খান, আবদুল মোনেম: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
[[Image:KhanAbdulMonem.jpg|thumb|400px|right|আবদুল মোনেম খান]] | |||
'''খান, আবদুল মোনেম''' (১৮৯৯-১৯৭১) পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) গভর্নর, একজন আইনজীবী, সমাজকর্মী ও রাজনীতিক। কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলাধীন হুমায়ুনপুর গ্রামে তিনি ১৮৯৯ সালের ২৮ জুন তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম কমর আলী খান ও মাতার নাম নাসিমা খাতুন। আবদুল মোনেম খান ১৯১৬ সালে ময়মনসিংহ জেলা স্কুল হতে ম্যাট্রিকুলেশন, ১৯২০ সালে ঢাকা কলেজ হতে বি.এ পাস করেন। তিনি ১৯২২ সালে [[কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়|কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়]] থেকে বি.এল ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতেও ১৯২৪ সালে আবার বি.এল ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯২৭ সালে ময়মনসিংহ জেলা বারে যোগদান করে আইন ব্যবসা শুরু করেন। তিনি দক্ষ ক্রীড়া সংগঠক এবং ময়মনসিংহ মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের একজন সদস্য ছিলেন। ১৯৩০ সালে উত্তর বঙ্গের এক ভয়াবহ বন্যার সময় তিনি [[বসু, সুভাষচন্দ্র|সুভাষচক্টদন্ড বস]]র সাথে একযোগে বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন। তিনি ১৯৩২ সালে ময়মনসিংহ আঞ্জুমান-ই-ইসলামিয়ার সহকারী সচিব নির্বাচিত হন। | '''খান, আবদুল মোনেম''' (১৮৯৯-১৯৭১) পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) গভর্নর, একজন আইনজীবী, সমাজকর্মী ও রাজনীতিক। কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলাধীন হুমায়ুনপুর গ্রামে তিনি ১৮৯৯ সালের ২৮ জুন তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম কমর আলী খান ও মাতার নাম নাসিমা খাতুন। আবদুল মোনেম খান ১৯১৬ সালে ময়মনসিংহ জেলা স্কুল হতে ম্যাট্রিকুলেশন, ১৯২০ সালে ঢাকা কলেজ হতে বি.এ পাস করেন। তিনি ১৯২২ সালে [[কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়|কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়]] থেকে বি.এল ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতেও ১৯২৪ সালে আবার বি.এল ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯২৭ সালে ময়মনসিংহ জেলা বারে যোগদান করে আইন ব্যবসা শুরু করেন। তিনি দক্ষ ক্রীড়া সংগঠক এবং ময়মনসিংহ মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের একজন সদস্য ছিলেন। ১৯৩০ সালে উত্তর বঙ্গের এক ভয়াবহ বন্যার সময় তিনি [[বসু, সুভাষচন্দ্র|সুভাষচক্টদন্ড বস]]র সাথে একযোগে বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন। তিনি ১৯৩২ সালে ময়মনসিংহ আঞ্জুমান-ই-ইসলামিয়ার সহকারী সচিব নির্বাচিত হন। | ||
৫ নং লাইন: | ৬ নং লাইন: | ||
মোনেম খান ১৯৪৬ হতে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত ময়মনসিংহ জেলা স্কুল বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৪৭ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগ ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য ও নিখিল পাকিস্তান মুসলিম লীগের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। ১৯৪৮ সালে তিনি ইস্ট বেঙ্গল প্রাইমারি এডুকেশন বোর্ডের একজন সদস্য নির্বাচিত হন এবং ওই বছর তিনি পাকিস্তান গণপরিষদেরও একজন সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫০ সালে তিনি বেঙ্গল ডিফেন্স কমিটি এবং প্রভিনসিয়াল আর্মড সার্ভিসেস বোর্ডের একজন সদস্য নিযুক্ত হন। | মোনেম খান ১৯৪৬ হতে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত ময়মনসিংহ জেলা স্কুল বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৪৭ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগ ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য ও নিখিল পাকিস্তান মুসলিম লীগের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। ১৯৪৮ সালে তিনি ইস্ট বেঙ্গল প্রাইমারি এডুকেশন বোর্ডের একজন সদস্য নির্বাচিত হন এবং ওই বছর তিনি পাকিস্তান গণপরিষদেরও একজন সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫০ সালে তিনি বেঙ্গল ডিফেন্স কমিটি এবং প্রভিনসিয়াল আর্মড সার্ভিসেস বোর্ডের একজন সদস্য নিযুক্ত হন। | ||
