বন্যপ্রাণী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
৮১ নং লাইন: ৮১ নং লাইন:
অন্তত ২১ প্রজাতির ইঁদুরজাতীয় প্রাণী (Rodentia) বাংলাদেশে শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে Muridae গোত্রের কতক প্রজাতি সারা দেশে ব্যাপক বিস্তৃত। ইঁদুরদের মধ্যে বেশি দেখা যায় ''Rattus rattus'', ''R. norvegicus'', ''Mus musculus'' এবং ''Bandicota indica''। কাঠবিড়ালীদের আটটি প্রজাতি এদেশে আছে। এর মধ্যে বাদামী কাঠবিড়ালী (''Callosciurus pygerythrus''), ডোরা কাঠবিড়ালী (''Funambulus pennanti'') এবং উড়ুক্কু কাঠবিড়ালী (''Petaurista magnificus'') উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশে যে দুটি সজারু প্রজাতি আছে তার একটি ''Atherurus macrourus'' এবং অপরটি ''Hystrix indica''। খরগোশদের মধ্যে এদেশে আছে পিঙ্গল-লেজ খরগোশ (''Lepus nigricollis'') এবং আসামী শশক (''Caprolagus hispidus'')।  [এস.এম. হুমায়ুন কবির]
অন্তত ২১ প্রজাতির ইঁদুরজাতীয় প্রাণী (Rodentia) বাংলাদেশে শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে Muridae গোত্রের কতক প্রজাতি সারা দেশে ব্যাপক বিস্তৃত। ইঁদুরদের মধ্যে বেশি দেখা যায় ''Rattus rattus'', ''R. norvegicus'', ''Mus musculus'' এবং ''Bandicota indica''। কাঠবিড়ালীদের আটটি প্রজাতি এদেশে আছে। এর মধ্যে বাদামী কাঠবিড়ালী (''Callosciurus pygerythrus''), ডোরা কাঠবিড়ালী (''Funambulus pennanti'') এবং উড়ুক্কু কাঠবিড়ালী (''Petaurista magnificus'') উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশে যে দুটি সজারু প্রজাতি আছে তার একটি ''Atherurus macrourus'' এবং অপরটি ''Hystrix indica''। খরগোশদের মধ্যে এদেশে আছে পিঙ্গল-লেজ খরগোশ (''Lepus nigricollis'') এবং আসামী শশক (''Caprolagus hispidus'')।  [এস.এম. হুমায়ুন কবির]


'''বন্যপ্রাণিসংক্রান্ত আইন, বিধি-বিধান ও কনভেনশন'''  (Acts, Regulations & Conventions relating to wildlife)  ১৯২৭ সালের ভারতীয় বন-বিধিতে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের কোন ব্যবস্থা ছিল না। এতে অবশ্য বনসম্পদের সংজ্ঞা দিতে সব বন্যপ্রাণী এবং চামড়া, দাঁত, শিং, হাড়, রেশম, গুঁটি, মধু, মোম ইত্যাদির উল্লেখ ছিল। ব্রিটিশ আমলে প্রয়োজনবোধে বন্য পাখি ও অন্যান্য প্রাণী, অথবা কোন নির্দিষ্ট প্রজাতি সংরক্ষণের জন্য কয়েকটি বিশেষ আইন/বিধি চালু ছিল। এগুলি হলো: ১. বন্য হাতি সংরক্ষণ আইন, ১৮৭৯; ২. বন্য পাখি ও জন্তু সংরক্ষণ আইন, ১৯১২; এবং ৩. বন্য গন্ডার সংরক্ষণ আইন, ১৯৩২।
'''''বন্যপ্রাণিসংক্রান্ত আইন, বিধি-বিধান ও কনভেনশন'''''  (Acts, Regulations & Conventions relating to wildlife)  ১৯২৭ সালের ভারতীয় বন-বিধিতে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের কোন ব্যবস্থা ছিল না। এতে অবশ্য বনসম্পদের সংজ্ঞা দিতে সব বন্যপ্রাণী এবং চামড়া, দাঁত, শিং, হাড়, রেশম, গুঁটি, মধু, মোম ইত্যাদির উল্লেখ ছিল। ব্রিটিশ আমলে প্রয়োজনবোধে বন্য পাখি ও অন্যান্য প্রাণী, অথবা কোন নির্দিষ্ট প্রজাতি সংরক্ষণের জন্য কয়েকটি বিশেষ আইন/বিধি চালু ছিল। এগুলি হলো: ১. বন্য হাতি সংরক্ষণ আইন, ১৮৭৯; ২. বন্য পাখি ও জন্তু সংরক্ষণ আইন, ১৯১২; এবং ৩. বন্য গন্ডার সংরক্ষণ আইন, ১৯৩২।


