চৌধুরী, আনোয়ারা বাহার

চৌধুরী, আনোয়ারা বাহার (১৯১৯-১৯৮৭)  সমাজসেবক, শিক্ষাবিদ, লেখক। জন্ম ১৯১৯ সালে মুর্শিদাবাদ জেলার আজিজগঞ্জে। তাঁর শৈশবকাল অতিবাহিত হয় মানিকগঞ্জ জেলায়। ঢাকার পৌর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তাঁর শিক্ষাজীবন শূরু হয়। তৃতীয় শ্রেণীতে তিনি বৃত্তি পান এবং ১৯২৯ সালে নিউ গার্লস হাই স্কুলে চতুর্থ শ্রেণীতে ভর্তি হন। পরে কলকাতায় সাখাওয়াৎ মেমোরিয়াল থেকে প্রবেশিকা পাস করেন। তিনি বেথুন কলেজ থেকে আইএ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৩৮ সালে বিএ এবং ১৯৪০ সালে বিটি পাস করেন। মেধাবী ছাত্রী হওয়া সত্ত্বেও পবিবারিক রক্ষণশীলতার কারণে তাঁকে অবরোধবাসিনী হয়ে পাঠ সমাপ্ত করতে হয়।

কর্মজীবনের শুরুতে তিনি কিছুদিন কলকাতায় লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে শিক্ষকতা করেন। তবে তার সুদীর্ঘ কর্মময় জীবন কাটে কলকাতার সাখাওয়াৎ মেমোরিয়াল স্কুল, ময়মনসিংহের বিদ্যাময়ী স্কুল, ঢাকার কামরুন্নেসা স্কুল ও কলেজ এবং বাংলাবাজার হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষয়িত্রী পদে।

১৯৪১ সালে তিনি ঢাকায় ‘সুরবিতান’ নামে নৃত্য ও সঙ্গীত বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ১৯৫৫ সালে ‘বুলবুল ললিতকলা একাডেমী’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, কোষাধ্যক্ষ এবং পরে এর সম্পাদক হন। তিনি বাংলা একাডেমীর জীবন সদস্য ছিলেন। ১৯৬১ সালে ঢাকার শান্তিনগরে হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকে তিনি এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে ছিলেন। আনোয়ারা বাহার চৌধুরী ‘আপওয়া’র সহসভানেত্রী ও ‘আঞ্জুমানে খাওয়াতিনে ইসলামে’র সম্পাদক হিসেবেও বহুদিন সমাজসেবায় নিয়োজিত ছিলেন।

ছাত্রাবস্থা থেকেই তিনি সাহিত্যচর্চায় নিয়োজিত ছিলেন। সাহিত্যে তাঁর প্রথম আত্মপ্রকাশ ‘চতুর্থবার হজ্ব’ নামক একটি ছোট গল্পের মাধ্যমে। পরবর্তী সময়ে তাঁর বেশ কিছু রচনা ও গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। তাঁর প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ: ১. ছবি দেখি ছড়া শিখি, ২. কিচির মিচির, ৩. হরেক রকম, ৪. বিচিত্রা, ৫.আমার চেতনার রং। ১৯৮৭ সালের ২৭ আক্টোবর তাঁর মৃত্যু হয়। [মোহাম্মদ কবিরুল হাসান]