দেবপাল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
৬ নং লাইন: ৬ নং লাইন:
দেবপাল মনে-প্রাণে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ছিলেন। তিনি ছিলেন [[বৌদ্ধধর্ম|বৌদ্ধ ধর্ম]] ও শিক্ষা-দীক্ষার বিখ্যাত কেন্দ্র নালন্দার একজন বড় পৃষ্ঠপোষেক। জাভা ও সুমাত্রার শৈলেন্দ্র রাজা বালপুত্রদেব কর্তৃক নালন্দায় নির্মিত বৌদ্ধমঠ পরিচালনার জন্য তিনি পাঁচটি গ্রাম দান করেছিলেন বলে জানা যায়। এ থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৌদ্ধ রাজবংশগুলির রাজাদের সঙ্গে দেবপালের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং বৌদ্ধ জগতে নালন্দার অবস্থান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। দেবপাল বীরদেবেরও পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। এ বীরদেবকে তিনিই [[নালন্দা মহাবিহার|নালন্দা]] বিহারের অধ্যক্ষ নিযুক্ত করেছিলেন।  [আবদুল মমিন চৌধুরী]  
দেবপাল মনে-প্রাণে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ছিলেন। তিনি ছিলেন [[বৌদ্ধধর্ম|বৌদ্ধ ধর্ম]] ও শিক্ষা-দীক্ষার বিখ্যাত কেন্দ্র নালন্দার একজন বড় পৃষ্ঠপোষেক। জাভা ও সুমাত্রার শৈলেন্দ্র রাজা বালপুত্রদেব কর্তৃক নালন্দায় নির্মিত বৌদ্ধমঠ পরিচালনার জন্য তিনি পাঁচটি গ্রাম দান করেছিলেন বলে জানা যায়। এ থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৌদ্ধ রাজবংশগুলির রাজাদের সঙ্গে দেবপালের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং বৌদ্ধ জগতে নালন্দার অবস্থান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। দেবপাল বীরদেবেরও পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। এ বীরদেবকে তিনিই [[নালন্দা মহাবিহার|নালন্দা]] বিহারের অধ্যক্ষ নিযুক্ত করেছিলেন।  [আবদুল মমিন চৌধুরী]  


আরও দেখুন পাল বংশ
''আরও দেখুন'' [[পাল বংশ|পাল বংশ]]
 
[[en:Devapala]]


[[en:Devapala]]
[[en:Devapala]]

০৬:৫৭, ১৯ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

দেবপাল পাল বংশের তৃতীয় রাজা। তাঁর সময়ে এ বংশের উদীয়মান প্রতিপত্তির যুগ অপ্রতিহতভাবে অব্যাহত ছিল। ধর্মপালএর পুত্র ও উত্তরাধিকারী দেবপালের রাজত্বকাল ছিল দীর্ঘস্থায়ী (আনু. ৮২১-৮৬১ খ্রি.)। নিজের এবং উত্তরসূরিদের তাম্রশাসনে দেবপালের রাজ্য সম্প্রসারণের সাফল্যের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করা হয়েছে। এতে রাজ্য পরিচালনার অন্যান্য ক্ষেত্রেও তাঁর কৃতিত্বের পরিচয় পাওয়া যায়। দ্বিতীয় নাগভট্টের পর প্রতীহার সিংহাসনে দুর্বল উত্তরাধিকারীদের আরোহণ এবং রাষ্ট্রকূট রাজা অমোঘবর্ষের নিষ্ক্রিয়তা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত পিতৃরাজ্য অক্ষুণ্ণ রাখতে দেবপালকে সুযোগ করে দেয়। উত্তরাধিকার সূত্রে তিনি সম্ভবত একটি বিশাল সাম্রাজ্য লাভ করেছিলেন। একই সঙ্গে তাঁর পিতা ধর্মপালের সময় থেকে শুরু হওয়া ত্রিপক্ষীয় সংঘর্ষও তিনি উত্তরাধিকার সূত্রে লাভ করেন। এটি নিশ্চয়ই দেবপালের কৃতিত্ব যে, বিরোধীদের আক্রমণ থেকে তিনি নিজ রাজ্য অক্ষুণ্ণ রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন।

দেবপালের একটি  তাম্রশাসনে উল্লেখ আছে যে, তিনি ‘একদিকে হিমালয় থেকে রামচন্দ্রের কীর্তি সেতুবন্ধ পর্যন্ত, এবং বরুণের বাসস্থান এক সমুদ্র থেকে লক্ষ্মীর জন্মস্থান অপর সমুদ্র পর্যন্ত সমস্ত পৃথিবী অপ্রতিহতভাবে’ শাসন করেছেন। সর্বভারতীয় সাম্রাজ্যের এ গতানুগতিক বর্ণনা হয়ত আক্ষরিক অর্থে সঠিক নয়; তবে এ বর্ণনা থেকে ধারণা করে যায় যে, দেবপাল এক বিশাল সাম্রাজ্য শাসন করতেন। বলা হয় যে, তিনি উৎকল, হূণ, দ্রাবিড় ও গুর্জর রাজা এবং প্রাগজ্যোতিষ রাজার বিরুদ্ধে সাফল্যের সঙ্গে যুদ্ধ করেন। উত্তর ভারতের মধ্যদেশে প্রাধান্য বিস্তারে বারবার উদ্যোগ গ্রহণকারী গুর্জর-প্রতীহারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হয়েছিল। দেবপাল প্রতীহারদের বিরুদ্ধেও স্বীয় রাজ্য অক্ষুণ্ণ রেখেছিলেন। প্রতীহারগণ সম্ভবত তাঁর রাজত্বের শেষের দিকে তাদের লক্ষ্য বাস্তবায়নে সফল হয়েছিল। উৎকল, দ্রাবিড় এবং প্রাগজ্যোতিষের বিরুদ্ধে পরিচালিত যুদ্ধগুলিকে বিভিন্ন দিকে তাঁর সাম্রাজ্য সম্প্রসারণের প্রচেষ্টা হিসেবে ধরে নেওয়া যেতে পারে। দেবপাল কতখানি সাফল্য লাভ করেছিলেন তা নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। তবে একথা বলা যায় যে, দেবপাল ছিলেন ধর্মপালের যোগ্য উত্তরসূরি এবং ধর্মপালের মতোই তিনিও বাংলার সংলগ্ন এলাকায় বাংলার প্রভাব বৃদ্ধি করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন। নয় শতকের প্রথমদিকে বাংলার দিকে তিববতীয় রাজাদের বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনার ইঙ্গিত তিববতীয় উৎসে পাওয়া যায়।

দেবপাল মনে-প্রাণে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ছিলেন। তিনি ছিলেন বৌদ্ধ ধর্ম ও শিক্ষা-দীক্ষার বিখ্যাত কেন্দ্র নালন্দার একজন বড় পৃষ্ঠপোষেক। জাভা ও সুমাত্রার শৈলেন্দ্র রাজা বালপুত্রদেব কর্তৃক নালন্দায় নির্মিত বৌদ্ধমঠ পরিচালনার জন্য তিনি পাঁচটি গ্রাম দান করেছিলেন বলে জানা যায়। এ থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৌদ্ধ রাজবংশগুলির রাজাদের সঙ্গে দেবপালের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং বৌদ্ধ জগতে নালন্দার অবস্থান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। দেবপাল বীরদেবেরও পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। এ বীরদেবকে তিনিই নালন্দা বিহারের অধ্যক্ষ নিযুক্ত করেছিলেন।  [আবদুল মমিন চৌধুরী]

আরও দেখুন পাল বংশ