স্টেডিয়াম: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
২ নং লাইন: | ২ নং লাইন: | ||
'''স্টেডিয়াম''' চতুর্দিক গ্যালারি বেষ্টিত পরিকল্পিত ক্রীড়াঙ্গণ। স্টেডিয়ামের সাথে যুক্ত থাকে একটি মাঠ অথবা আংশিক মঞ্চ যেখানে দর্শকগণ দাঁড়িয়ে অথবা বসে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারে। ‘স্টেডিয়াম’ শব্দটি গ্রিক শব্দ stadion শব্দ থেকে এসেছে। এর শাব্দিক অর্থ হলো ২০০ মিটার দূরত্ব। প্রাচীন গ্রিসে শব্দটি প্রথম প্রচলন হয়। প্রাচীন গ্রিক অলিম্পিক উৎসব একটি দৌড় প্রতিযোগিতার বিষয় দিয়ে শুরু হয়। যার দৈর্ঘ্য ছিল অলিম্পিয়াড স্টেডিয়ামের দৈর্ঘ্যের সমান। তখন থেকেই স্টেডিয়াম কথাটি প্রচলিত হয়ে আসছে। | '''স্টেডিয়াম''' চতুর্দিক গ্যালারি বেষ্টিত পরিকল্পিত ক্রীড়াঙ্গণ। স্টেডিয়ামের সাথে যুক্ত থাকে একটি মাঠ অথবা আংশিক মঞ্চ যেখানে দর্শকগণ দাঁড়িয়ে অথবা বসে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারে। ‘স্টেডিয়াম’ শব্দটি গ্রিক শব্দ stadion শব্দ থেকে এসেছে। এর শাব্দিক অর্থ হলো ২০০ মিটার দূরত্ব। প্রাচীন গ্রিসে শব্দটি প্রথম প্রচলন হয়। প্রাচীন গ্রিক অলিম্পিক উৎসব একটি দৌড় প্রতিযোগিতার বিষয় দিয়ে শুরু হয়। যার দৈর্ঘ্য ছিল অলিম্পিয়াড স্টেডিয়ামের দৈর্ঘ্যের সমান। তখন থেকেই স্টেডিয়াম কথাটি প্রচলিত হয়ে আসছে। | ||
[[Image:StadiumNationalCricketWorldCup2011.jpg|thumb|right|বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম (বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০১১-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মহড়া)]] | [[Image:StadiumNationalCricketWorldCup2011.jpg|thumb|right|400px|বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম (বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০১১-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মহড়া)]] | ||
যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ক্রমান্বয়ে খেলাধুলার অনুষ্ঠান আয়োজনে বিভিন্ন মহাদেশের ক্রীড়ামোদী জনগণের চাহিদার প্রতি খেয়াল রেখে বিভিন্ন দেশের রাজন্যবর্গ আধুনিক স্টেডিয়াম তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেন। আধুনিক যুগের প্রথম স্টেডিয়ামের নাম ‘পেনাথেনাইক স্টেডিয়াম’। যেখানে ১৮৭০ সালে অলিম্পিক গেমস্ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পরবর্তীকালে এই স্টেডিয়ামেই ১৮৭৫, ১৮৯৬, ১৯০৬ এবং ২০০৪ সালে অলিম্পিক গেমস্ অনুষ্ঠিত হয়। এই স্টেডিয়ামটি থেকেই ঐতিহাসিক গ্রিসের অলিম্পিক গেমসের সূচনা হয়েছিল। | যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ক্রমান্বয়ে খেলাধুলার অনুষ্ঠান আয়োজনে বিভিন্ন মহাদেশের ক্রীড়ামোদী জনগণের চাহিদার প্রতি খেয়াল রেখে বিভিন্ন দেশের রাজন্যবর্গ আধুনিক স্টেডিয়াম তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেন। আধুনিক যুগের প্রথম স্টেডিয়ামের নাম ‘পেনাথেনাইক স্টেডিয়াম’। যেখানে ১৮৭০ সালে অলিম্পিক গেমস্ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পরবর্তীকালে এই স্টেডিয়ামেই ১৮৭৫, ১৮৯৬, ১৯০৬ এবং ২০০৪ সালে অলিম্পিক গেমস্ অনুষ্ঠিত হয়। এই স্টেডিয়ামটি থেকেই ঐতিহাসিক গ্রিসের অলিম্পিক গেমসের সূচনা হয়েছিল। | ||
