চিনি শিল্প
চিনি শিল্প প্রাচীন কাল থেকে বাংলাদেশ এবং এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে গুড়, সুক্কার (Sukker) বা খন্ডেশ্বরী (Khandeswari) তৈরির জন্য আখের চাষ হয়ে আসছে। তাল ও খেজুরের রস থেকেও এ ধরনের মিষ্টিদ্রব্য প্রস্ত্তত হয়ে থাকে। ষোড়শ শতাব্দীতে বাংলার উন্নতমানের চিনি সুপরিচিত ছিল। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা থেকে বিপুল পরিমাণ চিনি রপ্তানি করত। ১৭৯৫ সালে এ রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৮,২০,১৮৬ মণ ও ১৮০৫ সালে ৩৩,২৪,১৬৮ মণ। ১৮৪০ সালের দিকে বীট থেকে চিনি প্রস্ত্তত শুরু হলে আখ থেকে চিনি তৈরিতে কিছুটা ভাটা পড়ে। পরবর্তীকালে চাষিরা পাট চাষের দিকে ঝুঁকে পড়লে চিনি শিল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ব্রিটিশ শাসনামলে ভারত তার অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর জন্য পর্যাপ্ত চিনি উৎপাদন করতে না পারলেও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে চিনি রপ্তানি অব্যাহত ছিল। প্রধানত জাভা থেকে আমদানির মাধ্যমে এ ঘাটতি পূরণ করা হতো। ১৯৪৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান উত্তরাধিকারসূত্রে মাত্র কয়েকটি চিনিকল লাভ করে। এগুলি ছিল রাজশাহীর গোপালপুরে, দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জে, কুষ্টিয়ার দর্শনায়, ঢাকার চিত্তরঞ্জন ও আড়িখোলা এবং ময়মনসিংহের কিশোরগঞ্জে। এ সকল মিলের মোট আখ মাড়াই ক্ষমতা ছিল মাত্র ৪,৩৫০ মেট্রিক টন। ১৯৪৭ সালে সর্বমোট ফসলি এলাকার মাত্র ১ শতাংশ এলাকায় আখ চাষ হতো। পূর্ব পাকিস্তান শিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশন চিনির উৎপাদন ক্ষমতা ১০ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত করার লক্ষ্যে ১০টি নতুন চিনিকল স্থাপনের পরিকল্পনা নেয়।
কিন্তু ১৯৫৬ সালের মধ্যে মাত্র ৫টি চিনিকল স্থাপন করা সম্ভব হয় এবং উৎপাদন দাঁড়ায় ২৬,০০০ মেট্রিক টনে। চাষাবাদ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে চিনি শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। চিনিকলগুলিতে ১৮ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তা ছাড়াও ৫ লক্ষ ইক্ষুপরিবারসহ প্রায় ৪৫ লক্ষ লোক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে চিনি শিল্পের উপর নির্ভরশীল। এ শিল্প এখন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প সংস্থার অধীনে। চিনিকলের উপজাত নানা কাজে ব্যবহূত হয়। ঝোলাগুড় এবং ছোবড়া অন্য