চৌধুরী, আনিস

NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ২০:৪৭, ৪ মে ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ (Added Ennglish article link)

চৌধুরী, আনিস (১৯২৯-১৯৯০)  কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার। তাঁর পিতৃদত্ত নাম আনিসুজ্জামান কামরুদ্দীন। ছাত্রাবস্থায় তিনি আনিসুজ্জামান চৌধুরী নাম ধারণ করেন; ‘আনিস চৌধুরী’ তাঁর সাহিত্যিক নাম। কলকাতার তালতলা লেনে নানার বাড়িতে তাঁর জন্ম। তাঁদের আদি নিবাস কুমিল্লা জেলায়। পিতা নুরুল হুদা চৌধুরী ছিলেন কুমিল্লার ইনসাফ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক।

আনিস চৌধুরীর লেখাপড়া শুরু হয় মাইজভান্ডার শরিফে। তিনি ১৯৪৪ সালে প্রবেশিকা, ১৯৪৬ সালে কলকাতার  প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট এবং ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি পাস করেন। পরের বছর তিনি সরকারি চাকরিতে যোগ দেন এবং পরে করাচির রেডিও পাকিস্তান-এ টেকনিক্যাল এসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করেন। স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের উপ-মহাপরিচালক ও সরকারের বহিঃপ্রচার বিভাগের মহাপরিচালক নিযুক্ত হন। ১৯৭৯ সালে তিনি ডেপুটেশনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন এবং কিছুদিন ইসলামাবাদে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম প্রেস কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি একটি জীবনবীমা কোম্পানির উপদেষ্টা ছিলেন। আনিস চৌধুরী ছাত্রাবস্থায় (১৯৪৬-৪৭)  কলকাতা থেকে প্রকাশিত ইত্তেহাদ পত্রিকার সহসম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

আনিস চৌধুরী


তখন থেকেই তিনি  ছোটগল্পউপন্যাস, নাটক ইত্যাদি মাধ্যমে নিয়মিত লেখালেখি করতেন। তিনি মঞ্চনাটকের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। ১৯৬৭ থেকে ১৯৭০ সালের মধ্যে তিনি টেলিভিশন ও রেডিওর জন্য অনেকগুলি নাটক রচনা করেন। তাঁর বিখ্যাত দুটি নাটক হচ্ছে মানচিত্র (১৯৬৩) ও অ্যালবাম (১৯৬৫)। এছাড়া সরোবর (১৯৬৭), সৌরভ (১৯৬৮),শখের পুতুল (১৯৬৮), মধুগড় (১৯৭৪), প্রত্যাশা, ছায়াহরিণ, ছাড়পত্র, জাহাঙ্গীরের আত্মজীবনী (অনুবাদ) ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। মধ্যবিত্ত শ্রেণির দ্বন্দ্ব-সংঘাত, দুঃখ-দারিদ্র্য ও সংগ্রামী চেতনা তাঁর নাটক ও উপন্যাসে চমৎকারভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। তিনি নাটকের জন্য ১৯৬৮ সালে বাংলা একাডেমী পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৯০ সালের ২ নভেম্বর ঢাকায় তাঁর মৃত্যু হয়।  [নাজমুল আহসান]