জৌনপুরী, আবদুল আউয়াল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:Banglapedia]]
[[Category:Banglapedia]]
'''জৌনপুরী, আবদুল আউয়াল''' (১৮৬৭-১৯২১)  লেখক ও ইসলামী পন্ডিত। ১৮৬৭ সালে চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মওলানা [[কেরামত আলী জৌনপুরী|কেরামত আলী জৌনপুরী]] ও বাতুল বিবির পুত্র। মাত্র ১৩ বছর বয়সে তিনি কুরআন শরীফ মুখস্থ করেন। লক্ষৌন ও কলকাতায় অধ্যয়ন শেষে তিনি ১৮৮৭ থেকে ১৮৮৯ সাল পর্যন্ত মক্কায় সওলাতিয়া মাদ্রাসায় উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেন। ১৮৮৯ সালে জৌনপুর প্রত্যাবর্তনের পর বাংলাদেশে সমাজ সংস্কার, ইসলাম প্রচার ও মুসলিম মানস পুনর্গঠনে তিনি আত্মনিয়োগ করেন এবং মুসলমান সমাজে অনুপ্রবিষ্ট শির্ক-বিদাত দূর করার জন্য শহর-বন্দর-গ্রামে পরিভ্রমণ করেন। ধর্মীয় বক্তৃতা প্রদানের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের মুসলমানদেরকে কুসংস্কার ও সামাজিক কদাচার থেকে মুক্ত করার প্রচেষ্টা চালান।  
'''জৌনপুরী, আবদুল আউয়াল''' (১৮৬৭-১৯২১)  লেখক ও ইসলামী পন্ডিত। ১৮৬৭ সালে চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মওলানা [[জৌনপুরী, কেরামত আলী|কেরামত আলী জৌনপুরী]] ও বাতুল বিবির পুত্র। মাত্র ১৩ বছর বয়সে তিনি কুরআন শরীফ মুখস্থ করেন। লক্ষৌন ও কলকাতায় অধ্যয়ন শেষে তিনি ১৮৮৭ থেকে ১৮৮৯ সাল পর্যন্ত মক্কায় সওলাতিয়া মাদ্রাসায় উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেন। ১৮৮৯ সালে জৌনপুর প্রত্যাবর্তনের পর বাংলাদেশে সমাজ সংস্কার, ইসলাম প্রচার ও মুসলিম মানস পুনর্গঠনে তিনি আত্মনিয়োগ করেন এবং মুসলমান সমাজে অনুপ্রবিষ্ট শির্ক-বিদাত দূর করার জন্য শহর-বন্দর-গ্রামে পরিভ্রমণ করেন। ধর্মীয় বক্তৃতা প্রদানের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের মুসলমানদেরকে কুসংস্কার ও সামাজিক কদাচার থেকে মুক্ত করার প্রচেষ্টা চালান।  


