সেগুন
সেগুন (Teak) মাঝারি থেকে বড় আকারের বৃক্ষ, Tectona grandis। এ বৃক্ষ ২০-৩০ মিটার উঁচু হয়, কান্ডের গোড়ায় থাকে আধমূল (buttress)। পাতা উপবৃত্তাকার থেকে ডিম্বাকার, খসখসে, ৪০-৫৫ সেমি দীর্ঘ; চওড়া প্রায় ২৪-২৫ সেমি, বোঁটা ২-৫ সেমি। ফুল ছোট, সাদা, নক্ষত্র আকারের, বৃন্তযুক্ত। ফল শক্ত, কিছুটা গোলাকার, ব্যাস প্রায় ১ সেমি, অমসৃণ; এতে থাকে ১-২টি বীজ। পরিণত বয়সের গাছের গুঁড়ির (১.৫-২ মিটার উচ্চতায়) ব্যাস হয় ১-১.২৫ মি।
সেগুনের আদি নিবাস মায়ানমার। ১৮৭১ সালে প্রথম চট্টগ্রামের কাপ্তাই-এ এ গাছ বপন করা হয়। পরে ১৮৭৩ সাল থেকে চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেট বনাঞ্চলে সেগুন লাগানো শুরু হয়। বর্তমানে দেশের প্রায় সর্বত্রই উন্নতমানের কাঠের বৃক্ষ হিসেবে এটি রোপণ করা হচ্ছে।
দারুবৃক্ষের মধ্যে সেগুন সর্বোত্তম। প্রথম কাটা কাঠ সোনালি হলুদ বর্ণের, ক্রমে তা গাঢ় রং ধারণ করে। কাঠ খুবই শক্ত, দৃঢ়, ভারি, টেকসই এবং উত্তম পালিশযোগ্য। আসবাবপত্র তৈরিতে সেগুন কাঠের ব্যবহার বেশি। এছাড়া জাহাজ নির্মাণ, বাড়ির দরজা-জানালা, রেলের বগি, বাদ্যযন্ত্র, জাহাজের মাস্ত্তল ইত্যাদি তৈরিতেও এ কাঠ ব্যবহার করা হয়। কচি পাতা এবং মূলের বাকল থেকে লাল রং তৈরি হয়। বাংলাদেশে প্রাপ্ত বছরে মোট প্রায় ৬০,৬৫,০০ ঘনফুট কাঠের মধ্যে একটি বড় অংশ আসে সেগুন গাছ থেকে। [মোস্তফা কামাল পাশা]
আরও দেখুন দারুবৃক্ষ।