ছুটি খান মসজিদ
ছুটি খান মসজিদ চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের পরাগলপুর মৌজার দেওয়ানপুর গ্রামে অবস্থিত। জনসাধারণের কাছে ছুটি খাঁর দিঘি নামে পরিচিত এক পুকুরের পূর্ব পাড়ে মসজিদটির ধ্বংসাবশেষ পরিলক্ষিত হয়। ছুটি খান ছিলেন পরাগল খানের পুত্র। তিনি সুলতান হোসেন শাহ এর (১৪৯৪-১৫১৯) অধীনে চট্টগ্রামের জন্য সরকারি বাহিনীর লস্কর বা সেনা কর্মকর্তা ছিলেন। ছুটি খান মহাভারত এর বাংলা অনুবাদক শ্রীকর নন্দীর পৃষ্ঠপোষকও ছিলেন। তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায়ই শ্রীকর নন্দী মহাভারতের অশ্বমেধ পর্বটি বাংলা পয়ার ও ত্রিপদী ছন্দে অনুবাদ করেন। বর্তমানে তাঁর মসজিদটি পরিপূর্ণভাবে ধ্বংসাবশেষে পর্যবসিত হয়েছে। মসজিদের খিলানের মতো মনে হয় এমন বেলে পাথরের স্থাপত্য ভগ্নাংশগুলি নতুন একটি মসজিদের আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। নতুন মসজিদটি এসব ধ্বংসাবশেষের উপরই নির্মিত হয়েছে। পোড়ামাটির নকশি ইটের অলঙ্করণ শোভিত ধ্বংসপ্রাপ্ত পশ্চিম দেওয়ালের একাংশ এবং কোণে সন্নিহিত বুরুজের অবশেষ ঝোপঝাড়ের মধ্য দিয়ে মাত্র কয়েক বছর আগেও দেখা যেত। মসজিদের কেন্দ্রীয় মিহরাব ও দুটি পার্শ্ব মিহরাবেও পোড়ামাটির লতাপাতার নকশা এবং শিকল ও ঘণ্টার মোটিফ দ্বারা সুশোভিত ছিল।
ধ্বংসাবশেষ পরীক্ষায় দেখা যায়, এখানে ছয় গম্বুজবিশিষ্ট হোসেন শাহী আমলের মসজিদের অস্তিত্ব ছিল। মসজিদটির তিন খিলানযুক্ত প্রবেশপথ তিন মিহরাবের সমান্তরালে পশ্চিম দেওয়াল অবধি বিস্তৃত ছিল। মসজিদে নামাজের স্থানটি দু'’স্তম্ভপথ দ্বারা তিনটি আইলে বিভক্ত ছিল। [শামসুল হোসাইন]