রায়, কামিনী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''রায়, কামিনী '''(১৮৬৪-১৯৩৩) ''' '''কবি ও সমাজকর্মী। ১৮৬৪ সালের ১২ অক্টোবর বাকেরগঞ্জের বাসন্ডা গ্রামে তাঁর জন্ম। তাঁর পিতা চন্ডীচরণ সেন ছিলেন একজন ঐতিহাসিক  [[উপন্যাস|উপন্যাস]] লেখক ও পেশায় বিচারক। কামিনী রায় ছোটবেলা থেকেই ছিলেন মেধাবী, ভাবুক ও কল্পনাপ্রবণ। তিনি কলকাতার বেথুন ফিমেল স্কুল থেকে এন্ট্রান্স (১৮৮০),  [[বেথুন কলেজ|বেথুন কলেজ]] থেকে এফএ (১৮৮৩) এবং সংস্কৃতে অনার্সসহ বিএ (১৮৮৬) পাস করেন। একই বছর তিনি বেথুনে শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন এবং পরে অধ্যাপক হন। ১৮৯৪ সালে স্ট্যাটিউটরি সিভিলিয়ান কেদারনাথ রায়ের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়।
[[Image:RayKamini.jpg|thumb|right|400px|কামিনী রায়]]
 
'''রায়, কামিনী '''(১৮৬৪-১৯৩৩) কবি ও সমাজকর্মী। ১৮৬৪ সালের ১২ অক্টোবর বাকেরগঞ্জের বাসন্ডা গ্রামে তাঁর জন্ম। তাঁর পিতা চন্ডীচরণ সেন ছিলেন একজন ঐতিহাসিক  [[উপন্যাস|উপন্যাস]] লেখক ও পেশায় বিচারক। কামিনী রায় ছোটবেলা থেকেই ছিলেন মেধাবী, ভাবুক ও কল্পনাপ্রবণ। তিনি কলকাতার বেথুন ফিমেল স্কুল থেকে এন্ট্রান্স (১৮৮০),  [[বেথুন কলেজ|বেথুন কলেজ]] থেকে এফএ (১৮৮৩) এবং সংস্কৃতে অনার্সসহ বিএ (১৮৮৬) পাস করেন। একই বছর তিনি বেথুনে শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন এবং পরে অধ্যাপক হন। ১৮৯৪ সালে স্ট্যাটিউটরি সিভিলিয়ান কেদারনাথ রায়ের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়।
কামিনী রায় মাত্র আট বছর বয়স থেকে কবিতা লেখা শুরু করেন। সাহিত্যচর্চার পাশাপশি তিনি সাংস্কৃতিক ও জনহিতকর, বিশেষত নারীকল্যাণমূলক কাজেও আত্মনিয়োগ করেন। তিনি নারীশ্রমিক তদন্ত কমিশনের অন্যতম সদস্য (১৯২২-২৩), বঙ্গীয় সাহিত্য সম্মেলনে সাহিত্য শাখার সভানেত্রী (১৯৩০) এবং  [[বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ|বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ]]-এর সহসভাপতি (১৯৩২-৩৩) ছিলেন। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ আলো ও ছায়া প্রকাশিত হয় ১৮৮৯ সালে;  [[বন্দ্যোপাধ্যায়, হেমচন্দ্র|হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়]] এর ভূমিকা লিখে দেন। তাঁর অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ হলো: নির্মাল্য (১৮৯১), পৌরাণিকী''' '''(১৮৯৭), গুঞ্জন (শিশুকাব্য, ১৯০৫), ধর্ম্মপুত্র (অনুবাদ, ১৯০৭), মাল্য ও নির্মাল্য (১৯১৩), অশোকসঙ্গীত (সনেট, ১৯১৪), অম্বা (নাটক, ১৯১৫), বালিকা শিক্ষার আদর্শ (১৯১৮), ঠাকুরমার চিঠি (১৯২৪), দীপ ও ধূপ (১৯২৯), জীবনপথে (সনেট, ১৯৩০)।
 
[[Image:RayKamini.jpg|thumb|right|কামিনী রায়]]


কামিনী রায় মাত্র আট বছর বয়স থেকে কবিতা লেখা শুরু করেন। সাহিত্যচর্চার পাশাপশি তিনি সাংস্কৃতিক ও জনহিতকর, বিশেষত নারীকল্যাণমূলক কাজেও আত্মনিয়োগ করেন। তিনি নারীশ্রমিক তদন্ত কমিশনের অন্যতম সদস্য (১৯২২-২৩), বঙ্গীয় সাহিত্য সম্মেলনে সাহিত্য শাখার সভানেত্রী (১৯৩০) এবং  [[বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ|বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ]]-এর সহসভাপতি (১৯৩২-৩৩) ছিলেন। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ আলো ও ছায়া প্রকাশিত হয় ১৮৮৯ সালে;  [[বন্দ্যোপাধ্যায়, হেমচন্দ্র|হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়]] এর ভূমিকা লিখে দেন। তাঁর অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ হলো: নির্মাল্য (১৮৯১), পৌরাণিকী (১৮৯৭), গুঞ্জন (শিশুকাব্য, ১৯০৫), ধর্ম্মপুত্র (অনুবাদ, ১৯০৭), মাল্য ও নির্মাল্য (১৯১৩), অশোকসঙ্গীত (সনেট, ১৯১৪), অম্বা (নাটক, ১৯১৫), বালিকা শিক্ষার আদর্শ (১৯১৮), ঠাকুরমার চিঠি (১৯২৪), দীপ ও ধূপ (১৯২৯), জীবনপথে (সনেট, ১৯৩০)।