শিল্পে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহূত হয়। চিনিকলের গাদ ও বর্জ্যপদার্থ ‘স্পেন্টওয়াশ’ ব্যবহার করে দর্শনায় একটি জৈবসার কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৪ লক্ষ একর জমিতে আখ চাষ করা হয় এবং এতে উৎপাদনের পরিমাণ ৭২ লক্ষ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ২২ লক্ষ ৮০ হাজার মেট্রিক টন ব্যবহূত হয় চিনিকলে এবং অবশিষ্ট ব্যবহূত হয় গুড় তৈরিতে। বাংলাদেশে বর্তমানে বছরে ১ লক্ষ ৫০ হাজার মেট্রিক টন চিনি, ১ লক্ষ মেট্রিক টন ঝোলাগুড় এবং ৪ লক্ষ মেট্রিক টন ছোবড়া তৈরি হয়। প্রতি একরে উৎপাদনের দিক থেকে বাংলাদেশ সর্বনিম্নে। এখানে প্রতি একরে উৎপাদন মাত্র ১৫ মেট্রিক টন, অথচ কিউবায় ৩৬ মেট্রিক টন, ইন্দোনেশিয়ায় ৪৫ মেট্রিক টন, অস্ট্রেলিয়ায় ৫৫ মেট্রিক টন এবং হাওয়াই-এ ৭০ মেট্রিক টন আখ উৎপাদিত হয়। বাংলাদেশে চিনি আহরণের হারও খুবই কম, মাত্র ৭.৪ শতাংশ। পক্ষান্তরে, ইন্দোনেশিয়ায় চিনি আহরণের পরিমাণ হচ্ছে ৯%, কিউবায় ১২.৩%, হাওয়াই-এ ১২.৪% এবং অস্ট্রেলিয়ায় ১৫.৬%। বিশ শতকের আশির দশকে এ শিল্প সমগ্র শ্রমশক্তির ১৫% নিয়োজিত করে। সমগ্র খাদ্য শিল্পের ৩০% স্থাবর সম্পত্তি ছিল চিনি শিল্পের আওতায়। বাংলাদেশ বিশ্বের মোট চিনির মাত্র ১.৫% উৎপাদন করে এবং বিশ্বের ১৩০টি চিনি উৎপাদনকারী দেশের মধ্যে বাংলাদেশের স্থান ৬৭তম।
বর্তমানে (২০১২) দেশে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, সেতাবগঞ্জ, রংপুর, শ্যামপুর, রাজশাহী, মহিমাগঞ্জ, জয়পুরহাট, দর্শনা, কুষ্টিয়া, মোবারকগঞ্জ, জামালপুর, কালিয়াচাপরা, নরসিংদী, পাবনাসহ মোট ১৫ টি চিনিকল রয়েছে। এসব চিনিকলগুলিতে বাৎসরিক উৎপাদন ক্ষমতা ধরা হয় প্রায় ২১৫,০০০ টন। কিন্তু চিনিকলগুলিতে পূর্ণমাত্রায় কাজ করতে পারেনি ফলে দেশে চিনির বাৎসরিক চাহিদার (প্রায় ৪০০,০০০ টন) তুলনায় কম চিনি উৎপাদিত হয়।
সারণি ১ আখ মাড়াই মৌসুমে চিনিকল ভিত্তিক বিএসএফআইসি কর্তৃক প্রাক্কলিত ও উৎপাদিত চিনি (২০১১-১২)।
চিনিকলগুলির তালিকা #প্রাক্কলিত চিনির পরিমাণ
(†g Ub) #Drcvw`Z wPwb
(†g Ub)
†mZveMÄ myMviwgj wj. #50,200 #3,752.40
b_© †e½j myMviwgj wj. #18,700 #9,874
†Ki“ A¨vÛ †Kvs (evsjv‡`k) wj. #11,500 #4,373
iscyi myMviwgj wj. #40,000 #1,590.80
wRj evsjv myMviwgj wj. #8,800 #4,621.50
VvKziMvuI myMviwgj wj. #9,000 #4,781.50
RqcyinvU myMviwgj wj. #8,000 #4,294
ivRkvnx myMviwgj wj. #10,800 #4,875
Kzwóqv myMviwgj wj. #8,000 #2,050.30
†gveviKMÄ myMviwgj wj. #15,400 #6,288.95
k¨vgcyi myMviwgj wj. #30,100 #2,352
