সোনাকান্দা দুর্গ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
'''সোনাকান্দা দুর্গ''' শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্বতীরে নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দরে অবস্থিত একটি মুগল জলদুর্গ। হাজীগঞ্জ দুর্গের প্রায় বিপরীত দিকে এ দুর্গের অবস্থান। নদীপথে ঢাকার সাথে সংযোগকারী গুরুত্বপূর্ণ নদীপথগুলির নিরাপত্তা বিধানের জন্য মুগলগণ কতকগুলি জলদুর্গ নির্মাণ করেছিলেন, সোনাকান্দা দুর্গ তার অন্যতম। | '''সোনাকান্দা দুর্গ''' শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্বতীরে নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দরে অবস্থিত একটি মুগল জলদুর্গ। হাজীগঞ্জ দুর্গের প্রায় বিপরীত দিকে এ দুর্গের অবস্থান। নদীপথে ঢাকার সাথে সংযোগকারী গুরুত্বপূর্ণ নদীপথগুলির নিরাপত্তা বিধানের জন্য মুগলগণ কতকগুলি জলদুর্গ নির্মাণ করেছিলেন, সোনাকান্দা দুর্গ তার অন্যতম। | ||
[[Image:SonakandaFort.jpg|thumb|400px|সোনাকান্দা দুর্গ, নারায়ণগঞ্জ]] | [[Image:SonakandaFort.jpg|thumb|400px|সোনাকান্দা দুর্গ, নারায়ণগঞ্জ]] | ||
[[প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর|প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর]]-এর অধীনে বেশ কয়েকবার এ দুর্গের সংস্কার কার্য সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিরক্ষা দেওয়াল এবং শক্তিশালী কামান স্থাপনার জন্য উত্তোলিত মঞ্চটি এখনও পূর্বের অবস্থায় বিদ্যমান রয়েছে। চতুর্ভুজাকৃতির এ দুর্গ আয়তনে ৮৬.৫৬ মি ৫৭.০ মি এবং ১.০৬ মি পুরু দেওয়াল দ্বারা পরিবেষ্টিত যার উচ্চতা ৩.০৫ মি। দেওয়ালের তলদেশ নিরেটভাবে তৈরি। বৃত্তাকার কামান স্থাপনা মঞ্চটির পশ্চিম দিকে সিঁড়ি আছে, যা উত্তোলিত মঞ্চ পর্যন্ত বিস্তৃত। এ উঁচু মঞ্চে প্রবেশের জন্য পাঁচ খাঁজবিশিষ্ট খিলানযুক্ত প্রবেশ পথ রয়েছে। কামান স্থাপনার উঁচু মঞ্চে শক্তিশালী কামান নদীপথে আক্রমণকারীদের দিকে তাক করা থাকত। এটি মুগল জলদুর্গের একটি নতুন বৈশিষ্ট্য। | |||
মঞ্চটিতে দুটি বৃত্তাকার অংশ আছে, অভ্যন্তরীণ এবং বাইরের অংশটি যথাক্রমে ১৫.৭০ মি এবং ১৯.৩৫ মি ব্যাস বিশিষ্ট। মঞ্চটি ৬.০৯ মি উঁচু এবং বেষ্টনীপ্রাচীর দ্বারা পরিবেষ্টিত। দুর্গ প্রাচীরের পশ্চিম পার্শ্বের কোণার বুরুজগুলি পূর্বপার্শ্বস্থ বুরুজগুলি অপেক্ষা অধিক প্রশস্ত। পূর্ব বুরুজের ব্যাস ৪.২৬ মিটার এবং পশ্চিম অংশের দুটি বুরুজের ব্যাস ৬.৮৫ মিটার। | মঞ্চটিতে দুটি বৃত্তাকার অংশ আছে, অভ্যন্তরীণ এবং বাইরের অংশটি যথাক্রমে ১৫.৭০ মি এবং ১৯.৩৫ মি ব্যাস বিশিষ্ট। মঞ্চটি ৬.০৯ মি উঁচু এবং বেষ্টনীপ্রাচীর দ্বারা পরিবেষ্টিত। দুর্গ প্রাচীরের পশ্চিম পার্শ্বের কোণার বুরুজগুলি পূর্বপার্শ্বস্থ বুরুজগুলি অপেক্ষা অধিক প্রশস্ত। পূর্ব বুরুজের ব্যাস ৪.২৬ মিটার এবং পশ্চিম অংশের দুটি বুরুজের ব্যাস ৬.৮৫ মিটার। | ||
