প্রধানমন্ত্রী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
(একই ব্যবহারকারী দ্বারা সম্পাদিত ৩টি মধ্যবর্তী সংশোধন দেখানো হচ্ছে না)
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''প্রধানমন্ত্রী'''  গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সরকার প্রধান। ১৯৯১ সালের আগস্ট মাসে [[জাতীয় সংসদ|জাতীয় সংসদ]] অধিবেশনে সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনী পাশের মাধ্যমে বাংলাদেশে মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকার পদ্ধতি চালু হয়। এর ফলে প্রধানমন্ত্রী সরকার প্রধান হিসেবে রাষ্ট্রের নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী হন। উপর্যুক্ত সংশোধনীর পূর্বে ১৯৭২-১৯৭৫ সালে মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকার এবং ১৯৭৫-১৯৯১ সালে দেশে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার পদ্ধতি চালু ছিল। সংবিধানের ৫৫ ও ৫৬ নং ধারা মতে মন্ত্রিপরিষদের শীর্ষে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী এবং তিনি তাঁর মন্ত্রিসভার অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের নির্বাচন করবেন। মন্ত্রিপরিষদ যৌথভাবে সংসদের নিকট দায়ী থাকবেন।
'''প্রধানমন্ত্রী'''  সংবিধানের দ্বাদশ ও পঞ্চদশ সংশোধনীর আওতায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধান। ১৯৯১ সালের আগস্ট মাসে [[জাতীয় সংসদ|জাতীয় সংসদ]] অধিবেশনে সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনী পাশের মাধ্যমে বাংলাদেশে মন্ত্রিপরিষদ-শাসিত সরকার-পদ্ধতি পুনরায় চালু হয়। এর ফলে প্রধানমন্ত্রী সরকার-প্রধান হিসেবে রাষ্ট্রের নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী হন। উপর্যুক্ত সংশোধনীর পূর্বে ১৯৭২-১৯৭৫ সালে মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকার এবং ১৯৭৫-১৯৯১ সালে দেশে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার-পদ্ধতি চালু ছিল। সংবিধানের ৫৫ ও ৫৬ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মন্ত্রিপরিষদের শীর্ষে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী এবং তিনি তাঁর মন্ত্রিসভার অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের নির্বাচন করবেন। মন্ত্রিপরিষদ যৌথভাবে সংসদের নিকট দায়ী থাকবেন।


সংবিধানের ৫৬ ধারা অনুযায়ী মন্ত্রিপরিষদের কমপক্ষে ৯০ শতাংশ সদস্য জাতীয় সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে নিযুক্ত হবেন এবং সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ সদস্য এমন ব্যক্তিদের মধ্য থেকে নিয়োগ দেওয়া যাবে যাঁরা সংসদ নির্বাচনে সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্য। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ‘রুলস অব বিজনেস’ অনুযায়ী ‘প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা’ পদেও নিয়োগ দিতে পারেন। সংসদের যে সদস্যের প্রতি সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ-সদস্যের সমর্থন রয়েছে মর্মে রাষ্ট্রপতির নিকট প্রতীয়মান হবে, উক্ত সদস্যকে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করবেন।
সংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মন্ত্রিপরিষদের কমপক্ষে ৯০ শতাংশ সদস্য জাতীয় সংসদ সদস্যদের মধ্য হতে নিযুক্ত হবেন, এবং সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ সদস্য এমন ব্যক্তিদের মধ্য হতে নিয়োগ দেওয়া যাবে যাঁরা সংসদ নির্বাচনে সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্য। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী —প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা' পদেও নিয়োগ দিতে পারেন। সংসদের যে সদস্যের প্রতি সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ-সদস্যের সমর্থন রয়েছে মর্মে রাষ্ট্রপতির নিকট প্রতীয়মান হবে, উক্ত সদস্যকে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করবেন।