১০:৫৩, ২৪ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
স্টেডিয়াম চতুর্দিক গ্যালারি বেষ্টিত পরিকল্পিত ক্রীড়াঙ্গণ। স্টেডিয়ামের সাথে যুক্ত থাকে একটি মাঠ অথবা আংশিক মঞ্চ যেখানে দর্শকগণ দাঁড়িয়ে অথবা বসে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারে। ‘স্টেডিয়াম’ শব্দটি গ্রিক শব্দ stadion শব্দ থেকে এসেছে। এর শাব্দিক অর্থ হলো ২০০ মিটার দূরত্ব। প্রাচীন গ্রিসে শব্দটি প্রথম প্রচলন হয়। প্রাচীন গ্রিক অলিম্পিক উৎসব একটি দৌড় প্রতিযোগিতার বিষয় দিয়ে শুরু হয়। যার দৈর্ঘ্য ছিল অলিম্পিয়াড স্টেডিয়ামের দৈর্ঘ্যের সমান। তখন থেকেই স্টেডিয়াম কথাটি প্রচলিত হয়ে আসছে।
যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ক্রমান্বয়ে খেলাধুলার অনুষ্ঠান আয়োজনে বিভিন্ন মহাদেশের ক্রীড়ামোদী জনগণের চাহিদার প্রতি খেয়াল রেখে বিভিন্ন দেশের রাজন্যবর্গ আধুনিক স্টেডিয়াম তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেন। আধুনিক যুগের প্রথম স্টেডিয়ামের নাম ‘পেনাথেনাইক স্টেডিয়াম’। যেখানে ১৮৭০ সালে অলিম্পিক গেমস্ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পরবর্তীকালে এই স্টেডিয়ামেই ১৮৭৫, ১৮৯৬, ১৯০৬ এবং ২০০৪ সালে অলিম্পিক গেমস্ অনুষ্ঠিত হয়। এই স্টেডিয়ামটি থেকেই ঐতিহাসিক গ্রিসের অলিম্পিক গেমসের সূচনা হয়েছিল।
বিশ্বব্যাপী খেলাধুলা চর্চা বেড়ে যাওয়ার ফলে স্টেডিয়ামের প্রয়োজন দেখা দেয়। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ ক্রীড়ার প্রতি গুরুত্ব প্রদান করে আধুনিক, বৃহৎ ও উন্নত শৈলীর স্টেডিয়াম নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। উন্মুক্ত স্টেডিয়াম নির্মাণের পাশাপাশি ছাদওয়ালা ‘ডোম’ স্টেডিয়ামও নির্মিত হয়। এই স্টেডিয়ামগুলি সাধারণত অইটডোর বা বহিরাঙ্গন খেলার জন্য নির্মিত হয়। অনেকক্ষেত্রে ‘স্টেডিয়াম’ শব্দটির ব্যবহার কিছু খেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত নাম হিসাবেও ব্যবহূত হয়। যেমন- ফুটবল এসোসিয়েশন, আমেরিকান ফুটবল, বেসবল, লীগ ফুটবল, ক্রিকেট, রাগবী এবং অন্য বড় মাঠ সমৃদ্ধ খেলার সঙ্গে কিছু খেলার জন্য স্টেডিয়াম ভিন্ন অর্থে ব্যবহূত হতে দেখা যায়। যেমন- আমেরিকান বাস্কেটবল খেলার জন্য যে স্টেডিয়ামটি ব্যবহূত হয় তাকে ইনডোর স্টেডিয়াম বলে।
