বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
২০ নং লাইন: ২০ নং লাইন:
কমিশনের কর্মকান্ডের ওপর নিয়মিত বার্ষিক প্রতিবেদন এবং ত্রৈমাসিক পরমাণু পরিক্রমা সহ বেশকিছু বৈজ্ঞানিক সাময়িকী প্রকাশ করা হয়। দি নিউক্লিয়ার সায়েন্স অ্যান্ড অ্যাপ্লিকেশন কমিশনের ইংরেজি জার্নাল। পরমাণু শক্তি কমিশনের অতীত ও বর্তমান এবং তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ নামে দুটি বই প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া কর্মরত বিজ্ঞানীদের বিজ্ঞান সংঘ কর্তৃক প্রতি বছর অন্বেষা নামে একটি সাময়িকী প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশ ১৯৭২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সদস্যপদ লাভ করে। যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, দক্ষিণ-পূর্ব ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশসমূহের সঙ্গে কমিশন কর্মকান্ড বাস্তবায়নের জন্য আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সক্রিয় যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে।  [মাসুদ হাসান চৌধুরী]
কমিশনের কর্মকান্ডের ওপর নিয়মিত বার্ষিক প্রতিবেদন এবং ত্রৈমাসিক পরমাণু পরিক্রমা সহ বেশকিছু বৈজ্ঞানিক সাময়িকী প্রকাশ করা হয়। দি নিউক্লিয়ার সায়েন্স অ্যান্ড অ্যাপ্লিকেশন কমিশনের ইংরেজি জার্নাল। পরমাণু শক্তি কমিশনের অতীত ও বর্তমান এবং তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ নামে দুটি বই প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া কর্মরত বিজ্ঞানীদের বিজ্ঞান সংঘ কর্তৃক প্রতি বছর অন্বেষা নামে একটি সাময়িকী প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশ ১৯৭২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সদস্যপদ লাভ করে। যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, দক্ষিণ-পূর্ব ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশসমূহের সঙ্গে কমিশন কর্মকান্ড বাস্তবায়নের জন্য আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সক্রিয় যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে।  [মাসুদ হাসান চৌধুরী]


''আরও দেখুন'' খাদ্য ও বিকিরণ জীববিজ্ঞান ইনস্টিটিউট; পরমাণু শক্তি কেন্দ্র, ঢাকা; পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান; রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প।
''আরও দেখুন'' [[খাদ্য ও বিকিরণ জীববিজ্ঞান ইনস্টিটিউট|খাদ্য ও বিকিরণ জীববিজ্ঞান ইনস্টিটিউট]]; [[পরমাণু শক্তি কেন্দ্র, ঢাকা|পরমাণু শক্তি কেন্দ্র, ঢাকা]]; [[পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান|পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান]]; [[রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প|রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প]]।


[[en:Bangladesh Atomic Energy Commission]]
[[en:Bangladesh Atomic Energy Commission]]
[[en:Bangladesh Atomic Energy Commission]]
[[en:Bangladesh Atomic Energy Commission]]


[[en:Bangladesh Atomic Energy Commission]]
[[en:Bangladesh Atomic Energy Commission]]

০৭:০৯, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন  বাংলাদেশের একমাত্র পরমাণু শক্তি গবেষণা ও উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান। কল্যাণধর্মী কাজে পরমাণু শক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যেই কমিশন স্থাপন করা হয়। স্বাধীনতার দুবছর পর ১৯৭৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন। প্রথমে শেরে বাংলা নগরের পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট ভবনে এর কার্যক্রম শুরু হয় এবং পরবর্তীতে এটিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ৪নং কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউতে স্থানান্তর করা হয়। ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত এ প্রতিষ্ঠানটির নাম ছিল আণবিক শক্তি কমিশন। এটিই এখন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন। এর গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যাবলি ভৌত বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান ও প্রকৌশল এই তিনটি শাখায় পরিচালিত হয়।

