উর্দু

উর্দু  ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাবর্গের অন্তর্গত ইন্দো-ইরানীয় উপগোত্রের একটি ভাষা। দিল্লি ও মিরাটের আশেপাশে যে পশ্চিমা হিন্দি ভাষা প্রচলিত ছিল, উর্দু তারই একটি শাখা। ভারতে মুসলিম শাসক ও তাঁদের সহযোগীদের আগমনের ফলে দিল্লি ও তার আশেপাশে প্রচলিত হিন্দি ভাষার সঙ্গে প্রায় দু শতক (১২০০-১৪০০) ধরে ফারসি শব্দের মিশ্রণের ফলে উর্দু ভাষার জন্ম হয়। এ মিশ্রিত বুলিকে ভাষাবিদগণ খাড়িবুলি, রিখতা এবং হিন্দুস্থানি বলেছেন। দিল্লির ফারসি কবি আমীর খসরু (১২৫৩-১৩২৫) এবং হিন্দি কবি কবির দাসের (১৪৪০-১৫১৮) কবিতায় খাড়িবুলির নমুনা পাওয়া যায়।

‘উর্দু’ একটি তুর্কি শব্দ, যার অর্থ সৈন্য। মুগল সম্রাট শাহজাহানের (১৬২৮-১৬৫৮) সেনানিবাসের নাম ছিল উর্দু-এ-মুআল্লা। এখানে বিভিন্ন এলাকার সৈন্যরা খাড়িবুলি তথা হিন্দুস্থানিতেই কথা বলত।  শাহজাহান তাঁর সেনানিবাসের নামে এ ভাষার নামকরণ করেন উর্দু।

আঠারো শতকে  ঢাকা চাল ব্যবসায়ের প্রধান কেন্দ্র ছিল এবং ব্যবসায়ীরা ছিলেন মাড়োয়াড়ি। তাঁরা বাংলাভাষী চাল বিক্রেতাদের সঙ্গে হিন্দুস্থানি বা রিখতা ভাষায় কথা বলতেন। তাছাড়া সরকারি ও বেসরকারি সভা ও কোর্ট-কাচারিতে হিন্দুস্থানির ব্যবহার প্রচলিত ছিল।

মহারাজা নন্দকুমারের বিরুদ্ধে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আনীত মামলায় (৮ জুন ১৭৭৫) তাঁর উকিল ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট আবেদন করেছিলেন এ বলে যে, বাদী ও বিবাদীকে তাঁর নিজ ভাষা হিন্দুস্থানিতে (উর্দু) বক্তব্য পেশ করার সুযোগ দেওয়া হোক। কলকাতার আলিয়া মাদ্রাসায় (১৭৮০) উর্দু ভাষায় শিক্ষা দেওয়া হতো। ফোর্ট উইলিয়ম কলেজে (১৮০০) শুরু থেকেই বাংলা ও ফারসি বিভাগের অনুরূপ হিন্দুস্থানি বা উর্দু বিভাগও ছিল। উনিশ শতকের শেষদিকে এবং বিশ শতকের প্রথম দিকে বাংলার চা-বাগানের বেশির ভাগ কর্মচারীই ছিল বিহার ও উড়িষ্যা থেকে আগত। তাদের মাতৃভাষা ছিল হিন্দুস্থানি। Eastern Bengal Railway-এর কর্মচারীরাও ছিল বিহার-উড়িষ্যা থেকে আগত উর্দুভাষী। তাদের মাধ্যমে বাংলায় উর্দু ভাষার প্রসার ঘটে।

ব্রিটিশ আমলের গোড়ার দিকে মাদ্রাসায় ধর্মীয় শিক্ষার মাধ্যম ছিল উর্দু, কারণ তখন  হাদীস, ফেকা,  তাফসির প্রভৃতি প্রধানত উর্দু ভাষায় লেখা হতো।  পশ্চিমবঙ্গ ও পূর্ববাংলার শহর ও গ্রাম-গঞ্জে উর্দু ভাষা প্রসারের প্রধান কারণ ছিল মাদ্রাসার এ ধর্মীয় শিক্ষা। বাংলাদেশের মুসলিম অভিজাত শ্রেণির প্রায় সবাই উর্দু বলতে সক্ষম ছিলেন। ব্রিটিশ আমলে এবং পরবর্তীকালেও মুসলিম নেতৃবৃন্দ ধর্মীয় জলসায় এবং রাজনৈতিক সভায় উর্দুতে বক্তৃতা দিতেন। পাকিস্তান আমলে সরকার প্রধান  মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ কর্তৃক উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাবের প্রতিবাদেই বাংলাদেশে  ভাষা আন্দোলন হয়। ১৯৫২-র  একুশে ফেব্রুয়ারি কয়েকজন তরুণ ভাষা-সৈনিক শহীদ হলে বাংলা অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। তখন থেকে পূর্ব পাকিস্তানে উর্দুর প্রভাব হ্রাস পায়। ১৯৭১ সালে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হলে উর্দুভাষী জনগণের একটি বড় অংশ এ দেশ ত্যাগ করে পাকিস্তানে চলে যায়। ফলে এ অঞ্চলে উর্দুচর্চা আরও সংকুচিত হয়ে আসে। বর্তমানে কয়েকটি পরিবার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই কেবল উর্দুর চর্চা সীমাবদ্ধ।