স্টেডিয়ামের প্রকারভেদ বিভিন্ন ধরনের খেলার জন্য বিভিন্ন আকার ও আকৃতির স্টেডিয়ামের প্রয়োজন হয়। আধুনিক যুগে এমন অনেক খেলা আছে যা একাধারে আউটডোর এবং ইনডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। তবে বেশকিছু খেলা আছে যার জন্য বিশালাকার বা বড় মাপের স্টেডিয়াম প্রয়োজন এবং এই খেলাগুলি সাধারণত আউটডোরে বা বহিরাঙ্গনে হয়ে থাকে। খেলা আয়োজনের দিকদিয়ে স্টেডিয়ামগুলিকে দুটি শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়: (১) আউটডোর স্টেডিয়াম এবং (২) ইনডোর স্টেডিয়াম।
আউটডোর স্টেডিয়াম এই স্টেডিয়ামে সাধারণত ফুটবল, ক্রিকেট, অ্যাথলেটিকস্, গলফ, শ্যুটিং, আরচ্যারি, হর্স-রাইডিং, বেসবল, হকি, সাইক্লিং, সুইমিং, রাগবী ইত্যাদি খেলাগুলি অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বিশেষকরে বড় ধরনের ক্রীড়া অনুষ্ঠানসমুহ যেমন বিশ্ব অলিম্পিক, বিশ্বকাপ ফুটবল ও ক্রিকেট প্রতিযোগীতাসহ বিভিন্ন খেলার আকর্ষণীয় উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। এছাড়াও কোন কোন ক্ষেত্রে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠান, বিভিন্ন দিবসের কুচকাওয়াজ, সঙ্গীতানুষ্ঠান এবং বিশেষ ব্যক্তিগণকে সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানের হয়ে থাকে।
ইনডোর স্টেডিয়াম যেসব খেলা অনুষ্ঠিত হতে স্বল্প পরিসর জায়গা লাগে সেসব খেলা সাধারণত ইনডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। ভলিবল, বাস্কেটবল, জিমন্যাসটিকস্, ওয়েট-লিফটিং, রেসলিং, বক্সিং, হ্যান্ডবল, বোলিং, ফেন্সিং, বিলিয়ার্ড ও স্নুকার, জুডো, কারাতে, তায়কোয়ানডো, উশু, বডি-বিল্ডিং, ক্যারম, কাবাডি ইত্যাদি খেলা ইনডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বর্তমানে বিশ্বের অনেক দেশ বৃহদাকায় ইনডোর নির্মাণ করায় সেখানে একই সঙ্গে ইনডোর এবং আউটডোর খেলা আয়োজিত হচ্ছে। সুতারাং এখন বলতে গেলে প্রায় সব খেলা আউটডোর এবং ইনডোরে সমভাবে খেলার ব্যবস্থা আছে।
ইদানীং বেশ কিছু খেলাকে বীচে অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। খোলা ও মসৃণ মাঠের ন্যায় বালুয়াড়ী বীচ বা সৈকতে খেলাধূলা আকর্ষণীয় রূপ দিতে এবং জনপ্রিয়তা বাড়াতে বীচ স্পোর্টস ফেডারেশন নামে ক্রীড়া সংগঠন বিশ্বব্যাপী কাজ করে যাচ্ছে। প্রায় বেশিরভাগ জনপ্রিয় খেলাগুলিকে বীচে অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা নিয়ে ইতোমধ্যে বেশকিছু আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০০৯ সালে এশিয়ান বীচ গেমস নামে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে কাবাডি, ফুটবল, ক্রিকেটসহ বেশকিছু জনপ্রিয় খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বীচ এখন আউটডোর স্টেডিয়াম হিসাবে পরিগণিত।