ভৌত বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠানসমূহ হচ্ছে:  পরমাণু শক্তি কেন্দ্র, ঢাকা; পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, সাভার; পারমাণবিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট, রিঅ্যাক্টর চালনা ও তদারকি ইউনিট, ইলেকট্রনিক্স ও বস্ত্ত বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, কম্পিউটার বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, নিউক্লিয়ার মিনারেলস ইউনিট, কক্সবাজারস্থ সৈকত বালি আহরণ কেন্দ্র এবং চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তেজস্ক্রিয়তা পরীক্ষণ গবেষণাগার। জীববিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠানসমূহ হচ্ছে সাভারস্থ পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে খাদ্য ও বিকিরণ জীববিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে পরমাণু চিকিৎসা ইনস্টিটিউট এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, রংপুর, বরিশাল, ফরিদপুর, বগুড়া ও স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (ঢাকা) এবং দিনাজপুর সদর হাসপাতাল সংলগ্ন পরমাণু চিকিৎসা কেন্দ্র।

ঢাকাস্থ পরমাণু শক্তি কেন্দ্রের বিভিন্ন বিভাগের নাম নিম্নরূপ: পদার্থ বিজ্ঞান ও সৌরশক্তি বিভাগ, অ্যাক্সিলারেটর ফ্যাসিলিটিজ বিভাগ, রসায়ন বিভাগ, পরিবেশ রসায়ন বিভাগ, ক্লিনিক্যাল রসায়ন বিভাগ, শক্তি রসায়ন বিভাগ, ইলেকট্রনিক্স বিভাগ, স্বাস্থ্য পদার্থবিদ্যা বিভাগ, চুম্বকীয় বিভাগ এবং অবিনাশক পরীক্ষা বিভাগ।

কৃষি, শিল্প, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা, প্রাকৃতিক সম্পদ উন্নয়ন, পরিবেশ দূষণ, পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিভিন্ন বস্ত্তর গুণগত মান নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন উদ্ভাবিত নানাবিধ রাসায়নিক বিশ্লেষণ পদ্ধতি রয়েছে। উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে পরমাণু শক্তি কেন্দ্রের রসায়নবিদগণ নানাবিধ পদার্থ যেমন- মাটি, পানি, মাছ, নানাবিধ ধাতববস্ত্ত, খাদ্যসামগ্রী, সামুদ্রিক জীবজন্তু, শিল্পের কাঁচামাল ও উৎপাদিত দ্রব্য, রক্ত, চুল, প্রস্রাব, নখ ইত্যাদির নির্ভুল রাসায়নিক বিশ্লেষণ সার্ভিস দিয়ে থাকে। কমিশন দেশের পরিবেশগত অবস্থা যেমন- মাটি, পানি, বায়ু, শাকসবজি, দুধ এবং অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য পরীক্ষা করে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা সম্পর্কে জনগণকে অবগত করে। সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তির সাহায্যে ঢাকা পরমাণু শক্তি কেন্দ্রের বিজ্ঞানিগণ কম খরচে সবচেয়ে নিরাপদ ও নিখুঁতভাবে দেশের বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের ঝালাই (ওয়েল্ডিং), ঢালাই, কাস্টিং এবং যন্ত্রপাতির ত্রুটি নিরূপণের জন্য অবিনাশক পরীক্ষা বা নন-ডেস্ট্রাকটিভ টেস্টিং, পদ্ধতি যথা- রেডিওগ্রাফি, আলট্রাসনোগ্রাফি ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকে এবং এসব বিষয়ে জাতীয় প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে।

কমিশনের বিজ্ঞানীরা নদী মোহনার তলানি নিরূপণে ও ভূ-তলে পানির অনুসন্ধানে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ প্রয়োগের মাধ্যমে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা পরিচালনায় নিয়োজিত আছেন। কমিশনের সাভারস্থ ইলেকট্রনিক্স ইনস্টিটিউট ও ঢাকার পরমাণু শক্তি কেন্দ্রের ইলেকট্রনিক্স বিভাগের জন্য প্রকৌশলীরা বিভিন্ন গবেষণাগারে ব্যবহূত অত্যাধুনিক ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতি সুষ্ঠুভাবে রক্ষণাবেক্ষণ এবং দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গবেষণাগার ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রেও বিশেষ সার্ভিস দিয়ে থাকেন।

