কূপ
কূপ (Well) ভূত্বকে সিলিন্ডার আকৃতির দীর্ঘ গহবর যার মুখের ব্যাস এর দৈর্ঘ্যের চেয়ে অনেক অনেক ভাগ কম। কূপের সূচনা অংশকে মুখ বা গলা বা কূপের মাথা বলে; সিলিন্ডার আকৃতির গাত্রকে দেয়াল বা খনিখাদ এবং শেষ প্রান্তকে নিমতলা বলে। অক্ষরেখা বরাবর মুখ থেকে তলার বিস্তৃতিকে কূপের দৈর্ঘ্য এবং শীর্ষস্থ তলে অক্ষরেখার অভিক্ষেপকে এর গভীরতা বলে। একটি কূপের ব্যাস ও গভীরতা এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের কারণে ভিন্ন ভিন্ন মাপের হয়। কূপ বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে। যেমন, স্ট্র্যাটিগ্রাফিক, আউটপোস্ট, পরীক্ষামূলক, পরিদর্শনমূলক, অনুসন্ধানীমূলক, উৎপাদনশীল, পর্যবেক্ষণ, অভীক্ষণ, ইনজেকশন, বিশেষ কূপ, অনিশ্চিত কূপ ইত্যাদি। কূপ খননের জন্য বিভিন্ন ধরনের যান্ত্রিক কৌশল, সাধারণভাবে যা ‘ড্রিলিং রিগ’ হিসেবে পরিচিত তা ব্যবহার করা হয়।
ভূতাত্ত্বিক, জল-ভূতাত্ত্বিক ও অনুসন্ধানমূলক উদ্দেশ্যে কূপ খনন করা হয়। অবশ্য বাংলাদেশে অধিকাংশ কূপই খনন করা হয় নলকূপ স্থাপনের উদ্দেশ্যে হস্তচালিত যন্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে। ভূতাত্ত্বিক ও জল-ভূতাত্ত্বিক অনুসন্ধানমূলক কূপসমূহ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধানের উদ্দেশ্যে খননকৃত কূপের চেয়ে অগভীর। জলকূপের গভীরতা যেখানে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ৩০০ মিটারের মধ্যে, সেখানে গ্যাস ও তেলকূপগুলির গভীরতা তিন হাজার মিটারেরও বেশি। এমনকি দশ মিটারের কম গভীর কূপও রয়েছে। তবে বাংলাদেশে খননকৃত সবচেয়ে গভীর কূপটি ৪,৯৭৭ মিটার গভীর। এটি মৌলভীবাজার জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত।
ড্রিল করা গর্ত ছাড়াও হাতে কাটা কূপেরও প্রচলন রয়েছে। এগুলিকে কূয়া বলা হয়। ভূগর্ভস্থ পানি দিয়ে গৃহস্থালী কাজের জন্য এ কূয়া ব্যবহূত হয়। এইসব কূয়ার ব্যাস বেশ বড় হয় এক মিটার বা ততোধিক এবং গভীরতা তুলনামূলকভাবে কম (১৫ মিটার পর্যন্ত)। [কাজী মতিন উদ্দিন আহমেদ]