মাদকদ্রব্য: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''মাদকদ্রব্য '''(Narcotics)''' ''' ভেষজদ্রব্য যা প্রয়োগে মানবদেহে মস্তিষ্কজাত সংজ্ঞাবহ সংবেদন হ্রাস পায় এবং বেদনাবোধ কমায় বা বন্ধ করে। তাই এগুলি কখন কখন বেদনানাশক হিসেবে চিকিৎসায় ব্যবহূত হয়। কিন্তু কিছু কিছু অবাঞ্ছিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এগুলির বেদনানাশক হিসেবে ব্যবহারকে জটিল করে তোলে। সংজ্ঞাহীনতার গ্রীক প্রতিশব্দ থেকে উৎপন্ন ‘নার্কোটিক’ বলতে এক সময় নিদ্রাকর্ষী যে কোন ঔষধ বোঝাত। বর্তমানে এটি সাধারণত অপব্যবহূত বহু ধরনের পদার্থকে বোঝায়, বিশেষত যেগুলি আফিম, গাঁজা, অ্যামানিয়া (ছত্রাক) ও কোন কোন ধুতরাগ্রোত্রীয় প্রজাতির উদ্ভিজ্জের রাসায়নিক উপাদান থেকে তৈরি বা রাসায়নিক গঠনের দিক থেকে এদের ঘনিষ্ঠ। সচরাচর ব্যবহূত অধিকাংশ মাদকদ্রব্যই আফিমজাত। আফিম আসলে Papaver somniferum নামের উদ্ভিদের পূর্ণতাপ্রাপ্ত অথচ অপক্ক শুঁটি থেকে আহরিত আঠালো নির্যাস। আফিমজাত দ্রব্যের মধ্যে আছে মরফিন, কোডিন, সিবেন ইত্যাকার উপক্ষার এবং এগুলি থেকে অর্ধ-সংশ্লেশিত বা উৎপন্ন রাসায়নিক যৌগ যেমন, হেরোইন (diacetyl morphine), dihydromorphine, oxymorphine, meperidine, alphaprodine, anileridine, piminodine, methadone, levorphenol ইত্যাদি।
'''মাদকদ্রব্য''' (Narcotics)  ভেষজদ্রব্য যা প্রয়োগে মানবদেহে মস্তিষ্কজাত সংজ্ঞাবহ সংবেদন হ্রাস পায় এবং বেদনাবোধ কমায় বা বন্ধ করে। তাই এগুলি কখন কখন বেদনানাশক হিসেবে চিকিৎসায় ব্যবহূত হয়। কিন্তু কিছু কিছু অবাঞ্ছিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এগুলির বেদনানাশক হিসেবে ব্যবহারকে জটিল করে তোলে। সংজ্ঞাহীনতার গ্রীক প্রতিশব্দ থেকে উৎপন্ন ‘নার্কোটিক’ বলতে এক সময় নিদ্রাকর্ষী যে কোন ঔষধ বোঝাত। বর্তমানে এটি সাধারণত অপব্যবহূত বহু ধরনের পদার্থকে বোঝায়, বিশেষত যেগুলি আফিম, গাঁজা, অ্যামানিয়া (ছত্রাক) ও কোন কোন ধুতরাগ্রোত্রীয় প্রজাতির উদ্ভিজ্জের রাসায়নিক উপাদান থেকে তৈরি বা রাসায়নিক গঠনের দিক থেকে এদের ঘনিষ্ঠ। সচরাচর ব্যবহূত অধিকাংশ মাদকদ্রব্যই আফিমজাত। আফিম আসলে Papaver somniferum নামের উদ্ভিদের পূর্ণতাপ্রাপ্ত অথচ অপক্ক শুঁটি থেকে আহরিত আঠালো নির্যাস। আফিমজাত দ্রব্যের মধ্যে আছে মরফিন, কোডিন, সিবেন ইত্যাকার উপক্ষার এবং এগুলি থেকে অর্ধ-সংশ্লেশিত বা উৎপন্ন রাসায়নিক যৌগ যেমন, হেরোইন (diacetyl morphine), dihydromorphine, oxymorphine, meperidine, alphaprodine, anileridine, piminodine, methadone, levorphenol ইত্যাদি।


