রংপুর জেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
(হালনাগাদ)
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''রংপুর জেলা''' ([[রংপুর বিভাগ|রংপুর বিভাগ]])  আয়তন: ২৩৭০.৪৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°১৮´ থেকে ২৫°৫৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫৬´ থেকে ৮৯°৩২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলা, দক্ষিণে গাইবান্ধা জেলা, পূর্বে কুড়িগ্রাম জেলা, পশ্চিমে দিনাজপুর জেলা।
'''রংপুর জেলা''' ([[রংপুর বিভাগ|রংপুর বিভাগ]])  আয়তন: ২৪০০.৫৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°১৮´ থেকে ২৫°৫৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫৬´ থেকে ৮৯°৩২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলা, দক্ষিণে গাইবান্ধা জেলা, পূর্বে কুড়িগ্রাম জেলা, পশ্চিমে দিনাজপুর জেলা।


''জনসংখ্যা'' ২৫৪২৪৪১; পুরুষ ১৩০৭৩৯৬, মহিলা ১২৩৫০৪৫। মুসলিম ২২৯৬৭৯০, হিন্দু ২২৯৯৬৩, বৌদ্ধ ৫৭৮১, খ্রিস্টান ২০৬০ এবং অন্যান্য ৭৮৪৭। এ জেলায় সাঁওতাল, ওরাওঁ, মুন্ডা প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
''জনসংখ্যা'' ২৮৮১০৮৬; পুরুষ ১৪৪৩৮১৬, মহিলা ১৪৩৭২৭০। মুসলিম ২৬০৪২৬৩, হিন্দু ২৫৮৬৮৪, বৌদ্ধ ১৮৬৩, খ্রিস্টান ৬৫৯৪  এবং অন্যান্য ৯৬৮২। এ জেলায় সাঁওতাল, ওরাওঁ, মুন্ডা প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।


''জলাশয়''  প্রধান নদী: তিস্তা, যমুনেশ্বরী, ঘাঘট, করতোয়া, চিকলি ও অাঁখিরা।
''জলাশয়''  প্রধান নদী: তিস্তা, যমুনেশ্বরী, ঘাঘট, করতোয়া, চিকলি ও অাঁখিরা।
১৬ নং লাইন: ১৬ নং লাইন:
| শহর  || গ্রাম  
| শহর  || গ্রাম  
|-
|-
| ২৩৭০.৪৫  || ৮ || ৩ || ৮৩ || ১২১৫  || ১৪৩৫  || ৪৫৭২৩৪  || ২০৮৫২০৭  || ১১০১  || ৪১.৯১
| ২৪০০.৫৬ || ৮ || ৩ || ৮৩ || ১১৯৭ || ১৪৯২ || ৪৪২৭১৩ || ২৪৩৮৩৭৩ || ১২০০ || ৪৮.
|}
|}


