৬ || ১১৬৯২ || ৬০.
 
|-
|-  
| তিলকপুর ৭৯ || ৭১১০ || ১১৯০২ || ১২৩১৬ || ৫৭.
| তিলকপুর ৭৯ || ৭১১২  || ১১৫৫৬ || ১১৩০৪  || ৪৭.৬৫
|-
 
| রায়কালি ৩১ || ৭০৪১ || ১১৫২৩ || ১১৯৫২ || ৫০.
|-  
|-
| রায়কালি ৩১ || ৭০৪০  || ১১০৮১ || ১০৮৭৩  || ৪৯.৪৭
| রুকিন্দিপুর ৪৭ || ৫৪৮২ || ১৩০৯৭ || ১৩০১৮ || ৫৫.
 
|-
|-  
| সোনামুখী ৬৩ || ৪৩৭২ || ৮০৫৬ || ৮২১০ || ৫৫.
| রুকিন্দিপুর ৪৭ || ৬৯৫৫  || ১২৭৬৫ || ১২৩০৮  || ৫৯.৭২
 
|-  
| সোনামুখী ৬৩ || ৬৮৪৬  || ৭৫৭২ || ৭৭৭৪  || ৫৫.৩৭
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:AkkelpurUpazila.jpg|thumb|400px|right]]
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' রামধন রাজার বাড়ি (রামশালা); মুকুট রাজার পরিখা (আমট্ট); শ্রী শ্রী গোপিনাথ জিউর মন্দির (পঞ্চদশ শতাব্দী, গোপিনাথপুর); উপজেলার রায়কালী গ্রামে কুষান আমলের একটি মুদ্রা ও দেওড়া গ্রামে একটি বৃহৎ সূর্যমূুর্তি ও কয়েকটি বিষ্ণু মূর্তি পাওয়া গেছে।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' রামধন রাজার বাড়ি (রামশালা); মুকুট রাজার পরিখা (আমট্ট); শ্রী শ্রী গোপিনাথ জিউর মন্দির (পঞ্চদশ শতাব্দী, গোপিনাথপুর); উপজেলার রায়কালী গ্রামে কুষান আমলের একটি মুদ্রা ও দেওড়া গ্রামে একটি বৃহৎ সূর্যমূুর্তি ও কয়েকটি বিষ্ণু মূর্তি পাওয়া গেছে।


''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধা কানপুর গ্রামে রাজাকার ও আলবদরদের হাতে আটক হয়। এ সময় একজন মুক্তিযোদ্ধা রাজাকারদের গুলিতে শহীদ হন। রাজাকার আলবদর বাহিনী আটককৃত মুক্তিযোদ্ধাদের আক্কেলপুর পাকবাহিনীর হাতে সোপর্দ করে। একই দিনে আক্কেলপুর রেলওয়ে স্টেশনের পশ্চিমে আমট্ট গ্রামের পাশে পাকবাহিনী তাদের হত্যা করে মৃতদেহ মাটিচাপা দেয়। অক্টোবর মাসে মুক্তিযোদ্ধা কাজী ফরমুজুল হক (পান্না) তার বাহিনী (প্রায় ১৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা) নিয়ে কানুপুর গ্রাম ঘেরাও করে এবং দালালদের মধ্যে ৬ জনকে আটক ও হত্যা করে। ১৯৭১ সালের মে মাসে পাকবাহিনী আক্কেলপুরে ১৭ জন গাড়োয়ানকে পিটিয়ে হত্যা করে।
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধা কানপুর গ্রামে রাজাকার ও আলবদরদের হাতে আটক হয়। এ সময় একজন মুক্তিযোদ্ধা রাজাকারদের গুলিতে শহীদ হন। রাজাকার আলবদর বাহিনী আটককৃত মুক্তিযোদ্ধাদের আক্কেলপুর পাকবাহিনীর হাতে সোপর্দ করে। একই দিনে আক্কেলপুর রেলওয়ে স্টেশনের পশ্চিমে আমট্ট গ্রামের পাশে পাকবাহিনী তাদের হত্যা করে মৃতদেহ মাটিচাপা দেয়। অক্টোবর মাসে মুক্তিযোদ্ধা কাজী ফরমুজুল হক (পান্না) তার বাহিনী (প্রায় ১৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা) নিয়ে কানুপুর গ্রাম ঘেরাও করে এবং দালালদের মধ্যে ৬ জনকে আটক ও হত্যা করে। ১৯৭১ সালের মে মাসে পাকবাহিনী আক্কেলপুরে ১৭ জন গাড়োয়ানকে পিটিয়ে হত্যা করে। উপজেলার সুজালাদীঘি-অর্জুনগাড়ী মোড়, কাশিড়া ও নবাবগঞ্জ ঘাটে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। আক্কেলপুর আমট্ট গ্রামের পাশে, আক্কেলপুর সিনিয়র মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায় এবং রেললাইনের পশ্চিমপাশে ৩টি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে; উপজেলায় ১টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' গণকবর ৩ (আক্কেলপুর আমট্ট গ্রামের পাশে, আক্কেলপুর সিনিয়র মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায় এবং রেললাইনের পশ্চিমপাশে); স্মৃতিস্তম্ভ ১।
''বিস্তারিত দেখুন'' আক্কেল উপজেলা, ''বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ'', বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৫৪.%; পুরুষ ৫৯.%, মহিলা ৪৯.%। কলেজ ৫, কারিগরী কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬৮, মাদ্রাসা ১৩, এতিমখানা ৪। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সোনামুখী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৬), জামালগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৪), আক্কেলপুর এফ ইউ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৮)।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৫৬.%; পুরুষ ৬০.%, মহিলা ৫৩.%। কলেজ ৫, কারিগরী কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬৮, মাদ্রাসা ১৩, এতিমখানা ৪। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সোনামুখী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৬), জামালগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৪), আক্কেলপুর এফ ইউ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৮)।


