দেবেন্দ্র কলেজ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
'''দেবেন্দ্র কলেজ''' ১৯৪২ সালে মানিকগঞ্জ জেলা সদরে ‘মানিকগঞ্জ কলেজ’ নামে স্থাপিত হয়। তৎকালীন জমিদার শ্রী সিদ্ধেশ্বরী প্রসাদ রায়চৌধুরীর প্রেরণা ও সহযোগিতায় কলেজটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন শ্রী হিমাংশুভূষণ সরকার। তখন কলেজের পাঠ্য বিষয়সমূহের মধ্যে ছিল ইংরেজি, বাংলা, সংস্কৃত, আরবি, ফারসি, বাণিজ্যিক ভূগোল এবং হিসাববিজ্ঞান।
'''দেবেন্দ্র কলেজ''' ১৯৪২ সালে মানিকগঞ্জ জেলা সদরে ‘মানিকগঞ্জ কলেজ’ নামে স্থাপিত হয়। তৎকালীন জমিদার শ্রী সিদ্ধেশ্বরী প্রসাদ রায়চৌধুরীর প্রেরণা ও সহযোগিতায় কলেজটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন শ্রী হিমাংশুভূষণ সরকার। তখন কলেজের পাঠ্য বিষয়সমূহের মধ্যে ছিল ইংরেজি, বাংলা, সংস্কৃত, আরবি, ফারসি, বাণিজ্যিক ভূগোল এবং হিসাববিজ্ঞান।


১৯৪৪ সালে কলেজের নাম পরিবর্তন করা হয়। টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুরের ব্যবসায়ী  [[সাহা, রনদা প্রসাদ|রণদাপ্রসাদ সাহা]]-র পিতার নামে কলেজের নামকরণ করা হয় দেবেন্দ্র কলেজ, মানিকগঞ্জ। ১৯৪৭ সালে কলেজে স্নাতক শ্রেণি চালু করা হয়। ১৯৬৩ সালে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে বিজ্ঞান এবং ১৯৬৪ সালে স্নাতক শ্রেণিতে বাণিজ্য বিভাগ চালু করা হয়।
[[Image:DebendraCollege.jpg|thumb|400px|right|দেবেন্দ্র কলেজ, মানিকগঞ্জ]]
১৯৪৪ সালে কলেজের নাম পরিবর্তন করা হয়। টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুরের ব্যবসায়ী  [[সাহা, রনদা প্রসাদ|রণদা প্রসাদ সাহা]]-র পিতার নামে কলেজের নামকরণ করা হয় দেবেন্দ্র কলেজ, মানিকগঞ্জ। ১৯৪৭ সালে কলেজে স্নাতক শ্রেণি চালু করা হয়। ১৯৬৩ সালে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে বিজ্ঞান এবং ১৯৬৪ সালে স্নাতক শ্রেণিতে বাণিজ্য বিভাগ চালু করা হয়।


১৯৭০ সালে এ কলেজে বি.এসসি কোর্স চালু করা হয়। ১৯৭১-৭২ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক সম্মান চালু করা হয়। ১৯৭৬-৭৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে কৃষি বিজ্ঞানে পাঠদান শুরু হয়। ১৯৮০ সালের ১ মার্চ কলেজটি সরকারিকরণ করা হয়। তখন থেকে কলেজের নাম হয় সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ। কলেজটিতে ১৯৮৯-৯০ শিক্ষাবর্ষ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক সম্মান এবং অর্থনীতি, দর্শন, ইতিহাস, ব্যবস্থাপনা ও গণিত বিষয়ে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে পাঠদান শুরু হয়।
১৯৭০ সালে এ কলেজে বি.এসসি কোর্স চালু করা হয়। ১৯৭১-৭২ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক সম্মান চালু করা হয়। ১৯৭৬-৭৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে কৃষি বিজ্ঞানে পাঠদান শুরু হয়। ১৯৮০ সালের ১ মার্চ কলেজটি সরকারিকরণ করা হয়। তখন থেকে কলেজের নাম হয় সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ। কলেজটিতে ১৯৮৯-৯০ শিক্ষাবর্ষ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক সম্মান এবং অর্থনীতি, দর্শন, ইতিহাস, ব্যবস্থাপনা ও গণিত বিষয়ে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে পাঠদান শুরু হয়।
৮ নং লাইন: ৯ নং লাইন:
কলেজটি ২৩.৭৯ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। কলেজের প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই ছাত্রাবাস ছিল। ১৯৭৫ এবং ১৯৮৮ সালে ছাত্রাবাসের কিছুটা সংস্কার ও সম্প্রসারণ ঘটে। ১৯৯৩ সালে পুরাতন বিল্ডিং ভেঙ্গে নির্মাণ করা হয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান ভবন। ১৯৯৪ সালে নির্মাণ করা হয় দোতলা একাডেমিক ভবন। ২০০১ সালে কলেজের জন্য একটি নতুন তিনতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে কলেজটিতে ৪টি একাডেমিক ভবন, ৩টি ছাত্রাবাস, ১টি খেলার মাঠ ও ২টি পুকুর রয়েছে।  
কলেজটি ২৩.৭৯ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। কলেজের প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই ছাত্রাবাস ছিল। ১৯৭৫ এবং ১৯৮৮ সালে ছাত্রাবাসের কিছুটা সংস্কার ও সম্প্রসারণ ঘটে। ১৯৯৩ সালে পুরাতন বিল্ডিং ভেঙ্গে নির্মাণ করা হয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান ভবন। ১৯৯৪ সালে নির্মাণ করা হয় দোতলা একাডেমিক ভবন। ২০০১ সালে কলেজের জন্য একটি নতুন তিনতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে কলেজটিতে ৪টি একাডেমিক ভবন, ৩টি ছাত্রাবাস, ১টি খেলার মাঠ ও ২টি পুকুর রয়েছে।  


বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক (পাশ), ১৫টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান), ৭টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ১ম পর্ব ও ৮টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর শেষপর্ব কোর্স চালু আছে।#[[Image:দেবেন্দ্র কলেজ_html_88407781.png]]
বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক (পাশ), ১৫টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান), ৭টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ১ম পর্ব ও ৮টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর শেষপর্ব কোর্স চালু আছে।
 
[[Image:DebendraCollege.jpg]]
 
#দেবেন্দ্র কলেজ,মানিকগঞ্জ


অধ্যায়নরত  শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার এবং শিক্ষকশিক্ষিকার সংখ্যা ৭৯। ফলাফল, শিক্ষার মান এবং শিক্ষানুকূল পরিবেশের কারণে ২০০০ সালে কলেজটি জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ কলেজ নির্বাচিত হয়েছে।  
অধ্যায়নরত  শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার এবং শিক্ষকশিক্ষিকার সংখ্যা ৭৯। ফলাফল, শিক্ষার মান এবং শিক্ষানুকূল পরিবেশের কারণে ২০০০ সালে কলেজটি জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ কলেজ নির্বাচিত হয়েছে।  
১৮ নং লাইন: ১৫ নং লাইন:
পড়ালেখার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা  [[খেলাধুলা|খেলাধুলা]], বিতর্ক, রেডক্রিসেন্ট, বিএনসিসি, রোভার, গার্ল-ইন-রোভারসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। ১৯৪২ সালে কলেজ কর্তৃপক্ষ উর্বশী নামে একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ শুরু করে এবং ১৯৫০ সাল পর্যন্ত তা নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হতো। পরবর্তীকালে বার্ষিক স্মরণিকা'','' রূপায়ণ এবং আবহমান নামে ৩টি ম্যাগাজিন নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হচ্ছে।  
পড়ালেখার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা  [[খেলাধুলা|খেলাধুলা]], বিতর্ক, রেডক্রিসেন্ট, বিএনসিসি, রোভার, গার্ল-ইন-রোভারসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। ১৯৪২ সালে কলেজ কর্তৃপক্ষ উর্বশী নামে একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ শুরু করে এবং ১৯৫০ সাল পর্যন্ত তা নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হতো। পরবর্তীকালে বার্ষিক স্মরণিকা'','' রূপায়ণ এবং আবহমান নামে ৩টি ম্যাগাজিন নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হচ্ছে।  


১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহীদ রফিক ছিলেন একসময় এ কলেজের ছাত্র। শহীদ রফিকের মায়ের কবর এ কলেজ প্রাঙ্গণে অবস্থিত। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এ কলেজের ছাত্র আবুল কাশেম খান, গোলাম কিবরিয়া তজু, আব্দুস সাত্তার (পিন্কু), আবুল হোসেন, রতন চন্দ্র বিশ্বাস, আনছার আলী, মোঃ কফিল উদ্দিন, বিমান বিহারী সাহা প্রাণ দিয়েছেন।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহীদ রফিক ছিলেন একসময় এ কলেজের ছাত্র। শহীদ রফিকের মায়ের কবর এ কলেজ প্রাঙ্গণে অবস্থিত। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এ কলেজের ছাত্র আবুল কাশেম খান, গোলাম কিবরিয়া তজু, আব্দুস সাত্তার (পিন্কু), আবুল হোসেন, রতন চন্দ্র বিশ্বাস, আনছার আলী, মোঃ কফিল উদ্দিন, বিমান বিহারী সাহা প্রাণ দিয়েছেন। [মো আবু বকর]
 