১২ নং লাইন: | ১১ নং লাইন: | ||
দুর্গটিতে প্রবেশের জন্য উত্তর দিকে একটি প্রবেশদ্বার রয়েছে। খিলানযুক্ত এ প্রবেশপথ একটি আয়তাকার ফ্রেমে আবদ্ধ এবং উভয়দিক পলেস্তরায় বিভিন্ন আকৃতির প্যানেল নকশায় সজ্জিত। প্রবেশপথের মূল খিলান ছিল চতুষ্কেন্দ্রিক এবং চার কোণায় রয়েছে চারটি পার্শ্ববুরুজ। হাজীগঞ্জ এবং ইদ্রাকপুরের দুর্গ প্রাচীরের পার্শ্ববুরুজগুলির সাথে এ দুর্গের পার্শ্ববুরুজগুলির মিল নেই। সোনাকান্দা দুর্গের পার্শ্ববুরুজগুলি অষ্টভুজাকার। | দুর্গটিতে প্রবেশের জন্য উত্তর দিকে একটি প্রবেশদ্বার রয়েছে। খিলানযুক্ত এ প্রবেশপথ একটি আয়তাকার ফ্রেমে আবদ্ধ এবং উভয়দিক পলেস্তরায় বিভিন্ন আকৃতির প্যানেল নকশায় সজ্জিত। প্রবেশপথের মূল খিলান ছিল চতুষ্কেন্দ্রিক এবং চার কোণায় রয়েছে চারটি পার্শ্ববুরুজ। হাজীগঞ্জ এবং ইদ্রাকপুরের দুর্গ প্রাচীরের পার্শ্ববুরুজগুলির সাথে এ দুর্গের পার্শ্ববুরুজগুলির মিল নেই। সোনাকান্দা দুর্গের পার্শ্ববুরুজগুলি অষ্টভুজাকার। | ||
দুর্গ নির্মাণের তারিখ সম্বলিত কোন [[শিলালিপি|শিলালিপি]] নেই। তবে সাধারণত মনে করা হয় যে, মীর জুমলার সময় দুর্গটি নির্মিত। কিন্তু এ মতের স্বপক্ষে কোন প্রমাণ নেই। ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার অন্যান্য মুগল জলদুর্গগুলির নির্মাণরীতির সাথে মিল থাকায় এটিকে সতেরো শতকের বলে মনে করা হয়। | দুর্গ নির্মাণের তারিখ সম্বলিত কোন [[শিলালিপি|শিলালিপি]] নেই। তবে সাধারণত মনে করা হয় যে, মীর জুমলার সময় দুর্গটি নির্মিত। কিন্তু এ মতের স্বপক্ষে কোন প্রমাণ নেই। ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার অন্যান্য মুগল জলদুর্গগুলির নির্মাণরীতির সাথে মিল থাকায় এটিকে সতেরো শতকের বলে মনে করা হয়। [আয়শা বেগম] | ||
[আয়শা বেগম] | |||
[[en:Sonakanda Fort]] | [[en:Sonakanda Fort]] | ||
[[en:Sonakanda Fort]] | [[en:Sonakanda Fort]] |
০৭:৩২, ২৪ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
সোনাকান্দা দুর্গ শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্বতীরে নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দরে অবস্থিত একটি মুগল জলদুর্গ। হাজীগঞ্জ দুর্গের প্রায় বিপরীত দিকে এ দুর্গের অবস্থান। নদীপথে ঢাকার সাথে সংযোগকারী গুরুত্বপূর্ণ নদীপথগুলির নিরাপত্তা বিধানের জন্য মুগলগণ কতকগুলি জলদুর্গ নির্মাণ করেছিলেন, সোনাকান্দা দুর্গ তার অন্যতম।