এসব আইন ছাড়াও ভারতীয় বন-আইন, ১৯২৭ ও অধ্যাদেশ, ১৯৫৯ সরকারের নিকট বনে শিকার ও মাছ ধরা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা ন্যস্ত করেছে যা প্রয়োজনবোধে প্রযোজ্য। পরবর্তীকালে ১৯৫৯ সালে সরকার ব্যক্তিগত ও সরকারি বনে এসব কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য পৃথক দুই প্রস্থ আইন তৈরি করে। এ দুটি বিধি মোতাবেক বন নিম্নোক্তভাবে শ্রেণিবদ্ধ হয়েছে:
এসব আইন ছাড়াও ভারতীয় বন-আইন, ১৯২৭ ও অধ্যাদেশ, ১৯৫৯ সরকারের নিকট বনে শিকার ও মাছ ধরা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা ন্যস্ত করেছে যা প্রয়োজনবোধে প্রযোজ্য। পরবর্তীকালে ১৯৫৯ সালে সরকার ব্যক্তিগত ও সরকারি বনে এসব কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য পৃথক দুই প্রস্থ আইন তৈরি করে। এ দুটি বিধি মোতাবেক বন নিম্নোক্তভাবে শ্রেণিবদ্ধ হয়েছে:
১১৭ নং লাইন: ১১৭ নং লাইন:
ব্রাজিলের রিও-দ্য-জেনিরোতে ৫ জনু, ১৯৯২ সালে গৃহীত এবং ২৯ ডিসেম্বর, ১৯৯৩ তারিখে বিশ্বব্যাপী কার্যকর Conversion on Biological Diversity বাংলাদেশ কর্তৃক সম্প্রতি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এছাড়া ৫ জুন, ১৯৯২ তারিখে Earth Summit কনভেনশনেও বাংলাদেশ অন্যতম স্বাক্ষরদাতা। কিন্তু এসব কনভেনশনের লক্ষ্যপূরণে বাংলাদেশের জন্য প্রযুক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা আবশ্যক।  [মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম]
ব্রাজিলের রিও-দ্য-জেনিরোতে ৫ জনু, ১৯৯২ সালে গৃহীত এবং ২৯ ডিসেম্বর, ১৯৯৩ তারিখে বিশ্বব্যাপী কার্যকর Conversion on Biological Diversity বাংলাদেশ কর্তৃক সম্প্রতি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এছাড়া ৫ জুন, ১৯৯২ তারিখে Earth Summit কনভেনশনেও বাংলাদেশ অন্যতম স্বাক্ষরদাতা। কিন্তু এসব কনভেনশনের লক্ষ্যপূরণে বাংলাদেশের জন্য প্রযুক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা আবশ্যক।  [মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম]


''আরও দেখুন''  [[টিকটিকি|টিকটিকি]]; [[পাখি|পাখি]]; [[প্রাণিকুল|প্রাণিকুল]]; [[বাদুর|বাদুর]]; [[ব্যাঙ|ব্যাঙ]]; [[সরীসৃপ|সরীসৃপ]]; [[সাপ|সাপ]]; [[স্তন্যপায়ী|স্তন্যপায়ী]]।
''আরও দেখুন''  [[টিকটিকিজাতীয় প্রাণী|টিকটিকিজাতীয় প্রাণী]]; [[পাখি|পাখি]]; [[প্রাণিকুল|প্রাণিকুল]]; [[বাদুড়|বাদুড়]]; [[ব্যাঙ|ব্যাঙ]]; [[সরীসৃপ|সরীসৃপ]]; [[সাপ|সাপ]]; [[স্তন্যপায়ী|স্তন্যপায়ী]]।




[[en:Wildlife]]
[[en:Wildlife]]

০৪:৩৩, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

বন্যপ্রাণী (Wildlife)   মানুষ, গৃহপালিত পশুপাখি এবং মাছ ব্যতীত প্রাকৃতিক  পরিবেশে বসবাসকারী মেরুদন্ডী প্রাণী।  উভচর, সরীসৃপ, পাখি এবং স্তন্যপায়ীর সদস্য, তাদের ডিম ও শাবক বন্যপ্রাণীদের অন্তর্ভুক্ত। মানুষের যত্ন ও সাহায্য ছাড়াই বন্যপ্রাণী স্বাধীনভাবে বাস করতে পারে। তবে বন্যপ্রাণী হলেই যে তাকে বনে-জঙ্গলে বাস করতে হবে এমন কোন কথা নেই। ঘরের টিকটিকি, বাড়ির আশেপাশের চড়ুই, কতুতর, শালিক, কাক সবই বন্যপ্রাণী।