আবদুল আউয়াল ছিলেন প্রতিভাবান লেখক। তিনি ইসলামের মৌল বিষয়সহ ইতিহাস, চরিতাভিধান, সুফিতত্ত্ব ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে [[আরবি|আরবি]], [[উর্দু|উর্দু]] ও [[ফারসি|ফারসি]] ভাষায় মোট ১২১টি গ্রন্থ রচনা করেন। এগুলির মধ্যে ৮৯টি প্রকাশিত হয়েছে। শিক্ষা বিস্তারের জন্য তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে স্কুল ও মাদ্রাসা স্থাপন করেন। উনিশ শতকের প্রথমদিকে তিনি তাঁর পুত্র হাম্মাদ (মৃ. ১৩১৪ হি.)-এর নামানুসারে ঢাকার আরমানিটোলায় মাদ্রাসা-ই-হাম্মাদিয়া প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৪০ সালে মাদ্রাসাটি স্কুলে রূপান্তরিত হয়। দেশ ও জাতির প্রতি কর্তব্য পালন ও অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ আবদুল আউয়াল ব্রিটিশ সরকার ও মুসলিম নওয়াবদের নিকট থেকে প্রশংসাপত্র লাভ করেন। ১৯২১ সালের ১৮ জুন তাঁর মৃত্যু হয় এবং কলকাতার মানিকতলায় তাঁকে সমাহিত করা হয়।  [মোঃ আফাজ উদ্দীন]
আবদুল আউয়াল ছিলেন প্রতিভাবান লেখক। তিনি ইসলামের মৌল বিষয়সহ ইতিহাস, চরিতাভিধান, সুফিতত্ত্ব ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে [[আরবি|আরবি]], [[উর্দু|উর্দু]] ও [[ফারসি|ফারসি]] ভাষায় মোট ১২১টি গ্রন্থ রচনা করেন। এগুলির মধ্যে ৮৯টি প্রকাশিত হয়েছে। শিক্ষা বিস্তারের জন্য তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে স্কুল ও মাদ্রাসা স্থাপন করেন। উনিশ শতকের প্রথমদিকে তিনি তাঁর পুত্র হাম্মাদ (মৃ. ১৩১৪ হি.)-এর নামানুসারে ঢাকার আরমানিটোলায় মাদ্রাসা-ই-হাম্মাদিয়া প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৪০ সালে মাদ্রাসাটি স্কুলে রূপান্তরিত হয়। দেশ ও জাতির প্রতি কর্তব্য পালন ও অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ আবদুল আউয়াল ব্রিটিশ সরকার ও মুসলিম নওয়াবদের নিকট থেকে প্রশংসাপত্র লাভ করেন। ১৯২১ সালের ১৮ জুন তাঁর মৃত্যু হয় এবং কলকাতার মানিকতলায় তাঁকে সমাহিত করা হয়।  [মোঃ আফাজ উদ্দীন]

০৯:৩৬, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

জৌনপুরী, আবদুল আউয়াল (১৮৬৭-১৯২১)  লেখক ও ইসলামী পন্ডিত। ১৮৬৭ সালে চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মওলানা কেরামত আলী জৌনপুরী ও বাতুল বিবির পুত্র। মাত্র ১৩ বছর বয়সে তিনি কুরআন শরীফ মুখস্থ করেন। লক্ষৌন ও কলকাতায় অধ্যয়ন শেষে তিনি ১৮৮৭ থেকে ১৮৮৯ সাল পর্যন্ত মক্কায় সওলাতিয়া মাদ্রাসায় উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেন। ১৮৮৯ সালে জৌনপুর প্রত্যাবর্তনের পর বাংলাদেশে সমাজ সংস্কার, ইসলাম প্রচার ও মুসলিম মানস পুনর্গঠনে তিনি আত্মনিয়োগ করেন এবং মুসলমান সমাজে অনুপ্রবিষ্ট শির্ক-বিদাত দূর করার জন্য শহর-বন্দর-গ্রামে পরিভ্রমণ করেন। ধর্মীয় বক্তৃতা প্রদানের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের মুসলমানদেরকে কুসংস্কার ও সামাজিক কদাচার থেকে মুক্ত করার প্রচেষ্টা চালান।

আবদুল আউয়াল ছিলেন প্রতিভাবান লেখক। তিনি ইসলামের মৌল বিষয়সহ ইতিহাস, চরিতাভিধান, সুফিতত্ত্ব ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে আরবি, উর্দুফারসি ভাষায় মোট ১২১টি গ্রন্থ রচনা করেন। এগুলির মধ্যে ৮৯টি প্রকাশিত হয়েছে। শিক্ষা বিস্তারের জন্য তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে স্কুল ও মাদ্রাসা স্থাপন করেন। উনিশ শতকের প্রথমদিকে তিনি তাঁর পুত্র হাম্মাদ (মৃ. ১৩১৪ হি.)-এর নামানুসারে ঢাকার আরমানিটোলায় মাদ্রাসা-ই-হাম্মাদিয়া প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৪০ সালে মাদ্রাসাটি স্কুলে রূপান্তরিত হয়। দেশ ও জাতির প্রতি কর্তব্য পালন ও অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ আবদুল আউয়াল ব্রিটিশ সরকার ও মুসলিম নওয়াবদের নিকট থেকে প্রশংসাপত্র লাভ করেন। ১৯২১ সালের ১৮ জুন তাঁর মৃত্যু হয় এবং কলকাতার মানিকতলায় তাঁকে সমাহিত করা হয়।  [মোঃ আফাজ উদ্দীন]