ভোকাবুলারিও: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
'''ভোকাবুলারিও''' (Vocabulario)  প্রথম মুদ্রিত বাংলা  [[ব্যাকরণ|ব্যাকরণ]]। পুরো নাম Vocabulario em idioma Bengalla e Portuguez, সংক্ষেপে Vocabulario। এটি সংকলন করেছিলেন বেশ কয়েকজন পর্তুগিজ ধর্মযাজক এবং সম্পাদনা করেছিলেন Manoel da Assumpcam। ১৭৪৩ সালে লিসবন শহর থেকে গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। গ্রন্থটি মূলত এদেশে  [[খ্রিস্টধর্ম|খ্রিস্টধর্ম]] প্রচারের সুবিধার জন্যই সংকলিত হয়েছিল। পর্তুগিজ ধর্মযাজকরা ষোড়শ শতাব্দীতে বাংলায় আসেন এবং অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত তাঁরা এখানে ধর্ম প্রচারের কাজ চালিয়ে যান। এ কাজের জন্য তাঁদের প্রয়োজন ছিল জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন। কিন্তু যেহেতু তারা গ্রামে বাস করত এবং অভিধানটি ধর্মযাজকদের নিজেদের ব্যবহারের জন্যই প্রয়োজনীয় ছিল, সেহেতু মুদ্রিত ৪০ পৃষ্ঠার এ গ্রন্থটি স্থানীয় ভাষার আদলে রচনা করা হয়। এতে  [[সংস্কৃত|সংস্কৃত]] ভাষার কোনো প্রভাব ছিল না। পূর্ববঙ্গের ফরিদপুর জেলার লোকদের কথোপকথনের ভিত্তিতে ব্যাকরণটি রচিত হয়। এখানেই এর বিশেষত্ব।
'''ভোকাবুলারিও''' (Vocabulario)  প্রথম মুদ্রিত বাংলা  [[ব্যাকরণ|ব্যাকরণ]]। পুরো নাম Vocabulario em idioma Bengalla e Portuguez, সংক্ষেপে Vocabulario। এটি সংকলন করেছিলেন বেশ কয়েকজন পর্তুগিজ ধর্মযাজক এবং সম্পাদনা করেছিলেন Manoel da Assumpcam। ১৭৪৩ সালে লিসবন শহর থেকে গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। গ্রন্থটি মূলত এদেশে  [[খ্রিস্টধর্ম|খ্রিস্টধর্ম]] প্রচারের সুবিধার জন্যই সংকলিত হয়েছিল। পর্তুগিজ ধর্মযাজকরা ষোড়শ শতাব্দীতে বাংলায় আসেন এবং অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত তাঁরা এখানে ধর্ম প্রচারের কাজ চালিয়ে যান। এ কাজের জন্য তাঁদের প্রয়োজন ছিল জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন। কিন্তু যেহেতু তারা গ্রামে বাস করত এবং অভিধানটি ধর্মযাজকদের নিজেদের ব্যবহারের জন্যই প্রয়োজনীয় ছিল, সেহেতু মুদ্রিত ৪০ পৃষ্ঠার এ গ্রন্থটি স্থানীয় ভাষার আদলে রচনা করা হয়। এতে  [[সংস্কৃত|সংস্কৃত]] ভাষার কোনো প্রভাব ছিল না। পূর্ববঙ্গের ফরিদপুর জেলার লোকদের কথোপকথনের ভিত্তিতে ব্যাকরণটি রচিত হয়। এখানেই এর বিশেষত্ব।