এমন অনেক খেলা বিশ্ব অলিম্পিকে অন্তর্ভুক্ত যা বড় বড় নদী, সমুদ্রের নিকটবর্তী উপকুল বা বড় বড় লেকে অনুষ্ঠিত হয়। যেমন: রোইং বা নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা। এর অলিম্পিক নাম হলো সেইলিং। সেইলিং এর বেশ কটি ভিন্ন ভিন্ন বিষয় আছে। যাতে প্রতিযোগিরা কখনও দূরপাল্লার এবং কখনও নিকট পাল্লার প্রতিযোগিায় অংশগ্রহণ করে থাকে। এছাড়াও রয়েছে এক থেকে একাধিক প্রতিযোগীর অংশগ্রহণে প্রতিযোগিতা। সমুদ্র, নদী বা লেকে অনুষ্ঠিত এই খেলাগুলি আউটডোর খেলার অন্তর্ভুক্ত। তবে এ খেলাগুলি যেখানে অনুষ্ঠিত হয় সে জায়গাকে কি স্টেডিয়াম বলা যাবে তার কোন বিশেষ কথা আজও জানা যায় নি। যে খেলা যেখানে অনুষ্ঠিত হয় সেটা ওই খেলার ভেন্যু। তাই সমুদ্র, নদী বা হ্রদগুলি এক একটি ভেন্যু। আর খেলার ভেন্যুর অন্য নাম স্টেডিয়াম। সে হিসেবে ঐগুলিও স্টেডিয়ামের আওতায় পড়ে।
বিশ্বের বিখ্যাত স্টেডিয়ামসমুহ বিশ্ব অলিম্পিকসহ বিশ্ব জুড়ে বিভিন্ন খেলা আয়োজনকে সুন্দর ও স্বার্থক করার জন্য উন্নত দেশগুলির সাথে সাথে উন্নয়নশীল অনেক দেশ ক্রীড়া চর্চা ও ক্রীড়ার পৃষ্ঠপোষকতা করার লক্ষ্যে সুন্দর, আকর্ষণীয় ও বৃহদাকার স্টেডিয়াম নির্মাণ করেছে। বর্তমানে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শুধু বিনোদনের মাধ্যম না; এটা আয়োজক দেশের সম্মান, ব্যবসাবাণিজ্য, পর্যটন বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত। তাই আন্তর্জাতিক খেলার আয়োজক হিসাবে কোন দেশ বিশ্বের সকল শ্রেণির মানুষের কাছে উপস্থানের উপায় হিসাবে সুন্দর ও আকর্ষণীয় স্টেডিয়াম নির্মাণ করে থাকে। লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, বিশ্ব অলিম্পিকের যাত্রালগ্ন থেকে অদ্যাবধি আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, ল্যাটিন আমেরিকা, এশিয়া ও আফ্রিকাতে খেলা আয়োজনের জন্য সুন্দর ও আকর্ষণীয় স্টেডিয়াম নির্মিত হয়েছে। যার বিশেষ বিশেষ কয়েকটির নাম হলো: কালাসাল স্টেডিয়াম (গ্রিস), স্ট্রাহোব স্টেডিয়াম (চেক রিপাবলিক), পিয়ং ইয়ং স্টেডিয়াম (উত্তর কোরিয়া), সল্ট লেইক স্টেডিয়াম (কলকাতা), ইডেন গার্ডেন (কলকাতা), বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম (ঢাকা, বাংলাদেশ), শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম (ঢাকা, বাংলাদেশ), এম.এ আজিজ স্টেডিয়াম (চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ), এস্তাদিয়ো আজতেকা (মক্সিকো সিটি), মিশিগান স্টেডিয়াম (আমেরিকা), বিভার স্টেডিয়াম (পনসিলভিনিয়া, আমেরিকা), ওহাইও স্টেডিয়াম (কলম্বো, আমেরিকা), কায়রো স্টেডিয়াম (মিশর), মেলবোর্ন ক্রিকেট স্টেডিয়াম (অস্ট্রেলিয়া), ক্যাম্প ন্যু স্টেডিয়াম (বার্সেলোনা, স্পেন), স্তাদিও দো মারকোনা (রিও ডি জেনেরিও, ব্রাজিল), স্যানফোর্ট স্টেডিয়াম (গ্রিস), উম্বলি স্টেডিয়াম (লন্ডন), আতাদী স্টেডিয়াম (ইরান), কোকাকোলা ডোম (দক্ষিণ আফ্রিকা), বেইজিং ন্যাশনাল স্টেডিয়াম (চীন), ইন্দিরা গান্ধী এরিনা (ভারত), এশিয়া ওয়ার্ল্ড এরিনা (হংকং), টোকিও মেট্রোপলিটান জিমনেশিয়াম (জাপান), সিঙ্গাপুর ইনডোর স্টেডিয়াম (সিঙ্গাপুর), অলিম্পিক জিমন্যাসটিকস্ এরিনা (দক্ষিণ কোরিয়া), লর্ডস (ইংল্যান্ড), উইনা স্টার অ্যালে (অস্ট্রিয়া), জাগরেব এরিনা (ক্রোয়েশিয়া), প্যালাইস অমনি স্পোর্ট ডি প্যারিস (ফ্রান্স), ল্যাংসেস এরিনা (জার্মানি), অলিম্পিক এরিনা (ইতালি), হেলেন স্টেদিও (সুইজারল্যান্ড), আলস্ কোর্ট (লন্ডন)।