পরমাণু শক্তি কমিশনের বিজ্ঞানীদের গবেষণালব্ধ ফলাফলের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত পাইলট প্লান্ট প্রকল্প এবং নানাবিধ সেবাদান খাত থেকে সামান্য পরিমাণ অর্থ আয় হচ্ছে, যা দিয়ে কমিশন অভ্যন্তরীণ বহুবিধ জরুরি প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। কমিশন ও বেক্সিমকোর যৌথ উদোগে চট্টগ্রামের ফৌজদারহাট শিল্পাঞ্চলে ‘গামাটেক’ নামে এক লাখ কুরি ক্ষমতাসম্পন্ন দেশের প্রথম বাণিজ্যিক বিকিরণ প্লান্ট ৩০ মার্চ ১৯৯৩ থেকে চালু হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৩ সালের জুলাই মাসে তেজস্ক্রিয়তা বিকিরণ নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ আইন জারি করে এবং এই আইনের অধীনে নিরাপত্তা বিধি-১৯৯৩ গেজেটভুক্ত করা হয়। দেশে চিকিৎসা, কৃষি, শিল্প, জলবিদ্যা, খাদ্য সংরক্ষণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে এক্সরে, গামারশ্মি ও তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। এক্সরে, গামারশ্মি ও তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ নিঃসৃত সকল রশ্মিই মাত্রাতিরিক্ত হলে মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর। তেজস্ক্রিয় বিকিরণের সম্ভাব্য ক্ষতিকর পরিণতি থেকে সতর্ক ও সাবধানতা অবলম্বনের জন্য কমিশনের বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ফিল্মব্যাজ সার্ভিস প্রদানসহ অন্যান্য তেজস্ক্রিয়তা ও বিকিরণ নিরাপত্তামূলক সেবা প্রদান করে থাকে।

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন দেশে তেজস্ক্রিয় খনিজ অনুসন্ধানেও নিয়োজিত। সিলেট ও মৌলভীবাজার এলাকায় ইউরেনিয়াম ও থোরিয়াম খনিজ মজুতের সন্ধান পাওয়া গেছে। কমিশন বর্তমানে এই খনিজ আহরণের অর্থনৈতিক যৌক্তিকতা নিরূপণের জন্য জরিপ শুরু করেছে।

বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা, দেশজ জ্বালানির অপ্রতুলতা, জ্বালানি সরবরাহের নিরাপত্তা, পরিবেশের ভারসাম্য ইত্যাদি বিবেচনায় বাংলাদেশে দীর্ঘ মেয়াদে সুষম, আর্থিকভাবে লাভজনক ও কারিগরি দিক থেকে গ্রহণযোগ্য পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ মিশ্র জ্বালানি ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এ উদ্দেশ্যে সরকার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পটি বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। কমিশন নতুন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি কর্মসূচির আওতায় বিশেষ করে সৌর-কোষ প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কিত গবেষণা পরিচালনা করছে। বায়ুশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ এবং এ সংক্রান্ত গবেষণা কাজেও বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন অংশগ্রহণ করছে।

কমিশনের কর্মকান্ডের ওপর নিয়মিত বার্ষিক প্রতিবেদন এবং ত্রৈমাসিক পরমাণু পরিক্রমা সহ বেশকিছু বৈজ্ঞানিক সাময়িকী প্রকাশ করা হয়। দি নিউক্লিয়ার সায়েন্স অ্যান্ড অ্যাপ্লিকেশন কমিশনের ইংরেজি জার্নাল। পরমাণু শক্তি কমিশনের অতীত ও বর্তমান এবং তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ নামে দুটি বই প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া কর্মরত বিজ্ঞানীদের বিজ্ঞান সংঘ কর্তৃক প্রতি বছর অন্বেষা নামে একটি সাময়িকী প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশ ১৯৭২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সদস্যপদ লাভ করে। যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, দক্ষিণ-পূর্ব ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশসমূহের সঙ্গে কমিশন কর্মকান্ড বাস্তবায়নের জন্য আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সক্রিয় যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে।  [মাসুদ হাসান চৌধুরী]

আরও দেখুন খাদ্য ও বিকিরণ জীববিজ্ঞান ইনস্টিটিউট; পরমাণু শক্তি কেন্দ্র, ঢাকা; পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান; রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প