কালিয়া উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
৯১ নং লাইন: | ৯১ নং লাইন: | ||
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' এক গম্বুজ মসজিদ (মুগল আমল, কদমতলা), পর্তুগীজদের তৈরি পোড়া দালান (পুরুলিয়া), আরাজী বাঁশগ্রামের ভূগর্ভস্থ প্রাচীন দালান (সপ্তম শতাব্দী)। | ''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' এক গম্বুজ মসজিদ (মুগল আমল, কদমতলা), পর্তুগীজদের তৈরি পোড়া দালান (পুরুলিয়া), আরাজী বাঁশগ্রামের ভূগর্ভস্থ প্রাচীন দালান (সপ্তম শতাব্দী)। | ||
[[Image:KaliaUpazila.jpg|thumb|400px|right | [[Image:KaliaUpazila.jpg|thumb|400px|right] | ||
''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা কালিয়া হাইস্কুল ও ডাকবাংলোয় পাকসেনা ও রাজাকারদের ঘাঁটি আক্রমণ করে। ৩ দিন (৮-১০ ডিসেম্বর) স্থায়ী এ লড়াইয়ে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং ৪ জন পাকসেনা ও ৯ জন রাজাকার নিহত হয়। | ''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা কালিয়া হাইস্কুল ও ডাকবাংলোয় পাকসেনা ও রাজাকারদের ঘাঁটি আক্রমণ করে। ৩ দিন (৮-১০ ডিসেম্বর) স্থায়ী এ লড়াইয়ে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং ৪ জন পাকসেনা ও ৯ জন রাজাকার নিহত হয়। | ||
০৭:০৩, ১২ আগস্ট ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
কালিয়া উপজেলা (নড়াইল জেলা) আয়তন: ৩৫০.৯১ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৫৭´ থেকে ২৩°০৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৩০´ থেকে ৮৯°৪৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে নড়াইল সদর ও লোহাগড়া উপজেলা, দক্ষিণে তেরখাদা, মোল্লাহাট ও দিঘলিয়া উপজেলা, পূর্বে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা, পশ্চিমে অভয়নগর উপজেলা।
জনসংখ্যা ২৩৩৫০৩; পুরুষ ১১৮০৬২, মহিলা ১১৫৪৪১। মুসলিম ১৯১১৬০, হিন্দু ৪২২৯০, বৌদ্ধ ৪৩ এবং অন্যান্য ১০।
জলাশয় প্রধান নদী: নবগঙ্গা ওমধুমতি। বোয়ালিয়া ও চাঁচুড়ী বিল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন কালিয়া থানা গঠিত হয় ১৮৬৬ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৫ ডিসেম্বর ১৯৮৪ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ | ১৩ | ১১১ | ১৮৭ | ৩৩৮০২ | ১৯৯৭০১ | ৬৬৫ | ৪৩.৫৭ | ৪১.০০ |
পৌরসভা | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |||
২০.৮৩ | ৯ | ১৯ | ১৮৪৩০ | ৮৮৫ | ৪৬.৬০ |
উপজেলা শহর | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||||
২০.২৯ | ৫ | ১৫৩৭২ | ৭৫৮ | ৩৯.৭৯ |
ইউনিয়ন | ||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |
পুরুষ | মহিলা | |||
বড়নাল ইলিয়াসাবাদ | ৫৭৮২ | ৫১৬৮ | ৪৯৩৫ | ৪০.১১ |
কলাবাড়ীয়া ৪৭ | ৬৮৬৫ | ৮৫৩৬ | ৮২১০ | ৪৩.৩৭ |
খাসিয়াল ৬৩ | ৪৬৬২ | ৬৭৬৫ | ৬৫৩৫ | ৪০.৯৫ |
চাঁচুড়ী ৩১ | ৫৫৯০ | ৬৫৭৮ | ৬৫৪২ | ৪৩.৩৬ |
জয়নগর ৩৯ | ৭৮১৭ | ৬২৯৮ | ৬১৭৭ | ৩১.৯৪ |
পহরডাঙ্গা ৭৯ | ৪৬৮২ | ৬২৮৮ | ৬৩৯৯ | ৪৩.৬৮ |
পুরুলিয়া ৯৪ | ৬৭১৬ | ৯২৫২ | ৯১০২ | ৩৮.৬৭ |
পেড়লী ৮৭ | ৬৪৯৮ | ১৩৪৩৮ | ১৩৪৮২ | ৪২.৭৪ |
বাঐসোনা ১৫ | ৬৮১৯ | ৯৩৬৩ | ৮৯৯৮ | ৪৫.৪৪ |
বাবরা হাচলা ১৩ | ৩৪০২ | ৪৬৯৫ | ৪৭৫৭ | ৪৩.৫৪ |
মাউলি ৭১ | ৪৬৪২ | ৭৮১৩ | ৭৫৩৯ | ৩১.৫১ |
সালামাবাদ ৯৫ | ৫৬৩৯ | ৭৫১৪ | ৭১০২ | ৪২.৩০ |
হামিদপুর ২৩ | ৮৩৩৪ | ৯৩১৮ | ৮৮৯৭ | ৪৫.৪৪ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ এক গম্বুজ মসজিদ (মুগল আমল, কদমতলা), পর্তুগীজদের তৈরি পোড়া দালান (পুরুলিয়া), আরাজী বাঁশগ্রামের ভূগর্ভস্থ প্রাচীন দালান (সপ্তম শতাব্দী)।