''পত্র-পত্রিকা''  জয়পুর বার্তা (সাপ্তাহিক)।
''পত্র-পত্রিকা''  জয়পুর বার্তা (সাপ্তাহিক)।
৮০ নং লাইন: ৭১ নং লাইন:
গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার   গবাদিপশু ১৬, হাঁস-মুরগি ৫৬।
গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার   গবাদিপশু ১৬, হাঁস-মুরগি ৫৬।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৬৯ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৮৯ কিমি; নৌপথ .৭৭ নটিক্যাল মাইল, রেলপথ ১০ কিমি।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৯৪.০২ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২৬.৭১ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৪৩.৪৩ কিমি; নৌপথ ৩৬৭.৭ কিমি; রেলপথ ২১ কিমি।
 
[[Image:AkkelpurUpazila.jpg|thumb|400px|right]]


''কুটিরশিল্প'' তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, বেতের কাজ, বাuঁশর কাজ, কাঠের কাজ।
''কুটিরশিল্প'' তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, বেতের কাজ, বাuঁশর কাজ, কাঠের কাজ।
৯০ নং লাইন: ৭৯ নং লাইন:
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''   পাট, কলা, পিঁয়াজ, রসুন।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''   পাট, কলা, পিঁয়াজ, রসুন।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৬.০৪% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৫৪.% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।  


''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৪.৬৭%, পুকুর .১৬%, ট্যাপ ০.৪৩% এবং অন্যান্য ৪.৭৪%।
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৬.০%, ট্যাপ ০.% এবং অন্যান্য ৩.৪%।  


''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ২১.৬৭% (গ্রামে ৩৮.১৩% এবং শহরে ৪২.০৩%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৭.৩২% (গ্রামে ৫৭.২৪% এবং শহরে ৫৫.৩০%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৫১.০১% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৪৩.% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৯.% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১৬.% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৫, দাতব্য চিকিৎসালয় ২, ক্লিনিক ১।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৫, দাতব্য চিকিৎসালয় ২, ক্লিনিক ১।


''প্রাকৃতিক দুর্যোগ'' ১৮৬৬ সালে খরায় ফসল নষ্ট হয়ে ব্যাপক খাদ্যাভাব দেখা দেয়। ১৯২২ সালে এ এলাকায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। এতে ব্যাপক প্রানহাণি ঘটে এবং ৯০% ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এ সময় দেশবন্ধু [[দাশ, চিত্তরঞ্জন|চিত্তরঞ্জন দাস]], [[ভাসানী, মওলানা আবদুল হামিদ খান|মওলানা ভাসানী]] ও [[সোহ্রাওয়ার্দী, হোসেন শহীদ|হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী]]সহ বিশিষ্ট নেতৃবর্গ এলাকা পরিদর্শনে আসেন। ১৯৪৩ সালের মন্বন্তরে খাদ্যের অভাবে এবং কলেরা ও বসন্ত রোগে প্রায় ৩০ হাজার লোক মারা যায়।
''প্রাকৃতিক দুর্যোগ'' ১৮৬৬ সালে খরায় ফসল নষ্ট হয়ে ব্যাপক খাদ্যাভাব দেখা দেয়। ১৯২২ সালে এ এলাকায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। এতে ব্যাপক প্রানহাণি ঘটে এবং ৯০% ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এ সময় দেশবন্ধু [[দাশ, চিত্তরঞ্জন|চিত্তরঞ্জন দাস]], [[ভাসানী, মওলানা আবদুল হামিদ খান|মওলানা ভাসানী]] ও [[সোহ্‌রাওয়ার্দী, হোসেন শহীদ|হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী]]সহ বিশিষ্ট নেতৃবর্গ এলাকা পরিদর্শনে আসেন। ১৯৪৩ সালের মন্বন্তরে খাদ্যের অভাবে এবং কলেরা ও বসন্ত রোগে প্রায় ৩০ হাজার লোক মারা যায়।


