মিসকিন শাহ মোল্লা (রঃ)
মিসকিন শাহ মোল্লা (র.) চট্টগ্রামের আগত সুফি দরবেশদের অন্যতম। তিনি সরকারী মোহসীন কলেজের (পূর্বতন চট্টগ্রাম মাদ্রাসা) বিপরীত দিকে পাহাড়ের উপর শাহী মসজিদের পাশে এক সৌধে সমাহিত আছেন। ড. এনামুল হক রোড (পূর্বতন কলেজ রোড) থেকে একটি সুউচ্চ সিঁড়িপথে সমাধিস্থলে পৌঁছা যায়। স্থানীয় জনগণ একে মোল্লা মিসকিন বা মোল্লা সাইনের তাকিয়া (খানকাহ) নামে অভিহিত করে।
হামিদুল্লাহ খানের ফারসি ভাষায় রচিত আহাদিস আল-খাওয়ানিন শীর্ষক ইতিহাস গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই দরবেশের উত্তরাধিকারীরা চট্টগ্রামের রাউজান থানার অন্তর্গত কদলপুর গ্রামে বাস করতেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তিনি পার্থিব জীবনের প্রতি অমনোযোগী ছিলেন। সম্প্রতি উদ্ধারকৃত মুগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের একটি ফরমান এ উল্লেখ আছে যে, সম্রাট সুবাহ বাংলার ইসলামাবাদ সরকারের অন্তর্গত হাভেলী চট্টগ্রাম পরগণায় বিশ বিঘা জমি মোল্লা মিসকিনকে ‘মদদ-ই-মা‘আশ’ (জীবিকা ভাতা) হিসেবে মঞ্জুর করেন। ১১০৩ হিজরিতে (১৬৯১-৯২ খ্রি) জারিকৃত এই ফরমানে মোল্লা মিসকিনের পিতার নাম সিপাহ্দু এবং পিতামহের নাম শেখ সারদু মুগলী সিদ্দিকী উল্লেখ করা হয়েছে। ফরমানটির তারিখের ভিত্তিতে মোল্লা মিসকিন শাহকে সতেরো শতকের সুফি সাধকরূপে এবং তাঁর মাযার সন্নিহিত শাহী মসজিদটি নির্মাণরীতির দিক থেকে আওরঙ্গজেবের শাসনামলের বলে চিহ্নিত করা যায়। [আবদুল করিম]