ফিরুজশাহ তুগলক
ফিরুজশাহ তুগলক দিল্লির সুলতান (১৩৫১ থেকে ১৩৮৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত)। মুহম্মদ বিন তুগলক এর মৃত্যুর পর সংশয় ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে অভিজাতগণ ফিরুজশাহ তুগলককে পরবর্তী সুলতান হিসেবে মনোনীত করেন।
ফিরুজশাহ ছিলেন অত্যন্ত ধার্মিক ও শান্তিপ্রিয় শাসক। ফলে স্বভাবতই ছিলেন দুর্বল প্রকৃতির এবং তাঁর মধ্যে সামরিক উদ্দীপনার অভাব ছিল। দীর্ঘ রাজত্বকালে তিনি বড় রকমের কোন যুদ্ধবিগ্রহ ও রাজ্যবিজয় সম্পন্ন করেননি। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি দুবার বাংলা আক্রমণ করেন। তাঁর প্রথম অভিযান ছিল বাংলার সুলতান শামসুদ্দীন ইলিয়াস শাহের বিরুদ্ধে। ইলিয়াস শাহ উড়িষ্যা ও ত্রিহুত থেকে কর আদায় এবং বেনারস পর্যন্ত অগ্রসর হলে ফিরুজশাহের বিরাগভাজন হন। ১৩৫৩-৫৪ খ্রিস্টাব্দে ফিরুজশাহ বাংলা অভিমুখে অগ্রসর হন। বাংলার সুলতান একডালা দুর্গে আশ্রয় গ্রহণ করেন। ফিরুজশাহ দুর্গটি দখল করতে ব্যর্থ হন এবং তার বাহিনীসহ দিল্লিতে ফিরে যান।
ইলিয়াস শাহের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র সিকান্দর শাহ সিংহাসনে আরোহণ করেন। জাফর খানকে সহায়তা করার অজুহাতে ফিরুজশাহ ১৩৫৯-৬০ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয়বার বাংলায় অভিযান করেন। কিন্তু সিকান্দরও তাঁর পিতার ন্যায় একডালা দুর্গে আশ্রয় নেন। ফিরুজশাহের বাহিনী কিছুকাল দুর্গটি অবরোধ করে রাখে। দুর্গ অধিকারে ব্যর্থ হয়ে ফিরুজশাহ শেষ পর্যন্ত সিকান্দর শাহের সাথে শান্তিচুক্তি সম্পাদন করে দিল্লিতে ফিরে যান। প্রকৃতপক্ষে ফিরুজশাহ বাংলার স্বাধীনতা স্বীকার করে নেন। [আবু তাহের]