গুপ্ত শাসন

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২০:২০, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)
(পরিবর্তন) ← পূর্বের সংস্করণ | সর্বশেষ সংস্করণ (পরিবর্তন) | পরবর্তী সংস্করণ → (পরিবর্তন)

গুপ্ত শাসন  প্রাচীন বাংলার ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। খ্রিস্টীয় তিন শতকের শেষ এবং চার শতকের প্রথমদিকে সম্ভবত প্রথম চন্দ্রগুপ্ত অথবা সমুদ্রগুপ্তের মাধ্যমে বাংলায় গুপ্ত শাসন সম্প্রসারিত হয়। শিলালিপি, প্রশস্তিলিপি, তাম্রশাসন, মুদ্রা, সাহিত্যিক উপকরণ এবং বিদেশিদের বর্ণনা থেকে বাংলায় গুপ্ত শাসন সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়।

সাম্রাজ্যবাদী গুপ্তদের আদি পরিচয় সম্পর্কে পন্ডিত-গবেষকদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। শ্রীগুপ্ত হচ্ছেন গুপ্ত বংশের আদি পুরুষ। এল্যানের মতে, পাটলীপুত্র (মগধের অভ্যন্তরে) নগরের অদূরে শ্রীগুপ্তের রাজত্ব ছিল। অন্যদিকে ধীরেন্দ্র চন্দ্র গাঙ্গুলী চৈনিক পরিব্রাজক -ৎসিঙ্-এর বর্ণনার ভিত্তিতে গুপ্তদের আদি বাসস্থান মগধে নয় বাংলার মুর্শিদাবাদে ছিল বলে মনে করেন।

ই-ৎসিঙ্ ৬৭২ খ্রিস্টাব্দে ভারত ভ্রমণে আসেন। এর পাঁচশত বছর পূর্বে অর্থাৎ খ্রিস্টীয় দু’শতকে চীনা পরিভ্রমণকারী হুই লন নালন্দা পরিদর্শন করেন। সে সময় একজন ‘মহারাজা’ শ্রীগুপ্ত ‘মি-লি-কিয়া-সি-কিয়া-পো-নো’ (মৃগশিখাবন অথবা মৃগস্থাপন-এর চৈনিক রূপ) নামে একটি পবিত্র স্থানের পাশে চীনা পুরোহিতদের জন্য একটি মন্দির (‘চীনা মন্দির’ নামে পরিচিত ছিল) নির্মাণ করে দেন। এ মন্দিরের ব্যয় সংকুলানের জন্য ২৪টি গ্রামও তিনি দান করেন। মন্দিরটি নালন্দা হতে চল্লিশ যোজন (২৪০ মাইলের সমান) পূর্বদিকে অবস্থিত ছিল। গঙ্গার গতিপথ ধরে নালন্দা হতে চল্লিশ যোজন দূরত্বে মুর্শিদাবাদের অবস্থান। এভাবে ই-ৎসিঙ্-এর বিবরণের দূরত্ব ও দিক বিচার করে গাঙ্গুলী গুপ্তদের আদি বাসস্থান বাংলার মুর্শিদাবাদে ছিল বলে মন্তব্য করেন। হেমচন্দ্র রায় চৌধুরী বলেন, উত্তর বঙ্গ বা বরেন্দ্র ছিল গুপ্ত রাজগণের মূল বাসস্থান। কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত ১০১৫ খ্রিস্টাব্দের একটি বৌদ্ধ পান্ডুলিপির একটি চিত্রের নিচে প্রদত্ত বর্ণনায় ‘বরেন্দ্রীর মৃগস্থাপন স্তূপ’ লেখা থেকেও মনে হয় চীনা মন্দিরটি বরেন্দ্রের মৃগস্থাপন স্তূপের পাশেই অর্থাৎ বরেন্দ্র বা এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত ছিল। সুতরাং একথা বলা যেতে পারে যে, গুপ্তগণের আদি নিবাস ছিল খুব সম্ভবত পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ অথবা উত্তরবঙ্গের বরেন্দ্রীতে; যদিও ঐতিহাসিকগণ এ বিষয়ে এখনও মতৈক্যে পৌঁছুতে পারেননি। সত্য বলে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করা যায় এমন কোনো সাক্ষ্য নেই বলে রায়চৌধুরী বা গাঙ্গুলীর তত্ত্ব ঐতিহাসিক মহলে সম্পূর্ণভাবে গৃহীত হয় নি।