১৯০৯ সালে কামিনী রায়ের স্বামিবিয়োগ ঘটে। স্বামীর এ অকাল মৃত্যু তাঁর ব্যক্তিজীবনের মতো সাহিত্যিক জীবনকেও গভীরভাবে প্রভাবিত করে। তবে তাঁর কবিতায় রবীন্দ্রনাথের প্রভাব সর্বাধিক। তিনি যেহেতু সংস্কৃতে পন্ডিত ছিলেন, সেহেতু সংস্কৃত সাহিত্যের বিষয় অবলম্বনে রচিত তাঁর কবিতাগুলি অপেক্ষাকৃত উৎকৃষ্ট মানের। তাঁর কবিতায় জীবনের সাধারণ ঘটনাবলি হূদয়ের সুকুমার অনুভূতির মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে। বাংলা সাহিত্যে অসাধারণ অবদানের জন্য তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগত্তারিণী পদক (১৯২৯) লাভ করেন। ১৯৩৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়।  [অনিরুদ্ধ কাহালি]
১৯০৯ সালে কামিনী রায়ের স্বামিবিয়োগ ঘটে। স্বামীর এ অকাল মৃত্যু তাঁর ব্যক্তিজীবনের মতো সাহিত্যিক জীবনকেও গভীরভাবে প্রভাবিত করে। তবে তাঁর কবিতায় রবীন্দ্রনাথের প্রভাব সর্বাধিক। তিনি যেহেতু সংস্কৃতে পন্ডিত ছিলেন, সেহেতু সংস্কৃত সাহিত্যের বিষয় অবলম্বনে রচিত তাঁর কবিতাগুলি অপেক্ষাকৃত উৎকৃষ্ট মানের। তাঁর কবিতায় জীবনের সাধারণ ঘটনাবলি হূদয়ের সুকুমার অনুভূতির মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে। বাংলা সাহিত্যে অসাধারণ অবদানের জন্য তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগত্তারিণী পদক (১৯২৯) লাভ করেন। ১৯৩৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়।  [অনিরুদ্ধ কাহালি]

০৬:৪৫, ৯ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

কামিনী রায়

রায়, কামিনী (১৮৬৪-১৯৩৩) কবি ও সমাজকর্মী। ১৮৬৪ সালের ১২ অক্টোবর বাকেরগঞ্জের বাসন্ডা গ্রামে তাঁর জন্ম। তাঁর পিতা চন্ডীচরণ সেন ছিলেন একজন ঐতিহাসিক  উপন্যাস লেখক ও পেশায় বিচারক। কামিনী রায় ছোটবেলা থেকেই ছিলেন মেধাবী, ভাবুক ও কল্পনাপ্রবণ। তিনি কলকাতার বেথুন ফিমেল স্কুল থেকে এন্ট্রান্স (১৮৮০),  বেথুন কলেজ থেকে এফএ (১৮৮৩) এবং সংস্কৃতে অনার্সসহ বিএ (১৮৮৬) পাস করেন। একই বছর তিনি বেথুনে শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন এবং পরে অধ্যাপক হন। ১৮৯৪ সালে স্ট্যাটিউটরি সিভিলিয়ান কেদারনাথ রায়ের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়।

কামিনী রায় মাত্র আট বছর বয়স থেকে কবিতা লেখা শুরু করেন। সাহিত্যচর্চার পাশাপশি তিনি সাংস্কৃতিক ও জনহিতকর, বিশেষত নারীকল্যাণমূলক কাজেও আত্মনিয়োগ করেন। তিনি নারীশ্রমিক তদন্ত কমিশনের অন্যতম সদস্য (১৯২২-২৩), বঙ্গীয় সাহিত্য সম্মেলনে সাহিত্য শাখার সভানেত্রী (১৯৩০) এবং  বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ-এর সহসভাপতি (১৯৩২-৩৩) ছিলেন। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ আলো ও ছায়া প্রকাশিত হয় ১৮৮৯ সালে;  হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় এর ভূমিকা লিখে দেন। তাঁর অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ হলো: নির্মাল্য (১৮৯১), পৌরাণিকী (১৮৯৭), গুঞ্জন (শিশুকাব্য, ১৯০৫), ধর্ম্মপুত্র (অনুবাদ, ১৯০৭), মাল্য ও নির্মাল্য (১৯১৩), অশোকসঙ্গীত (সনেট, ১৯১৪), অম্বা (নাটক, ১৯১৫), বালিকা শিক্ষার আদর্শ (১৯১৮), ঠাকুরমার চিঠি (১৯২৪), দীপ ও ধূপ (১৯২৯), জীবনপথে (সনেট, ১৯৩০)।

১৯০৯ সালে কামিনী রায়ের স্বামিবিয়োগ ঘটে। স্বামীর এ অকাল মৃত্যু তাঁর ব্যক্তিজীবনের মতো সাহিত্যিক জীবনকেও গভীরভাবে প্রভাবিত করে। তবে তাঁর কবিতায় রবীন্দ্রনাথের প্রভাব সর্বাধিক। তিনি যেহেতু সংস্কৃতে পন্ডিত ছিলেন, সেহেতু সংস্কৃত সাহিত্যের বিষয় অবলম্বনে রচিত তাঁর কবিতাগুলি অপেক্ষাকৃত উৎকৃষ্ট মানের। তাঁর কবিতায় জীবনের সাধারণ ঘটনাবলি হূদয়ের সুকুমার অনুভূতির মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে। বাংলা সাহিত্যে অসাধারণ অবদানের জন্য তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগত্তারিণী পদক (১৯২৯) লাভ করেন। ১৯৩৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়।  [অনিরুদ্ধ কাহালি]