''এনজিও'' [[ব্র্যাক|ব্র্যাক]], [[আসা|আশা]], [[ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ|ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ]], সৃজনী সংঘ, অর্গানাইজেশন ফর স্যোসাল ডেভেলপমেন্ট এ্যান্ড রিকনস্ট্রাকশন (ওএসডিআর), বাংলাদেশ এনভাইরনমেন্টাল অ্যান্ড সোস্যাল টাস্ক (বেস্ট), দি হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন।  [শাহনাজ পারভীন]
''এনজিও'' [[ব্র্যাক|ব্র্যাক]], [[আসা|আশা]], [[ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ|ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ]], সৃজনী সংঘ, অর্গানাইজেশন ফর স্যোসাল ডেভেলপমেন্ট এ্যান্ড রিকনস্ট্রাকশন (ওএসডিআর), বাংলাদেশ এনভাইরনমেন্টাল অ্যান্ড সোস্যাল টাস্ক (বেস্ট), দি হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন।  [শাহনাজ পারভীন]


'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১,বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; আক্কেলপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; আক্কেলপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Akkelpur Upazila]]
[[en:Akkelpur Upazila]]

১৮:০৬, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

আক্কেলপুর উপজেলা (জয়পুরহাট জেলা)  আয়তন: ১৫৪.৯৪ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৫১´ থেকে ২৫°০৩´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫৯´ থেকে ৮৯°০৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে জয়পুরহাট সদরক্ষেতলাল উপজেলা, দক্ষিণে আদমদীঘি উপজেলা, পূর্বে দুপচাঁচিয়া উপজেলা, পশ্চিমে নওগাঁ সদরবদলগাছী উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৩৭৬১৯; পুরুষ ৬৮৩৩৩, মহিলা ৬৯২৮৬। মুসলমান ১২৮৩৭১, হিন্দু ৮৭১৮, খ্রিস্টান ৫ এবং অন্যান্য ৫২৫। এ উপজেলায় সাঁওতাল, মুন্ডা প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

জলাশয় প্রধান নদী: তুলসিগঙ্গা, চিরি ও নাগর নদী।

প্রশাসন আক্কেলপুর থানা গঠিত হয় ১৯৭২ সালে। ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৩ সালে আক্কেলপুর থানা উপজেলায় রূপান্তরিত হয়।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১০৩ ১৪৫ ২৪২২৭ ১১৩৩৯২ ৮৮৮ ৬৩.২ ৫৫.৬
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১৫.৯৯ ১৫ ২৪২২৭ ১৫১৫ ৬৩.২
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
গোপিনাথপুর ১৫ ৬৫১৩ ১১৬২৬ ১১৬৯২ ৬০.০
তিলকপুর ৭৯ ৭১১০ ১১৯০২ ১২৩১৬ ৫৭.২
রায়কালি ৩১ ৭০৪১ ১১৫২৩ ১১৯৫২ ৫০.২
রুকিন্দিপুর ৪৭ ৫৪৮২ ১৩০৯৭ ১৩০১৮ ৫৫.০
সোনামুখী ৬৩ ৪৩৭২ ৮০৫৬ ৮২১০ ৫৫.৬