উর্দু সাহিত্যের চর্চা ও বিকাশের ক্ষেত্রে দিল্লি, লক্ষেলŠ ও লাহোর কেন্দ্রের ন্যায় এক সময় বাংলার কলকাতা ও ঢাকা কেন্দ্রও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। উর্দু ভাষার মতো উর্দু সাহিত্যও তার উৎসভূমি দিল্লি ও পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে ক্রমে উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রসার লাভ করে। আঠারো শতকের গোড়ার কবি ওলী আওরাঙ্গবাদীর (১৬৬৮-১৭৪৪) সাহচর্যে দিল্লিতে উর্দু কাব্যচর্চার সূত্রপাত হয়। পরবর্তী সময়ে ফায়েজ (মৃত্যু ১৭১৫), মাজমুন (মৃত্যু. ১৭৪৭), আরজু (মৃত্যু. ১৭৪৮) প্রমুখ কবিসাহিত্যিক ফারসির পাশাপাশি উর্দুতেও কাব্যরচনা করেন। এর আনুমানিক এক শতক পরে বাংলাদেশে উর্দু সাহিত্যচর্চা আরম্ভ হয়। মুগল সুবাহদার ইসলাম খান (১৬০৮-১৩) প্রথম ঢাকাকে সুবাহ বাংলার রাজধানী করেন। ১৭১৩ সালে রাজধানী ঢাকা থেকে মুর্শিদাবাদে এবং ১৭৭২ সালে কলকাতায় স্থানান্তরিত হয় এবং ১৯১২ সাল পর্যন্ত কলকাতাই ছিল সমগ্র উপমহাদেশের কেন্দ্রীয় রাজধানী। এ সময়ে (১৭৭২-১৯১২)  মুর্শিদাবাদ ও  কলকাতা এ দুটি সদর দফতরে বুদ্ধিজীবীদের আনাগোনা, বসতি স্থাপন ও কবিসাহিত্যিকদের পারস্পরিক মেলামেশার সুযোগ ঘটে। পশ্চিমবঙ্গে ফারসি ও উর্দু সাহিত্যচর্চা প্রথম আরম্ভ হয় মুর্শিদাবাদে।  মুর্শিদকুলী খান, শুজাউদ্দীন খাঁ ও আলীবর্দী খানের আমলে মুর্শিদাবাদ, আজিমাবাদ, হুগলি ও ঢাকা মুসলিম কৃষ্টি ও ফারসি সাহিত্যচর্চার গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হয়। রাষ্ট্রভাষা ফারসির পাশাপাশি উর্দুর চর্চাও ক্রমে ক্রমে এগিয়ে যায়। আলীবর্দী খানের সময় মুহাম্মদ ফকীহ দরদমন্দ (মৃত্যু ১৭৪৭) নামে একজন উর্দু কবির সন্ধান পাওয়া যায়।

নবাব  সিরাজউদ্দৌলা (১৭৩৩-১৭৫৭) উর্দু ও ফারসি সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। কুদরাতউল্লা কুদরাত ও ফারহাতউল্লা ফারহাত তাঁর সভাকবিরূপে খ্যাতি লাভ করেন। মীর জাফরের (মৃত্যু. ১৭৬৫) সময় মীর মুহম্মদ শরফ উর্দু কবি ছিলেন। নবাব মহলের গ্রন্থাগারে বহু মূল্যবান আরবি, ফারসি ও উর্দুর প্রাচীন  পান্ডুলিপি আজও রক্ষিত আছে। আঠারো শতকের শেষদিকে মুর্শিদাবাদে ইনশাল্লাহ খান ইনশা (মৃত্যু ১৮১৮) উর্দু সাহিত্যিক ও কবিরূপে সুনাম অর্জন করেন। তিনি দরিয়া-এ-লতাফত (১৮০৮) নামে ফারসি ভাষায় প্রথম উর্দু ব্যাকরণ রচনা করেন। এ বই উর্দু মহলে বিশেষ পরিচিত।