মাত্র প্রায় ১,৪৭,৫৭০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে গঠিত বাংলাদেশে আছে প্রায় ২২ প্রজাতির উভচর, ১০৯ প্রজাতির অভ্যন্তরীণ ও ১৭ প্রজাতির সামুদ্রিক সরীসৃপ, ৩৮৮ প্রজাতির আবাসিক ও ২৪০ প্রজাতির পরিযায়ী পাখি এবং ১১০ প্রজাতির অন্তর্দেশীয় ও ৩ প্রজাতির সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণী। এমন ছোট একটি দেশে বন্যপ্রাণীর এরূপ অপূর্ব সমাবেশ এবং বৈচিত্র্য এক আশ্চর্য ঘটনা, যেখানে জনসংখ্যা প্রায় ১৩ কোটি এবং জনবসতি প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৮৮০ জনের অধিক। তবে এদেশের ভৌগলিক অবস্থান বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ; অসংখ্য নদ-নদী, খাল-বিল, ছোট বড় বিভিন্ন ধরনের বনাঞ্চল এবং মনোরম জলবায়ু বহু যুগ ধরে বাংলাদেশকে বিচিত্র বন্যপ্রাণীর অনবদ্য আবাসস্থান হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বর্তমানে দেশের অন্তর্দেশীয় ও আবাসিক ৮৯৫ প্রজাতির (২৬৬টি স্বাদুপানি ও স্বল্পলোনাপানির মাছসহ) মধ্যে ২০১ প্রজাতি বিভিন্ন ধরনের হুমকির সম্মুখীন এবং ২২৩ প্রজাতির অবস্থা অনিশ্চিত ও আশঙ্কাজনক।

বন্যপ্রাণী

বিগত ১০০ বছরে বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে গেছে এক ডজনের বেশি বন্যপ্রাণী। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য এক শিংবিশিষ্ট গন্ডার, Rhinoceros unicornis; জাভান গন্ডার, R. sondaicus; এশিয়ান দু’শিংবিশিষ্ট গন্ডার, Didermoceros sumatrensis; গাউর, Bos gaurus; বেন্টিং, B. banteng; বুনো মহিষ, Bubalus bubalis; হরিণ, Axis porcinus এবং Cervus duvaucelli; নীলগাই, Boselaphus tragocamelus; নেকড়ে, Canis lupus; নুকতা হাঁস, Rhodonessa caryo; phyllacea; ময়ূর, Pavo cristatus; এবং বাদার কুমির, Crocodylus palustris; (Redbook of Threatened Animals: IUCN-Bangladesh, 2000)।

যেহেতু অধিকাংশ বন্যপ্রাণী প্রধানত বনাঞ্চলের ধরন, অবস্থা এবং বিস্তৃতির উপর নির্ভরশীল, এসব প্রাকৃতিক পরিবেশের অবনতি তাই স্থানীয় ও আবাসিক পশুপাখিকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। বিগত তিন দশকে বাংলাদেশে বনাঞ্চলের অবনতি ঘটেছে প্রচন্ডভাবে। অনুমান করা হয় যে ১৯৭০ শতক থেকে বনভূমির পরিমাণ শতকরা ৫০ ভাগের বেশি হ্রাস পেয়েছে। ১৯৯০ সালের এক হিসাব থেকে জানা যায় বাংলাদেশে বর্তমানে মাথাপিছু বনভূমির পরিমাণ ০.০২ হেক্টরের কম; নিঃসন্দেহে বনভূমি ও মানুষের মধ্যকার এ অনুপাত পৃথিবীর যেকোন দেশের তুলনায় সর্বনিম্ন। বর্তমানে দেশে বন আচ্ছাদনের পরিমাণ ৮% এর কম।

বাংলাদেশে উভচর প্রাণীদের যে ২২টি প্রজাতি রয়েছে তার সবগুলিই Anura বর্গের সদস্য, এর মধ্যে যদিও ৮টির অবস্থা আশঙ্কাজনক হিসেবে তালিকাবদ্ধ হয়েছে। Gymnophiona এবং Caudata বর্গ দু’টির কোন প্রতিনিধি এ দেশে নেই। কিছুদিন পূর্বে (১৯৮৮-১৯৯৩) বাংলাদেশ থেকে কোলা ব্যাঙের (Hoplobatracus tigerinus) পা বিদেশে রপ্তানি করা হতো, সম্প্রতি তা বন্ধ করা হয়েছে।

