বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংক বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও মুদ্রা নিয়ন্ত্রণের প্রধান কর্তৃপক্ষ। ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ ব্যাংক আদেশ (১৯৭২ সালের রাষ্ট্রপতি আদেশ নং ১২৭) বলে ঢাকায় স্থাপিত হয় এবং ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর এর কার্যক্রম শুরুর তারিখ ধরা হয়। স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের ঢাকা শাখার সকল দায় ও পরিসম্পদ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন ৩ কোটি টাকা এবং তা প্রতিটি ১০০ টাকা মূল্যমানের ৩ লক্ষ শেয়ারে বিভক্ত। সম্পূর্ণ মূলধনই সরকার পরিশোধ করেছে। ব্যাংকটি পরিচালনার জন্য ৮ সদস্যবিশিষ্ট একটি পরিচালনা পর্ষদ রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এ পর্ষদের সভাপতি। অন্যান্যরা হচ্ছেন একজন ডেপুটি গভর্নর ও সাতজন অন্যান্য পরিচালক সদস্য। গভর্নর ও ডেপুটি গভর্নর পাঁচ বছরের কম যে কোনো মেয়াদের জন্য সরকার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হন। তবে, সরকার তাদের নিয়োগের মেয়াদ নতুন করে পরবর্তী মেয়াদের জন্য বর্ধিতও করতে পারেন। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ যাবত যারা গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তারা হলেন: আ.ন.ম হামিদুল্লাহ (১৯৭২-৭৪); এ.কে.এন আহমেদ (১৯৭৪-৭৬); এম নূরুল ইসলাম (১৯৭৬-১৯৮৭); শেগুফ্তা বখ্ত চৌধুরী (১৯৮৭-৯২); খোরশেদ আলম (১৯৯২-৯৬); লুৎফর রহমান সরকার (১৯৯৬-৯৮); ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন (১৯৯৮-২০০১); ড. ফখরুদ্দীন আহমদ (২০০১-২০০৫); ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ (২০০৫-২০০৯); ড. আতিউর রহমান (২০০৯-২০১৬), জনাব ফজলে কবীর (২০১৬-২০২২) এবং জনাব আবদুর রঊফ তালুকদার (জুলাই ১২, ২০২২-বর্তমান)।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ঢাকার মতিঝিলে অবস্থিত। প্রধান কার্যালয় ছাড়াও ঢাকার সদরঘাটে এর একটি শাখা আছে। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি করে শাখা আছে চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বগুড়া, রংপুর, ময়মনসিংহ, এবং বরিশাল শহরে। প্রধান কার্যালয়ে মোট ৬০টি বিভাগ আছে। এসব বিভাগ এবং শাখা কার্যালয়সমূহের প্রধান হচ্ছেন একজন নির্বাহী পরিচালক অথবা মহাব্যবস্থাপক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক, রিজার্ভ ব্যাংক অথবা মনিটারি অথোরিটি হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের সরকারকে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে একচেটিয়া স্বত্ত্বাধিকারী ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান। অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংকের মতো কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ প্রদানকারীর অর্থাৎ প্রাথমিকভাবে দেশের সরকারের কাছ থেকে দেশের ব্যাংকসমূহ যে ঋণ গ্রহণ কওে তার উপর ধার্য্যকৃত সুদ আদায় করে এবং প্রথাগতভাবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলির জন্য ঋণ গ্রহণের শেষ আশ্রয়স্থল রূপে কাজ করে। তবে সাধারণ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলির সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান পার্থক্য হলো দেশের মুদ্রা সরবরাহ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এর রয়েছে একচ্ছত্র অধিকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিধিবদ্ধভাবে টেন্ডার আহ্বানের মাধ্যমে সরকারকে ঋণ প্রদান করে। প্রয়োজনে