বাংলা ব্যাকরণ রচনার দ্বিতীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেন  [[হ্যালহেড, ন্যাথানিয়েল ব্র্যাসি|ন্যাথানিয়েল ব্রাসি হ্যালহেড]]। যথার্থ বাংলা ব্যাকরণ রচনার ক্ষেত্রে তাঁর A Grammar of the Bengal Language (হুগলি, ১৭৭৮) একটি সার্থক প্রচেষ্টা। কিন্তু গ্রন্থ রচনায় তিনি সংস্কৃতের ওপর বেশি নির্ভর করেন। যেসব পন্ডিত তাঁকে এ কাজে সহায়তা করেন তাঁরা তাঁকে Vocabulario থেকে সাহায্য না নেয়ার পরামর্শ দেন, কারণ এর শব্দগুলি নেয়া হয়েছিল পূর্ববাংলার গ্রাম্য কথ্যভাষা থেকে, মার্জিত সংস্কৃত ভাষা থেকে নয়। কিন্তু পরবর্তীকালে  [[উইলকিন্স, স্যার চার্লস|চার্লস উইলকিন্স]] Vocabulario'''-'''র গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারেন এবং তাঁর Grammar of the Sanskrit Language (লন্ডন, ১৮০৮) গ্রন্থ রচনার সময় Vocabulario-র প্রতি তাঁর ঋণ স্বীকার করেন।
বাংলা ব্যাকরণ রচনার দ্বিতীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেন  [[হ্যালহেড, ন্যাথানিয়েল ব্র্যাসি|ন্যাথানিয়েল ব্রাসি হ্যালহেড]]। যথার্থ বাংলা ব্যাকরণ রচনার ক্ষেত্রে তাঁর A Grammar of the Bengal Language (হুগলি, ১৭৭৮) একটি সার্থক প্রচেষ্টা। কিন্তু গ্রন্থ রচনায় তিনি সংস্কৃতের ওপর বেশি নির্ভর করেন। যেসব পন্ডিত তাঁকে এ কাজে সহায়তা করেন তাঁরা তাঁকে Vocabulario থেকে সাহায্য না নেয়ার পরামর্শ দেন, কারণ এর শব্দগুলি নেয়া হয়েছিল পূর্ববাংলার গ্রাম্য কথ্যভাষা থেকে, মার্জিত সংস্কৃত ভাষা থেকে নয়। কিন্তু পরবর্তীকালে  [[উইলকিন্স, স্যার চার্লস|চার্লস উইলকিন্স]] Vocabulario-র গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারেন এবং তাঁর Grammar of the Sanskrit Language (লন্ডন, ১৮০৮) গ্রন্থ রচনার সময় Vocabulario-র প্রতি তাঁর ঋণ স্বীকার করেন। [সিরাজুল ইসলাম]
 
[সিরাজুল ইসলাম]


[[en:Vocabulario]]
[[en:Vocabulario]]

০৫:৫১, ২ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

ভোকাবুলারিও (Vocabulario)  প্রথম মুদ্রিত বাংলা  ব্যাকরণ। পুরো নাম Vocabulario em idioma Bengalla e Portuguez, সংক্ষেপে Vocabulario। এটি সংকলন করেছিলেন বেশ কয়েকজন পর্তুগিজ ধর্মযাজক এবং সম্পাদনা করেছিলেন Manoel da Assumpcam। ১৭৪৩ সালে লিসবন শহর থেকে গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। গ্রন্থটি মূলত এদেশে  খ্রিস্টধর্ম প্রচারের সুবিধার জন্যই সংকলিত হয়েছিল। পর্তুগিজ ধর্মযাজকরা ষোড়শ শতাব্দীতে বাংলায় আসেন এবং অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ পর্যন্ত তাঁরা এখানে ধর্ম প্রচারের কাজ চালিয়ে যান। এ কাজের জন্য তাঁদের প্রয়োজন ছিল জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন। কিন্তু যেহেতু তারা গ্রামে বাস করত এবং অভিধানটি ধর্মযাজকদের নিজেদের ব্যবহারের জন্যই প্রয়োজনীয় ছিল, সেহেতু মুদ্রিত ৪০ পৃষ্ঠার এ গ্রন্থটি স্থানীয় ভাষার আদলে রচনা করা হয়। এতে  সংস্কৃত ভাষার কোনো প্রভাব ছিল না। পূর্ববঙ্গের ফরিদপুর জেলার লোকদের কথোপকথনের ভিত্তিতে ব্যাকরণটি রচিত হয়। এখানেই এর বিশেষত্ব।

বাংলা ব্যাকরণ রচনার দ্বিতীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেন  ন্যাথানিয়েল ব্রাসি হ্যালহেড। যথার্থ বাংলা ব্যাকরণ রচনার ক্ষেত্রে তাঁর A Grammar of the Bengal Language (হুগলি, ১৭৭৮) একটি সার্থক প্রচেষ্টা। কিন্তু গ্রন্থ রচনায় তিনি সংস্কৃতের ওপর বেশি নির্ভর করেন। যেসব পন্ডিত তাঁকে এ কাজে সহায়তা করেন তাঁরা তাঁকে Vocabulario থেকে সাহায্য না নেয়ার পরামর্শ দেন, কারণ এর শব্দগুলি নেয়া হয়েছিল পূর্ববাংলার গ্রাম্য কথ্যভাষা থেকে, মার্জিত সংস্কৃত ভাষা থেকে নয়। কিন্তু পরবর্তীকালে  চার্লস উইলকিন্স Vocabulario-র গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারেন এবং তাঁর Grammar of the Sanskrit Language (লন্ডন, ১৮০৮) গ্রন্থ রচনার সময় Vocabulario-র প্রতি তাঁর ঋণ স্বীকার করেন। [সিরাজুল ইসলাম]