সরীসৃপ শ্রেণির প্রাণীদের মধ্যে বাংলাদেশে আছে টিককিটি, সাপ, কচ্ছপ, কাছিম, কুমির এবং ঘড়িয়াল। এদের মোট ১২৬টি প্রজাতির মধ্যে ১০৯টি অন্তর্দেশীয় এবং ১৭টি সামুদ্রিক। অভ্যন্তরীণ ১০৯ প্রজাতির মধ্যে ২টি কুমির/ঘড়িয়াল, ২১টি কচ্ছপ/কাছিম, ১৮টি টিকটিকিজাতীয় এবং ৬৭টি সাপ। বাদার কুমির (Marsh crocodile, C. palustris) দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশে আর টিকে নেই। ঘড়িয়ালের (Gavialis gangeticus) অবস্থাও সন্তোষজনক নয়, মাত্র গুটিকয়েক সদস্য পদ্মা নদীর সীমিত এলাকায় বেঁচে আছে।

সারণি বাংলাদেশে অন্তর্দেশীয় ও আবাসিক মেরুদন্ডী প্রাণীদের (মাছ বাদে) বর্তমান অবস্থা (বাংলাদেশ জাতীয় মান অনুযায়ী)

দল মোট জীবিত প্রাণী বিলুপ্ত মারাত্মক বিপন্ন অবস্থা বিপন্ন বিপন্নপ্রায়
উভচর ৩০
সরীসৃপ ১৫৪ ১২ ২৪ ২২
পাখি ৩০১ ১৯ ১৮
স্তন্যপায়ী ১১৯ ১০ ২১ ১৩

উৎস  Encyclopedia of Flora and Fauna of Bangladesh, 2009.

কচ্ছপ কাছিমদের মধ্যে নদীর কাউট্যা (River terrapin, Batagur baska), ধূড় কাছিম (Kachuga dhongoka), হলুদ পাহাড়ি কাছিম (Indotestudo elongata), পাহাড়ি কাছিম (Asian giant tortoise, Manouria emys) এবং বোস্তামি কাছিম (Aspideretes nigricans) অতি বিপন্ন। টিকটিকিজাতীয় সরীসৃপদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মিশ্র চিরহরিৎ বনের উড়ন্ত টিকটিকি (Draco blanfordii), রামগুদি/কালোগুই (Varanus salvator), গুইসাপ (V. bengalensis), সোনাগুই/হলদেগুই (V. flavescens), তক্ষক (Gekko gecko), রক্তচোষা (Calotes rouxii, C. jerdoni, C. versicolor), স্ট্রাইপড স্কিঙ্ক (Mabuya dissimilis), এবং টিকটিকি (Hemidactylus bowringii, H. brookii, H. flaviviridis, H. frenatus)।

বাংলাদেশে আছে ৬৭টি অন্তর্দেশীয় এবং ১২টি সামুদ্রিক সাপের প্রজাতি; এর মধ্যে ৬-৭টি মারাত্মক বিষধর। দেশের গুরুত্বপূর্ণ সাপগুলি হলো: দু’মুখী সাপ (Typhlops porrectus), বালু বোরা (Eryx conica), অজগর (Python molurus), গোলবাহার (P. reticulata), লাউডোগা/সুতানলী সাপ (Ahaetulla nasutus), ডোঁরাসাপ (C. palustris), দাঁড়াশ সাপ (Coluber mucosus, C. nigromarginatus), দুধরাজ (Elaphe helena), ঘরগিন্নী সাপ (Lycodon aulicus, L. fasciatus, L. jara), ঢোঁরাসাপ/কালো মেটে ঢোঁরাসাপ (Xenocrophis cerasogaster, X. piscator), কাল কেউটে (Bungarus caeruleus, B. fasciatus, B. niger, B. lividus), গোখরা (Naja kaouthia, N. naja), পদ্ম গোখরা/রাজ গোখরা (Ophiophagus hannah), ভাইপার সাপ (Trimeresurus spp.), এবং চন্দ্রবোরা (Russell’s viper, Vipera russellii)।

বাংলাদেশের প্রায় ৬২৮ প্রজাতির পাখির মধ্যে ৩৮৮টি আবাসিক এবং ২৪০টি পরিযায়ী। সারস (Grus antigone) এদেশের সবচেয়ে বড় পাখি, উচ্চতা হয় প্রায় ১.৭ মিটার। তবে এ পাখি এখন বিরল, কদাচিৎ দেখা যায়। কতক মধুপায়ী ও সানবার্ড (sunbird) দৈর্ঘ্যে মাত্র ৭-৮ সেমি; সম্ভবত এদেশে এরাই পাখিদের মধ্যে ক্ষুদ্রতম। বনভূমির অবনতি ও অবক্ষয় এবং সেসঙ্গে বাস্ত্ততন্ত্রের পরিবর্তন নিঃসন্দেহে পাখি সম্পদকে দারুণভাবে প্রভাবিত করেছে। বনাঞ্চল এবং জলাভূমির সঙ্গে সম্পৃক্ত বহু পাখির সংখ্যা এখন কমে গিয়েছে। এক সময় পিনহেড হাঁস (Rhodonessa carryophyllacea), বুঁচাহাঁস (Sarkidiornis melanotos), ময়ূর (Pavo cristatus), বর্মী ময়ূর (P. muticus), সারস এবং বেঙ্গল ফ্লোরিক্যান (Eupodotis bengalensis) পাখিগুলি এদেশে কমবেশি সর্বত্র দেখা গেলেও এখন আর তেমন দেখা যায় না।