অন্যান্য ব্যাংককেও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ সহায়তা দেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে মুদ্রা সরবরাহের গুরুদায়িত্ব পালনের সাথে সাথে সুদহার নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ভূমিকার পাশাপাশি অর্থনৈতিক সংকটের সময় ঋণদানের শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবেও এর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। এছাড়া, বাংলাদেশ ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে অন্যান্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বও পালন করে।
বাংলাদেশ ব্যাংক-এর ভিশন হলো মানসম্মত সেবা ও এর কর্মীদের দক্ষতা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে একটি আধুনিক, গতিশীল, কার্যকর ও দূরদর্শী কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে দেশের অর্থনীতির দ্রুত প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন ঘটানোর জন্য বাংলাদেশি টাকার অভ্যন্তরীণ ও বহিঃমূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে দেশের মুদ্রা ও আর্থিক বাজার ব্যবস্থাপনার কাজ করা। আর এই ভিশন বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এর মিশন হল জাতীয় স্বার্থে দেশের উৎপাদনশীল সম্পদের প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন ঘটানোর লক্ষ্যে এবং বাংলাদেশি টাকার অভ্যন্তরীণ মূল্য স্থিতিশীল রাখা ও এর প্রতিযোগিতামূলক বহিঃমূল্য বজায় রাখার উদ্দেশ্যে মুদ্রা ও ঋণনীতির ব্যবস্থাপনা করা। এসব উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধানত (১) মুুদ্রানীতি প্রণয়ন করে; এবং (২) সুষ্ঠু আর্থিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য ব্যাংক এবং নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ নিয়ন্ত্রণ করে।
বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭২ অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের লক্ষ্যসমূহ হচ্ছে: ১. টাকার অভ্যন্তরীণ ও বহিঃমূল্য স্থিতিশীলতা রক্ষা; ২. টেকসই প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন; ৩. উচ্চ কর্মসংস্থান; ৪. সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার এবং ৫. আর্থিক ও পেমেন্ট সিস্টেমের স্থিতিশীলতা অর্জন।
কার্যাবলী বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যাবলীর মধ্যে রয়েছে: ১. জাতীয় স্বার্থে উৎপাদনশীল সম্পদসমূহের প্রবৃদ্ধি ও ঋণোন্নয়ন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে দেশের অভ্যন্তরীণ মুদ্রার মান স্থিতিশীল রাখা এবং টাকার বৈদেশিক বিনিময় হার ধরে রাখার উদ্দেশ্যে মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন; ২. দেশের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে হস্তক্ষেপের নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন; ৩. মুদ্রা বাজার নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিভিন্ন নীতি ও কার্যক্রম গ্রহণ। যেমন: ক. খোলা বাজার কার্যক্রম (ট্রেজারি বিল/বন্ড, রিপো, রিভার্স রিপো নিলাম), খ. রিজার্ভ অনুপাতের পরিবর্তন যেমন নগদ জমা সংরক্ষণ আবশ্যকতা (CRR) এবং বিধিবদ্ধ তরল সম্পদ সংরক্ষণ আবশ্যকতার (SLR) হার পরিবর্তন, গ. সেকেন্ডারি ট্রেডিং, ঘ. পুনঃবাট্টার হার/ব্যাংক হার পরিবর্তন ঙ. নৈতিক নিয়ন্ত্রণ; ৪. দেশের ব্যাংকিং খাতের নিরাপত্তা, সুষ্ঠুতা এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখার লক্ষ্যে এবং ব্যাংকিং খাতের শৃঙ্খলা, গ্রাহকদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও