রাজমহল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
৬ নং লাইন: ৬ নং লাইন:
১৬৪০ খ্রিস্টাব্দের ২০ জানুয়ারি ধ্বংসাত্মক অগ্নিকান্ডে প্রাসাদের ব্যাপক ক্ষতি হয় এবং প্রাসাদের [[হারেম|হারেম]] এর পঁচাত্তর জন এতে প্রাণ হারায়। ১৬৫৭ খ্রিস্টাব্দে এই শহরেই সুজা নিজেকে সম্রাট হিসেবে ঘোষণা করে মুকুট ধারণ করেন। প্রতীয়মান হয় যে, এখানে তখন ব্যাপক নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। সাঙ্গ-ই-দালানের মোটামুটি দূরত্বে একটি ধ্বংসস্তূপ পাওয়া যায়, যা ফুলবাড়ি নামে পরিচিত। এর সন্নিকটেই  শায়েস্তা খানের পত্নী বখত-হোমা-র সমাধি অবস্থিত। আঠারো শতকের দ্বিতীয়ার্ধে অসংখ্য মসজিদ ও ভবন সমৃদ্ধ এই শহরটির দৈর্ঘ্য ছিল ২.৪১ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ছিল ০.৮১ কিলোমিটার।
১৬৪০ খ্রিস্টাব্দের ২০ জানুয়ারি ধ্বংসাত্মক অগ্নিকান্ডে প্রাসাদের ব্যাপক ক্ষতি হয় এবং প্রাসাদের [[হারেম|হারেম]] এর পঁচাত্তর জন এতে প্রাণ হারায়। ১৬৫৭ খ্রিস্টাব্দে এই শহরেই সুজা নিজেকে সম্রাট হিসেবে ঘোষণা করে মুকুট ধারণ করেন। প্রতীয়মান হয় যে, এখানে তখন ব্যাপক নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। সাঙ্গ-ই-দালানের মোটামুটি দূরত্বে একটি ধ্বংসস্তূপ পাওয়া যায়, যা ফুলবাড়ি নামে পরিচিত। এর সন্নিকটেই  শায়েস্তা খানের পত্নী বখত-হোমা-র সমাধি অবস্থিত। আঠারো শতকের দ্বিতীয়ার্ধে অসংখ্য মসজিদ ও ভবন সমৃদ্ধ এই শহরটির দৈর্ঘ্য ছিল ২.৪১ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ছিল ০.৮১ কিলোমিটার।


মীরজুমলা যখন আরাকান ও পর্তুগিজ জলদস্যুদের প্রতিহত করার জন্য রাজধানী পুনরায় ঢাকাতে স্থানান্তরিত করেন তখন শহরটির পতন শুরু হয় (১৬৬০-১৬৬৩)। পুরাতন শহরটির ধ্বংসাবশেষ এখন ঢাকা পড়ে গেছে বর্তমান মহকুমা শহরের পশ্চিমে প্রায় ৬.৪৩ কিমি বিস্তৃত জঙ্গল দ্বারা।
মীরজুমলা যখন আরাকান ও পর্তুগিজ জলদস্যুদের প্রতিহত করার জন্য রাজধানী পুনরায় ঢাকাতে স্থানান্তরিত করেন তখন শহরটির পতন শুরু হয় (১৬৬০-১৬৬৩)। পুরাতন শহরটির ধ্বংসাবশেষ এখন ঢাকা পড়ে গেছে বর্তমান মহকুমা শহরের পশ্চিমে প্রায় ৬.৪৩ কিমি বিস্তৃত জঙ্গল দ্বারা। [মোঃ আখতারুজ্জামান]
 
[মোঃ আখতারুজ্জামান]


[[en:Rajmahal]]
[[en:Rajmahal]]

১০:০২, ৮ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

রাজমহল  একটি ঐতিহাসিক শহর। মুসলিম শাসনামলে দমন-ই-কোহ নামে পরিচিত পাহাড়ি এলাকায় গঙ্গার পশ্চিম তীরে অবস্থিত। পাহাড়টি সাঁওতাল পরগনার সাহিবগঞ্চ থেকে দুমকার রামপুরহাট রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত উত্তর-দক্ষিণে ১৯৩ কিলোমিটার বিস্তৃত। স্থানটির প্রাচীন নাম আগমহল। ১৫৯২ খ্রিস্টাব্দে মানসিংহ উড়িষ্যা জয় করে ফেরার পর এ স্থানের নামকরণ করেন রাজমহল। তিনি ১৫৯৫ খ্রিস্টাব্দে এখানে বাংলা সুবাহর নতুন রাজধানী স্থাপন করেন। মুগল সম্রাট আকবরের নামানুসারে এর নতুন নামকরণ করা হয় আকবরনগর।