অধিকাংশ পরিযায়ী পাখি বাংলাদেশে আসে এ উপমহাদেশের উত্তর অঞ্চলের পার্বত্য এলাকা থেকে। কতক আসে ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চল ও সাইবেরিয়া থেকে। অনেক প্রজাতি দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব এলাকার দেশগুলিতে তাদের অভীষ্ট স্থানে পৌঁছবার পূর্বে যাত্রাপথে বাংলাদেশে কিছু সময়ের জন্য বিরতি নেয়। আবার অনেক পরিযায়ী পাখিই শরৎ ও বসন্তকালে বাংলাদেশেই অবস্থান করে, তারপর নিজের দেশে ফিরে যায়।

তিন প্রজাতির সামুদ্রিক স্তন্যপায়িসহ বাংলাদেশে Mammalia শ্রেণির মোট প্রজাতি সংখ্যা প্রায় ১১৩টি। এখানে একদিকে আছে ক্ষুদ্রাকার বামন চিকা (Pygmy shrew, Suncus estruscus) এবং গিপেস্ট্রেল বাদুর (Indian pygmy pipistrelle), যাদের ওজন মাত্র কয়েক গ্রাম এবং দৈর্ঘ্যে কয়েক সেমি, অপরদিকে রয়েছে হাতি (Elephas mximus) যার উচ্চতা ঘাড় বরাবর তিন মিটারের অধিক এবং ওজনও হয় প্রায় চার মেট্রিক টন। বৃহত্তম স্তন্যপায়ী নীল তিমি (Balaenoptera musculus) কখনও কখনও বাংলাদেশের জলসীমার মধ্যে ঢুকে পড়ে; এদের দৈর্ঘ্য প্রায় ৩০ মিটার এবং ওজন প্রায় ১৫০ মেট্রিক টন।

অন্তর্দেশীয় স্তন্যপায়ীদের মধ্যে Chiroptera বর্গ সবচেয়ে বড়। সাধারণভাবে বাদুর ও চামচিকা নামে পরিচিত এ দলের ৮টি গোত্রের ২৯টি প্রজাতি বাংলাদেশে আছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সদস্য কোলা বাদুর (Pteropus giganteus), বোঁচা কোলা বাদুর, ডাইনী বাদুর (Megaderma lyra) এবং চামচিকা (Pipistrellus coromandra)।

প্রাইমেটস বর্গের ১০টি প্রজাতির মধ্যে সুপরিচিত লজ্জাবতী বানর (Slow loris, Nycticebus coucang), রেসাস বানর (Macaca mulatta), হনুমান বা ল্যাংগুর (Semnopithecus entellus), কাঁকড়াভুক বানর (Macaca fascicularis) এবং উল্লুক (Hoolock gibbon, Hylobates hoolock)। মাংসাশী স্তন্যপায়ীদের (order Carnivora) ২৭টি প্রজাতি বাংলাদেশে রয়েছে। এর মধ্যে শিয়াল (Canis aureus), নেকড়ে (C. lupus), ঢোল (Asian wild dog), বনবিড়াল (Felis chaus), চিতা বাঘ (Panthera pardus), বাঘ (Royal Bengal Tiger, Panthera tigris), বেজি, উদবিড়াল, ভল্লুক এবং গন্ধগোকুল উল্লেখযোগ্য।

কেবল চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু এলাকাতে হাতি সীমাবদ্ধ। সুন্দরবনে হাতি নেই। খুরযুক্ত বন্যপ্রাণীদের মধ্যে চিতল হরিণ বা চিত্রা হরিণ (Cervus axis), সাম্বার (Cervus unicolor), মায়া হরিণ (Muntiacus muntjac) এবং বন্য শূকর (Sus scrofa) উল্লেখযোগ্য। স্থানীয়ভাবে পিঁপড়েভুক এবং বনরুই নামে পরিচিত Pholidota বর্গের Manis crassicaudata, M. javanica এবং M. pentadactyla প্রজাতি তিনটি সিলেট, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও ময়মনসিংহের বনাঞ্চলে কদাচিৎ দেখা যায়। সবগুলি প্রজাতিই বিপন্ন।