২৫ নং লাইন: ২৫ নং লাইন:
| উপজেলার নাম  || আয়তন (বর্গ কিমি)  || পৌরসভা  || ইউনিয়ন  || মৌজা  || গ্রাম  || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| উপজেলার নাম  || আয়তন (বর্গ কিমি)  || পৌরসভা  || ইউনিয়ন  || মৌজা  || গ্রাম  || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| কাউনিয়া || ১৪৭.৬০  || ১ || ৬ || ৮০  || ৭৯  || ২১৪৩১৭  || ১৪৫২  || ৩৬.৯৭
| কাউনিয়া || ১৪৭.৬৪ || ১ || ৬ || ৭৫ || ৭৮ || ২২৭৮০৫ || ১৫৪৩ || ৪১.
|-
|-
| গঙ্গাচড়া || ২৭২.২৮  || -|| ১০ || ৯২  || ১৪৯  || ২৫৯৮৫৬  || ৯৫৪  || ৩২.৯৫
| গঙ্গাচড়া || ২৬৯.৬৭ || - || ১০ || ৯৩ || ১২৮ || ২৯৭৮৬৯ || ১১০৫ || ৪৩.
|-
|-
| তারাগঞ্জ || ১২৮.৬৪  || -|| ৫ || ৪০ || ৪১ || ১১৯৯২৭  || ৯৩২  || ৩৭.০৬
| তারাগঞ্জ || ১২৮.৬৫ || - || ৫ || ৪০ || ৪১ || ১৪২৫১২ || ১১০৮ || ৪৩.
|-
|-
| পীরগঞ্জ || ৪০৯.৩৭  || -|| ১৫ || ৩০৮ || ৩৩৩  || ৩৪৫৫৯৩  || ৮৪৪  || ৩৯.০৭
| পীরগঞ্জ || ৪১১.৩৪ || - || ১৫ || ৩০৮ || ৩৩২ || ৩৮৫৪৯৯ || ৯৩৭ || ৪৫.
|-
|-
| পীরগাছা || ২৬৫.৩২  || -|| ৯ || ১৭০ || ১৭০ || ২৯৫০৫০  || ১১১২  || ১৯.১৫
| পীরগাছা || ২৬৬.৮৪ || - || ৯ || ১৭০ || ১৭০ || ৩১৩৩১৯ || ১১৭৪ || ৪৪.
|-
|-
| বদরগঞ্জ || ৩০১.২৯  || ১ || ১০ || ৬৪  || ১২০ || ২৫৭৮৪৬  || ৮৪৬  || ৩৮.২০
| বদরগঞ্জ || ৩০১.২৮ || ১ || ১০ || ৬৩ || ১২০ || ২৮৭৭৪৬ || ৯৫৫ || ৪৩.
|-
|-
| মিঠাপুকুর || ৫১৫.৬২ || -|| ১৭ || ৩১০  || ৩১৪  || ৪৪৯৬১২  || ৮৭২  || ৪১.৭০
| মিঠাপুকুর || ৫১৫.৬২ || - || ১৭ || ৩০৯ || ৩১৫ || ৫০৮১৩৩ || ৯৮৫ || ৪৬.
|-
|-
| রংপুর সদর || ৩৩০.৩৩  || ১ || ১১ || ১৫১  || ২২৯  || ৬০০২৪০  || ১৮১৭  || ৫২.৯৫
| রংপুর সদর || ৩৫৯.৪৮ || ১ || ১১ || ১৩৯ || ৩০৮ || ৭১৮২০৩ || ১৯৯৮ || ৬১.
|}
|}
''সূত্র''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:RangpurDistrict.jpg|thumb|right|400px]]
[[Image:RangpurDistrict.jpg|thumb|right|400px]]
''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ রংপুর সদর উপজেলার গুপ্তপাড়ায় পাকবাহিনী হত্যা ও লুটতরাজ চালায়। ২৮ মার্চ মিঠাপুকুর উপজেলার লোকেরা ক্যান্টনমেন্ট আক্রমণ করে। এতে বহু লোক হতাহত ও নিহত হয়। পাকবাহিনী এ উপজেলায় ব্যাপক গণহত্যা ও লুটতরাজ চালায়। এর মধ্যে পায়রাবন্দ ইউনিয়নের জয়রাম আনোয়ার মৌজার গণহত্যা উল্লেখযোগ্য। ১ এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধারা কাউনিয়া উপজেলার ওসিকে গুলি করে হত্যা করে। ১৩ এপ্রিল পীরগঞ্জ উপজেলার নব্দীগঞ্জ নামক স্থানে পাকবাহিনী ১১ জন বাঙালী ইপিআর সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করে। ১৭ এপ্রিল বদরগঞ্জ উপজেলায় পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা ব্যাপক গণহত্যা চালায় এবং খালিসা হাজীপুর, বুজরুক হাজীপুর, ঘাটাবিল, রামনাথপুর গ্রাম পুড়িয়ে দেয়। পাকিস্তান হানাদার বাহিনী বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা অনুযায়ী ৩০ শে এপ্রিল কারমাইকেল কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থনরত অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন রায়, অধ্যাপক ব্যোম কৃষ্ণ অধিকারী, অধ্যাপক সুনীল চন্দ্র চক্রবর্তীদের রাতের অন্ধকারে নির্মমভাবে হত্যা করে দমদম ব্রিজের পাশে এক বাঁশঝাড়ে গণকবর দেয়। এছাড়া অধ্যাপক কালাচাঁদ রায় ও তার স্ত্রী, অধ্যাপক মো আব্দুল রহমান, অধ্যাপক শাহ সোলায়মান আলী সহ অনেক ছাত্র-শিক্ষককে হত্যা করা হয়। এ সময় হানাদার বাহিনীর নির্যতনের কেন্দ্রস্থল ছিল রংপুর টাউন হল। ২৮ জুন ২ জন পাকসেনা কাউনিয়া উপজেলার তিস্তা ব্রিজের কাছের গ্রামে ঢুকে নারী ধর্ষণের চেষ্টা করলে এলাকাবাসী তাদের হত্যা করে। এরই জের ধরে পাকবাহিনী ৩০ জুন গ্রামে ঢুকে ব্যাপক অগ্নিসংযোগ ও হত্যাযজ্ঞ চালায়। এতে প্রায় ২০০ নিরীহ লোক নিহত হয়। আগস্ট মাসে পাকসেনারা তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের দাড়ার পাড় গ্রামের কয়েকজনকে আটক করে এবং পরে হত্যা করে। অক্টোবর মাসে গঙ্গাচড়া উপজেলার শঙ্করদহ গ্রামের তালতলায় মুজিব বাহিনীর গেরিলাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর এক লড়াইয়ে ২ জন পাকিস্তানি সৈন্য ও ৫ জন রাজাকার নিহত হয়। পাকবাহিনী এ উপজেলার তালতলা মসজিদে ঢুকে ১৭ জন মুসল্লীকে হত্যা করে। ২ ডিসেম্বর পীরগাছা উপজেলার পারুল ইউনিয়নের মনুরছড়ায় পাকসেনাদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের এক লড়াইয়ে ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও ২ জন পাকসেনা আহত হয়। ৩ ডিসেম্বর তারাগঞ্জ উপজেলার যমুনেশ্বরী নদীর উপর বরাতি ব্রিজে এক গণহত্যা সংঘটিত হয়। ১৩ ডিসেম্বর গঙ্গাচড়া থানায় ২১২ জন রাজাকার আত্মসমর্পণ করে। ১৭ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করার মধ্য দিয়ে সম্পূর্ণ শত্রুমুক্ত হয় বৃহত্তর রংপুর অঞ্চল।