রাজধানী হিসেবে এই স্থানটিকে বিবেচনা করা হয়েছিল বাংলা ও উড়িষ্যার মাঝামাঝি এর অবস্থিতি এবং সেইসাথে গঙ্গা ও তেলিয়াগড়ি গিরিপথের ওপর এর আধিপত্যের কারণে। মানসিংহ এখানে একটি প্রাসাদ, একটি দুর্গ ও একটি জামে মসজিদ (হাদাফি মসজিদ নামে পরিচিত) নির্মাণ করেছিলেন। গৌড়ের তুলনায় সুবিধাজনক স্থানে অবস্থিত হওয়ার কারণে খুব দ্রুত সেখানে একটি শহর গড়ে ওঠে। তবে সামান্য কিছুকাল পরেই শহরটি তার সুবিধাজনক অবস্থানের গুরুত্ব হারায়। গঙ্গা প্রায় এক ক্রোশ দূরে সরে যাওয়ায় শহরটিতে যুদ্ধ-পোত পৌঁছান সম্ভবপর ছিল না, ফলে এটি স্থল ও জল কোন পথেই প্রতিরক্ষাক্ষম ছিল না। ১৬০৮-০৯ খ্রিস্টাব্দে ইসলাম খান (১৬০৮-১৬১৩) বারো ভুঁইয়াদের দমন করার জন্য এবং পর্তুগিজ ও মগদের উঠতি শক্তিকে কার্যকরভাবে প্রতিহত করার জন্য রাজধানী ঢাকায় স্থানান্তরিত করেন। কিন্তু রাজমহল পুনরায় তার প্রশাসনিক মর্যাদা ফিরে পায় ১৬৩৯ খ্রিস্টাব্দে শাহ সুজা কর্তৃক তাঁর রাজধানী স্থাপন করলে (১৬৩৯-১৬৬০)। যুবরাজ নিজের অবস্থানের জন্য এখানে দীউয়ানখানা (অডিয়েন্স হল)-সহ বিখ্যাত প্রাসাদ সাঙ্গ-ই-দালান (প্রস্তর নির্মিত প্রাসাদ) নির্মাণ করেন।

১৬৪০ খ্রিস্টাব্দের ২০ জানুয়ারি ধ্বংসাত্মক অগ্নিকান্ডে প্রাসাদের ব্যাপক ক্ষতি হয় এবং প্রাসাদের হারেম এর পঁচাত্তর জন এতে প্রাণ হারায়। ১৬৫৭ খ্রিস্টাব্দে এই শহরেই সুজা নিজেকে সম্রাট হিসেবে ঘোষণা করে মুকুট ধারণ করেন। প্রতীয়মান হয় যে, এখানে তখন ব্যাপক নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। সাঙ্গ-ই-দালানের মোটামুটি দূরত্বে একটি ধ্বংসস্তূপ পাওয়া যায়, যা ফুলবাড়ি নামে পরিচিত। এর সন্নিকটেই  শায়েস্তা খানের পত্নী বখত-হোমা-র সমাধি অবস্থিত। আঠারো শতকের দ্বিতীয়ার্ধে অসংখ্য মসজিদ ও ভবন সমৃদ্ধ এই শহরটির দৈর্ঘ্য ছিল ২.৪১ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ছিল ০.৮১ কিলোমিটার।

মীরজুমলা যখন আরাকান ও পর্তুগিজ জলদস্যুদের প্রতিহত করার জন্য রাজধানী পুনরায় ঢাকাতে স্থানান্তরিত করেন তখন শহরটির পতন শুরু হয় (১৬৬০-১৬৬৩)। পুরাতন শহরটির ধ্বংসাবশেষ এখন ঢাকা পড়ে গেছে বর্তমান মহকুমা শহরের পশ্চিমে প্রায় ৬.৪৩ কিমি বিস্তৃত জঙ্গল দ্বারা। [মোঃ আখতারুজ্জামান]