স্টেডিয়াম ও দর্শক ক্রীড়ানুষ্ঠান উপভোগ করে দর্শক। দর্শক উপস্থিতি স্টেডিয়ামের সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং ক্রীড়ানুষ্ঠানকে সার্থক করে তোলে। তাই স্টেডিয়ামে দর্শক উপস্থিতি একান্ত কাম্য। স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকদের মধ্যে প্রকারভেদ রয়েছে। যেমন অফিসিয়াল দর্শক, সাপোর্টার বা সমর্থক, নিয়মিত দর্শক এবং আমন্ত্রিত অতিথি দর্শক।
অফিসিয়াল দর্শকরা গেমস বা খেলাধুলার আয়োজক হিসাবে কাজ করেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তা বা স্পোর্টস ফেডারেশনের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাকর্মচারীরা এই কাজে যুক্ত থাকেন। তাই তারা এক ধরনের দর্শকের ভুমিকা পালন করে থাকেন। এছাড়াও থাকেন খেলা বা প্রতিযোগিতা সম্পর্কে খবর সংগ্রহের জন্য প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ। তারাও দর্শক হয়ে মাঠে উপস্থিত থাকেন। খেলার বিচারক মন্ডলীরাও অফিসিয়াল দর্শক হিসেবে উপস্থিত থাকেন।
সাপোর্টার বা সমর্থক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত খেলা খেলা দেখতে প্রচুর সমর্থক মাঠে আসে। তারা তাদের সমর্থিত দলকে উৎসাহ প্রদানের মাধ্যমে নিজেদের বিনোদন লাভে অংশ নেয়া এবং দলের জয়লাভে নানাভাবে খেলোয়াড়দের উৎসাহ দেয়। এই শ্রেণির দর্শকরা ক্লাবের পক্ষ থেকে পাস সংগ্রহের মাধ্যমে নতুবা নিজেরা টিকেট কিনে নিয়মিত মাঠে আসেন। নিজ দলের খেলা থাকলে আগে মাঠে প্রবেশ করে সুবিধাজনক স্থানে আসন দখল করে খেলা উপভোগ করে থাকেন। পছন্দের দলকে সাপোর্ট দিতে রঙিন পোশাক পরে, দলীয় ব্যানার, বাঁশি, গালে উল্কি একে মাঠে প্রবেশ করেন।
নিয়মিত দর্শক এই ধরনের দর্শকরা সাধারণ দর্শক হিসাবে নিয়মিত খেলা দেখে। এদের কোন নির্দিষ্ট দল নেই। বরং খেলা দেখাই তাদের নেশা। এইসব দর্শক নির্দিষ্ট গ্যালারিতে অবস্থান নেয় যেখানে কোন দলের সমর্থকরা থাকেনা। নির্মল বিনোদন লাভের আশায় এইসব দর্শক বলতে গেলে প্রায় সব ধরনের খেলা পছন্দ করে এবং উপস্থিত হয়ে খেলা দেখে।
আমন্ত্রিত অতিথি দর্শকরা ভি.আই.পি দর্শক নামে অভিহিত করা হয়। এইসব দর্শক অবশ্য নিয়মিত আসেন না। কোন বিশেষ খেলা বা প্রদর্শণীতে তারা আমন্ত্রিত হয়ে স্টেডিয়ামে উপস্থিত হন। ক্রিকেট খেলা, ফুটবল ফাইনাল, উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, সমাপনী অনুষ্ঠান কিংবা কোন রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানের আগমন উপলক্ষে আকর্ষণীয় অনুষ্ঠানে স্টেডিয়ামে আমন্ত্রিত দর্শক দেখতে পাওয়া যায়। আমন্ত্রিত অতিথি দর্শকের সারিতে বিদেশি কুটনৈতিক মিশনের কর্মকর্তাসহ বিশেষ বিশেষ সরকারি অফিসের কর্মকর্তা ও পরিবারবর্গ স্টেডিয়ামে উপস্থিত থাকেন। [শফিক আনোয়ার]