অন্তত ২১ প্রজাতির ইঁদুরজাতীয় প্রাণী (Rodentia) বাংলাদেশে শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে Muridae গোত্রের কতক প্রজাতি সারা দেশে ব্যাপক বিস্তৃত। ইঁদুরদের মধ্যে বেশি দেখা যায় Rattus rattus, R. norvegicus, Mus musculus এবং Bandicota indica। কাঠবিড়ালীদের আটটি প্রজাতি এদেশে আছে। এর মধ্যে বাদামী কাঠবিড়ালী (Callosciurus pygerythrus), ডোরা কাঠবিড়ালী (Funambulus pennanti) এবং উড়ুক্কু কাঠবিড়ালী (Petaurista magnificus) উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশে যে দুটি সজারু প্রজাতি আছে তার একটি Atherurus macrourus এবং অপরটি Hystrix indica। খরগোশদের মধ্যে এদেশে আছে পিঙ্গল-লেজ খরগোশ (Lepus nigricollis) এবং আসামী শশক (Caprolagus hispidus)।  [এস.এম. হুমায়ুন কবির]

বন্যপ্রাণিসংক্রান্ত আইন, বিধি-বিধান ও কনভেনশন  (Acts, Regulations & Conventions relating to wildlife)  ১৯২৭ সালের ভারতীয় বন-বিধিতে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের কোন ব্যবস্থা ছিল না। এতে অবশ্য বনসম্পদের সংজ্ঞা দিতে সব বন্যপ্রাণী এবং চামড়া, দাঁত, শিং, হাড়, রেশম, গুঁটি, মধু, মোম ইত্যাদির উল্লেখ ছিল। ব্রিটিশ আমলে প্রয়োজনবোধে বন্য পাখি ও অন্যান্য প্রাণী, অথবা কোন নির্দিষ্ট প্রজাতি সংরক্ষণের জন্য কয়েকটি বিশেষ আইন/বিধি চালু ছিল। এগুলি হলো: ১. বন্য হাতি সংরক্ষণ আইন, ১৮৭৯; ২. বন্য পাখি ও জন্তু সংরক্ষণ আইন, ১৯১২; এবং ৩. বন্য গন্ডার সংরক্ষণ আইন, ১৯৩২।

এসব আইন ছাড়াও ভারতীয় বন-আইন, ১৯২৭ ও অধ্যাদেশ, ১৯৫৯ সরকারের নিকট বনে শিকার ও মাছ ধরা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা ন্যস্ত করেছে যা প্রয়োজনবোধে প্রযোজ্য। পরবর্তীকালে ১৯৫৯ সালে সরকার ব্যক্তিগত ও সরকারি বনে এসব কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য পৃথক দুই প্রস্থ আইন তৈরি করে। এ দুটি বিধি মোতাবেক বন নিম্নোক্তভাবে শ্রেণিবদ্ধ হয়েছে:

১ম শ্রেণি  কোন বিশেষ প্রজাতির অবলুপ্তি রোধের জন্য কিংবা অভয়ারণ্য বা অন্য কোন উদ্দেশ্যে এসব বনে সব ধরনের শিকার, ফাঁদ-পাতা বা মাছ-ধরা নিষিদ্ধ, যতদিন না একটি প্রজাতি বৃদ্ধি পেয়ে অন্যান্য সম্পদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে ওঠে।

২য় শ্রেণি  এই ধরনের বনে এসব আইন মোতাবেক বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত বা অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাই শুধু শিকার, ফাঁদ-পাতা বা মাছ ধরতে পারবে।

এসব আইন বন্যপ্রাণী রক্ষায় ততটা কার্যকর বলে প্রমাণিত হয় নি। ফলে, বাংলাদেশ সরকার রাষ্ট্রপতির আদেশ নং ২৩, ১৯৭৩ হিসাবে ‘বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আদেশ ১৯৭৩’ জারি করে। অতঃপর ‘বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) (সংশোধন) বিধি, ১৯৭৪’ হিসেবে ১৯৭৩ সালের এই আইন সংশোধিত, সম্প্রসারিত ও পুনঃবিধিবদ্ধ হয়। সংশোধিত বিধিতে আছে ৪৮ ধারা ও ৩ তফশিল। এতে রয়েছে: বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী উপদেষ্টা পরিষদ গঠন, অভয়ারণ্য, জাতীয় পার্ক ও শিকারভূমি প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা; আইনভঙ্গকারীর জন্য জরিমানা ও শাস্তি; বন্যপ্রাণী আমদানি ও রপ্তানি; ভ্রাম্যমাণ আদালত গঠন; সরকারি কর্মচারীদের দায়িত্ব ও কর্তব্য; এবং এই আইনের ভিত্তিতে বিধি-বিধান প্রণয়ন। এটি ১৮৭৯, ১৯১২ ও ১৯৩২ সালের আইনগুলিও বাতিল করে। এই তফশিলে বন্যপ্রাণীর একটি তালিকা রয়েছে, তাতে অন্তর্ভুক্ত যেগুলির শিকার অনুমতি সাপেক্ষে বৈধ; যেসব প্রাণী এবং তাদের সংরক্ষণযোগ্য অংশ ও মাংস রাখা, হস্তান্তর ও ব্যবসার জন্য অনুমতিপত্র প্রয়োজন; যেগুলি শিকার, হত্যা বা ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