ব্যাংকিং ব্যবস্থায় তাদের আস্থা ধরে রাখার উদ্দেশ্যে সরেজমিন পরিদর্শন এবং রিপোর্ট ভিত্তিক/দূর অবস্থানিক পরিবীক্ষণের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত ব্যাংক ও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধান; ৫. স্বর্ণ, বৈদেশিক বিনিময়, এসডিআর এবং আইএমএফ-এ সংরক্ষিত মজুদ দ্বারা নিরূপিত বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চিতি ব্যবস্থাপনা; ৬. বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে এককভাবে ব্যাংক নোট ইস্যু; ৭. বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের পারস্পরিক নিরূপিত চেক, ড্রাফট, বিল ইত্যাদি দ্বারা সৃষ্ট আন্তঃব্যাংক পরিশোধ নিষ্পত্তিতে তালিকাভুক্ত ব্যাংকসমূহের জন্য নিকাশ ঘর হিসেবে দায়িত্ব পালন; ৮. সরকারের ব্যাংক হিসেবে দায়িত্ব পালন; ৯. দেশের তালিকাভুক্ত ব্যাংকসমূহ এবং সরকারের জন্য ঋণের শেষ আশ্রয়স্থল; ১০. মুদ্রা ও ব্যাংকিং বিষয়ে সরকারের পরামর্শদাতা হিসেবে দায়িত্ব পালন; এবং ১১. জাতীয় স্বার্থে প্রবৃদ্ধি সহায়ক কর্মসূচি পরিচালনা।
এর বাইরেও বাংলাদেশ ব্যাংক আরো অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজ সম্পাদন করে যেমন: নতুন নতুন ইনস্ট্রুমেন্ট প্রচলন; মুদ্রা ও আর্থিক বাজারে অংশগ্রহণকারীদের জন্য গাইডলাইন প্রণয়ন; ব্যাংক ও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের দ্বারা সম্পাদিত সামাজিক দায়বদ্ধতার কাজ পরিবীক্ষণ করা এবং এ ব্যাপারে তাদেরকে উৎসাহিত করা।
বাংলাদেশ ব্যাংক আদেশ ১৯৭২-এর ৭এ ধারা বলে বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের অফিশিয়াল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করে থাকে। বেশিরভাগ বিদেশি মুদ্রার বিনিময় হারের উঠানামা এবং বিশ্ব মুদ্রাবাজারের সুদের হারের অনিয়মিত উঠানামার ফলে সৃষ্ট ঝুঁকি হ্রাসের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন মুদ্রায় এর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণ করে। বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে নস্ট্রো হিসাব পরিচালনা করে। এসব হিসাবে (ধপপড়ঁহঃ) সংরক্ষিত ফান্ড স্ব স্ব দেশের মুদ্রায় ট্রেজারি বিল, রেপো এবং সরকারি অন্যান্য ইনস্ট্রুমেন্টে বিনিয়োগ করা হয়। এছাড়া, বিভিন্ন উচ্চমানের স্বনামধন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকের উচ্চ সুদহার সম্পন্ন আমানতে স্বল্পমেয়াদী বিনিয়োগকরে এবং উচ্চআয়ের সভরেন/কর্পোরেট বন্ড ক্রয় করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট বিনিয়োগ সংক্রান্ত এসব কার্যক্রম পরিচালনা করে যা বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ডেপুটি গভর্নরের নেতৃত্বে গঠিত বাংলাদেশ ব্যাংকের বিনিয়োগ কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত বিনিয়োগ নীতি দ্বারা পরিচালিত হয়। বিনিয়োগ নীতির অন্তর্নিহিত নীতি হল সর্বনিম্ন ঝুঁকিতে সর্বোচ্চ আয় নিশ্চিত করা।
প্রচলিত ও অপ্রচলিত বিভিন্ন পদ্ধতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক তারল্য ব্যবস্থাপনা/ঋণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা আরোপ করে। ব্যাংক হার ও খোলা বাজার কার্যক্রম ছাড়া প্রায়শই ব্যবহৃত অন্য একটি পদ্ধতি হচ্ছে ন্যূনতম সঞ্চিতি হারের হ্রাসবৃদ্ধি। দেশীয় মুদ্রার আন্তর্জাতিক বিনিময় স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক বিনিময় ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ করে, দেশে যত বিদেশি মুদ্রা আসে তা সবই যাতে হিসাবে অন্তর্ভুক্ত থাকে এবং অনুমোদিত ডিলারদের নিকট জমা