কাটরা মসজিদ, মুর্শিদাবাদ
কাটরা মসজিদ, মুর্শিদাবাদ মুর্শিদাবাদ রেল স্টেশনের ৩ মিটার পূর্ব দিকে বাজারের মধ্যে অবস্থিত। ৫০.৬০ মিটার আয়তনের একটি বর্গাকার প্রাঙ্গণের মধ্যে একটি ভিতের উপরে এটি দন্ডায়মান। আয়তাকৃতির এক আইলে পাঁচ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটির পরিমাপ ৩৯.৬২ মিটার × ৭.৩২ মিটার। এর চার কোণে রয়েছে চারটি বুরুজ এবং বুরুজগুলি সরু হয়ে উপরে উঠে গেছে; প্যাঁচানো সিঁড়িপথ বুরুজের উপর পর্যন্ত প্রলম্বিত। বর্তমানে কেবল উত্তর-পশ্চিমে এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে দুটি পার্শ্ব বুরুজ বিদ্যমান আছে। মসজিদটি চতুর্দিক দ্বিতল কক্ষ সারি দ্বারা পরিবেষ্টিত। স্থানীয়ভাবে কাটরা বলে অভিহিত কক্ষগুলি মাদ্রাসা হিসেবে ব্যবহূত হতো।
কাটরা মসজিদটি ঢাকার করতলব খান মসজিদ এর (১৭০০-১৭০৪ খ্রি.) অনুকরণে নির্মিত বলা যায়। পূর্বদিকের সম্মুখভাগে রয়েছে বহুভাঁজযুক্ত খিলানের মধ্যেস্থিত পাঁচটি প্রবেশ খিলান। কেন্দ্রীয় প্রবেশপথটির উভয় পার্শ্বে রয়েছে সংলগ্নস্তম্ভ। অভ্যন্তরে প্রতিটি ‘বে’-তে পশ্চিম দেয়ালে রয়েছে তিনটি করে মিহরাব, অর্থাৎ সর্বমোট ১৫ টি মিহরাব রয়েছে মসজিদটির পশ্চিম দেয়ালে। অভ্যন্তরে হল ঘর দেয়াল থেকে উত্থিত চারটি আড়াআড়ি খিলানে মোট পাঁচ স্তম্ভপথে বিভক্ত। সমান্তরাল প্যারাপেট সুরক্ষা ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যযুক্ত এবং গম্বুজে রয়েছে উচুঁ ফিনিয়াল।
মসজিদটির নির্মাতা মুর্শিদকুলী খান সমাহিত রয়েছেন বহুখিলানযুক্ত মসজিদ প্রাঙ্গনে প্রবেশ তোরনের নিচে একটি সমাধিতে।
মসজিদের কেন্দ্রীয় মিহরাবে এবং পূর্ব ফাসাদে কেন্দ্রীয় প্রবেশপথে দুটি ফারসি শিলালিপি পরিলক্ষিত হয়। দ্বিতীয় শিলালিপিতে নির্মাণকাল উৎকীর্ণ আছে ১১৩৭ হিজরি (১৭২৪-২৫ খ্রি.)। মুর্শিদকুলী খান ঢাকা থেকে ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে রাজধানী স্থানান্তরিত করেন। তাঁর নিজের নামানুসারে নতুন রাজধানীর নামকরণ করেন মুর্শিদাবাদ। কাটরা মসজিদটি নতুন রাজধানীর জামে মসজিদ হিসেবে নির্মিত হয়। বর্তমানে মসজিদটি দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থায় ধ্বংসের পথে। [আয়শা বেগম]