কলকাতায় উর্দু সাহিত্যের বিকাশ ঘটে ধাপে ধাপে। মহীশূরের শাসনকর্তা টিপু সুলতান পরাজিত হলে (১৭৯৯) তাঁর পরিবারকে কলকাতার টালিগঞ্জে স্থানান্তরিত করা হয়। এ পরিবারে উর্দুতে জ্ঞানচর্চা, কাব্যসাধনা ও পৃষ্ঠপোষকতা বহুদিন অব্যাহত থাকে। এ পরিবারেই তাওফিক (মৃত্যু. ১৮৮৪), সুলতান, রহিম প্রমুখের ন্যায় কবিসাহিত্যিক জন্মগ্রহণ করেন। তাওফিকের বাসভবনে আবদুর রহিম, তামান্না গোরখপুরী,  ওবায়দুল্লাহ আল ওবায়দী সোহরাওয়ার্দী (১৮৩২-১৮৮৬), আবদুল গফুর নাসসাখের (১৮৩৩-১৮৮৯) ন্যায় কবিসাহিত্যিকদের আনাগোনা ছিল। আযিমউদ্দীন সুলতান ছিলেন মুহম্মদ বশিরউদ্দীন তাওফিকের সহোদর। তিনি প্রধানত ফারসি কবিতা রচনা করতেন; তবে তাঁর উর্দু কবিতাও আছে।

কলকাতায় উর্দু-ফারসির চর্চা বৃদ্ধি পাওয়ার অন্য একটি কারণ ছিল লক্ষ্ণৌর পদচ্যুত (১৮৫৬) নবাব ওয়াজিদ আলী শাহ্র (১৮২২-১৮৮৭) বন্দি অবস্থায় ফোর্ট উইলিয়ম কলেজে নির্বাসন ও দেড়-দুবছর পরে মেটিয়া বুরুজ মহল্লায় বসতি স্থাপন। তিনি ১৮৮৭ সালে মৃত্যুবরণ করেন এবং মেটিয়া বুরুজেই সমাহিত হন। ওয়াজিদ আলী শাহ্ বিশিষ্ট কবি ও সংস্কৃতিপরায়ণ ছিলেন। তিনি স্বয়ং উর্দু-ফারসিতে ছোটবড় প্রায় চল্লিশটি গ্রন্থ রচনা করেন। সঙ্গীতজ্ঞ ও সঙ্গীতরচয়িতা হিসেবেও তাঁর খ্যাতি ছিল। তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় প্রথমে লক্ষ্ণৌতে এবং পরে কলকাতায় উর্দু সাহিত্য ও সঙ্গীতের বিশেষ উৎকর্ষ সাধিত হয়। তাঁর সঙ্গে লক্ষ্ণৌ থেকে কলকাতায় অনেক আলেম-ফাজেল ও কবিসাহিত্যিক আগমন করেন। ফলে কলকাতা শহর সাহিত্যচর্চায় মুখরিত হয়ে ওঠে এবং তাঁর মেটিয়া বুরুজ মহল্লা দ্বিতীয় লক্ষ্ণৌ-এ পরিণত হয়। এসব কবিসাহিত্যিকের মধ্যে নওয়াব ফাতহুত-দৌলাহ, মির্জা মুহাম্মদ রিযা খাঁ বারক, মাহতাব-উদ-দৌলাহ্, মাওলানা আবদুল হালিম সরকার প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য। এ সময় দিল্লি থেকে মির্জা নওয়াব খাঁ দাগ এবং দাক্ষিণাত্য থেকে নিযম তবাতবাইও কলকাতায় আগমন করেন।