পূর্বদিকে গুপ্তদের রাজনৈতিক সম্প্রসারণের সময় বাংলায় সম্ভবত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্বাধীন শক্তির অস্তিত্ত্ব ছিল। পশ্চিমবঙ্গের বাকুড়া শহর থেকে ১৯.৫ কি.মি উত্তরপশ্চিমে অবস্থিত  সুসুনিয়ার পর্বত গাত্রে খোদিত লিপিতে পুষ্করণাধিপ সিংহবর্মা ও তাঁর পুত্র চন্দ্রবর্মার উল্লেখ আছে। পুষ্করণাধিপ চন্দ্রবর্মাই খুব সম্ভবত এলাহাবাদ প্রশস্তিলিপিতে উল্লিখিত সমুদ্রগুপ্ত কর্তৃক পরাজিত চন্দ্রবর্মা। যাহোক চার শতকের, মাঝামাঝিতে সমুদ্রগুপ্ত সমতট (মেঘনার পূর্বদিকে কুমিল্লা-নোয়াখালী অঞ্চল) ব্যতীত প্রায় সমগ্র বাংলা গুপ্ত সাম্রাজ্যভুক্ত করেন।

দিল্লির মেহরাওয়ালী এলাকায় কুতুব মিনার সংলগ্ন কুওয়াতুল ইসলাম মসজিদ প্রাঙ্গণে অবস্থিত লৌহ স্তম্ভগাত্রে খোদিত লিপির বক্তব্য বাংলায় গুপ্তদের রাজনৈতিক ক্ষমতা সম্প্রসারণের ইতিহাসের ওপর কিছুটা আলোকপাত করে। এ লিপিতে চন্দ্র নামধারী একজন রাজার বিজয় কাহিনী বর্ণিত আছে। তাঁর অন্যান্য বিজয়ের সাথে এটিও উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাজা ‘চন্দ্র’ বঙ্গে শত্রু নিধনে গৌরব অর্জন করেছিলেন এবং বঙ্গীয়েরা তাঁর বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধের ব্যবস্থা করেছিল। এ লিপিতে উল্লিখিত রাজা ‘চন্দ্র’ খুব সম্ভবত গুপ্ত বংশীয় রাজা প্রথম চন্দ্রগুপ্ত অথবা দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত। এক্ষেত্রে প্রথম শনাক্তকরণ সঠিক হলে সমুদ্রগুপ্তের পিতা প্রথম চন্দ্রগুপ্তই বঙ্গকে গুপ্ত সাম্রাজ্যভুক্ত করেন। যদি দ্বিতীয় শনাক্তরণ সঠিক হয় তাহলে মনে করতে হবে যে, সমুদ্রগুপ্তের বঙ্গ জয়ের পরও তাঁর পুত্র দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তকে বাংলা অঞ্চল পুনরায় জয় করতে হয়েছিল। তবে মেহরাওয়ালী স্তম্ভলিপি থেকে অন্তত এ সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় যে, গুপ্ত যুগের প্রাক্কালে বা প্রাথমিক পর্যায়ে বঙ্গ স্বাধীন রাজ্য ছিল এবং সেখানকার রাজন্যবর্গ প্রয়োজনে সম্মিলিত প্রতিরোধ ব্যবস্থাও গড়ে তুলতো।

সমুদ্রগুপ্তের এলাহাবাদ প্রশস্তিলিপি সূত্রে জানা যায় যে, তিনি সমতট ব্যতীত বাংলার অন্য সব জনপদ তাঁর সাম্রাজ্যভুক্ত করেছিলেন। সমুদ্রগুপ্তের বিস্তীর্ণ সাম্রাজ্যের পূর্বতন প্রত্যন্ত রাজ্য ছিল নেপাল, কর্তৃপুর (শনাক্তকরণ বিতর্কিত), কামরূপ, ডবাক (আসাম অথবা ঢাকা), এবং সমতট (দক্ষিণ-পূর্ব বাংলা)। সমতট সম্ভবত গুপ্তদের করদ রাজ্য ছিল। তবে কালক্রমে এ অঞ্চলও গুপ্ত সাম্রাজ্যভুক্ত হয়ে পড়ে। কারণ ছয় শতকের প্রথম দিকে (৫০৭-০৮ খ্রি.) এ অঞ্চলে বৈন্যগুপ্ত নামে গুপ্ত বংশীয় রাজা ছিলেন। তিনি এক দানপত্র সম্পাদন করে তাঁরই একজন অনুগত ব্যক্তিকে ভূমি দান করেন বলে গুনাইঘর তাম্রশাসনে উল্লিখিত আছে। যদিও নিজস্ব দলিলপত্রে বৈন্যগুপ্ত ‘মহারাজ’ উপাধি ধারণ করেন; কিন্তু স্বর্ণমুদ্রায় তাঁকে ‘দ্বাদশাদিত্য’ এবং নালন্দায় প্রাপ্ত একটি সীলমোহরে ‘মহারাজাধিরাজ’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

