আমতলী উপজেলা
আমতলী উপজেলা (বরগুনা জেলা) আয়তন: ৭২০.৭৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২১°৫১´ থেকে ২২°১৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০০´ থেকে ৯০°২৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে পটুয়াখালী সদর, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে গলাচিপা উপজেলা ও কলাপাড়া উপজেলা, পশ্চিমে বরগুনা সদর উপজেলা ও মির্জাগঞ্জ উপজেলা।
জনসংখ্যা ২৫৯৭৫৭; পুরুষ ১৩২০১৭, মহিলা ১২৭৭৪০। মুসলিম ২৪২৫১৭, হিন্দু ১৬০৫৮, খ্রিস্টান ১১৩৪, বৌদ্ধ ১৮ এবং অন্যান্য ৩০। উপজেলার বড়বগী ও পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নে রাখাইন জনগোষ্ঠীর বসবাস আছে।
জলাশয় বুড়িশ্বর ও আন্ধারমানিক নদী এবং রাবনাবাদ চ্যানেল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন ১৮৫৯ সালে স্থাপিত গুলিশাখালী থানা ১৯০৪ সালে আমতলীতে স্থানান্তরিত হয়। বর্তমানে এটি উপজেলা।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ (আমতলী) | ১০ | ৬৬ | ১৮১ | ১৮১৭৯ | ২৪১৫৭৮ | ৩৬০ | ৬৪.৩% | ৪৪.৫ |
পৌরসভা | |||||
আয়তন(বর্গ কিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) |
৮.৭৫ | ৯ | ১৫ | ১৩৩০৫ | ১৫২১ | ৬৯.৯ |
উপজেলা শহর | ||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) |
১২.২৫ | ১ | ৪৮৭৪ | ৪০০ | ৪৮.২ |
ইউনিয়ন | ||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |
পুরুষ | মহিলা | |||
আঠারগাশিয়া ২৩ | ৮৮৭৩ | ১১৩৫৭ | ১১২৭১ | ৪২.৬৭ |
অর্পণগাশিয়া ১৫ | ৬৬৩৩ | ৭৪৮৩ | ৭০৫০ | ৪২.২১ |
আমতলি ১৩ | ১২৫৩১ | ১২১২২ | ১১৭২৮ | ৮৪.২৬ |
কড়াইবাড়িয়া ৭৯ | ১৩৪২৯ | ১০৪৫২ | ১০০২০ | ৫২.২৪ |
কুকুয়া ৮৭ | ৪৪৪৪ | ১১৫৭১ | ১১৭৮৮ | ৩৯.৭৩ |
গুলিসাখালি ৬৩ | ১০৯৩৫ | ১৪০৬৫ | ১৪১১৮ | ৪৫৩৪১ |
চৌরা ৪৭ | ৮০৬২ | ১০১৭৮ | ৯৯৬৮ | ৪৭.৮৩ |
পঞ্চকোরালিয়া ৯৪ | ১৩০৪৪ | ১২২৬৯ | ১১৯৯৫ | ২৯.১৫ |
বড়বাগী ৩৯ | ৩৩৪২৩ | ২০০৩৪ | ১৮৪৩৮ | ৪৮.৯৫ |
হলদিয়া ৭১ | ১৭৪৪৪ | ১৫৪৩৯ | ১৫১০৬ | ৪৬.৬৮ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ তেপুরার গাজী কালুর মাযার, চাওড়া পাতাকাটার মাটির দুর্গ।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন স্মৃতিফলক ৩।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়হার ৪৫.৯%; পুরুষ ৪৯.১%, মহিলা ৪২.৭%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: আমতলী ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৯), আমতলী একে পাইলট হাইস্কুল (১৯৩৪)।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী সাপ্তাহিক পায়রাপাড়, শোক নয় শক্তি।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ২৬, লাইব্রেরি ১, নাট্যদল ২, সাহিত্য সংগঠন ২, মহিলা সংগঠন ২৬, সিনেমা হল ৩।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭০.৪৬%, অকৃষি শ্রমিক ৪.০১%, ব্যবসা ৯.৪২%, চাকরি ৪.২৭%, নির্মাণ ১.০২%, ধর্মীয় সেবা ০.১৮%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১৬%, পরিবহন ও যোগাযোগ ১.৭৪%, শিল্প ০.২৬, অন্যান্য ৮.৪৮%।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, চিনাবাদাম, খেসারি, মুগ, ছোলা, সরিষা, আলু, মরিচ, কুমড়া।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিসি, তিল।
প্রধান ফল-ফলাদিব পেয়ারা, আমড়া, তরমুজ।
যোগাযোগ বিশেষত্ব নৌপথ ৪১০ নটিক্যাল মাইল।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি।
শিল্প ও কলকারখানা করাতকল, আটাকল, সাবান কারখানা, কলম কারখানা।
কুটিরশিল্প তাঁতশিল্প, লৌহশিল্প, ওয়েল্ডিং কারখানা, মৃৎশিল্প, বাঁশ, বেত ও কাঠের কাজ।
হাটবাজার, মেলা গাজিপুরের গরুর হাট ও গাজী কালুর মেলা উল্লেখযোগ্য।
বিদ্যুৎ ব্যবহার উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৯.০৫% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৩.৮২%, ট্যাপ ০.৩০%, পুকুর ৪.৩৭% এবং অন্যান্য ১.৫১%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে সহনীয় মাত্রার আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা উপজেলার ৩৪.৯৮% (গ্রামে ৩১.৭০% ও শহরে ৮০.১৮%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫৫.৪৪% (গ্রামে ৫৮.২৩% ও শহরে ১৭.০৫%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৯.৫৮% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, স্যাটলাইট ক্লিনিক ৩, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১০।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর প্লাবন ও ঘূর্ণিঝড়ে উপজেলায় বেশসংখ্যক লোকের প্রাণহানির ঘটনাসহ গবাদিপশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
এনজিও কেয়ার, ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন, কারিতাস, সিএমএইচ। [শাহাবুদ্দিন পান্না]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; আমতলী উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।