শ্রীনগর উপজেলা
শ্রীনগর উপজেলা (মুন্সিগঞ্জ জেলা) আয়তন: ২০২.৯৮ কিমি। অবস্থান: ২৩°২৭´ থেকে ২৩°৩৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°১০´ থেকে ৯০°২২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে সিরাজদিখাঁন ও নবাবগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে লৌহজং ও শিবচর উপজেলা, পূর্বে সিরাজদিখাঁন ও লৌহজং উপজেলা, পশ্চিমে নবাবগঞ্জ ও দোহার উপজেলা।
জনসংখ্যা ২২৮৭৭১; পুরুষ ১১৪৮৭৮, মহিলা ১১৩৮৯৩। মুসলিম ২০৩৩৬৬, হিন্দু ২৫৩৩৮, বৌদ্ধ ৩৮, খ্রিস্টান ১৬ এবং অন্যান্য ১৩।
জলাশয় পদ্মা ও ইছামতি নদী এবং আড়িয়াল বিল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন শ্রীনগর থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
- | ১৪ | ১০২ | ১৪৮ | ১০৪৩১ | ২১৮৩৪০ | ১১২৭ | ৫৬.৬ | ৫২.৪ |
উপজেলা শহর | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||||
১.৯৯ | ২ | ১০৪৩১ | ৫২৪২ | ৫৬.৬ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
আটপাড়া ০৬ | ২৩০৮ | ৬২৭৬ | ৫৮৯৬ | ৫৯.২৫ | ||||
কুকুটিয়া ৫৪ | ৪০৮৮ | ৭৫৯৩ | ৭৯২০ | ৫২.৬৪ | ||||
কোলাপাড়া ৪৭ | ২৪৬১ | ৬৮৭৭ | ৭০৫৩ | ৬৩.১৬ | ||||
তাঁতার ৯৪ | ২৫৬৩ | ৭২৬৯ | ৭২২১ | ৫৯.৩৩ | ||||
পাটাভোগ ৬১ | ২১০২ | ৬৫৪১ | ৬৪৩১ | ৫৭.১৪ | ||||
বাঘড়া ১৩ | ৫৮৯৬ | ১০২৬৫ | ১০০৮৮ | ৪৮.৩৭ | ||||
বাঢ়ৈখালী ২০ | ৬৪১০ | ৯৭৩২ | ৯৫০৯ | ৫২.৮১ | ||||
বীরতারা ৩৩ | ২১৬৮ | ৫৪০৫ | ৫৩৫৭ | ৪৬.০৮ | ||||
ভাগ্যকুল ২৭ | ২৫১১ | ১০৬১৪ | ১১৭৬৯ | ৫৪.৯২ | ||||
রাঢ়িখাল ৬৭ | ৩৩৮৪ | ৮৩১৫ | ৮৪৯৯ | ৪৯.২৭ | ||||
ষোলঘর ৮১ | ৩৬৮২ | ৮৬০৯ | ৮৪৩৬ | ৪৭.১৪ | ||||
শ্যামসিদ্ধি ৮৮ | ৫০৪৯ | ৭৩৬৬ | ৭৩৪৩ | ৪৬.৭৯ | ||||
শ্রীনগর ৭৪ | ২৪১৯ | ১০৪১৪ | ৯২৮৮ | ৫১.০৩ | ||||
হাসাড়া ৪০ | ৩৭০৯ | ৯৩০২ | ৯০৮৩ | ৫১.৭১ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ শ্যামসিদ্ধির মঠ ও মন্দির, ষোলঘর মঠ, ভাগ্যকুল রাজবাড়ি। বিক্রমপুরে প্রাপ্ত ভাস্কর্য, সীল, তাম্রলিপি, খোদাই করা গ্রানাইট পাথরের স্তম্ভ ও শীলালিপি (জাতীয় যাদুঘরে সংরক্ষিত)।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শ্রীনগরের শিবরামপুর খালে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখলড়াইয়ে পাকবাহিনীর ৩ টি গানবোট ডুবে যায় এবং বেশসংখ্যক পাকসেনা নিহত হয়।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৩৬৯, মন্দির ৫৫, গির্জা ১।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫২.৬%; পুরুষ ৫৪.১%, মহিলা ৫২.২%। কলেজ ৪, ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১০৬, মাদ্রাসা ৩১। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: হাসাড়া কে কে উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৭৯), ভাগ্যকুল হরেন্দ্রলাল উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০০), বেলতলী জি জে উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০১), কুকুটিয়া কে কে ইনস্টিটিউশন (১৯০৪), ষোলঘর এ কে এস কে বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৫), বাঘড়া স্বরূপচন্দ্র পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২০), রাঢ়িখাল জে জি বসু ইনস্টিটিউশন ও কলেজ (১৯২১), রুশদী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৪)।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১, সিনেমা হল ৩, স্টেডিয়াম ১, ক্লাব ৩০৩।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৩৬.১২%, অকৃষি শ্রমিক ২.৪৭%, শিল্প ১.৯৯%, ব্যবসা ২৩.৬০%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৯৭%, চাকরি ১২.৮৩%, নির্মাণ ৩.০১%, ধর্মীয় সেবা ০.২১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৬.৯৬% এবং অন্যান্য ৯.৮৪%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৪২.২৫%, ভূমিহীন ৫৭.৭৫%। শহরে ২৪.২৫% এবং গ্রামে ৪৩.১০% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, আলু, গম, সরিষা, মিষ্টি কুমড়া।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, পেয়ারা, বেল।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার হাঁস-মুরগি ১৩৫, দুগ্ধ খামার ১৯২, হ্যাচারি ১।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৯৮ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১১ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৫৫ কিমি; নৌপথ ৯ নটিক্যাল মাইল।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন গরুর গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা দুগ্ধ শিল্প, ধানকল, করাতকল, হিমাগার, ইটভাটা, ওয়েল্ডিং কারখানা।
কুটিরশিল্প কাঠের কাজ, স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২২, মেলা ৩। শ্রীনগর হাট, ভাগ্যকুল হাট, কুমারগাঁও হাট, কেদারপুর হাট, বাঢ়ৈখালী বাজার, হাসাড়া বাজার ও ষোলঘর বাজার উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, আলু, মিষ্টি কুমড়া।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৬০.০৩% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৪.৮৩%, ট্যাপ ০.৩৫%, পুকুর ১.৫৬% এবং অন্যান্য ৩.২৬%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৫৬.০৯% (গ্রামে ৫৪.৬৯% এবং শহরে ৮৫.৭৪%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৯.৯৭% (গ্রামে ৪১.২৪% এবং শহরে ১২.৯৪%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৩.৯৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩, প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি ৩, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১০, পশু চিকিৎসা কেন্দ্র ১।
এনজিও কারিতাস, ব্র্যাক, আশা। [মো. মোশাররফ হোসেন সরকার]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; শ্রীনগর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।