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর-এর অধীনে বেশ কয়েকবার এ দুর্গের সংস্কার কার্য সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিরক্ষা দেওয়াল এবং শক্তিশালী কামান স্থাপনার জন্য উত্তোলিত মঞ্চটি এখনও পূর্বের অবস্থায় বিদ্যমান রয়েছে। চতুর্ভুজাকৃতির এ দুর্গ আয়তনে ৮৬.৫৬ মি ৫৭.০ মি এবং ১.০৬ মি পুরু দেওয়াল দ্বারা পরিবেষ্টিত যার উচ্চতা ৩.০৫ মি। দেওয়ালের তলদেশ নিরেটভাবে তৈরি। বৃত্তাকার কামান স্থাপনা মঞ্চটির পশ্চিম দিকে সিঁড়ি আছে, যা উত্তোলিত মঞ্চ পর্যন্ত বিস্তৃত। এ উঁচু মঞ্চে প্রবেশের জন্য পাঁচ খাঁজবিশিষ্ট খিলানযুক্ত প্রবেশ পথ রয়েছে। কামান স্থাপনার উঁচু মঞ্চে শক্তিশালী কামান নদীপথে আক্রমণকারীদের দিকে তাক করা থাকত। এটি মুগল জলদুর্গের একটি নতুন বৈশিষ্ট্য।
মঞ্চটিতে দুটি বৃত্তাকার অংশ আছে, অভ্যন্তরীণ এবং বাইরের অংশটি যথাক্রমে ১৫.৭০ মি এবং ১৯.৩৫ মি ব্যাস বিশিষ্ট। মঞ্চটি ৬.০৯ মি উঁচু এবং বেষ্টনীপ্রাচীর দ্বারা পরিবেষ্টিত। দুর্গ প্রাচীরের পশ্চিম পার্শ্বের কোণার বুরুজগুলি পূর্বপার্শ্বস্থ বুরুজগুলি অপেক্ষা অধিক প্রশস্ত। পূর্ব বুরুজের ব্যাস ৪.২৬ মিটার এবং পশ্চিম অংশের দুটি বুরুজের ব্যাস ৬.৮৫ মিটার।
দুর্গটিতে দুটি প্রধান অংশ আছে। একটি অংশ বিশাল আয়তনের মাটির ঢিবিসহকারে গঠিত দুর্গপ্রাচীর দ্বারা সুরক্ষিত, যার মধ্যে গোলা নিক্ষেপের জন্য বহুসংখ্যক প্রশস্ত-অপ্রশস্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র আছে। অপর অংশটি সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ, যা দুর্গের অভ্যন্তরে পশ্চিমাংশে নির্মিত। সুরক্ষিত দেওয়ালের অভ্যন্তরে উঁচু মঞ্চটি ব্যতীত আর কোন স্থায়ী ইমারতের সন্ধান পাওয়া যায় নি। দুর্গপ্রাচীরের সর্বত্র গুলি ছোড়ার ব্যবস্থাসহ মারলোন দ্বারা সজ্জিত; এ মারলোনগুলির গড় উচ্চতা ১ মিটার।
দুর্গটিতে প্রবেশের জন্য উত্তর দিকে একটি প্রবেশদ্বার রয়েছে। খিলানযুক্ত এ প্রবেশপথ একটি আয়তাকার ফ্রেমে আবদ্ধ এবং উভয়দিক পলেস্তরায় বিভিন্ন আকৃতির প্যানেল নকশায় সজ্জিত। প্রবেশপথের মূল খিলান ছিল চতুষ্কেন্দ্রিক এবং চার কোণায় রয়েছে চারটি পার্শ্ববুরুজ। হাজীগঞ্জ এবং ইদ্রাকপুরের দুর্গ প্রাচীরের পার্শ্ববুরুজগুলির সাথে এ দুর্গের পার্শ্ববুরুজগুলির মিল নেই। সোনাকান্দা দুর্গের পার্শ্ববুরুজগুলি অষ্টভুজাকার।
দুর্গ নির্মাণের তারিখ সম্বলিত কোন শিলালিপি নেই। তবে সাধারণত মনে করা হয় যে, মীর জুমলার সময় দুর্গটি নির্মিত। কিন্তু এ মতের স্বপক্ষে কোন প্রমাণ নেই। ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার অন্যান্য মুগল জলদুর্গগুলির নির্মাণরীতির সাথে মিল থাকায় এটিকে সতেরো শতকের বলে মনে করা হয়। [আয়শা বেগম]