উর্দু গদ্যসাহিত্যের ইতিহাসে কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের অবদান উল্লেখযোগ্য। ব্রিটিশ কর্মচারীদের উর্দু শিক্ষার ব্যবস্থা থাকায় ওই কলেজের মাধ্যমে উর্দু ভাষা ও সাহিত্যের ক্রমোন্নতি ঘটতে থাকে। কলেজ থেকে মীর আম্মান, শের আলী আফসোস, হায়দর বখশ হায়দরী (মৃত্যু ১৮২২) প্রমুখকে আরবি ও ফারসি গ্রন্থের সহজ-সরল উর্দু অনুবাদ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। মীর আম্মানের বাগ-ও-বাহার (১৮০২) উর্দু গদ্যসাহিত্যের ইতিহাসে একটি বিখ্যাত গ্রন্থ। তাছাড়া আফসোসের আরাইশ-এ-মাহফিল (১৮০৫), বাগ-এ-উর্দু, হায়দর বখশ হায়দরীর তারিখ-এ নাদেরী ইত্যাদি গ্রন্থ উর্দু গদ্যসাহিত্যে বিশেষ মর্যাদা লাভ করেছে। বস্ত্তত উর্দু গদ্যসাহিত্যের প্রথম কেন্দ্রই কলকাতা। ফোর্ট ইউলিয়ম কলেজে উর্দু ছাপাখানা প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় কলকাতায় প্রথম উর্দু বই প্রকাশেরও সুযোগ সৃষ্টি হয়। ১৮২২ সালের ২৭ মার্চ কলকাতা থেকে উপমহাদেশের প্রথম উর্দু পত্রিকা জাম-এ-জাঁহানুমা (সাপ্তাহিক) প্রকাশিত হয়।

কলকাতার পাশাপাশি ঢাকায় আধুনিক ধারায় উর্দু কাব্যচর্চা শুরু হয় আঠারো শতকের শেষ দিকে। নবাব শামসউদ্দৌলার (১৭৭০-১৮৩১) পৃষ্ঠপোষকতায় ঢাকায় মির্জা জান তাপিশসহ বহু উর্দু কবির সমাগম ঘটে এবং ধীরে ধীরে উর্দু কাব্যের একটি নতুন গতিধারা সৃষ্টি হয়। মির্জা জান তাপিশের জন্মস্থান দিল্লি। ১৭৮৬ সালের দিকে তিনি বঙ্গদেশে আগমন করেন। শামসউদ্দৌলাহর সাহচর্যে তিনি দশ-বারো বছর ঢাকায় অতিবাহিত করেন। ইংরেজদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে শামসুউদ্দৌলাহ কলকাতায় অন্তরীণ হলে  মির্জা জান তাপিশ কলকাতা গিয়ে ফোর্ট উইলিয়ম কলেজে চাকরি গ্রহণ করেন। ঢাকায় অবস্থানকালে তিনি শামসুল বায়ান-ফী-মুসতালাহাত-এ-হিন্দুস্থান (১৭৯২) নামে উর্দু বাগধারা,  পরিভাষা ও  প্রবাদ সম্পর্কে একটি গ্রন্থ রচনা করেন। গ্রন্থটি পরে মুর্শিদাবাদ থেকে প্রকাশিত হয় (১৮৪৪)। তাপিশের উর্দু কাব্য কুল্লিয়াত (১৮১২)  ফোর্ট উইলিয়ম কলেজ থেকে প্রকাশিত হয়।

হাফেজ ইকরাম আহমদ যায়গম (মৃত্যু ১৮৬৯) রামপুরে (মতান্তরে দিল্লিতে) জন্মগ্রহণ করেন। যায়গম নিজে কাব্যচর্চা করেছেন এবং অন্যদের কাব্যরচনায় দীক্ষা দিয়েছেন। বাংলার নানা স্থানে তাঁর শিষ্যকবি ছিল। তন্মধ্যে  আবদুল গফুর নাসসাখ (ফরিদপুর), মাহমুদ আযাদ (ঢাকা), খাজা আবদুল গফফার আখতার (ঢাকা), হাফেজ রশীদুন্নবী ওয়াহশত (কলকাতা), হাকিম আশরাফ আলী মসত্ (সিলেট) প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য। ঢাকার আগা আহমদ আলী ইস্পাহানী (১৮৩৯-১৮৭৩) প্রধানত ফারসি ভাষার সাহিত্যিক ছিলেন, তবে তিনি উর্দুচর্চাও করতেন। আগা আহমদ আলী ও মির্জা গালিবের মধ্যে সাহিত্যিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল। রিসালা-এ-মুখতাসেরুল ইশতেকাক (১৮৭১) তাঁর উর্দু রচনা। আগা আহমদ আলীর শিষ্যদের মধ্যে প্রধান ছিলেন মুহাম্মদ আশরফ, ফিদা সিলেটী প্রমুখ।