প্রথম তফশিলে রয়েছে উভচর ৩, সরীসৃপ ৩, পাখি ২৭ ও স্তন্যপায়ীর ৩ প্রজাতি। কাঁকড়াও এতে অন্তর্ভুক্ত। এ তফশিলে বর্ণিত প্রাণী সাধারণ অনুমতিপত্র নিয়েই শিকার করা যাবে। প্রথম তফশিলের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে উল্লেখিত সরীসৃপ, পাখি ও স্তন্যপায়ী শিকারের জন্য বিশেষ অনুমতিপত্র আবশ্যক, অর্থাৎ এসব প্রাণীর মধ্যে মানুষখেকো বাঘ, বন্য হাতি ইত্যাদির সংখ্যা বৃদ্ধি একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের প্রাকৃতিক ভারসাম্যে বিঘ্ন ঘটালে কিংবা জান ও মালের জন্য হুমকি হয়ে উঠলে এই ধরনের অনুমতিপত্র পাওয়া যাবে। দ্বিতীয় তফশিলভুক্ত প্রাণীদের সংরক্ষণযোগ্য অংশ, মাংস বা চামড়া আইনসিদ্ধ অনুমতিপত্র ব্যতিরেকে রাখা অবৈধ। এতে আরও রয়েছে ১৮ সরীসৃপ, ৪৬১ পাখি ও ৬৭ স্তন্যপায়ী প্রজাতি যেগুলি শিকার, হত্যা বা ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এই তফশিল মোতাবেক গর্ভবতী, দুগ্ধদাতা ও শাবকসহ মা-পশুদের শিকার নিষিদ্ধ। তফশিলের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে উল্লেখিত সব প্রাণীর স্ত্রী-পশু বিপজ্জনক ঘোষিত (মানুষখেকো বাঘ, বন্য হাতি ইত্যাদি) না হলে শিকার করা যাবে না।

১৯৭৪ সালের আইন ১৯২৭ সালের বিধি ও সংশ্লিষ্ট নিয়ম-কানুনের সঙ্গে এর সম্পর্ক উল্লেখ করে নি। ১৯২৭ সালের আইনের প্রাসঙ্গিক ধারাগুলিও এতদদ্বারা বাতিল হয় নি। বলা যেতে পারে, ১৯৭৪ সালের আইন একটি স্থায়ী বিধি হিসেবে ১৯২৭ সালের আইনের যাবতীয় বিধি-বিধান রহিত করেছে। ১৯৭৪ সালের আইনটি অবশ্য সর্বাঙ্গীন নয়, যথেষ্ট পূর্ণাঙ্গও নয়, তাতে বাদ গেছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। উপযুক্ত লোকবল, অর্থবল ও সুযোগ-সুবিধার অভাবে উল্লেখিত বিধিগুলিও যথাযোগ্যভাবে প্রয়োগ করা যায় না। আইনটির প্রয়োজনীয় সংশোধন আবশ্যক বলে বিশেষষ্ণদের ধারণা।

এছাড়া এমন আরও কিছু সাধারণ ধরনের আইন-কানুন রয়েছে যেগুলি বনসম্পদ ও বনপ্রশাসনকে যথেষ্ট প্রভাবিত করে এবং যেগুলি প্রণীত হয়েছিল বাংলাদেশ সৃষ্টির বহু আগে। এগুলিরই গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি: Penal Code, 1860 (Central Act No. XLV of 1860); Cattle Trespass Act, 1871 (Central Act, 1872 NO. I of 1872); Contact Act, 1872; Limitation Act 1877 (Central Act XV of 1877). Land Acquisition Act, 1894 (Central Act No. I of 1894); Criminal Procedure Code, 1808 (Central Act Nov of 1898); Civil Procedure Code, 1908 (Central Act No. V of 1908); Registration Act, 1908; Sale of Goods Act, 1930; East Bengal Government Land (Recovery and Possession) and Building Act, 1952.

