রহমান, হাকিম হাবিবুর: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Image:RahmanHakimHabibur.jpg|thumb|right|হাকিম হাবিবুর রহমান]]
'''রহমান, হাকিম হাবিবুর''' (১৮৮১-১৯৪৭)  ইউনানী চিকিৎসক, সাহিত্যসেবী, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ। ইউনানী চিকিৎসা শাস্ত্রে একজন খ্যাতিমান চিকিৎসক ছাড়াও হাকিম হাবিবুর রহমান সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে খুবই প্রভাবশালী ছিলেন। তিনি ১৮৮১ সালের ২৩ মার্চ ঢাকার [[ছোট কাটরা|ছোট কাটরা]] মহল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের বেশির ভাগ ছেলেমেয়েদের মতো তিনি বাড়িতেই প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। ঢাকা মাদ্রাসা ও কানপুর দারুল উলুম মাদ্রাসা থেকে তিনি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করেন। লক্ষ্ণৌ, দিল্লিও আগ্রাতে ইউনানী চিকিৎসা পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ লাভের পর তিনি ১৯০৪ সালে চিকিৎসা পেশায় আত্মনিয়োগ করেন।
'''রহমান, হাকিম হাবিবুর''' (১৮৮১-১৯৪৭)  ইউনানী চিকিৎসক, সাহিত্যসেবী, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ। ইউনানী চিকিৎসা শাস্ত্রে একজন খ্যাতিমান চিকিৎসক ছাড়াও হাকিম হাবিবুর রহমান সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে খুবই প্রভাবশালী ছিলেন। তিনি ১৮৮১ সালের ২৩ মার্চ ঢাকার [[ছোট কাটরা|ছোট কাটরা]] মহল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের বেশির ভাগ ছেলেমেয়েদের মতো তিনি বাড়িতেই প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। ঢাকা মাদ্রাসা ও কানপুর দারুল উলুম মাদ্রাসা থেকে তিনি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করেন। লক্ষ্ণৌ, দিল্লিও আগ্রাতে ইউনানী চিকিৎসা পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ লাভের পর তিনি ১৯০৪ সালে চিকিৎসা পেশায় আত্মনিয়োগ করেন।


হাকিম হাবিবুর রহমান ছিলেন নওয়াব স্যার  খাজা সলিমুল্লাহর ঘনিষ্ঠ সহযোগী। ১৯৩০ সালে তিনি ঢাকায় ‘তিবিবয়া হাবিবিয়া কলেজ’ প্রতিষ্ঠা করেন। পূর্ববাংলার মানুষকে ইউনানী চিকিৎসা সেবা দানের স্বীকৃতিস্বরূপ ব্রিটিশ সরকার তাঁকে ১৯৩৯ সালে ‘শেফা-উল-মুলক’ খেতাবে ভূষিত করেন। চিকিৎসা পেশার পাশাপাশি তিনি প্রচুর লেখালেখি করেন। তিনি ১৯০৬ সালে উর্দু মাসিক পত্র আল-মাশরিক সম্পাদনা করেন। এছাড়াও ১৯২৪ সালে তিনি খাজা আদেলের সঙ্গে যৌথভাবে যাদু নামে অপর একটি উর্দু মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। পত্রিকাটি মাত্র দুই বছর টিকেছিল। হাকিম হাবিবুর রহমান প্রায়শ ‘আহসান’  ছদ্মনামে লিখতেন। তাঁর অসংখ্য লেখার মধ্যে রয়েছে আল-ফারিক, হায়াত-ই-সুকরত, আসুদগান-ই-ঢাকা এবং ঢাকা পঁঞ্চাশ বারাস পহলে। সর্বশেষ উল্লিখিত বইটিতে রয়েছে তাঁর সময়ে ঢাকা শহরের অধিবাসীদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের প্রাঞ্জল বর্ণনা। সে যুগের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের ব্যবহূত ভাষা উর্দু হওয়ায় একজন বাঙালি হওয়া সত্ত্বেও হাকিম হাবিবুর রহমানের সকল রচনাই ছিল উর্দু ভাষায়।
হাকিম হাবিবুর রহমান ছিলেন নওয়াব স্যার  খাজা সলিমুল্লাহর ঘনিষ্ঠ সহযোগী। ১৯৩০ সালে তিনি ঢাকায় ‘তিবিবয়া হাবিবিয়া কলেজ’ প্রতিষ্ঠা করেন। পূর্ববাংলার মানুষকে ইউনানী চিকিৎসা সেবা দানের স্বীকৃতিস্বরূপ ব্রিটিশ সরকার তাঁকে ১৯৩৯ সালে ‘শেফা-উল-মুলক’ খেতাবে ভূষিত করেন। চিকিৎসা পেশার পাশাপাশি তিনি প্রচুর লেখালেখি করেন। তিনি ১৯০৬ সালে উর্দু মাসিক পত্র আল-মাশরিক সম্পাদনা করেন। এছাড়াও ১৯২৪ সালে তিনি খাজা আদেলের সঙ্গে যৌথভাবে যাদু নামে অপর একটি উর্দু মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। পত্রিকাটি মাত্র দুই বছর টিকেছিল। হাকিম হাবিবুর রহমান প্রায়শ ‘আহসান’  ছদ্মনামে লিখতেন। তাঁর অসংখ্য লেখার মধ্যে রয়েছে আল-ফারিক, হায়াত-ই-সুকরত, আসুদগান-ই-ঢাকা এবং ঢাকা পঁঞ্চাশ বারাস পহলে। সর্বশেষ উল্লিখিত বইটিতে রয়েছে তাঁর সময়ে ঢাকা শহরের অধিবাসীদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের প্রাঞ্জল বর্ণনা। সে যুগের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের ব্যবহূত ভাষা উর্দু হওয়ায় একজন বাঙালি হওয়া সত্ত্বেও হাকিম হাবিবুর রহমানের সকল রচনাই ছিল উর্দু ভাষায়।
[[Image:RahmanHakimHabibur.jpg|thumb|right|হাকিম হাবিবুর রহমান
]]