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ রামধন রাজার বাড়ি (রামশালা); মুকুট রাজার পরিখা (আমট্ট); শ্রী শ্রী গোপিনাথ জিউর মন্দির (পঞ্চদশ শতাব্দী, গোপিনাথপুর); উপজেলার রায়কালী গ্রামে কুষান আমলের একটি মুদ্রা ও দেওড়া গ্রামে একটি বৃহৎ সূর্যমূুর্তি ও কয়েকটি বিষ্ণু মূর্তি পাওয়া গেছে।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধা কানপুর গ্রামে রাজাকার ও আলবদরদের হাতে আটক হয়। এ সময় একজন মুক্তিযোদ্ধা রাজাকারদের গুলিতে শহীদ হন। রাজাকার আলবদর বাহিনী আটককৃত মুক্তিযোদ্ধাদের আক্কেলপুর পাকবাহিনীর হাতে সোপর্দ করে। একই দিনে আক্কেলপুর রেলওয়ে স্টেশনের পশ্চিমে আমট্ট গ্রামের পাশে পাকবাহিনী তাদের হত্যা করে মৃতদেহ মাটিচাপা দেয়। অক্টোবর মাসে মুক্তিযোদ্ধা কাজী ফরমুজুল হক (পান্না) তার বাহিনী (প্রায় ১৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা) নিয়ে কানুপুর গ্রাম ঘেরাও করে এবং দালালদের মধ্যে ৬ জনকে আটক ও হত্যা করে। ১৯৭১ সালের মে মাসে পাকবাহিনী আক্কেলপুরে ১৭ জন গাড়োয়ানকে পিটিয়ে হত্যা করে। উপজেলার সুজালাদীঘি-অর্জুনগাড়ী মোড়, কাশিড়া ও নবাবগঞ্জ ঘাটে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। আক্কেলপুর আমট্ট গ্রামের পাশে, আক্কেলপুর সিনিয়র মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায় এবং রেললাইনের পশ্চিমপাশে ৩টি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে; উপজেলায় ১টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন আক্কেল উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৬.৯%; পুরুষ ৬০.৬%, মহিলা ৫৩.৪%। কলেজ ৫, কারিগরী কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৬৮, মাদ্রাসা ১৩, এতিমখানা ৪। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সোনামুখী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৬), জামালগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৪), আক্কেলপুর এফ ইউ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৮)।

পত্র-পত্রিকা  জয়পুর বার্তা (সাপ্তাহিক)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ২২।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৬.০৮%, অকৃষি শ্রমিক ১.৮৫%, ব্যবসা ১৪.৬৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.১২%, চাকরি ৪.৩৪%, নির্মাণ ১.২৬%, ধর্মীয় সেবা ০.২১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৬৮% এবং অন্যান্য ৭.৮১%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬১.৭৯%, ভূমিহীন ৩৮.২১%। শহরে ৪৮.৬৩% এবং গ্রামে ৬৪.৪৩% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, সরিষা, আলু, পেঁয়াজ, রসুন ও শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি কাউন, তিসি, তিল।

প্রধান ফল-ফলাদিব আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, পেঁপে, তাল।

গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার   গবাদিপশু ১৬, হাঁস-মুরগি ৫৬।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৯৪.০২ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২৬.৭১ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৪৩.৪৩ কিমি; নৌপথ ৩৬৭.৭ কিমি; রেলপথ ২১ কিমি।

কুটিরশিল্প তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, বেতের কাজ, বাuঁশর কাজ, কাঠের কাজ।

হাটবাজার মেলা  হাটবাজার ২০। আক্কেলপুর হাট, জামালগঞ্জ হাট, গোপিনাথপুর হাট, তিলকপুর হাট, রায়কালি হাট, সোনামুখী হাট এবং দোল পূর্ণিমার মেলা (গোপিনাথপুর) ও রুকিন্দিপুর মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   পাট, কলা, পিঁয়াজ, রসুন।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৫৪.৫% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৬.০%, ট্যাপ ০.৬% এবং অন্যান্য ৩.৪%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৪৩.৯% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৯.৩% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১৬.৮% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৫, দাতব্য চিকিৎসালয় ২, ক্লিনিক ১।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৮৬৬ সালে খরায় ফসল নষ্ট হয়ে ব্যাপক খাদ্যাভাব দেখা দেয়। ১৯২২ সালে এ এলাকায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। এতে ব্যাপক প্রানহাণি ঘটে এবং ৯০% ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এ সময় দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস, মওলানা ভাসানীহোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীসহ বিশিষ্ট নেতৃবর্গ এলাকা পরিদর্শনে আসেন। ১৯৪৩ সালের মন্বন্তরে খাদ্যের অভাবে এবং কলেরা ও বসন্ত রোগে প্রায় ৩০ হাজার লোক মারা যায়।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ, সৃজনী সংঘ, অর্গানাইজেশন ফর স্যোসাল ডেভেলপমেন্ট এ্যান্ড রিকনস্ট্রাকশন (ওএসডিআর), বাংলাদেশ এনভাইরনমেন্টাল অ্যান্ড সোস্যাল টাস্ক (বেস্ট), দি হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন।  [শাহনাজ পারভীন]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; আক্কেলপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।