cÂMo myMviwgj wj. #7,500 #4,401
dwi`cyi myMviwgj wj. #9,600 #5,000
bv‡Uvi myMviwgj wj #15,000 #7,369.25
cvebv myMviwgj wj. #6,000 #3,503.25
†gvU #2,48,600 #69,126.95
উৎস বাংলাবাজার পত্রিকা, ১৯ জুন ২০১২।
সারণি ২ বাংলাদেশে চিনিশিল্পের কার্যক্ষমতা (২০০০-২০০৯)।
মাড়াই মৌসুম #মোট আখ চাষের পরিমাণ (হেক্টর) #চিনিকল অঞ্চল ভিত্তিক মোট আখ উৎপাদন (মে টন) #প্রতি হেক্টরে ফসল উৎপাদন (মে টন) #মোট আখ মাড়াই (মে টন) #মোট চিনি উৎপাদন (মে টন) #সরকারকে রাজস্ব প্রদান (মিলিয়ন)
2000-01 #74,873 #33,61,867 #44.90 #13,69,026 #98,355 #1358.25
2001-02 #88,274 #44,75,990 #50.71 #28,11,123 #2,04,329 #858.70
2002-03 #1,05,420 #45,95,270 #43.59 #26,33,430 #1,77,398 #299.49
2003-04 #84,870 #39,48,240 #46.52 #16,42,510 #1,19,000 #349.10
2004-05 #78,180 #35,16,970 #44.98 #14,14,490 #107,000 #-
2005-06 #75,430 #37,17,300 #49.28 #18,53,180 #1,32,380 #-
2006-07 #83,600 #41,12,660 #49.19 #2,33,504 #16,2000 #-
2007-08 #86,400 #40,51,140 #46.54 #2,28,753 #16,4000 #-
2008-09 #78,740 #34,97,920 #44.42 #- #80,000 #-
উৎস এমআইএস রিপোর্ট, বিএসএফআইসি, ২০০০-২০০৯।
1972-2009 mvj ch©š— †`‡k me©‡gvU 34 evi AvL gvovB †gŠmy‡gi g‡a¨ wPwbwkí 20 evi †jvKmvb I 14 evi jv‡fi m¤§yLxb n‡q‡Q| aiv nq †`‡k 15wU ivóªxq gvwjKvaxb wPwbK‡ji Drcv`b ¶gZv 2.15 j¶ †g Ub| wKš‘ cÖK…Zc‡¶ Kj¸wj 1 j¶ †g U‡bi Kg wPwb Drcv`b Ki‡Z cv‡i|
2011-12 AvL gvovB †gŠmy‡g 1,69,000 GKi Rwg‡Z cÖvq 40 j¶ Ub AvL Drcvw`Z nq| wPwe‡q LvIqv I exR msi¶‡Yi Rb¨ cÖvq 10 j¶ Ub AvL ev` w`‡q evwK cÖvq 30 j¶ Ub AvL wPwbKj¸wj‡Z mievin Kivi K_v| wKš‘ A‡a©‡KiI Kg AvL wPwbKj¸wj‡Z mievin Kiv nq| KviLvbv¸wj‡Z AvL mievin bv Kivi Rb¨ cÖavbZ `ywU KviY‡K `vqx Kiv nq, evRv‡i ¸‡oi g~j¨ e„w× Ges mievinK…Z Av‡Li g~j¨ †c‡Z K…l‡Ki RwUjZv|
wPwb GKwU m¤¢vebvgq ißvwbKvix cY¨ n‡Z cv‡i Ges KZ¸wj c`‡¶c MÖnY Ki‡j evsjv‡`k G LvZ †_‡K ˆe‡`wkK gy`ªv Avq Ki‡Z cv‡i, †hgbt KviLvbv¸wji AvaywbKxKiY, c~Y©gvÎvq AvL Drcv`b, mnRk‡Z© AvLPvlx‡`i FY cÖ`vb, widvBbvwi¸wj‡K c~Y©gvÎvq wPwb Drcv`‡bi Rb¨ AbygwZ cÖ`vb, AvL Pv‡l I wPwb Drcv`‡b AvaywbK cÖhyw³ I DcKiY e¨envi, Ae¨e¯’vcbv cÖwZ‡iva, wgj Kg©Pvix‡`i AcKg© †_‡K weiZ ivLv Ges wPwbKj¸wj †_‡K Drcvw`Z DcRvZ c‡Y¨i (by-products) mwVK I e¨vcK e¨envi wbwðZ Kiv| [Gg nweeyjvn Ges MvRx †gv. wgRvbyi ingvb]