হাজারী, আবদুল গনি
হাজারী, আবদুল গনি (১৯২১-১৯৭৬) কবি, সাংবাদিক। ১৯২১ সালের ১২ জানুয়ারি পাবনা জেলার সুজানগরের নয়াগ্রামে তাঁর জন্ম। ১৯৪৪ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে অনার্সসহ বিএ ডিগ্রি লাভ করেন। পরে একই বিষয়ে তিনি এমএ শ্রেণীতে অধ্যয়ন করেন, কিন্তু তাঁর ডিগ্রি অর্জন হয়নি।
আবদুল গনি হাজারীর সাংবাদিক জীবন শুরু হয় ১৯৪৭ সালে কলকাতা থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক আলোড়ন পত্রিকা সম্পাদনার মাধ্যমে। পরে তিনি চন্দ্রবিন্দু, মুক্তি (১৯৫০) ও দ্য রিপাবলিক নামে বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকা প্রকাশ করেন। সাতচল্লিশের পর ঢাকায় এসে তিনি জুবলি প্রেসের সহকারী ম্যানেজার নিযুক্ত হন। পরে দ্য পাকিস্তান অবজার্ভার, দৈনিক সংবাদ, পূর্বদেশ, চিত্রালী ও পরিক্রমা (১৯৬৫-৬৮) পত্রিকায় বিভিন্ন পদে চাকরি করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর তিনি অবজার্ভার গ্রুপ অব পাবলিকেশন্স-এর প্রশাসক (১৯৭২-৭৩) ও সংবাদপত্র ব্যবস্থাপনা বোর্ডের চেয়ারম্যান (১৯৭৪-৭৬) নির্বাচিত হন। লেখক সংঘ, ঢাকা আর্ট স্কুল (১৯৪৮), ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন ইত্যাদি সংগঠন প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনায় তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।
আবদুল গনি হাজারী কবিতা রচনা করেও খ্যাতি অর্জন করেন। নাগরিক চেতনা ও বৈদগ্ধ্য তাঁর কবিতায় প্রতিফলিত হয়েছে। তিনি নগরজীবনের অসঙ্গতি ও বিকারসমূহ বিদ্রূপের ভাষায় তাঁর কাব্যে সফলভাবে তুলে ধরেছেন। সামান্য ধন (১৯৫৯), কতিপয় আমলার স্ত্রী, সূর্যের সিঁড়ি (১৯৬৫), জাগ্রত প্রদীপ (১৯৭০) তাঁর মৌলিক কাব্য; স্বর্ণগর্দভ (১৯৬৪) ও ফ্রয়েডের মনঃসমীক্ষা (১৯৭৫) তাঁর অনুবাদ গ্রন্থ। কালপেঁচার ডায়েরী (১৯৭৬) নামে তাঁর রম্যরচনার একটি সংকলনও প্রকাশিত হয়েছে। কতিপয় আমলার স্ত্রী কাব্যের জন্য তিনি ইউনেস্কো পুরস্কার (১৯৬৪) এবং সমগ্র কাব্যবিচারে বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৭২) লাভ করেন। [বদিউজ্জামান]