মসজিদবাড়ি মসজিদ
মসজিদবাড়ি মসজিদ পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার মসজিদ বাড়ি গ্রামে আইলা নদী তীরে অবস্থিত। শিলালিপির পাঠ অনুযায়ী সুলতান রুকনউদ্দীন বারবক শাহ এর রাজত্বকালে খান মুয়াজ্জম আজিয়াল খান কর্তৃক ১৪৬৫ খ্রিস্টাব্দে (৮৭০ হিজরি) মসজিদটি নির্মিত হয়। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের এই মসজিদটি বহুকাল ধরে জঙ্গলাবৃত্ত হয়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে এলাকায় জরিপ কার্যের সময় মসজিদটি আবিষ্কৃত হয়। এটি বর্তমানে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এর একটি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি।
ইট নির্মিত মসজিদটি দুই অংশে বিভক্ত প্রধান কক্ষ ও বারান্দা। বর্গাকার প্রধান কক্ষের অভ্যন্তরে প্রতি বাহুর দৈর্ঘ্য ৬.৫ মিটার। প্রাচীরগুলি প্রায় ২ মিটার পুরু। মসজিদের চার কোণে ৪টি এবং বারান্দায় দুই কোণে ২টি মোট ৬টি অষ্টকোণাকার বুরুজ ছিল। এগুলি বর্তমানে ধ্বংসপ্রাপ্ত। মসজিদের কার্নিসগুলি সোজা। প্রধান কক্ষের পূর্ব প্রাচীরে ৩টি এবং উত্তর-দক্ষিণ প্রাচীরে ১টি করে মোট ৫টি খিলানযুক্ত প্রবেশপথ রয়েছে। সম্মুখের কেন্দ্রীয় পথটি অন্যগুলি থেকে বড়। কিবলা প্রাচীরে রয়েছে ৩টি মিহরাব। প্রধান মিহরাবটি অপেক্ষাকৃত বড় এবং বাইরের দিকে কিছুটা উদগত। প্রধান কক্ষের ছাদ একটি গম্বুজ দ্বারা ঢাকা। মসজিদের পূর্বপার্শ্বে রয়েছে আয়তাকার (অভ্যন্তরের মাপ ৬.৫ মি × ২.৫ মি) বারান্দা। বারান্দার পূর্ব প্রাচীরে ৩টি এবং উত্তর ও দক্ষিণ প্রাচীরে ১টি করে মোট ৫টি আয়তাকার কাঠামোর মধ্যে সন্নিবেশিত খিলানযুক্ত প্রবেশপথ রয়েছে। বারান্দার সম্মুখের মাঝের প্রবেশপথটি অপেক্ষাকৃত বড়। বারান্দাটির ছাদ সমতল। মসজিদে বাগেরহাটের খানজাহানী স্থাপত্য রীতির প্রভাব রয়েছে। বহুকাল ধরে পরিত্যক্ত থাকায় মসজিদের বিভিন্ন অংশের ক্ষতি হয়েছে। মসজিদে পোড়ামাটির ফলকের অলংকরণ ছিল বলে সহজেই অনুমান করা যায়। কালের প্রবাহে তা ধ্বংস হয়ে গেছে। [ইফতেখার উদ্দিন ভূঞা]