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' বধ্যভূমি ১০ (দহিগঞ্জ শ্মশান, ঘাঘট নদীর পূর্বতীর, বালার দীঘি (ক্যান্টনমেন্ট সংলগ্ন), ঘাঘট নদীর ব্রিজের নীচে, লাহিড়ীর হাট (বদরগঞ্জ সড়ক সংলগ্ন), দমদমা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা (মিঠাপুকুর উপজেলা), সাহেবগঞ্জ, নব্দীগঞ্জ, ঝাড়ুয়ার বিল (বদরগঞ্জ উপজেলা), দমদমা বাজার, ঝিনুক সিনেমা হলের পেছনে); গণকবর ৪ (দমদমা ব্রিজ, দমদমা বাজার (মিঠাপুকুর উপজেলা), আংরার ব্রিজ, মাদারগঞ্জ বাজার (পীরগঞ্জ উপজেলা); ভাস্কর্য ১ (অর্জন)।
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালের ২৮ শে মার্চ রংপুর জেলার অনেক গ্রামবাসী লাঠি, বল্লম, তীর ধনুক দিয়ে সেনানিবাস অবরোধ করে। সে সময় সেনানিবাসের ২৯ ক্যাভালরী রেজিমেন্ট মেশিন গানের গুলিতে প্রায় ৫/৬ শত নিরীহ লোককে হত্যা করে। রংপুর জেলার ১০টি স্থানে (দহিগঞ্জ শ্মশান, ঘাঘট নদীর পূর্বতীর, বালার দীঘি (ক্যান্টনমেন্ট সংলগ্ন), ঘাঘট নদীর ব্রিজের নীচে, বদরগঞ্জ সড়ক সংলগ্ন লাহিড়ীর হাট, মিঠাপুকুর উপজেলার দমদমা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা, সাহেবগঞ্জ, নব্দীগঞ্জ, বদরগঞ্জ উপজেলার ঝাড়–য়ার বিল এবং দমদমা বাজারের ঝিনুক সিনেমা হলের পেছনে বধ্যভূমি রয়েছে এবং ৪টি স্থানে (দমদমা ব্রিজ, দমদমা বাজার, আংরার ব্রিজ এবং মাদারগঞ্জ বাজারে) গণকবর রয়েছে; ‘অর্জন’ নামে ১টি ভাস্কর্য নির্মিত হয়েছে।


