কাঁঠালিয়া উপজেলা

Banglapedia admin (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১১:৩৮, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (হালনাগাদ)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

কাঁঠালিয়া উপজেলা (ঝালকাঠি জেলা)  আয়তন: ১৫১.২৯ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°২০´ থেকে ২২°৩১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০১´ থেকে ৯০°১২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে রাজাপুর ও ভান্ডারিয়া উপজেলা, দক্ষিণে বামনা উপজেলা, পূর্বে বেতাগী উপজেলা, পশ্চিমে ভান্ডারিয়া ও মঠবাড়িয়া উপজেলা।

জনসংখ্যা ১২৪২৭১; পুরুষ ৬০৫১৫, মহিলা ৬৩৭৫৬। মুসলিম ১০৭১২২, হিন্দু ১৭১৪২, খ্রিস্টান ৬ এবং অন্যান্য ১।

জলাশয় বিষখালী ও গজালিয়া নদী উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন থানা গঠিত হয় ৬ আগস্ট ১৯১৮ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৫ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ৪৭ ৫২ ১০১৬১ ১১৪১১০ ৮২১ ৭৪.৮ ৬৪.৪
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৭.৪২ ১০১৬১ ১৩৬৯ ৭৪.৮
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আওরাবুনিয়া ৩১ ৫০৩২ ৮২২৭ ৮৬৭৪ ৬৯.০
আমুয়া ১৫ ৬১৯৪ ১১৭৩৬ ১২৩১৭ ৫৮.৪
কাঁঠালিয়া ৬৩ ৪৩২৪ ৯৩৭৬ ৯৯৫৭ ৭২.৯
চেঁচুরি শ্রীরামপুর ৪৭ ৮৪৪১ ১২১৯৩ ১২৮৫১ ৬৯.০
পাটিখালঘাটা ৭৯ ৪৪১৪ ৭৭০৯ ৮০৬৮ ৬৪.১
শৌলজালিয়া ৯৪ ৮৯৮১ ১১২৭৪ ১১৮৮৯ ৬০.৩

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে পাকবাহিনী এ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। এ উপজেলার দক্ষিণ সীমান্তে আমুয়া গ্রামে পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের তুমুল লড়াই হয়। এ যুদ্ধে বহুলোক হতাহত হয়। উপজেলার আমুয়া ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন স্থানে শহীদ হেমায়েত উদ্দিন স্মৃতিস্তম্ভ নামে একটি স্থাপত্য নির্মিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন কাঁঠালিয়া উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৭।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৪৬০, মন্দির ১০৮, তীর্থস্থান ১।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৬৫.৩%; পুরুষ ৬৬.৬%, মহিলা ৬৪.১%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কাঁঠালিয়া পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কাঁঠালিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, চিংড়াখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চিংড়াখালী সিনিয়র আলিম মাদ্রাসা (১৯২৪)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১৯, ক্লাব ৪৮, সিনেমা হল ১, মহিলা সংগঠন ১, খেলার মাঠ ৩০।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৬.৮৩%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৭১%, ব্যবসা ১৪.৯৩%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.১৬%, চাকরি ১০.৪২%, নির্মাণ ১.৮৮%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৮%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১.০৯% এবং অন্যান্য ৯.৬০%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৭৬.০৫%, ভূমিহীন ২৩.৯৫%। শহরে ৬০.৮১% এবং গ্রামে ৭৭.১৮% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, আলু, ডাল, পিঁয়াজ, রসুন, পান, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, সরিষা, মিষ্টি আলু।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, নারিকেল, লিচু, কলা, পেঁপে, আমড়া, পেয়ারা।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার  এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগির খামার, হ্যাচারি ও নার্সারি রয়েছে।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকা রাস্তা ৫৫.০১ কিমি, আধাপাকা ৮২.৩৪ কিমি, কাঁচা রাস্তা ৫৬৮.৮৪ কিমি; নৌপথ ১৩০ কিমি; ব্রিজ ২৮; কালভার্ট ৫৮৫।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পালকি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা ফ্লাওয়ার মিল, আইস ফ্যাক্টরি, লবণ ফ্যাক্টরি।

কুটিরশিল্প তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, বাঁশের কাজ, সেলাই কাজ, ওয়েল্ডিং কারখানা।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২৫, মেলা ৫। আমুয়া হাট, ঘোষের হাট, কৈখালী হাট, আউড়া হাট, মরিচবুনিয়া হাট, তালতলা হাট এবং ছোনাউটা ঘোড়াদহ মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  ধান, পান, পিঁয়াজ, রসুন, কলা, পেঁপে, গুড়।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৪০.১% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৭৮.৫%, ট্যাপ ১.১% এবং অন্যান্য ২০.৪%। ২০০২ সালে উপজেলার গভীর ও অগভীর নলকূপের পানি পরীক্ষা করে ৫% নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। বর্তমানে ৭২% অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের অস্তিত্ব রয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৮৭.৭% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১০.৮% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১.৫% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৭, কমিউনিটি ক্লিনিক ২০, উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র ৩।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৭৬৩ সালের ভূমিকম্পে এখানকার নদীগুলোর গতিপথের পরিবর্তন ঘটে। ১৭৮৬ সালের বন্যা এবং ১৮২২, ১৮৭৬, ১৯৬০, ১৯৬৫ ও ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে বহু লোক প্রাণ হারায় এবং ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, দিকস। [শাহ মোঃ হাবিবুল্লাহ আবুয়াদি]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কাঁঠালিয়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।