ক্যানাবিস থেকে উৎপন্ন মাদকদ্রব্যগুলির মধ্যে আছে গাঁজা, ভাং, চরস, মারিজুয়ানা, হাশিশ, cannabinol, tetrahydrocannabinol প্রভৃতি রাসায়নিক যৌগ, আর ধুতরাগোত্রীয় নানা প্রজাতি থেকে পাওয়া stramonium, hyoscyamus, mandrake এবং এগুলির ট্রপেন উপক্ষার যেমন, atropine, hyoscyamine  এবং  hyoscine।
ক্যানাবিস থেকে উৎপন্ন মাদকদ্রব্যগুলির মধ্যে আছে গাঁজা, ভাং, চরস, মারিজুয়ানা, হাশিশ, cannabinol, tetrahydrocannabinol প্রভৃতি রাসায়নিক যৌগ, আর ধুতরাগোত্রীয় নানা প্রজাতি থেকে পাওয়া stramonium, hyoscyamus, mandrake এবং এগুলির ট্রপেন উপক্ষার যেমন, atropine, hyoscyamine  এবং  hyoscine।
৬ নং লাইন: ৬ নং লাইন:
কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রেই মাদকদ্রব্যগুলির মুখ্য ভেষজক্রিয়া ঘটে। চিকিৎসাগত ব্যবহারের দৃষ্টিকোণ থেকে এগুলির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ বেদনানাশ। কিন্তু মাদকদ্রব্যের বেদনানাশক ক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকে তন্ত্রাচ্ছন্নতা, আনন্দোচ্ছাস, মেজাজ পরিবর্তন, মানসিক আচ্ছন্নতা, শ্বাসপ্রশ্বাসের অবনমন, রক্তচাপহ্রাস, বমনেচ্ছা ও বমি, কোষ্ঠবদ্ধতা ও মূত্র হ্রাস, অন্তঃক্ষরাগ্রন্থি ও স্বতঃক্রিয় স্নায়ুতন্ত্রের ক্রিয়াকলাপের পরিবর্তনসহ অনেকগুলি অবাঞ্ছিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। এই প্রতিক্রিয়াগুলির সবটাই মাদক গ্রহণের মাত্রার সঙ্গে সম্পর্কিত এবং মাদকের ধরন অনুসারে এগুলিতে যথেষ্ট পার্থক্য দেখা যায়। অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণের ফলে সব মাদকেই গভীর ঘুম আসে এবং পরিণামে মস্তিষ্কের সমস্ত ক্রিয়াকলাপ স্তিমিত হয়। বিভিন্ন রকমের মাদকের মধ্যেকার পার্থক্যগুলি বস্ত্তত এগুলির ক্রিয়া শক্তি এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বৈচিত্র্যের মধ্যেই নিহিত। ক্রমাগত মাদক ব্যবহারে এগুলির সহনক্ষমতা বাড়ে এবং শারীরিক নির্ভরশীলতা বা আসক্তি জন্মে। হেরোইন অত্যন্ত বিপজ্জনক ও আসক্তিকর মাদকগুলির অন্যতম। আসক্তিকর বিধায় অধিকাংশ মাদকদ্রব্যই সাধারণত রোগ নিবারক দ্রব্য হিসেবে ব্যবহূত হয় না।  [আবদুল গনি]
কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রেই মাদকদ্রব্যগুলির মুখ্য ভেষজক্রিয়া ঘটে। চিকিৎসাগত ব্যবহারের দৃষ্টিকোণ থেকে এগুলির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ বেদনানাশ। কিন্তু মাদকদ্রব্যের বেদনানাশক ক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকে তন্ত্রাচ্ছন্নতা, আনন্দোচ্ছাস, মেজাজ পরিবর্তন, মানসিক আচ্ছন্নতা, শ্বাসপ্রশ্বাসের অবনমন, রক্তচাপহ্রাস, বমনেচ্ছা ও বমি, কোষ্ঠবদ্ধতা ও মূত্র হ্রাস, অন্তঃক্ষরাগ্রন্থি ও স্বতঃক্রিয় স্নায়ুতন্ত্রের ক্রিয়াকলাপের পরিবর্তনসহ অনেকগুলি অবাঞ্ছিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। এই প্রতিক্রিয়াগুলির সবটাই মাদক গ্রহণের মাত্রার সঙ্গে সম্পর্কিত এবং মাদকের ধরন অনুসারে এগুলিতে যথেষ্ট পার্থক্য দেখা যায়। অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণের ফলে সব মাদকেই গভীর ঘুম আসে এবং পরিণামে মস্তিষ্কের সমস্ত ক্রিয়াকলাপ স্তিমিত হয়। বিভিন্ন রকমের মাদকের মধ্যেকার পার্থক্যগুলি বস্ত্তত এগুলির ক্রিয়া শক্তি এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বৈচিত্র্যের মধ্যেই নিহিত। ক্রমাগত মাদক ব্যবহারে এগুলির সহনক্ষমতা বাড়ে এবং শারীরিক নির্ভরশীলতা বা আসক্তি জন্মে। হেরোইন অত্যন্ত বিপজ্জনক ও আসক্তিকর মাদকগুলির অন্যতম। আসক্তিকর বিধায় অধিকাংশ মাদকদ্রব্যই সাধারণত রোগ নিবারক দ্রব্য হিসেবে ব্যবহূত হয় না।  [আবদুল গনি]


''আরও দেখুন'' আফিম; গাঁজা; তামাক।
''আরও দেখুন'' [[আফিম|আফিম]]; [[গাঁজা|গাঁজা]]; [[তামাক|তামাক]]।