পড়ে তা নিশ্চিত করে। সরকারের নীতিগত অগ্রাধিকার বিবেচনায় রেখে বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার বরাদ্দ দেয়। স্বর্ণের সঞ্চিতি, নগদ বৈদেশিক মুদ্রা, এসডিআর এবং আইএমএফ সঞ্চিতি এসব মিলিয়ে দেশের মোট আন্তর্জাতিক সঞ্চিতি ও তার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপর অর্পিত। বাংলাদেশ ব্যাংক বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ, এশীয় ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক অর্থ ও মুদ্রা সংস্থায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করে।
আমানত এবং ইন্সুরেন্স ব্যাংকের আমানতকারীদের ক্ষতির ঝুঁকি কমানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ১৯৮৪ সালের আগস্টে সুরক্ষাকবচ হিসেবে ডিপোজিট ইন্সুরেন্স স্কিম চালু করে। ডিপোজিট ইন্সুরেন্স আইন, ২০০০ অনুযায়ী বাংলাদেশে ব্যবসারত সব ধরনের বাণিজ্যিক ব্যাংক, বিদেশি ব্যাংক এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলি এই স্কিমের সদস্য। এই স্কিমটি এমনভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছে যাতে আমনতকারীদের ক্ষতির ঝুঁকি কমানো যায়। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে বাজারের শৃঙ্খলা বৃদ্ধি করা, আর্থিক খাতের নৈতিক জগতে মরাল হ্যাজার্ড দূর করা এবং জনগণের জন্য সর্বনিম্ন খরচে নিরাপত্তা বেষ্টনী নিশ্চিত করা। এর প্রত্যক্ষ যুক্তি হচ্ছে ভোক্তার স্বার্থ সংরক্ষণ এবং পরোক্ষ যুক্তি হচ্ছে বিভিন্ন সিস্টেমেটিক মন্দা যেমন: ব্যাংক থেকে আমনতকারীদের অর্থ তুলে নেওয়া, পেমেন্ট সিস্টেমের ব্যর্থতা ইত্যাদি ঝুঁকি কমানো।
বাংলাদেশ ব্যাংক ঝুঁকিভিত্তিক ডিপোজিট ইন্সুরেন্স প্রিমিয়াম রেট নির্ধারণ করেছে যেটি সব তফসিলী ব্যাংকের জন্য জানুয়ারি-জুন, ২০০৭ হতে কার্যকর করা হয়েছে। প্রিমিয়াম রেট সংক্রান্ত নির্দেশনা অনুয়ায়ী প্রত্যেকটি ব্যাংকের প্রত্যেক আমানতকারীর এক লক্ষ টাকা আমানতের বিপরীতে প্রবলেম ব্যাংকগুলিকে তাদের আমানতের ০.০৯ শতাংশ হারে এবং প্রবলেম ব্যাংক বাদ দিয়ে অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলিকে ০.০৭ শতাংশ হারে প্রিমিয়াম প্রদান করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে ব্যাংকগুলিকে তাদের Display Board এ প্রদর্শনের মাধ্যমে ডিপোজিট ইন্সুরেন্স স্কিম সম্পর্কে জনগণকে জানানোর জন্য পরামর্শ দিয়েছে।
গবেষণা ও প্রকাশনা বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মিতভাবে বেশ কয়েকটি গবেষণা ও পরিসংখ্যান সংক্রান্ত প্রকাশনা বের করে। এদের মধ্যে প্রধানগুলি হলো বার্ষিক প্রতিবেদন, মানিটারি পলিসি রিভিউ, ফিন্যান্সসিয়াল সেক্টর রিভিউ, বাংলাদেশ ব্যাংক কোয়ার্টার্লি রিপোর্ট, মাসিক প্রতিবেদন যেমন: মেজর ইকনমিক ইন্ডিকেটরস, মাসিক ইকনমিক ট্রেন্ডস ইত্যাদি যেগুলি সাধারণ মানুষ ও নীতিনির্ধারকদের সহায়তা করে। গবেষণা, পলিসি অ্যানালাইসিস ইউনিট, আইটি, মনিটারি পলিসি ডিপার্টমেন্ট এবং পরিসংখ্যান বিভাগ প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিকেশন্স ডিপার্টমেন্টের সহায়তায় যৌথভাবে এগুলি প্রকাশ করা হয়। গভর্নর সচিবালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ উপবিভাগ সংবাদ সম্মেলন, মিডিয়া সংক্রান্ত দায়িত্ব/প্রেস রিলিজ ইস্যুকরণ ও লিয়াজোঁ রক্ষার কাজে সহায়তা করে।
বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইট (www.bb.org.bd এবং বাংলাদেশব্যাংক.বাংলা) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্ব ও নীতি সম্পর্কে তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ প্লাটফর্ম হিসেবে ভূমিকা পালন করছে। এই ওয়েবসাইটগুলিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন সার্কুলার, অর্থনৈতিক সূচক, প্রকাশনা, প্রতিবেদন, গভর্নর মহোদয়ের বক্তব্য, বাণী ও উপস্থাপনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
