আমতলী উপজেলা

আমতলী উপজেলা (বরগুনা জেলা) আয়তন: ৩৯৮.৮৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২১°৫১´ থেকে ২২°১৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০০´ থেকে ৯০°২৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে পটুয়াখালী সদর, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে গলাচিপা উপজেলা ও কলাপাড়া উপজেলা, পশ্চিমে বরগুনা সদর উপজেলা ও মির্জাগঞ্জ উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৮২৭৯৮; পুরুষ ৮৮৪৬১, মহিলা ৯৪৩৩৭। মুসলিম ১৭২৩৬৭, হিন্দু ১০৪০৯, বৌদ্ধ ১০ এবং অন্যান্য ১২। উপজেলার বড়বগী ও পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নে রাখাইন জনগোষ্ঠীর বসবাস আছে।

জলাশয় বুড়িশ্বর ও আন্ধারমানিক নদী এবং রাবনাবাদ চ্যানেল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন ১৮৫৯ সালে স্থাপিত গুলিশাখালী থানা ১৯০৪ সালে আমতলীতে স্থানান্তরিত হয়। বর্তমানে এটি উপজেলা।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
৪৭ ১১৪ ২১৮০৮ ১৬০৯৯০ ৪৫৮ ৬৪.৩ (২০০১) ৫১.৮
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৮.৭৫ (২০০১) ১৪ ১৭৩১১ ১৫২১ (২০০১) ৬৮.৭
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১২.২৫ (২০০১) ৪৪৯৭ ৪০০ (২০০১) ৪৭.০
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আঠারগাশিয়া ২৩ ১১২৬৯ ১১৩৫০ ১২০৯৪ ৪৪.২
অর্পণগাশিয়া ১৫ ৮৬২৪ ৭২২৪ ৭৬৪৯ ৫৪.৮
আমতলি ১৩ ১৫৯১৪ ১১৮৩৮ ১২৩১৭ ৫০.৬
কুকুয়া ৮৭ ১১২৮৮ ১১৩৬০ ১২৬৬৮ ৪৯.০
গুলিসাখালি ৬৩ ১৩৮৮৭ ১৩৬২৪ ১৪৮৩৪ ৫৩.৪
চৌরা ৪৭ ১০২৩৯ ১০১৫৪ ১০৬৪৮ ৪৬.৬
হলদিয়া ৭১ ২২১৫৪ ১৪২১০ ১৫৫১৭ ৫১.০

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ তেপুরার গাজী কালুর মাযার, চাওড়া পাতাকাটার মাটির দুর্গ।

মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়কালে আমতলী উপজেলার প্রায় সব এলাকা মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল এবং একারণে এখানে আমতলী থানা দখলের যুদ্ধ ব্যতীত পাকবাহিনীর সঙ্গে উল্লেখ করার মতো তেমন কোনো যুদ্ধ হয়নি।

বিস্তারিত দেখুন আমতলী উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়হার ৫২.৮%; পুরুষ ৫৪.৯%, মহিলা ৪৯.৯%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: আমতলী ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৯), আমতলী একে পাইলট হাইস্কুল (১৯৩৪)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী সাপ্তাহিক পায়রাপাড়, শোক নয় শক্তি।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ২৬, লাইব্রেরি ১, নাট্যদল ২, সাহিত্য সংগঠন ২, মহিলা সংগঠন ২৬, সিনেমা হল ৩।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭০.৪৬%, অকৃষি শ্রমিক ৪.০১%, ব্যবসা ৯.৪২%, চাকরি ৪.২৭%, নির্মাণ ১.০২%, ধর্মীয় সেবা ০.১৮%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১৬%, পরিবহন ও যোগাযোগ ১.৭৪%, শিল্প ০.২৬, অন্যান্য ৮.৪৮%।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, চিনাবাদাম, খেসারি, মুগ, ছোলা, সরিষা, আলু, মরিচ, কুমড়া।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিসি, তিল।

প্রধান ফল-ফলাদি পেয়ারা, আমড়া, তরমুজ।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১২৮ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৬১৮ কিমি; নৌপথ ১৪০ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি।

শিল্প ও কলকারখানা করাতকল, আটাকল, সাবান কারখানা, কলম কারখানা।

কুটিরশিল্প তাঁতশিল্প, লৌহশিল্প, ওয়েল্ডিং কারখানা, মৃৎশিল্প, বাঁশ, বেত ও কাঠের কাজ।

হাটবাজার, মেলা গাজিপুরের গরুর হাট ও গাজী কালুর মেলা উল্লেখযোগ্য।

বিদ্যুৎ ব্যবহার উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২১.৬% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস উপজেলার ৬৬.৯% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৮.৭% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৪.৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা উপজেলার ৩৪.৯৮% (গ্রামে ৩১.৭০% ও শহরে ৮০.১৮%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫৫.৪৪% (গ্রামে ৫৮.২৩% ও শহরে ১৭.০৫%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৯.৫৮% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, স্যাটলাইট ক্লিনিক ৩, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১০।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর প্লাবন ও ঘূর্ণিঝড়ে উপজেলায় বেশসংখ্যক লোকের প্রাণহানির ঘটনাসহ গবাদিপশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

এনজিও কেয়ার, ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন, কারিতাস, সিএমএইচ। [শাহাবুদ্দিন পান্না]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; আমতলী উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।