সমগ্র উত্তর বাংলা যে গুপ্ত সাম্রাজ্যের সরাসরি অধীন ছিল তা এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তাম্রশাসন সমূহের ভিত্তিতে প্রমাণিত। প্রথম কুমারগুপ্তের সময় (৪৩২-৪৪৮ খ্রি.) থেকে উত্তর বাংলা গুপ্ত সাম্রাজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক বিভাগ হিসেবে গড়ে ওঠে। এটির নাম ছিল তখন ‘পুন্ড্রবর্ধন ভুক্তি’। বুধগুপ্তের দামোদরপুর তাম্রশাসন (৪৭৮ খ্রি.) থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, পাঁচ শতকে উত্তর বাংলা ছিল পুরোপুরিভাবে গুপ্ত সাম্রাজ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। অত্র অঞ্চলে গুপ্ত প্রাদেশিক শাসনের কেন্দ্রস্থল ছিল পুন্ড্রনগর (মহাস্থান)। এখানে গুপ্তদের  সুনিয়ন্ত্রিত ও সুবিন্যস্ত শাসন ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল।

গুপ্ত শাসনামলে বাংলায় কতগুলি প্রশাসনিক স্তর ছিল যেমন ‘ভুক্তি’, ‘বিষয়’, ‘মন্ডল’, ‘বীথি’ ও ‘গ্রাম’। এ সকল প্রশাসনিক স্তরের প্রত্যেকটির প্রধান কেন্দ্রে একটি করে ‘অধিকরণ’ (অধিষ্ঠান) ছিল। ‘ভুক্তি’ ছিল সর্ববৃহৎ প্রশাসনিক ইউনিট। সমসাময়িক লিপিমালায় ‘পুন্ড্রবর্ধন’ (সমগ্র উত্তরবঙ্গ) এবং ‘বর্ধমান’ (প্রাচীন রাঢ়ের দক্ষিণাংশ) নামে দুটি ভুক্তি ছিল বলে জানা যায়। রাজার একজন ডেপুটি ভুক্তি শাসন করতেন। ‘ভুক্তি’ প্রশাসককে ‘উপরিক’ বা ‘উপরিক মহারাজ’ বলা হতো। ‘বিষয়’ ছিল দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রশাসনিক ইউনিট। ‘বিষয়’ প্রশাসকের উপাধি ছিল ‘কুমারমাত্য’ এবং ‘আযুক্তক’। লিপিমালা থেকে ‘কোটিবর্ষ বিষয়’, ‘পঞ্চনগরী বিষয়’, ‘বরাকমন্ডল বিষয়’ ইত্যাদি নাম পাওয়া যায়। বিষয়াধিকরণে ‘পুস্তপাল’ (দলিল রক্ষক) নামে এক শ্রেণির কর্মচারী ছিলেন।

‘কোটিবর্ষ বিষয়’-এর বিষয়পতির সহায়ক রূপে এক উপদেষ্টামন্ডলীর কথা জানা যায় ২, ৪ ও ৫নং দামোদরপুর তাম্রশাসন থেকে। সেকালের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শ্রেণির প্রতিনিধিত্বকারী চারজন সদস্য ও স্বয়ং বিষয়পতির সমন্বয়ে এ উপদেষ্টামন্ডলী গঠিত হতো। এ উপদেষ্টা সভার সদস্যগণ ছিলেন ‘নগর শ্রেষ্ঠী’ (শহরের বিভিন্ন গিল্ড বা কর্পোরেশনের বা ধনী ব্যাংকারদের সংস্থার সভাপতি), ‘প্রথম সার্থবাহ’ (প্রধান ব্যবসায়ী), ‘প্রথম কুলিক’ (প্রধান কারিগর), এবং ‘প্রথম কায়স্থ’ (প্রধান করণিক বা আধুনিক কালের অফিস সচিব ধরনের রাষ্ট্রীয় কর্মচারী অথবা কায়স্থ শ্রেণির প্রতিনিধি)। এভাবে প্রশাসনে স্থানীয় জনগণের সংযোগ বা অংশগ্রহণ নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করে যে, স্থানীয় প্রশাসনে গণতান্ত্রিক রীতি-নীতির চর্চা হতো। বাংলায় স্থানীয় শাসনের সর্বপ্রাচীন নজির হিসেবেও গুপ্ত শাসনের কথা বলা যেতে পারে।