ওবায়দুল্লাহ সোহরাওয়ার্দী ঢাকা মহসিনিয়া মাদ্রাসার প্রথম সুপারিনটেন্ডেন্ট ছিলেন। তিনি আরবি, ফারসি ও উর্দু ভাষায় কাব্যগ্রন্থ রচনা করেন। তিনি উর্দু গাইড ও ফারসি  দুরবীন পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। বিভিন্ন ভাষায় তাঁর রচনার সংখ্যা বাহান্ন; সেগুলির মধ্যে উর্দুতে রচিত দিওয়ান (১৮৮০), মিফতাহুল আদাব, দবিস্তান-ই-দানিস প্রভৃতি প্রধান। প্রথমটি কবিতা সংকলন, দ্বিতীয়টি ব্যাকরণ এবং তৃতীয়টি পদার্থবিদ্যা বিষয়ক গ্রন্থ। এ ছাড়াও তাঁর ভাষাতত্ত্ব, মনোবিদ্যা ও নারীশিক্ষা বিষয়ক কয়েকটি উর্দু গ্রন্থ অপ্রকাশিত রয়েছে। ওবায়দুল্লাহর কন্যা খুজিস্তা আখতার (১৮৭৪-১৯১৯) মীলাদুন্নবী সম্পর্কে কাওকাব-ই-দুররী নামে একটি উর্দু গ্রন্থ রচনা করেন। তিনি হেনরী উডের নীতিমূলক একটি ইংরেজি গ্রন্থ আইনা-ই-ইবরাত (উপদেশ দর্পণ, ১৯১১) নামে উর্দুতে অনুবাদ করেন। তাঁর অন্য রচনা সীরাতুন নবী ও তালিমুন নিসা। খুজিস্তা আখতার ভারতীয় মুসলিম মহিলাদের মধ্যে প্রথম সিনিয়র কেমব্রিজ পরীক্ষা পাস ও বোর্ড অব এগজামিনেশনস থেকে ‘ডিগ্রি অব অনার্স’ লাভ করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এম.এ পরীক্ষার পরীক্ষক ছিলেন। মহিলাদের মধ্যে এ সম্মান তিনিই প্রথম লাভ করেন।

নবাব আবদুল লতিফের অনুজ আবু মুহাম্মদ আবদুল গফুর নাসসাখ উর্দু-ফারসিতে কবিতা রচনা করে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি আরবি, ইংরেজি ও হিন্দি ভাষাও ভালো জানতেন। কর্মজীবনে তিনি ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর। তাঁর কবিতা, আলোচনা ও সংকলন-গ্রন্থের সংখ্যা অনেক। সেগুলির মধ্যে আশআর-এ-নাসসাখ (১৮৬৬), দফতর-এ-বেমিসাল (১৮৬৯), চশমা-এ-ফায়েয (১৮৭৪) ও আরমুগান (১৮৭৫) হলো কাব্যগ্রন্থ। উর্দু সাহিত্যের আলোচনা পুস্তক সুখান-এ শুআরা (কবিদের ইতিবৃত্ত, ১৮৭৪) তাঁর সবচেয়ে বড় অবদান। এ ছাড়া তিনি গাঞ্জ-এ-তাওয়ারিখ (১৮৭৩) ও কানয্-এ-তাওয়ারিখ (১৮৭৭) নামে মহাপুরুষদের দুটি জীবনীগ্রন্থও রচনা করেন।

ঢাকার বনেদি পরিবারের সন্তান মুনশি রহমান আলী তায়েশ (১৮২৩-১৯০৮) উর্দু কবি, সাহিত্যিক ও ঐতিহাসিক ছিলেন। তাঁর প্রথম রচনা গুলযার-এ-নাত (১৮৮০) কানপুরের নিযামী প্রেস থেকে প্রকাশিত হয়। এতে তাঁর স্বরচিত উর্দু ও ফারসি ‘না’তিয়া কাসিদা’ রয়েছে। তাঁর উর্দু ভাষার কবিতাসংকলন দীউয়ান-এ-তায়েশ-এর নাম জানা যায়, কিন্তু পান্ডুলিপি পাওয়া যায়নি। ‘তায়েশ’ রহমান আলীর সাহিত্যিক ছদ্মনাম। তিনি ঐতিহাসিক হিসেবে অধিক পরিচিত। তাওয়ারিখ-এ-ঢাকা (১৯১০) তাঁর শ্রেষ্ঠ রচনা। এতে তিনি সংক্ষিপ্ত আকারে বাংলার ইতিহাস এবং উনিশ শতকে ঢাকার ভৌগোলিক, প্রত্নতাত্ত্বিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিবৃত্ত সবিস্তার লিপিবদ্ধ করেছেন।