১৯৬২ সালে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের একজন সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬২ সালে আবদুল মোনেম খান পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিযুক্ত হন। আবদুল মোনেম খান ১৯৬২ সালের ২৮ অক্টোবর হতে ১৯৬৯ সালের ২৩ মার্চ পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ছিলেন। এ সময়ে পূর্ব পাকিস্তানে, বিশেষ করে প্রদেশবাসীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যাতায়াত, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প ও কৃষি ক্ষেত্রে বিশেষ অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু এতদসত্ত্বেও তাঁর কিছু গণবিরোধী কার্যকলাপের জন্য তিনি তীব্রভাবে সমালোচিত হন। মোনেম খান আইয়ুব খানের একজন একান্ত অনুগত ব্যক্তি ছিলেন। তার এ আনুগত্যের কারণে তিনি বাঙালি সংস্কৃতি-বিকাশ বিরোধী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতেও কুণ্ঠাবোধ করতেন না। ফলে তিনি সর্বমহলেই ছিলেন নিন্দিত ব্যক্তি। তিনি ছাত্র-ছাত্রী মহলে এতই অপ্রিয় ছিলেন যে, ১৯৬৪ সালের মার্চ মাসে কার্জন হল প্রাঙ্গণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে চ্যান্সেলার হিসেবে তাঁর উপস্থিতির ফলে তা পন্ড হয়ে যায়। তিনি ১৯৬২ হতে ১৯৬৯ সালের মধ্যে ছাত্রদের শিক্ষা আন্দোলন, আওয়ামী লীগের [[ছয়দফা কর্মসূচি|ছয়দফা কর্মসূচি]], ১১ দফা আন্দোলন, প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধিকার আন্দোলনের বিরোধী ছিলেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রবল গণআন্দোলনের চাপে আইয়ুব খান ১৯৬৯ সালে আবদুল মোনেম খানকে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করেন। ১৯৭১ সালের ১৩ অক্টোবর তাঁর বনানী বাসভবনে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার গুলিতে আহত হলে আবদুল মোনেম খানকে [[ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল|ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল]]-এ নেওয়া হয় এবং সেখানে তিনি ইন্তেকাল করেন। [মুহম্মদ আবদুস সালাম] | ১৯৬২ সালে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের একজন সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬২ সালে আবদুল মোনেম খান পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিযুক্ত হন। আবদুল মোনেম খান ১৯৬২ সালের ২৮ অক্টোবর হতে ১৯৬৯ সালের ২৩ মার্চ পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ছিলেন। এ সময়ে পূর্ব পাকিস্তানে, বিশেষ করে প্রদেশবাসীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যাতায়াত, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প ও কৃষি ক্ষেত্রে বিশেষ অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু এতদসত্ত্বেও তাঁর কিছু গণবিরোধী কার্যকলাপের জন্য তিনি তীব্রভাবে সমালোচিত হন। মোনেম খান আইয়ুব খানের একজন একান্ত অনুগত ব্যক্তি ছিলেন। তার এ আনুগত্যের কারণে তিনি বাঙালি সংস্কৃতি-বিকাশ বিরোধী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতেও কুণ্ঠাবোধ করতেন না। ফলে তিনি সর্বমহলেই ছিলেন নিন্দিত ব্যক্তি। তিনি ছাত্র-ছাত্রী মহলে এতই অপ্রিয় ছিলেন যে, ১৯৬৪ সালের মার্চ মাসে কার্জন হল প্রাঙ্গণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে চ্যান্সেলার হিসেবে তাঁর উপস্থিতির ফলে তা পন্ড হয়ে যায়। তিনি ১৯৬২ হতে ১৯৬৯ সালের মধ্যে ছাত্রদের শিক্ষা আন্দোলন, আওয়ামী লীগের [[ছয়দফা কর্মসূচি|ছয়দফা কর্মসূচি]], ১১ দফা আন্দোলন, প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধিকার আন্দোলনের বিরোধী ছিলেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রবল গণআন্দোলনের চাপে আইয়ুব খান ১৯৬৯ সালে আবদুল মোনেম খানকে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করেন। ১৯৭১ সালের ১৩ অক্টোবর তাঁর বনানী বাসভবনে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার গুলিতে আহত হলে আবদুল মোনেম খানকে [[ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল|ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল]]-এ নেওয়া হয় এবং সেখানে তিনি ইন্তেকাল করেন। [মুহম্মদ আবদুস সালাম] | ||
[[en:Khan, Abdul Monem]] | [[en:Khan, Abdul Monem]] |
০৫:৩৮, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