‘বিষয়’-এর পরবর্তী প্রশাসনিক ইউনিট ‘বীথি’। বর্ধমানভুক্তির অন্তর্গত ‘বক্কটক্ক বীথি’ এবং পুন্ড্রবর্ধনভুক্তির অন্তর্গত ‘দক্ষিণাংশক বীথি’ তাম্রশাসনে প্রাপ্ত দুটি বীথির নাম। তাম্রশাসনে বীথ্যধিকরণের উল্লেখ থাকলেও এর গঠন প্রক্রিয়া সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায় না। সম্ভবত ‘মহত্তর’, ‘অগ্রহরীণ’, ‘খড়গী’, ‘বহনায়ক’ প্রমুখ মিলে বীথির উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হতো। সবচাইতে ছোট প্রশাসনিক ইউনিট হিসেবে ছিল ‘গ্রাম’। ‘গ্রামিক’, ‘ব্রাহ্মণ’, ‘মহত্তর’, ‘কুটুম্বী’ প্রমুখ গ্রাম প্রশাসনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।

গুপ্ত যুগের ভূমি ব্যবস্থাও ছিল সুনিয়ন্ত্রিত। ‘খিল’ (পতিত জমি), ‘ক্ষেত্রে’ (চাষযোগ্য), ‘বাস্ত্ত’ (বসবাসের উপযোগী) ভূমির উল্লেখ পাওয়া যায়। গুপ্ত যুগে ভূমির যথার্থ পরিমাপের ব্যবস্থা ছিল। ‘কূল্যবাপ’ ও ‘দ্রোণবাপ’ ছিল পরিমাপের একক। এ ছাড়াও ‘পাটক’, ‘ভূ-পাটক’, ‘আঢক’, ‘কাকিনি’, ‘খাদিক’, ‘হাল’, ‘দ্রোণ’ ইত্যাদিও পরিমাপের একক হিসেবে ব্যবহূত হতো।

গুপ্ত সাম্রাজ্যের অধীনে বাংলা ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশ। ভারতের ইতিহাসে গুপ্ত যুগ সামগ্রিকভাবে ‘স্বর্ণযুগ’ হিসেবে খ্যাত। এ সময়ে প্রজাহিতৈষী কেন্দ্রীয় শাসনের আওতায় যে শান্তি, সম্পদ ও সমৃদ্ধির প্রকাশ ঘটে সর্বভারতীয় সাম্রাজ্যের অংশ হিসেবে বাংলা তার সুফল ভোগ করে। বাংলা সর্বভারতীয় বাণিজ্যেরও অংশীদার হয়। গুপ্ত যুগে বাংলায় স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রার সর্বব্যাপী প্রচলন হয়। স্বর্ণ মুদ্রার বহুল প্রচলন বাংলার আর্থিক সমৃদ্ধির পরিচায়ক। সুপারি, রেশম, তুলা, নারিকেল, লবণ, চিনি ইত্যাদি বাংলা থেকে রপ্তানি হতো। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও চীনের সঙ্গে এসময় বাংলার ছিল বাণিজ্যিক সংযোগ। বাংলার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রচুর পরিমাণে গুপ্ত-অনুকরণ মুদ্রা পাওয়া যায়, যা থেকে বোঝা যায় বাংলা মুদ্রা অর্থনীতির সুফল ভোগ করেছে।

শৈল্পিক দিক থেকেও গুপ্ত যুগে বাংলার অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়। গুপ্ত যুগে উত্তর ভারতে ভাস্কর্য শিল্পের যে বিবর্তন দেখা যায় বাংলার ভাস্কর্যেও তার সুস্পষ্ট ছাপ পড়ে। উত্তর বাংলায় প্রাপ্ত অল্প কিছু নিদর্শনে এ বিবর্তনের প্রমাণ বিদ্যমান। পরবর্তীকালে বাংলার পাল ভাস্কর্যে গুপ্তরীতির প্রভাব সুস্পষ্টভাবে দেখা যায়। ধর্মীয় ক্ষেত্রে সহনশীলতার জন্যও গুপ্ত যুগ বিখ্যাত। গুপ্ত সম্রাটগণ ব্রাহ্মণ্য ধর্মের অনুসারী হলেও সে সময়ে বাংলায় বৌদ্ধ, জৈন এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা ধর্মীয় সহনশীলতা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের সঙ্গে বসবাস করেছে।

গুপ্ত যুগে বাংলা দ্বিতীয়বারের মতো সর্বভারতীয় ইতিহাসের অংশীদার হয়। মৌর্য যুগে বাংলা সম্ভবত প্রথমবারের মতো সর্বভারতীয় ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল।  [আকসাদুল আলম]

গ্রন্থপঞ্জি  RC Majumdar, History of Ancient Bengal, Calcutta, 1971; এ.এম চৌধুরী ও অন্যান্য, বাংলাদেশের ইতিহাস, ঢাকা, ৭ম সংস্করণ, ১৯৯৮।