আর্থিক অন্তর্ভুুক্তিকরণ এবং প্রবৃদ্ধি সহায়ক কর্মসূচি উন্নত দেশগুলিতে মৌলিক আর্থিক সুবিধাসমূহ সমাজের সব শ্রেণীর মানুষের জন্য নিশ্চিত করা হয়। কর্মসংস্থান বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত হচ্ছে আর্থিক ব্যবস্থাপনায় সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করা যাতে ঋণ সুবিধা কার্যক্রম সহজতর হয়। বাংলাদেশে ব্যাংক ও ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানসমূহের অনেক শাখা থাকা সত্ত্বেও গ্রামীণ জনগণের একটি বড় অংশ ব্যাংকিং সুবিধার বাইরে রয়ে গেছে। তাই দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং জাতীয় অর্থনীতিতে সর্বস্তরের জনগণের সম্পৃক্ততার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে আমানত, ক্ষুদ্রঋণ ইত্যাদি সংক্রান্ত সুবিধাসমূহ সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার রাস্তা খুঁজে বের করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাংলাদেশ সরকার আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণের এই শূন্যতা দূরীকরণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক আইডিএ এবং এডিবি’র সহায়তায় ব্যাংকগুলির জন্য তাদের এসএমই ঋণের বিপরীতে পুনঃঅর্থায়ন স্কিম চালু করেছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে আরো শক্তিশালী, উদ্দীপ্ত ও সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকে এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগ নামে একটি স্বতন্ত্র বিভাগ খোলা হয়েছে। এ সম্পর্কে ব্যাংকগুলিকে মহিলা উদ্দ্যোক্তাদের জন্য কমপক্ষে ১৫% ঋণ বিতরণ করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
দেশের অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর হয়রানিমুক্তভাবে ঋণ প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য কৃষিঋণ বিতরণের ব্যবস্থা করে থাকে বাংলাদেশ ব্যাংক। বর্গাচাষীদের প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক প্রথমবারের মত ৫০০ কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন স্কিম চালু করেছে। আলোচ্য ঋণ কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য তিন স্তরবিশিষ্ট মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। কৃষি খাতে সরকার প্রদত্ত বিভিন্ন ভর্তুকি ব্যাংকের মাধ্যমে খুব সহজে প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে মাত্র ১০ টাকা জমা গ্রহণপূর্বক কৃষকের ব্যাংক হিসাব খোলার নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন একটি অন্যতম পূর্বশর্ত। সঙ্গত কারণে, ব্যাংকসমূহ যাতে সহজে ও সহজ শর্তে সৌরশক্তি, বায়োগ্যাস এবং বর্জ্য পরিশোধন প্ল্যান্ট (ইটিপি) খাতে ঋণ প্রদান করতে পারে সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব উৎস থেকে ২০০ কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ইটিপি খাতে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা গ্রহণ করার জন্যে ১৫টি ব্যাংকের সঙ্গে Participatory Agreement স্বাক্ষরিত হয়েছে। এছাড়া, পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি)-এর আওতায় পাওয়ার জেনারেশন এর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক নিজস্বভাবে প্রায় ২০ কিলোওয়াটের সোলার প্যানেল স্থাপন সম্পন্ন করেছে। তদুপরি বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে সমাজের প্রতি তাদের সামাজিক দায়-দায়িত্ব (সিএসআর) পালনে উৎসাহিত করছে; কেননা যে কোনো ব্যবসায়ী কর্মকাণ্ডের চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিক কল্যাণ সাধন করা।