সৈয়দ মুহম্মদ আযাদ (১৮৫০-১৯১৬) ঢাকার অপর জমিদার মীর আশরাফ আলীর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। নওয়াব  আবদুল লতিফ ছিলেন তাঁর শ্বশুর এবং শেরে বাংলা এ.কে ফজলুল হক তাঁর জামাতা। তিনিই প্রথম উর্দুতে নাটক রচনা করেন। স্বতন্ত্র ভঙ্গির প্রবন্ধ রচনা করেও তিনি খ্যাতি লাভ করেন। তাঁর রচিত নওয়াবী দরবার ও নওয়াবী খেল দুটি নাটক, মাওলানা আযাদ আত্মজীবনী এবং খিয়ালাত-এ-আযাদ প্রবন্ধ সংকলন। তাঁর প্রবন্ধে সমকালের সামাজিক ও রাজনৈতিক সমস্যা স্থান পেয়েছে।

আহমদ হুসাইন ওয়াফির (মৃত্যু ১৯৪০) ঢাকা মুহসিনিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। তিনি কাব্য ও নাটক উভয় মাধ্যমে উর্দুচর্চা করেছেন। তাঁর জনপ্রিয় নাটক বিমার-ই-বুলবুল (১৮৮০) ঢাকায় কয়েকবার মঞ্চস্থ হয়।  হাকিম হাবিবুর রহমান (১৮৮১-১৯৪৭) উর্দু সাহিত্য ও সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে অনন্যসাধারণ অবদানের জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন। তিনি ঢাকা মাদ্রাসায় শিক্ষালাভ করে দীর্ঘ এগারো বছর কানপুর, লক্ষ্ণৌ, দিল্লি ও আগ্রায় চিকিৎসাবিদ্যায় পারদর্শিতা অর্জন করেন এবং ‘শেফাউল মূলক’ (দেশের রোগমুক্তি) খেতাবে ভূষিত হন। তিনি সাহিত্য, ইতিহাস ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের ওপর গ্রন্থ রচনা করে উর্দু ভাষাকে গবেষণা ও পান্ডিত্যের গরিমা দান করেন। তাঁর প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ রচনা হলো: আলফারিক (১৯০৪), হায়াত-এ-সূকরাত (১৯০৪), আসুদ নাগ-এ-ঢাকা (১৯৪৬), ঢাকা পচাস বরস্ পহলে (১৯৪৯), সালাসা গাস্সালা, তাযকিরাতুল-ফুযালা, মাসাজিদ-এ-ঢাকা ইত্যাদি। আসুদ গান-এ ঢাকা-য় ঢাকার বিখ্যাত মাযারসমূহ এবং ঢাকা পচাস বরস্ পহলে গ্রন্থে উনিশ-বিশ শতকের ঢাকার ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে। সালাসা গাস্সালা-য় এদেশে উর্দু, ফারসি ও আরবি ভাষায় রচিত গ্রন্থ এবং সেগুলির লেখকদের সংক্ষিপ্ত পরিচয় লিপিবদ্ধ হয়েছে। হাকীম হাবিবুর রহমান আল মাশরিক (১৯০৬) ও যাদু (১৯২৩) নামক দুটি মাসিক উর্দু পত্রিকা সম্পাদনা ও প্রকাশ করে পূর্ববাংলা ও আসামে উর্দু সাংবাদিকতার সূচনা করেন। তিনি পূর্ববাংলা ও আসামের আঞ্জুমান-এ-উর্দু নামক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। এক কথায়, উর্দু ভাষার চর্চা ও প্রসারে হাকীম হাবিবুর রহমান বহুমাত্রিক ভূমিকা পালন করেন। ঢাকার অধিবাসী সৈয়দ শরফুদ্দীন শরফ আল-হুসাইনী (১৮৭৬-১৯৬০) গুলিস্তান-ই-শরফ (১৯৩৭) ও দাবিস্থান-ই-শরফ (অপ্রকাশিত) নামে দুখানি কাব্য রচনা করেন।