তিনি পান্ডুলিপি, [[মুদ্রা|মুদ্রা]],  যুদ্ধাস্ত্র প্রভৃতির সংগ্রহকারী হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তাঁর অধিকাংশ রচনা ও সংগ্রহ বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে Habibur Rahman Collections শিরোনামে সংরক্ষিত আছে। ১৯৩৬ সালে তিনি ঢাকা জাদুঘরকে তাঁর সংগৃহীত স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রা মিলিয়ে মোট ২৩১টি পুরনো মুদ্রা দান করেন। ১৯৪৭ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তাঁর মৃত্যু হয়।  [হাশেম সুফি]
তিনি পান্ডুলিপি, [[মুদ্রা|মুদ্রা]],  যুদ্ধাস্ত্র প্রভৃতির সংগ্রহকারী হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তাঁর অধিকাংশ রচনা ও সংগ্রহ বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে Habibur Rahman Collections শিরোনামে সংরক্ষিত আছে। ১৯৩৬ সালে তিনি ঢাকা জাদুঘরকে তাঁর সংগৃহীত স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রা মিলিয়ে মোট ২৩১টি পুরনো মুদ্রা দান করেন। ১৯৪৭ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তাঁর মৃত্যু হয়।  [হাশেম সুফি]

০৯:০৪, ৮ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

হাকিম হাবিবুর রহমান

রহমান, হাকিম হাবিবুর (১৮৮১-১৯৪৭)  ইউনানী চিকিৎসক, সাহিত্যসেবী, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ। ইউনানী চিকিৎসা শাস্ত্রে একজন খ্যাতিমান চিকিৎসক ছাড়াও হাকিম হাবিবুর রহমান সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে খুবই প্রভাবশালী ছিলেন। তিনি ১৮৮১ সালের ২৩ মার্চ ঢাকার ছোট কাটরা মহল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের বেশির ভাগ ছেলেমেয়েদের মতো তিনি বাড়িতেই প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। ঢাকা মাদ্রাসা ও কানপুর দারুল উলুম মাদ্রাসা থেকে তিনি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করেন। লক্ষ্ণৌ, দিল্লিও আগ্রাতে ইউনানী চিকিৎসা পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ লাভের পর তিনি ১৯০৪ সালে চিকিৎসা পেশায় আত্মনিয়োগ করেন।

হাকিম হাবিবুর রহমান ছিলেন নওয়াব স্যার  খাজা সলিমুল্লাহর ঘনিষ্ঠ সহযোগী। ১৯৩০ সালে তিনি ঢাকায় ‘তিবিবয়া হাবিবিয়া কলেজ’ প্রতিষ্ঠা করেন। পূর্ববাংলার মানুষকে ইউনানী চিকিৎসা সেবা দানের স্বীকৃতিস্বরূপ ব্রিটিশ সরকার তাঁকে ১৯৩৯ সালে ‘শেফা-উল-মুলক’ খেতাবে ভূষিত করেন। চিকিৎসা পেশার পাশাপাশি তিনি প্রচুর লেখালেখি করেন। তিনি ১৯০৬ সালে উর্দু মাসিক পত্র আল-মাশরিক সম্পাদনা করেন। এছাড়াও ১৯২৪ সালে তিনি খাজা আদেলের সঙ্গে যৌথভাবে যাদু নামে অপর একটি উর্দু মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। পত্রিকাটি মাত্র দুই বছর টিকেছিল। হাকিম হাবিবুর রহমান প্রায়শ ‘আহসান’  ছদ্মনামে লিখতেন। তাঁর অসংখ্য লেখার মধ্যে রয়েছে আল-ফারিক, হায়াত-ই-সুকরত, আসুদগান-ই-ঢাকা এবং ঢাকা পঁঞ্চাশ বারাস পহলে। সর্বশেষ উল্লিখিত বইটিতে রয়েছে তাঁর সময়ে ঢাকা শহরের অধিবাসীদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের প্রাঞ্জল বর্ণনা। সে যুগের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের ব্যবহূত ভাষা উর্দু হওয়ায় একজন বাঙালি হওয়া সত্ত্বেও হাকিম হাবিবুর রহমানের সকল রচনাই ছিল উর্দু ভাষায়।

তিনি পান্ডুলিপি, মুদ্রা,  যুদ্ধাস্ত্র প্রভৃতির সংগ্রহকারী হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তাঁর অধিকাংশ রচনা ও সংগ্রহ বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে Habibur Rahman Collections শিরোনামে সংরক্ষিত আছে। ১৯৩৬ সালে তিনি ঢাকা জাদুঘরকে তাঁর সংগৃহীত স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রা মিলিয়ে মোট ২৩১টি পুরনো মুদ্রা দান করেন। ১৯৪৭ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তাঁর মৃত্যু হয়।  [হাশেম সুফি]