খান, আবদুল মোনেম (১৮৯৯-১৯৭১) পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) গভর্নর, একজন আইনজীবী, সমাজকর্মী ও রাজনীতিক। কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলাধীন হুমায়ুনপুর গ্রামে তিনি ১৮৯৯ সালের ২৮ জুন তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম কমর আলী খান ও মাতার নাম নাসিমা খাতুন। আবদুল মোনেম খান ১৯১৬ সালে ময়মনসিংহ জেলা স্কুল হতে ম্যাট্রিকুলেশন, ১৯২০ সালে ঢাকা কলেজ হতে বি.এ পাস করেন। তিনি ১৯২২ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এল ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতেও ১৯২৪ সালে আবার বি.এল ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯২৭ সালে ময়মনসিংহ জেলা বারে যোগদান করে আইন ব্যবসা শুরু করেন। তিনি দক্ষ ক্রীড়া সংগঠক এবং ময়মনসিংহ মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের একজন সদস্য ছিলেন। ১৯৩০ সালে উত্তর বঙ্গের এক ভয়াবহ বন্যার সময় তিনি সুভাষচক্টদন্ড বসর সাথে একযোগে বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন। তিনি ১৯৩২ সালে ময়মনসিংহ আঞ্জুমান-ই-ইসলামিয়ার সহকারী সচিব নির্বাচিত হন।
আবদুল মোনেম খান ১৯৩৫ সালে সর্ব ভারতীয় মুসলিম লীগ-এ যোগদান করেন এবং পরবর্তীকালে মুসলিম লীগ ময়মনসিংহ শাখার প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি নিযুক্ত হন। তাঁর আমন্ত্রণে মুহম্মদ আলী জিন্নাহ ১৯৩৬ সালে ময়মনসিংহ সফরে আসেন এবং জেলার বিভিন্নস্থানে কয়েকটি জনসভায় বক্তৃতা প্রদান করেন। আবদুল মোনেম খান ১৯৪৫ সাল হতে কয়েক বছর ময়মনসিংহ জেলা বোর্ডের একজন সদস্য ছিলেন। ময়মনসিংহ মিউনিসিপ্যালিটির একজন ওয়ার্ড কমিশনার হিসেবে তিনি অনেক সামাজিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিলেন। ১৯৪৬ সালে ময়মনসিংহ জেলার হাজার হাজার প্রশিক্ষিত কর্মী নিয়ে তিনি ময়মনসিংহ জেলা মুসলিম লীগ ন্যাশনাল গার্ড সংগঠিত করেন এবং স্বয়ং সংগঠনের সালার-ই-জেলা নিযুক্ত হন।
মোনেম খান ১৯৪৬ হতে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত ময়মনসিংহ জেলা স্কুল বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৪৭ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগ ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য ও নিখিল পাকিস্তান মুসলিম লীগের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। ১৯৪৮ সালে তিনি ইস্ট বেঙ্গল প্রাইমারি এডুকেশন বোর্ডের একজন সদস্য নির্বাচিত হন এবং ওই বছর তিনি পাকিস্তান গণপরিষদেরও একজন সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫০ সালে তিনি বেঙ্গল ডিফেন্স কমিটি এবং প্রভিনসিয়াল আর্মড সার্ভিসেস বোর্ডের একজন সদস্য নিযুক্ত হন।
১৯৬২ সালে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের একজন সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬২ সালে আবদুল মোনেম খান পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিযুক্ত হন। আবদুল মোনেম খান ১৯৬২ সালের ২৮ অক্টোবর হতে ১৯৬৯ সালের ২৩ মার্চ পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ছিলেন। এ সময়ে পূর্ব পাকিস্তানে, বিশেষ করে প্রদেশবাসীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যাতায়াত, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প ও কৃষি ক্ষেত্রে বিশেষ অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু এতদসত্ত্বেও তাঁর কিছু গণবিরোধী কার্যকলাপের জন্য তিনি তীব্রভাবে সমালোচিত হন। মোনেম খান আইয়ুব খানের একজন একান্ত অনুগত ব্যক্তি ছিলেন। তার এ আনুগত্যের কারণে তিনি বাঙালি সংস্কৃতি-বিকাশ বিরোধী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতেও কুণ্ঠাবোধ করতেন না। ফলে তিনি সর্বমহলেই ছিলেন নিন্দিত ব্যক্তি। তিনি ছাত্র-ছাত্রী মহলে এতই অপ্রিয় ছিলেন যে, ১৯৬৪ সালের মার্চ মাসে কার্জন হল প্রাঙ্গণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে চ্যান্সেলার হিসেবে তাঁর উপস্থিতির ফলে তা পন্ড হয়ে যায়। তিনি ১৯৬২ হতে ১৯৬৯ সালের মধ্যে ছাত্রদের শিক্ষা আন্দোলন, আওয়ামী লীগের ছয়দফা কর্মসূচি, ১১ দফা আন্দোলন, প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধিকার আন্দোলনের বিরোধী ছিলেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রবল গণআন্দোলনের চাপে আইয়ুব খান ১৯৬৯ সালে আবদুল মোনেম খানকে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করেন। ১৯৭১ সালের ১৩ অক্টোবর তাঁর বনানী বাসভবনে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার গুলিতে আহত হলে আবদুল মোনেম খানকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল-এ নেওয়া হয় এবং সেখানে তিনি ইন্তেকাল করেন। [মুহম্মদ আবদুস সালাম]