অম্লবৃষ্টি

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১৭:৫২, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

অম্লবৃষ্টি (Acid Rain)  স্বাভাবিক অম্লতার (pH ৫.৬) চেয়ে বেশি অম্লতাযুক্ত (৪.৫ হতে ২.১) বৃষ্টিপাত। পরিশোধিত (Distilled) পানির pH ৭। আর বায়ুমন্ডলের কার্বন ডাই অক্সাইডের (CO2) কারণে স্বাভাবিক বৃষ্টিও কিছু অম্ল হয়ে থাকে (pH ৫.৬)। আবহমন্ডলে সালফার ডাইঅক্সাইড (SO2) ও নাইট্রোজেনের নানা অক্সাইড এর উপস্থিতি অম্লবৃষ্টির কারণ। জীবাশ্ম জ্বালানি, যেমন পর্যাপ্ত গন্ধকসম্পৃক্ত কয়লা পোড়ানোর ফলে সালফার ডাইঅক্সাইড উৎপন্ন হয় আর নাইট্রোজেন অক্সাইডের উৎস কল-কারখানা ও মোটরযান থেকে নির্গত ধোঁয়া। অম্লবৃষ্টি আজ বিশ্বের অন্যতম প্রধান পরিবেশ সমস্যা। বাংলাদেশে কলকারখানার সংখ্যা এবং অত্যধিক মোটরযান বৃদ্ধির ফলে এ দেশেও আকাশ থেকে অম্লবৃষ্টির আশঙ্কা বাড়ছে।

নদী ও হ্রদে অম্লসম্পৃক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে মাছের ডিম ও পোনা মারা যায়। শৃঙ্খলবিক্রিয়ায় বন্যপ্রাণী, মৎস্যভুক পাখি, মানুষ ও অন্যান্য জীবজন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অম্লবৃষ্টি উদ্ভিদের জন্য অপরিহার্য মৃত্তিকার ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম ও সোডিয়ামের মাত্রা হ্রাস করে। মাটিতে বর্জ্য পাতা পচানোর ব্যাকটেরিয়াকে বাধা দেয়, কেঁচো ও উপকারী জীবদের মেরে ফেলে এবং বীজের অঙ্কুরোদ্গমে বিঘ্ন ঘটায়। এতে ধাতুর বিষাক্ত যৌগ অবমুক্ত হয় এবং এগুলি গাছপালার শিকড়ে ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রবেশ করে। বিজ্ঞানীদের মতে অম্লবৃষ্টির দরুন মাটির উর্বরতা কমে যাওয়ায় বন ও ফসলের উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাচ্ছে।

ঢাকা, খুলনা ও চট্টগ্রাম শহরে এবং এগুলির আশপাশের শিল্প এলাকা বাংলাদেশে অম্লবৃষ্টির উৎস। প্রতিবেশী দেশ ভারতের বিদ্যুৎ উৎপাদন প্লান্ট এবং কলকাখানা থেকেও সীমান্ত পেরিয়ে প্রচুর পরিমাণ সালফিউরিক ও নাইট্রিক এসিড আসছে। ফলে জীবজন্তুর প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস ও ফসলের উৎপাদনশীলতায় ঘাটতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।

[এম.শামসুল ইসলাম ও কামরুন্নেসা বেগম]

আরও দেখুন পরিবেশ