বর্তমান সরকারের ‘রূপকল্প ২০২১’-এ পর্যায়ক্রমে দারিদ্র্যের হার ১৫ শতাংশের নীচে অবনমনের প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে। এ লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশ ব্যাংক স্বল্প মেয়াদি পদক্ষেপ হিসেবে কৃষি এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে অধিক মাত্রায় ঋণ বিতরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে যা আগামীতে দীর্ঘমেয়াদী কৌশল প্রণয়নে সহায়ক হবে।
১৬টি প্রধান উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য অতি সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। এগুলি হলো: ১. মুদ্রানীতির কার্যকারীতা বজায় রাখার জন্য বর্তমান মুদ্রানীতি কাঠামো পুনঃনিরীক্ষা করা; ২. আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ ও পরিদর্শন কাঠামো জোরদার করা; ৩. বাংলাদেশে আর্থিক বাজারের গভীরতা বৃদ্ধি করা; ৪. আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ এবং আর্থিক খাতে প্রবেশাধিকার সম্প্রসারণ করা; ৫. অধিক দক্ষ মুদ্রাব্যবস্থাপনা এবং Payments System উন্নত করা; ৬. মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধান কাঠামো জোরদার করা; ৭. ইসলামিক শরীয়াভিত্তিক ব্যাংকিং পরিচালনার জন্য পৃথক ও বিশদ গাইডলাইন প্রণয়ন ও তত্ত্বাবধান করা; ৮. সরকারের অভ্যন্তরীণ ঋণ ব্যবস্থাপনাকে আরো দক্ষ করে তোলা; ৯. অবাধে তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বণ্টন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য একটি পরিপূর্ণ আইসিটি কাঠামো গড়ে তোলা; ১০. ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর (সিআইবি) পরিপূর্ণ অটোমেশন; ১১. বাংলাদেশ ব্যাংকের বিবিধ কার্যাবলী সম্পাদনে আইনগত দুর্বলতা দূরীভূত করা; ১২. সুষ্ঠু প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের মাধ্যমে দক্ষ জনবল আকর্ষণ ও ধরে রাখা; ১৩. ঝুঁকি ভিত্তিক অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জোরদার করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির উন্নয়ন; ১৪. সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক কর্মকাণ্ডে (সিএসআর) উন্নয়ন ঘটানো এবং বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবেলা প্রস্তুতি গ্রহণ এবং এ সংক্রান্ত নীতি নির্দেশনা প্রদান করা; ১৫. কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি ও উদ্দেশ্য সকলের নিকট পৌঁছে দেয়ার জন্য দক্ষ ও কার্যকর পদক্ষপ গ্রহণ এবং এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা এবং ১৬. বাংলাদেশ ব্যাংকের কৌশলগত পরিকল্পনার স্বত্ত্বাধিকারী হিসেবে ব্যাংকে একটি ‘কৌশলগত পরিকল্পনা ও সমন্বয় ইউনিট’ সৃষ্টি করা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সেবা অধিকতর গ্রাহকবান্ধব করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে ক্যাশ ডিপার্টমেন্টকে আধুনিকায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বিশেষ করে ক্যাশ বিভাগের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় আধুনিক ইলেক্ট্রনিক নিরাপত্তা সরঞ্জাম যেমন সিসিটিভি স্থাপন, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারকরণ, হেল্পডেস্ক স্থাপন, শারীরিক প্রতিবন্ধী/অক্ষম, মহিলা ও বয়স্ক গ্রাহকদের সেবা প্রদানের জন্যে পৃথক কাউন্টার স্থাপন, ক্যাশ বিভাগের হালনাগাদ তথ্য সম্বলিত নির্দেশিকা ও সিটিজেন চার্টার সন্নিবেশ করে কেন্দ্রীয় Display Board স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক, মতিঝিল অফিসের জন্যে স্বয়ংক্রিয় নোট প্রসেসিং, সর্টিং, ব্যান্ডিং ও শ্রেডিং মেশিন পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষসহ সরবরাহের ব্যবস্থা চালু হয়েছে।