[মো আবু বকর]
 
<!-- imported from file: দেবেন্দ্র কলেজ.html-->
 
[[en:Debendra College]]


[[en:Debendra College]]
[[en:Debendra College]]

০৯:৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

দেবেন্দ্র কলেজ ১৯৪২ সালে মানিকগঞ্জ জেলা সদরে ‘মানিকগঞ্জ কলেজ’ নামে স্থাপিত হয়। তৎকালীন জমিদার শ্রী সিদ্ধেশ্বরী প্রসাদ রায়চৌধুরীর প্রেরণা ও সহযোগিতায় কলেজটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন শ্রী হিমাংশুভূষণ সরকার। তখন কলেজের পাঠ্য বিষয়সমূহের মধ্যে ছিল ইংরেজি, বাংলা, সংস্কৃত, আরবি, ফারসি, বাণিজ্যিক ভূগোল এবং হিসাববিজ্ঞান।

দেবেন্দ্র কলেজ, মানিকগঞ্জ

১৯৪৪ সালে কলেজের নাম পরিবর্তন করা হয়। টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুরের ব্যবসায়ী  রণদা প্রসাদ সাহা-র পিতার নামে কলেজের নামকরণ করা হয় দেবেন্দ্র কলেজ, মানিকগঞ্জ। ১৯৪৭ সালে কলেজে স্নাতক শ্রেণি চালু করা হয়। ১৯৬৩ সালে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে বিজ্ঞান এবং ১৯৬৪ সালে স্নাতক শ্রেণিতে বাণিজ্য বিভাগ চালু করা হয়।

১৯৭০ সালে এ কলেজে বি.এসসি কোর্স চালু করা হয়। ১৯৭১-৭২ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক সম্মান চালু করা হয়। ১৯৭৬-৭৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে কৃষি বিজ্ঞানে পাঠদান শুরু হয়। ১৯৮০ সালের ১ মার্চ কলেজটি সরকারিকরণ করা হয়। তখন থেকে কলেজের নাম হয় সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ। কলেজটিতে ১৯৮৯-৯০ শিক্ষাবর্ষ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক সম্মান এবং অর্থনীতি, দর্শন, ইতিহাস, ব্যবস্থাপনা ও গণিত বিষয়ে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে পাঠদান শুরু হয়।

কলেজটি ২৩.৭৯ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। কলেজের প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই ছাত্রাবাস ছিল। ১৯৭৫ এবং ১৯৮৮ সালে ছাত্রাবাসের কিছুটা সংস্কার ও সম্প্রসারণ ঘটে। ১৯৯৩ সালে পুরাতন বিল্ডিং ভেঙ্গে নির্মাণ করা হয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান ভবন। ১৯৯৪ সালে নির্মাণ করা হয় দোতলা একাডেমিক ভবন। ২০০১ সালে কলেজের জন্য একটি নতুন তিনতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে কলেজটিতে ৪টি একাডেমিক ভবন, ৩টি ছাত্রাবাস, ১টি খেলার মাঠ ও ২টি পুকুর রয়েছে।

বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক (পাশ), ১৫টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান), ৭টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ১ম পর্ব ও ৮টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর শেষপর্ব কোর্স চালু আছে।

অধ্যায়নরত  শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার এবং শিক্ষকশিক্ষিকার সংখ্যা ৭৯। ফলাফল, শিক্ষার মান এবং শিক্ষানুকূল পরিবেশের কারণে ২০০০ সালে কলেজটি জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ কলেজ নির্বাচিত হয়েছে।

পড়ালেখার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা  খেলাধুলা, বিতর্ক, রেডক্রিসেন্ট, বিএনসিসি, রোভার, গার্ল-ইন-রোভারসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। ১৯৪২ সালে কলেজ কর্তৃপক্ষ উর্বশী নামে একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ শুরু করে এবং ১৯৫০ সাল পর্যন্ত তা নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হতো। পরবর্তীকালে বার্ষিক স্মরণিকা, রূপায়ণ এবং আবহমান নামে ৩টি ম্যাগাজিন নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হচ্ছে।

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহীদ রফিক ছিলেন একসময় এ কলেজের ছাত্র। শহীদ রফিকের মায়ের কবর এ কলেজ প্রাঙ্গণে অবস্থিত। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এ কলেজের ছাত্র আবুল কাশেম খান, গোলাম কিবরিয়া তজু, আব্দুস সাত্তার (পিন্কু), আবুল হোসেন, রতন চন্দ্র বিশ্বাস, আনছার আলী, মোঃ কফিল উদ্দিন, বিমান বিহারী সাহা প্রাণ দিয়েছেন। [মো আবু বকর]