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪১.৯১%; পুরুষ ৪৬.%, মহিলা ৩৭.০৬%। বিশ্ববিদ্যালয় ১, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ১, কলেজ ৬৫, মেডিক্যাল কলেজ ১, টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ২, ক্যাডেট কলেজ ১, পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট ১, ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট ১, আইন কলেজ ১, হোমিওপ্যাথ কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩২০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১৬৬, কমিউনিটি স্কুল ২০, কিন্ডার গার্টেন ২৫, স্যাটেলাইট স্কুল ৪৪, সংগীত বিদ্যালয় ১, এনজিও স্কুল ১৯৩, মাদ্রাসা ৩৭০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (২০০৮), রংপুর কারমাইকেল কলেজ (১৯১৬), সরকারি বেগম রোকেয়া মহিলা কলেজ (১৯৬৪), রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (১৯৬৬), শিক্ষক প্রশিক্ষণ মহাবিদ্যালয় (১৮৫৮), রংপুর ক্যাডেট কলেজ (১৯৭৭), রংপুর জিলা স্কুল (১৮৩২), রংপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয় (১৮৭৬), কৈলাশরঞ্জন হাইস্কুল (১৯১৩)।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪৮.%; পুরুষ ৫১.%, মহিলা ৪৫.%। বিশ্ববিদ্যালয় ১, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ১, কলেজ ৬৫, মেডিক্যাল কলেজ ১, টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ২, ক্যাডেট কলেজ ১, পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট ১, ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট ১, আইন কলেজ ১, হোমিওপ্যাথ কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩২০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১৬৬, কমিউনিটি স্কুল ২০, কিন্ডার গার্টেন ২৫, স্যাটেলাইট স্কুল ৪৪, সংগীত বিদ্যালয় ১, এনজিও স্কুল ১৯৩, মাদ্রাসা ৩৭০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (২০০৮), রংপুর কারমাইকেল কলেজ (১৯১৬), সরকারি বেগম রোকেয়া মহিলা কলেজ (১৯৬৪), রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (১৯৬৬), শিক্ষক প্রশিক্ষণ মহাবিদ্যালয় (১৮৫৮), রংপুর ক্যাডেট কলেজ (১৯৭৭), রংপুর জিলা স্কুল (১৮৩২), রংপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয় (১৮৭৬), কৈলাশরঞ্জন হাইস্কুল (১৯১৩)।


''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৬২.৯৯%, অকৃষি শ্রমিক ৪.৬৬%, শিল্প ১.১১%, ব্যবসা ১৩.২৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৯%, নির্মাণ ১.১৮%, ধর্মীয় সেবা ০.২%, চাকরি ৬.৩২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২% এবং অন্যান্য ৬.১৬%।
''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৬২.৯৯%, অকৃষি শ্রমিক ৪.৬৬%, শিল্প ১.১১%, ব্যবসা ১৩.২৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৯%, নির্মাণ ১.১৮%, ধর্মীয় সেবা ০.২%, চাকরি ৬.৩২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২% এবং অন্যান্য ৬.১৬%।
৬০ নং লাইন: ৫৯ নং লাইন:
''আরো দেখুন''   সংশ্লিষ্ট উপজেলা।
''আরো দেখুন''   সংশ্লিষ্ট উপজেলা।