সংবিধানের ৫৭ ধারায় বর্ণিত আছে, যদি প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির নিকট লিখিত পদত্যাগপত্র দাখিলের মাধ্যমে পদত্যাগ করেন অথবা যদি তিনি সংসদ সদস্যপদ হারান, তবে প্রধানমন্ত্রীর পদটি শূণ্য বলে বিবেচিত হবে। প্রধানমন্ত্রী যদি সংসদ-সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন হারান তাহলে হয় তিনি পদত্যাগ করবেন নতুবা লিখিতভাবে রাষ্ট্রপতিকে সংসদ ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ দিবেন।
সংবিধানের ৫৭ অনুচ্ছেদে বর্ণিত আছে, যদি প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির নিকট লিখিত পদত্যাগপত্র দাখিলের মাধ্যমে পদত্যাগ করেন অথবা যদি তিনি সংসদ সদস্যপদ হারান, তবে প্রধানমন্ত্রীর পদটি শূণ্য বলে বিবেচিত হবে। প্রধানমন্ত্রী যদি সংসদ-সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন হারান, তাহলে হয় তিনি পদত্যাগ করবেন নতুবা লিখিতভাবে রাষ্ট্রপতিকে সংসদ ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ দিবেন। ৫৭(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী: —প্রধানমন্ত্রীর উত্তরাধিকারী কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীকে স্বীয় পদে বহাল থাকিতে এই অনুচ্ছেদের কোনো কিছু্ই অযোগ্য করিবে না'।
 
সারণি  বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।


{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
৩৬ নং লাইন: ৩৪ নং লাইন:
| শেখ হাসিনা  || ৬ জানুয়ারি ২০০৯-
| শেখ হাসিনা  || ৬ জানুয়ারি ২০০৯-
|}
|}
সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানকল্পে ১৯৯৬ সালে সংবিধান সংশোধনের (ত্রয়োদশ সংশোধনী) মাধ্যমে একজন প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে তিন মাস মেয়াদের নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কার্যকালে রাষ্ট্রের নির্বাহী ক্ষমতা প্রধান উপদেষ্টার উপর ন্যস্ত থাকে এবং তিনি দায়বদ্ধ থাকেন রাষ্ট্রপতির নিকট।  [হেলাল উদ্দিন আহমেদ]


১৯৯৬ সালের মার্চ মাসে জাতীয় সংসদে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানকল্পে [[সংবিধান|সংবিধান]] সংশোধনের (ত্রয়োদশ সংশোধনী) মাধ্যমে একজন প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে তিন মাস মেয়াদের নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কার্যকালে রাষ্ট্রের নির্বাহী ক্ষমতা প্রধান উপদেষ্টার উপর ন্যস্ত থাকতো এবং তিনি দায়বদ্ধ থাকতেন রাষ্ট্রপতির নিকট। তবে ২০১১ সালে এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের পর সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আনয়নের মাধ্যমে জাতীয় সংসদ এই ব্যবস্থা বাতিল করে।  [হেলাল উদ্দিন আহমেদ]


[[en:Prime Minister]]
[[en:Prime Minister]]

১৬:৪৪, ১৭ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

প্রধানমন্ত্রী  সংবিধানের দ্বাদশ ও পঞ্চদশ সংশোধনীর আওতায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধান। ১৯৯১ সালের আগস্ট মাসে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনী পাশের মাধ্যমে বাংলাদেশে মন্ত্রিপরিষদ-শাসিত সরকার-পদ্ধতি পুনরায় চালু হয়। এর ফলে প্রধানমন্ত্রী সরকার-প্রধান হিসেবে রাষ্ট্রের নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী হন। উপর্যুক্ত সংশোধনীর পূর্বে ১৯৭২-১৯৭৫ সালে মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকার এবং ১৯৭৫-১৯৯১ সালে দেশে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার-পদ্ধতি চালু ছিল। সংবিধানের ৫৫ ও ৫৬ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মন্ত্রিপরিষদের শীর্ষে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী এবং তিনি তাঁর মন্ত্রিসভার অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের নির্বাচন করবেন। মন্ত্রিপরিষদ যৌথভাবে সংসদের নিকট দায়ী থাকবেন।

সংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মন্ত্রিপরিষদের কমপক্ষে ৯০ শতাংশ সদস্য জাতীয় সংসদ সদস্যদের মধ্য হতে নিযুক্ত হবেন, এবং সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ সদস্য এমন ব্যক্তিদের মধ্য হতে নিয়োগ দেওয়া যাবে যাঁরা সংসদ নির্বাচনে সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্য। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী —প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা' পদেও নিয়োগ দিতে পারেন। সংসদের যে সদস্যের প্রতি সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ-সদস্যের সমর্থন রয়েছে মর্মে রাষ্ট্রপতির নিকট প্রতীয়মান হবে, উক্ত সদস্যকে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করবেন।

সংবিধানের ৫৭ অনুচ্ছেদে বর্ণিত আছে, যদি প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির নিকট লিখিত পদত্যাগপত্র দাখিলের মাধ্যমে পদত্যাগ করেন অথবা যদি তিনি সংসদ সদস্যপদ হারান, তবে প্রধানমন্ত্রীর পদটি শূণ্য বলে বিবেচিত হবে। প্রধানমন্ত্রী যদি সংসদ-সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন হারান, তাহলে হয় তিনি পদত্যাগ করবেন নতুবা লিখিতভাবে রাষ্ট্রপতিকে সংসদ ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ দিবেন। ৫৭(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী: —প্রধানমন্ত্রীর উত্তরাধিকারী কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীকে স্বীয় পদে বহাল থাকিতে এই অনুচ্ছেদের কোনো কিছু্ই অযোগ্য করিবে না'।

নাম মেয়াদ
তাজউদ্দিন আহমদ ১৭ এপ্রিল ১৯৭১-১২ জানুয়ারি ১৯৭২
শেখ মুজিবুর রহমান ১২ জানুয়ারি ১৯৭২-২৬ জানুয়ারি ১৯৭৫
এম মনসুর আলী ২৬ জানুয়ারি ১৯৭৫-১৫ আগস্ট ১৯৭৫
শাহ আজিজুর রহমান ১৫ এপ্রিল ১৯৭৯-২৪ মার্চ ১৯৮২
আতাউর রহমান খান ৩০ মার্চ ১৯৮৪-৯ জুলাই ১৯৮৬
মিজানুর রহমান চৌধুরী ৯ জুলাই ১৯৮৬-২৭ মার্চ ১৯৮৮
মওদুদ আহমদ ২৭ মার্চ ১৯৮৮-১২ আগস্ট ১৯৮৯
কাজী জাফর আহমদ ১২ আগস্ট ১৯৮৯-৬ ডিসেম্বর ১৯৯০
বেগম খালেদা জিয়া ২০ মার্চ ১৯৯১-৩০ মার্চ ১৯৯৬
শেখ হাসিনা ২৩ জুন ১৯৯৬-১৫ জুলাই ২০০১
বেগম খালেদা জিয়া ১০ অক্টোবর ২০০১-২৯ অক্টোবর ২০০৬
শেখ হাসিনা ৬ জানুয়ারি ২০০৯-

১৯৯৬ সালের মার্চ মাসে জাতীয় সংসদে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানকল্পে সংবিধান সংশোধনের (ত্রয়োদশ সংশোধনী) মাধ্যমে একজন প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে তিন মাস মেয়াদের নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কার্যকালে রাষ্ট্রের নির্বাহী ক্ষমতা প্রধান উপদেষ্টার উপর ন্যস্ত থাকতো এবং তিনি দায়বদ্ধ থাকতেন রাষ্ট্রপতির নিকট। তবে ২০১১ সালে এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের পর সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আনয়নের মাধ্যমে জাতীয় সংসদ এই ব্যবস্থা বাতিল করে। [হেলাল উদ্দিন আহমেদ]