বাংলাদেশের উর্দু-ফারসি সাহিত্যের ইতিহাসে ঢাকার নবাব খাজা পরিবারের অবদান অনস্বীকার্য। খাজা হায়দর জান, খাজা আসাদউদ্দীন কাওকাব, খাজা আবদুর রহিম সাবা (মৃত্যু ১৮৭১), খাজা আহসানউল্লাহ শাহীন, খাজা আতিকউল্লাহ শায়দা,  খাজা মুহাম্মদ আফজাল(জন্ম ১৮৭৫), খাজা নাযিমউদ্দীন প্রমুখ উনিশ ও বিশ শতকে উভয় ভাষায় সাহিত্য চর্চা করেন। খাজা মুহম্মদ আযম ইসলামী পঞ্চায়েত ঢাকা (১৯১১) নামক উর্দু পুস্তিকা রচনা করেন। তাঁর পুত্র খাজা মুহম্মদ আদেল হাকীম হাবিবুর রহমানের সঙ্গে যৌথভাবে সম্পাদনা করেন যাদু নামক মাসিক পত্রিকা। খাজা আবদুর রহিম সাবা দাস্তে সাবা (অপ্রকাশিত) নামে উর্দু কাব্য রচনা করেন। এর পান্ডুলিপি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত আছে। ঢাকার নবাব খাজা আহসানউল্লাহ শাহীন (১৮৪৫-১৯০১) কুল্লিয়াত-ই-শাহীন নামে উর্দু কাব্য রচনা করেন। ‘শাহীন’ তাঁর কাব্যনাম। তাঁর অপর গ্রন্থ তাওয়ারিখ-ই-খান্দান-ই-কাশমীরিয়ান ইতিহাসমূলক; গ্রন্থখানি এখনও অপ্রকাশিত। সঙ্গীত রচনাতেও শাহীনের যোগ্যতা ছিল। তিনি অনেকগুলি  ঠুংরি গান রচনা করেন। তাঁর উৎসাহ ও আর্থিক সহায়তায় আহসানউল কাসাস (১৫ ফেব্রুয়ারি ১৮৮৪) নামক একটি উর্দু সাপ্তাহিক ঢাকা থেকে প্রকাশিত হয়। নবাব আবদুল গনির দৌহিত্র এবং নবাব খাজা ইউসুফ খান বাহাদুরের পুত্র খাজা মুহাম্মদ আফজালের কাব্যগুরু ছিলেন কবি সৈয়দ মাহমুদ আযাদ। আফজাল উর্দু ও ফারসি উভয় ভাষাতেই  গজল লিখেছেন। তিনি ঢাকা শহরে আবজাদ রীতিতে সন-তারিখ (Chronogram) রচনায় পারদর্শী ছিলেন।

উর্দু ও ফারসি সাহিত্যের ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু ও ফারসি বিভাগের যথেষ্ট অবদান রয়েছে। প্রতিষ্ঠাকাল (১৯২১) থেকেই এখানে উর্দু ও ফারসি বিভাগ ছিল এবং প্রথমে ফারসি ও পরে উর্দু শিক্ষাদান আরম্ভ হয়। এ বিভাগটি তখন থেকেই উর্দু ভাষা ও সাহিত্যের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বিভাগের প্রথম অধ্যক্ষ খান বাহাদুর ফিদা আলী খান বঙ্কিমচন্দ্রের বিষবৃক্ষ উপন্যাসের বস কে রোগ নামে উর্দু অনুবাদ প্রকাশ করেন। সৈয়দ ওয়াজাহাদ হোসেন  আন্দালীব সাদানী (১৯০৪-১৯৬৯) এ বিভাগে দীর্ঘকাল অধ্যাপনা করেন। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, গল্পকার, প্রাবন্ধিক ও গবেষক। উর্দু ভাষায় রচিত তাঁর একাধিক গ্রন্থের মধ্যে নিশাত-ই-রফতা (কাব্যগ্রন্থ), তাহকিক কী রওশনি মেঁ, সাচ্চি কাহানিয়াঁ, নুশ ওয়া নীশ, পায়াম-ই-ইকবাল, ইনশা-ই-আবুল ফযল (অনুবাদ), রুবাইয়াত-ই-বাবা তাহের (অনুবাদ) ইত্যাদি প্রধান।

মফস্বল শহরগুলিতেও উর্দু-ফারসির চর্চা হয়েছে। নাযের মুহম্মদ আবদুল্লাহ আগুফতা সিলেটের একজন রইস কবি ছিলেন। হাফেয ইকরাম আহমদ যায়গম ছিলেন তাঁর কাব্যগুরু। তাসবিহুল গাফেলিন (১৮৯৪) নামে তাঁর নীতিমূলক একখানি উর্দু গ্রন্থ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংরক্ষিত আছে। সিলেটের  বানিয়াচং উপজেলার অধিবাসী মৌলবি ফরজাম আলী বেখোদ ছিলেন মির্জা জান তাপিশের শিষ্য। তাঁর উর্দু কাব্য বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিতে সংরক্ষিত আছে। চট্টগ্রামের মুন্সি গোলাম হায়দার ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের দপ্তর তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন। তিনি মুন্সি মুহাম্মদ ওয়াসির ফারসি মসনব গুলশান-ই-ইশক্-এর হুসনো ইশক্ (১৮৪৩) নামে উর্দু অনুবাদ করেন। এর ৩০০ পৃষ্ঠার পান্ডুলিপিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংরক্ষিত আছে।