'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; রংপুর জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; রংপুর জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; রংপুর জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; রংপুর জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Rangpur District]]
[[en:Rangpur District]]

১৭:১৩, ৩০ মে ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

রংপুর জেলা (রংপুর বিভাগ)  আয়তন: ২৪০০.৫৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°১৮´ থেকে ২৫°৫৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫৬´ থেকে ৮৯°৩২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলা, দক্ষিণে গাইবান্ধা জেলা, পূর্বে কুড়িগ্রাম জেলা, পশ্চিমে দিনাজপুর জেলা।

জনসংখ্যা ২৮৮১০৮৬; পুরুষ ১৪৪৩৮১৬, মহিলা ১৪৩৭২৭০। মুসলিম ২৬০৪২৬৩, হিন্দু ২৫৮৬৮৪, বৌদ্ধ ১৮৬৩, খ্রিস্টান ৬৫৯৪ এবং অন্যান্য ৯৬৮২। এ জেলায় সাঁওতাল, ওরাওঁ, মুন্ডা প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

জলাশয়  প্রধান নদী: তিস্তা, যমুনেশ্বরী, ঘাঘট, করতোয়া, চিকলি ও অাঁখিরা।

প্রশাসন রংপুর জেলা গঠিত হয় ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৪ সালে।

জেলা
আয়তন (বর্গ কিমি) উপজেলা পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম
২৪০০.৫৬ ৮৩ ১১৯৭ ১৪৯২ ৪৪২৭১৩ ২৪৩৮৩৭৩ ১২০০ ৪৮.৫
জেলার অন্যান্য তথ্য
উপজেলার নাম আয়তন (বর্গ কিমি) পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
কাউনিয়া ১৪৭.৬৪ ৭৫ ৭৮ ২২৭৮০৫ ১৫৪৩ ৪১.৯
গঙ্গাচড়া ২৬৯.৬৭ - ১০ ৯৩ ১২৮ ২৯৭৮৬৯ ১১০৫ ৪৩.২
তারাগঞ্জ ১২৮.৬৫ - ৪০ ৪১ ১৪২৫১২ ১১০৮ ৪৩.৮
পীরগঞ্জ ৪১১.৩৪ - ১৫ ৩০৮ ৩৩২ ৩৮৫৪৯৯ ৯৩৭ ৪৫.৪
পীরগাছা ২৬৬.৮৪ - ১৭০ ১৭০ ৩১৩৩১৯ ১১৭৪ ৪৪.৬
বদরগঞ্জ ৩০১.২৮ ১০ ৬৩ ১২০ ২৮৭৭৪৬ ৯৫৫ ৪৩.০
মিঠাপুকুর ৫১৫.৬২ - ১৭ ৩০৯ ৩১৫ ৫০৮১৩৩ ৯৮৫ ৪৬.০
রংপুর সদর ৩৫৯.৪৮ ১১ ১৩৯ ৩০৮ ৭১৮২০৩ ১৯৯৮ ৬১.০