আন্তর্জাতিক কনভেনশন, চুক্তি ও প্রটোকল (ICTPs)  বাংলাদেশ বন ও বনসম্পদসংশ্লিষ্ট কয়েকটি আন্তর্জাতিক কনভেনশন, চুক্তি ও প্রটোকলের স্বাক্ষরদাতা। এগুলির কোন কোনটি অনুমোদিত না হলেও স্বাক্ষরিত হওয়ার সুবাদে এগুলির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের পক্ষে ক্ষতিকর সব ধরনের কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। এগুলি হলো:

Convention on International Trade in Endangered Species of Wild Fauna and Flora (CITES: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি-তে ১৯৭৩ সালের ৩ মার্চ গৃহীত এবং ১ জুলাই, ১৯৭৫ থেকে কার্যকর; বাংলাদেশ কর্তৃক ২০ নভেম্বর, ১৯৮১ তারিখে স্বাক্ষরিত)। আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ প্রণালীর মাধ্যমে অতিআহরণ থেকে কিছুসংখ্যক বিপন্ন প্রজাতির রক্ষাবিধানই মূল উদ্দেশ্য।

Convention on Wetland of International Importance Especially Waterfowl Habitats (Ramsar Convention), ১৯৭১ সালে গৃহীত। বাংলাদেশ এই কনভেনশনের শরিক। International Convention on Oil Pollution Preparedness, Response and Cooperation; ব্রিটেনের লন্ডনে ৩০ নভেম্বর, ১৯৯০ তারিখে গৃহীত এবং বাংলাদেশ কর্তৃক ৩০ নভেম্বর, ১৯৯০ সালে স্বাক্ষরিত। এটি এখনও বিশ্বব্যাপী কার্যকর নয়।

International Convention to Combat Desertification; ১৭ জুন, ১৯৯৪ তারিখে ফ্রান্সের প্যারিসে গৃহীত এবং ২১ জুন, ১৯৯৪ তারিখে বাংলাদেশ কর্তৃক স্বাক্ষরিত। বিশ্বব্যাপী এখনও গৃহীত হয় নি।

Convention Concerning the Protection of the World Cultural and National Heritage  (৩ নভেম্বর, ১৯৮৩ তারিখে স্বাক্ষরিত)। এর উদ্দেশ্য স্থায়ী ভিত্তিতে ও আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বিশ্বের চিরন্তন মূল্যবান সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক ঐতিহ্যগুলি সুরক্ষার একটি কার্যকর প্রদ্ধতি প্রতিষ্ঠা।

International Plant Protection Convention ১ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৮ তারিখে স্বাক্ষরিত। এর উদ্দেশ্য উদ্ভিদ ও উদ্ভিজ্জাত দ্রব্যের ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ ও রোগবালাই নিয়ন্ত্রণে এবং বিভিন্ন দেশের সীমানা ছাড়িয়ে সেগুলির অনুপ্রবেশ ও বিস্তার রোধে অব্যাহত আন্তর্জাতিক সহযোগিতা।

Plant Protection Agreement for the Asia and Pacific Regions (৪ ডিসেম্বর, ১৯৭৪ তারিখে স্বাক্ষরিত)। এর লক্ষ্যও এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলে উদ্ভিদের ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ এবং রোগের অনুপ্রবেশ ও বিস্তার রোধ।

Treaty Banning Nuclear Weapon Tests in the Atmosphere, in Outer Space and under Water. ৯ জুন, ১৯৯২ তারিখে গৃহীত এবং ১৯৯৫ সালের মার্চ মাসে সারা বিশ্বে কার্যকর। বাংলাদেশ কর্তৃক ৯, জুন ১৯৯২ তারিখে স্বাক্ষরিত।

United Nations Framework Convention on Climate Change, New York (৯ জুন, ১৯৯২ তারিখে গৃহীত, সারা বিশ্বে ১৯৯৫ সালের মার্চ মাস থেকে কার্যকর; ৯ জুন, ১৯৯২ তারিখে বাংলাদেশ কর্তৃক স্বাক্ষরিত)।

ব্রাজিলের রিও-দ্য-জেনিরোতে ৫ জনু, ১৯৯২ সালে গৃহীত এবং ২৯ ডিসেম্বর, ১৯৯৩ তারিখে বিশ্বব্যাপী কার্যকর Conversion on Biological Diversity বাংলাদেশ কর্তৃক সম্প্রতি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এছাড়া ৫ জুন, ১৯৯২ তারিখে Earth Summit কনভেনশনেও বাংলাদেশ অন্যতম স্বাক্ষরদাতা। কিন্তু এসব কনভেনশনের লক্ষ্যপূরণে বাংলাদেশের জন্য প্রযুক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা আবশ্যক।  [মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম]

আরও দেখুন টিকটিকিজাতীয় প্রাণী; পাখি; প্রাণিকুল; বাদুড়; ব্যাঙ; সরীসৃপ; সাপ; স্তন্যপায়ী