[[en:Narcotics]]
[[en:Narcotics]]

০৩:৪৭, ৪ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

মাদকদ্রব্য (Narcotics)  ভেষজদ্রব্য যা প্রয়োগে মানবদেহে মস্তিষ্কজাত সংজ্ঞাবহ সংবেদন হ্রাস পায় এবং বেদনাবোধ কমায় বা বন্ধ করে। তাই এগুলি কখন কখন বেদনানাশক হিসেবে চিকিৎসায় ব্যবহূত হয়। কিন্তু কিছু কিছু অবাঞ্ছিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এগুলির বেদনানাশক হিসেবে ব্যবহারকে জটিল করে তোলে। সংজ্ঞাহীনতার গ্রীক প্রতিশব্দ থেকে উৎপন্ন ‘নার্কোটিক’ বলতে এক সময় নিদ্রাকর্ষী যে কোন ঔষধ বোঝাত। বর্তমানে এটি সাধারণত অপব্যবহূত বহু ধরনের পদার্থকে বোঝায়, বিশেষত যেগুলি আফিম, গাঁজা, অ্যামানিয়া (ছত্রাক) ও কোন কোন ধুতরাগ্রোত্রীয় প্রজাতির উদ্ভিজ্জের রাসায়নিক উপাদান থেকে তৈরি বা রাসায়নিক গঠনের দিক থেকে এদের ঘনিষ্ঠ। সচরাচর ব্যবহূত অধিকাংশ মাদকদ্রব্যই আফিমজাত। আফিম আসলে Papaver somniferum নামের উদ্ভিদের পূর্ণতাপ্রাপ্ত অথচ অপক্ক শুঁটি থেকে আহরিত আঠালো নির্যাস। আফিমজাত দ্রব্যের মধ্যে আছে মরফিন, কোডিন, সিবেন ইত্যাকার উপক্ষার এবং এগুলি থেকে অর্ধ-সংশ্লেশিত বা উৎপন্ন রাসায়নিক যৌগ যেমন, হেরোইন (diacetyl morphine), dihydromorphine, oxymorphine, meperidine, alphaprodine, anileridine, piminodine, methadone, levorphenol ইত্যাদি।

ক্যানাবিস থেকে উৎপন্ন মাদকদ্রব্যগুলির মধ্যে আছে গাঁজা, ভাং, চরস, মারিজুয়ানা, হাশিশ, cannabinol, tetrahydrocannabinol প্রভৃতি রাসায়নিক যৌগ, আর ধুতরাগোত্রীয় নানা প্রজাতি থেকে পাওয়া stramonium, hyoscyamus, mandrake এবং এগুলির ট্রপেন উপক্ষার যেমন, atropine, hyoscyamine  এবং  hyoscine।

কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রেই মাদকদ্রব্যগুলির মুখ্য ভেষজক্রিয়া ঘটে। চিকিৎসাগত ব্যবহারের দৃষ্টিকোণ থেকে এগুলির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ বেদনানাশ। কিন্তু মাদকদ্রব্যের বেদনানাশক ক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকে তন্ত্রাচ্ছন্নতা, আনন্দোচ্ছাস, মেজাজ পরিবর্তন, মানসিক আচ্ছন্নতা, শ্বাসপ্রশ্বাসের অবনমন, রক্তচাপহ্রাস, বমনেচ্ছা ও বমি, কোষ্ঠবদ্ধতা ও মূত্র হ্রাস, অন্তঃক্ষরাগ্রন্থি ও স্বতঃক্রিয় স্নায়ুতন্ত্রের ক্রিয়াকলাপের পরিবর্তনসহ অনেকগুলি অবাঞ্ছিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। এই প্রতিক্রিয়াগুলির সবটাই মাদক গ্রহণের মাত্রার সঙ্গে সম্পর্কিত এবং মাদকের ধরন অনুসারে এগুলিতে যথেষ্ট পার্থক্য দেখা যায়। অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণের ফলে সব মাদকেই গভীর ঘুম আসে এবং পরিণামে মস্তিষ্কের সমস্ত ক্রিয়াকলাপ স্তিমিত হয়। বিভিন্ন রকমের মাদকের মধ্যেকার পার্থক্যগুলি বস্ত্তত এগুলির ক্রিয়া শক্তি এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বৈচিত্র্যের মধ্যেই নিহিত। ক্রমাগত মাদক ব্যবহারে এগুলির সহনক্ষমতা বাড়ে এবং শারীরিক নির্ভরশীলতা বা আসক্তি জন্মে। হেরোইন অত্যন্ত বিপজ্জনক ও আসক্তিকর মাদকগুলির অন্যতম। আসক্তিকর বিধায় অধিকাংশ মাদকদ্রব্যই সাধারণত রোগ নিবারক দ্রব্য হিসেবে ব্যবহূত হয় না।  [আবদুল গনি]

আরও দেখুন আফিম; গাঁজা; তামাক