এভাবে যে সব মানুষ ব্যাংকিং সুবিধার বাইরে আছে তাদেরকে এ সুবিধার আওতায় এনে বাংলাদেশ ব্যাংক বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখতে কর্মশীল রয়েছে।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় স্বার্থে দেশের উৎপাদনশীল সম্পদগুলির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানকে উৎসাহিত করা। তাই বাংলাদেশের আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রণকারী হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হারের লেখচিত্র নিম্নে দেওয়া হলো:
উৎস বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
বাংলাদেশ ব্যাংক একটি আন্তর্জাতিক ব্যাংক (ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল সেটেলমেন্টস, ব্যাসেল) এবং ৮টি বিদেশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে করেসপন্ডেন্টেস সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। এই ৮টি বিদেশি কেন্দ্রীয় ব্যাংক হচ্ছে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক (নিউইয়র্ক), ব্যাংক অব কানাডা, ব্যাংক অব ইংল্যান্ড, ব্যাংক অব ফ্রান্স, ডয়েস বুন্ডেস ব্যাংক, ব্যাংক অব জাপান, সোয়েরেজেস রিকস ব্যাংক (স্টকহোম) এবং রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া। এছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আর্থিক কেন্দ্রের ১৪টি ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংক তার বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চিতি বিনিয়োগ করে রেখেছে।
বিদেশে মুদ্রা/নোট ছাপানোর ব্যাপক ব্যয় হ্রাসের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি সিকিউরিটি মুদ্রণ প্রকল্প হাতে নেয় এবং এটি বাস্তবায়িত হলে ১৯৯২ সালের ১৮ অক্টোবর থেকে বাংলাদেশের সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশন লিমিটেড-এর কাজ শুরু হয়। এটি এখন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কাজ করে এবং বাংলাদেশে চালু সব ধরনের মুদ্রা ও টাকার নোট ছাপানো ছাড়াও জুডিশিয়াল ও নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প, প্রাইজ বন্ড, রেভিনিউ স্ট্যাম্প, ডাকে পাঠানো চিঠির খাম, ডাকটিকেট, শুল্ক ও আবগারি বিভাগের জন্য ব্যান্ডরোল এবং বিভিন্ন ব্যাংকের জন্য চেক বই ছাপিয়ে থাকে। টাকশাল নামে পরিচিত এই কোম্পানিটির অবশ্য এখন পর্যন্ত মুদ্রা বানানোর নিজস্ব ছাঁচ নেই, ফলে ডিজাইন, লে-আউট ইত্যাদি ও ব্যবস্থাপনার সকল কাজ এখান থেকে হলেও ধাতব মুদ্রা ছাপানোর কাজটির জন্য বাংলাদেশকে এখনও বিদেশের অনেক কোম্পানির ওপর নির্ভরশীল থাকতে হয়।
আইন, রেগুলেশন্স এবং গাইডলাইন প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সময়ে সময়ে বেশকিছু আইন, রেগুলেশন্স এবং গাইডলাইন প্রণয়নের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের মুদ্রা ও আর্থিক বাজার নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। পরদিকে রেগুলেশন্স এবং গাইডলাইন বলতে প্রধানত বাংলাদেশ ব্যাংক রেগুলেশন্স এবং ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন্সকে বুঝানো হয়ে থাকে। [মোহাম্মদ আবদুল মজিদ]