এ সময় কলকাতা এবং ঢাকা থেকে উর্দু ভাষায় প্রকাশিত কয়েকটি পত্রিকা হচ্ছে: জাম-ই-জাহাঁ নুমা (সাপ্তাহিক, কলকাতা, ১৮২২-১৮২৮); উর্দু গাইড (সাপ্তাহিক, কলকাতা, ১৮৫৮-১৮৭৭); মুহাম্মদী আখবার (সাপ্তাহিক, কলকাতা, ১৮৭৭); নাতিজা-ই-সুখান (মাসিক, কলকাতা, ১৮৮১); আহসানউল কাসস (সাপ্তাহিক, ঢাকা, ১৮৮৪); দারুস-সালতানত (দৈনিক, কলকাতা, ১৮৮৮); আল মাশরিক (মাসিক, ঢাকা, ১৯০৬-১৯০৭); যাদু (মাসিক, ঢাকা, ১৯২৩); আখতার (ময়মনসিংহ, ১৯২৪)।

পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরে রেজা আলী ওয়াহ্সত (১৮৮১-১৯৫৩) এবং সলিমউল্লাহ্ ফাহ্মিসহ বেশ কয়েকজন উর্দু কবি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে আসেন এবং উর্দু সাহিত্যচর্চার প্রসার ঘটান। তখন নিয়মিত মুশায়রা (কবিতাপাঠের আসর) অনুষ্ঠিত হতো এবং নবীন কবিরা তাঁদের স্বরচিত উর্দু কবিতা পাঠ করতেন। রাহাত আরা বেগম, উম্মে আম্মারা, আহমদ সাদি, আশরাফ মাহ্পুরি, বেগম জয়নব তাসনিন, ইউসুফ আহ্মীর প্রমুখ উর্দুতে অনেক ছোটগল্পও রচনা করেছেন। এসব রচনা প্রকাশিত হতো খাওয়ার (ঢাকা, ১৯৫২), নাযীম (ঢাকা, ১৯৬০), কর্ণফুলি (চট্টগ্রাম, ১৯৬৭) এবং দবিস্তান-ই-মাশরিক (খুলনা) পত্রিকায়। উর্দুভাষী সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মনোরঞ্জনের জন্য কয়েকটি উর্দু পত্রিকাও তখন প্রকাশিত হতো। সেগুলির মধ্যে ওয়াতন (ঢাকা, ১৯৪৭) ও পাসবান (ঢাকা, ১৯৪৭) উল্লেখযোগ্য। অধিকাংশ স্কুল-কলেজের বার্ষিক ম্যাগাজিনে একটি উর্দু বিভাগ থাকত। রেডিও পাকিস্তান থেকে খবর ছাড়া নাটকও প্রচারিত হতো। এ সময় থেকে রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও উর্দুর পঠনপাঠন শুরু হয়।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর উর্দুর চর্চা অনেকটাই কমে যায়। স্কুল পর্যায়ে উর্দু বিভাগগুলি বন্ধ হয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতেও উর্দু বিষয়ের ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা কমতে থাকে। উর্দু পত্রপত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায় এবং উর্দুতে খবর ও নাটক প্রচারও বন্ধ হয়ে যায়। তবে বাংলাদেশ বেতার বহির্বিভাগ থেকে উর্দু ভাষায় খবর প্রচার শুরু করে। বর্তমানে আর মুশায়রা অনুষ্ঠিত না হলেও বাংলা ও উর্দু গজলের চর্চা শুরু হয়েছে। উর্দু কবি ইকবালের জন্মদিনও সীমিত পরিসরে পালিত হয়।  [কানিজ-ই-বাতুল]

গ্রন্থপঞ্জি  ওয়াফা রাশেদী, বাংগাল মেঁ উর্দু, হায়দ্রাবাদ, পাকিস্তান, ১৯৫৫; Rambabu Saxsina, History of Urdu Literature, Lucknow; TG Baily, A History of Urdu Literature.