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ২৮ শে মার্চ রংপুর জেলার অনেক গ্রামবাসী লাঠি, বল্লম, তীর ধনুক দিয়ে সেনানিবাস অবরোধ করে। সে সময় সেনানিবাসের ২৯ ক্যাভালরী রেজিমেন্ট মেশিন গানের গুলিতে প্রায় ৫/৬ শত নিরীহ লোককে হত্যা করে। রংপুর জেলার ১০টি স্থানে (দহিগঞ্জ শ্মশান, ঘাঘট নদীর পূর্বতীর, বালার দীঘি (ক্যান্টনমেন্ট সংলগ্ন), ঘাঘট নদীর ব্রিজের নীচে, বদরগঞ্জ সড়ক সংলগ্ন লাহিড়ীর হাট, মিঠাপুকুর উপজেলার দমদমা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা, সাহেবগঞ্জ, নব্দীগঞ্জ, বদরগঞ্জ উপজেলার ঝাড়–য়ার বিল এবং দমদমা বাজারের ঝিনুক সিনেমা হলের পেছনে বধ্যভূমি রয়েছে এবং ৪টি স্থানে (দমদমা ব্রিজ, দমদমা বাজার, আংরার ব্রিজ এবং মাদারগঞ্জ বাজারে) গণকবর রয়েছে; ‘অর্জন’ নামে ১টি ভাস্কর্য নির্মিত হয়েছে।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৮.৫%; পুরুষ ৫১.২%, মহিলা ৪৫.৯%। বিশ্ববিদ্যালয় ১, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ১, কলেজ ৬৫, মেডিক্যাল কলেজ ১, টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ২, ক্যাডেট কলেজ ১, পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট ১, ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট ১, আইন কলেজ ১, হোমিওপ্যাথ কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩২০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১৬৬, কমিউনিটি স্কুল ২০, কিন্ডার গার্টেন ২৫, স্যাটেলাইট স্কুল ৪৪, সংগীত বিদ্যালয় ১, এনজিও স্কুল ১৯৩, মাদ্রাসা ৩৭০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (২০০৮), রংপুর কারমাইকেল কলেজ (১৯১৬), সরকারি বেগম রোকেয়া মহিলা কলেজ (১৯৬৪), রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (১৯৬৬), শিক্ষক প্রশিক্ষণ মহাবিদ্যালয় (১৮৫৮), রংপুর ক্যাডেট কলেজ (১৯৭৭), রংপুর জিলা স্কুল (১৮৩২), রংপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয় (১৮৭৬), কৈলাশরঞ্জন হাইস্কুল (১৯১৩)।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬২.৯৯%, অকৃষি শ্রমিক ৪.৬৬%, শিল্প ১.১১%, ব্যবসা ১৩.২৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৯%, নির্মাণ ১.১৮%, ধর্মীয় সেবা ০.২%, চাকরি ৬.৩২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২% এবং অন্যান্য ৬.১৬%।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক: দাবানল (১৯৮০), যুগের আলো (১৯৯২), রংপুর (১৯৯৭), পরিবেশ (১৯৯৪), আখিরা, অর্জন; সাপ্তাহিক: অটল (১৯৯৯), সাপ্তাহিক রংপুর (১৯৯৬), রংপুর বার্তা (১৯৯৬), বজ্রকণ্ঠ (পীরগঞ্জ); অবলুপ্ত: রঙ্গপুর বার্তাবহ (১৮৪৭), রঙ্গপুর দর্পণ (১৯০৭), রঙ্গপুর সাহিত্য পরিষদ পত্রিকা (১৯০৫), রঙ্গপুর দিক প্রকাশ (১৮৬১), উত্তর বাংলা (১৯৬০), প্রভাতী (১৯৫৫)।

লোকসংস্কৃতি পালাগান, যোগীর গান, উপাখ্যান, ছোকরা নাচানী গান, গাছের বিয়ের গীত, ব্যাঙ বিয়ের গীত, গোয়ালীর গান, হুদুমার গীত, পুঁথিপাঠ, পালাগান, লালন গীতি, ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালী, হাসন রাজার গান, আববাসউদ্দিনের গান, মুর্শিদি, মারফতি, দেহতত্ত্ব, মন্দিরে হরিসভা, ছড়া, কথা, প্রবাদ, প্রবচন।

দর্শনীয় স্থান তাজহাট জমিদার বাড়ী (রংপুর সদর), পীরগাছা জমিদার বাড়ী, ফণীভূষণ মজুমদারের জমিদার বাড়ি, পায়রা চত্তর, ভাঙ্গনি মসজিদ, মিঠাপুকুর মসজিদ, চন্ডীপুর মসজিদ, কেরামতিয়া তিন গম্বুজ মসজিদ (রংপুর), ত্রিবিগ্রহ মন্দির, ভিন্ন জগৎ বিনোদন পার্ক, শাহ ইসমাইল গাজীর (রহ.) দরগাহ (কাটাদুয়ার), পায়রাবন্দ বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র (মিঠাপুকুর)।  [আবদুস সাত্তার]

আরো দেখুন   সংশ্লিষ্ট উপজেলা।

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; রংপুর জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; রংপুর জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।