[[Image:KaliaUpazila.jpg|thumb|400px|right] মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা কালিয়া হাইস্কুল ও ডাকবাংলোয় পাকসেনা ও রাজাকারদের ঘাঁটি আক্রমণ করে। ৩ দিন (৮-১০ ডিসেম্বর) স্থায়ী এ লড়াইয়ে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং ৪ জন পাকসেনা ও ৯ জন রাজাকার নিহত হয়।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ২৯৩, মন্দির ৭৭, গির্জা ১, মাযার ৩।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪২.২৯%; পুরুষ ৪৫.৮১%, মহিলা ৩৮.৭৭%। কলেজ ৬, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৩, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৪৪, স্যাটেলাইট স্কুল ১০, কমিউনিটি বিদ্যালয় ১, কিন্ডার গার্টেন ১, মাদ্রাসা ৪৬, এতিমখানা ৩৩। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কালিয়া শহীদ আব্দুস সালাম ডিগ্রি কলেজ, মুন্সি মানিক মিয়া ডিগ্রি কলেজ, কালিয়া পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৮৬৫), পি.এস বালিকা বিদ্যালয় (১৯১১), দি পাটনা একাডেমী (১৯১২), কলাড়িয়া বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৩১), চাঁচুড়ী পুরুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৫৭), বারইপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৫০), বাবরা প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৯৫)।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, ক্লাব ২২, সিনেমা হল ১, নাট্যদল ৫, মহিলা সংগঠন ১২।
বিনোদন কেন্দ্র এ উপজেলায় রয়েছে ইকোপার্ক ‘অরুণিমা’।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬২.৫৭%, অকৃষি শ্রমিক ২.২১%, শিল্প ১.৪১%, ব্যবসা ১৪.৬০%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.২২%, চাকরি ৮.২৮%, নির্মাণ ০.৭৮%, ধর্মীয় সেবা ০.২৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১.৪৮% এবং অন্যান্য ৫.১৮%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৪.৫০%, ভূমিহীন ৩৫.৫০%। শহরে ৫৬.৬০% এবং গ্রামে ৬৬.০৪% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, পান, তিল, মিষ্টি আলু।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি কাউন, চিনা, অড়হর।
প্রধান ফল-ফলাদিব আম, কাঁঠাল, পেঁপে, বাঙ্গী, সফেদা, পেয়ারা, খেজুর, নারিকেল।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৩৫৮১, মুরগি ৬৭।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১২৪ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৭ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৪৮ কিমি; নৌপথ ৬০ নটিক্যাল মাইল।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহনপাল্কি, ঘোড়া ও মহিষের গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা ধানকল, করাতকল, বরফকল, ওয়েল্ডিং কারখানা।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, লৌহশিল্প, বাঁশের কাজ, কাঠের কাজ, সেলাই কাজ।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২২; মেলা ৪। কালিয়া বাজার, নড়াগাতি বাজার, বড়দিয়া বাজার, কলাবাড়ীয়া বাজার, যোগানিয়া বাজার, খড়রিয়া বাজার, চাঁচুড়ী বাজার ও পেড়লী বাজার এবং চড়ক পূজার মেলা ও রথের মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য নারিকেল, পান ও খেজুর গুড়।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২০.১৯% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৬.৬৩%, পুকুর ১.৯৯%, ট্যাপ ০.৪৪% এবং অন্যান্য ০.৯৪%। এ উপজেলার ৭৩.৭৬% অগভীর নলকূপের পানি পরীক্ষা করে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৪০.৫৯% (গ্রামে ৩৮.৪৭% ও শহরে ৫১.৫২%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪৯.৬৯% (গ্রামে ৫১.৩৩% ও শহরে ৪২.২১%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৯.৭২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১২, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১, ক্লিনিক ১, দাতব্য চিকিৎসালয় ১।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯০৯, ১৯৬১ ও ১৯৮৮ সালের ঘূর্ণিঝড়ে এ উপজেলার শতাধিক লোক প্রাণ হারায় এবং ঘরবাড়ি, গবাদিপশু, গাছপালা ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ১৭৭০ (বাংলা ১১৭৬), ১৯৪৩ ও ১৯৫০ সালের দুর্ভিক্ষে এখানে অনেক লোক প্রাণ হারায়। ১৯৮৮ ও ১৯৯৮ সালের বন্যায় কাঁচা ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এছাড়া ১৯৮৫ সালে এ উপজেলার চাঁচুড়ি ও পুরুলিয়া ইউনিয়নের ১২ টি গ্রামে ৫ শতাধিক মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয় এবং ২৫ জন প্রাণ হারায়।
এনজিও ব্র্যাক, আশা, প্রদীপন, জাগরণী চক্র। [এ.এ.এম আওহাদ]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কালিয়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।