ব্রতচারী আন্দোলন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
২৪ নং লাইন: | ২৪ নং লাইন: | ||
বাংলাদেশে ব্রতচারী আন্দোলন বাস্তবায়নের জন্য যেসব সংগঠন গড়ে উঠেছে সেসবের মধ্যে ফরিদপুর ব্রতচারী সমিতি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এছাড়া আরো কয়েকটি সংগঠন হলো: কুমিল্লা ব্রতচারী সমিতি, মাদারিপুর উচ্চ ইংরেজি ব্রতচারী সঙ্ঘ, পাংশা ব্রতচারী সঙ্ঘ, খুলনা জেলা ব্রতচারী, ঢাকা জেলা ব্রতচারী, ভাঙ্গা ব্রতচারী সঙ্ঘ, গোপালগঞ্জ মথুরালয় উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় ব্রতচারী সঙ্ঘ, শিবচর নন্দকুমার উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় ব্রতচারী সঙ্ঘ, ময়মনসিংহ জেলা ব্রতচারী উপসাধনা শিবির, সিরাজগঞ্জ সাবডিভিশন ব্রতচারী প্রভৃতি। সংগঠনের সদস্যরা বিভিন্ন শিক্ষা শিবিরে অংশ নিতেন এবং তাদের মান নিরূপণের জন্য পরীক্ষা গ্রহণেরও ব্যবস্থা ছিল। | বাংলাদেশে ব্রতচারী আন্দোলন বাস্তবায়নের জন্য যেসব সংগঠন গড়ে উঠেছে সেসবের মধ্যে ফরিদপুর ব্রতচারী সমিতি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এছাড়া আরো কয়েকটি সংগঠন হলো: কুমিল্লা ব্রতচারী সমিতি, মাদারিপুর উচ্চ ইংরেজি ব্রতচারী সঙ্ঘ, পাংশা ব্রতচারী সঙ্ঘ, খুলনা জেলা ব্রতচারী, ঢাকা জেলা ব্রতচারী, ভাঙ্গা ব্রতচারী সঙ্ঘ, গোপালগঞ্জ মথুরালয় উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় ব্রতচারী সঙ্ঘ, শিবচর নন্দকুমার উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় ব্রতচারী সঙ্ঘ, ময়মনসিংহ জেলা ব্রতচারী উপসাধনা শিবির, সিরাজগঞ্জ সাবডিভিশন ব্রতচারী প্রভৃতি। সংগঠনের সদস্যরা বিভিন্ন শিক্ষা শিবিরে অংশ নিতেন এবং তাদের মান নিরূপণের জন্য পরীক্ষা গ্রহণেরও ব্যবস্থা ছিল। | ||
ফরিদপুর ব্রতচারী সমিতির মুখপত্র হিসেবে ব্রতচারী বার্ত্তা নামে একটি মাসিক পত্রিকা প্রকাশিত হতো। এর প্রথম বর্ষ প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয় ১৯৩৪ সালের নভেম্বর মাসে। এটি ছিল ব্রতচারী আন্দোলন সম্বন্ধীয় একমাত্র পত্রিকা। এর সহকারী সম্পাদক ছিলেন মৌলবি দলিলউদ্দীন আহম্মদ (খানসাহেব)। ১৯৪১ সালে গুরুসদয় দত্তের মৃত্যুর পর ব্রতচারী আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়ে এবং এক সময় তা বন্ধ হয়ে যায়। | ফরিদপুর ব্রতচারী সমিতির মুখপত্র হিসেবে ব্রতচারী বার্ত্তা নামে একটি মাসিক পত্রিকা প্রকাশিত হতো। এর প্রথম বর্ষ প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয় ১৯৩৪ সালের নভেম্বর মাসে। এটি ছিল ব্রতচারী আন্দোলন সম্বন্ধীয় একমাত্র পত্রিকা। এর সহকারী সম্পাদক ছিলেন মৌলবি দলিলউদ্দীন আহম্মদ (খানসাহেব)। ১৯৪১ সালে গুরুসদয় দত্তের মৃত্যুর পর ব্রতচারী আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়ে এবং এক সময় তা বন্ধ হয়ে যায়। [সমবারু চন্দ্র মহন্ত] | ||
[সমবারু চন্দ্র মহন্ত] | |||
[[en:Bratachari Movement]] | [[en:Bratachari Movement]] |
০৫:৫৪, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
ব্রতচারী আন্দোলন বৈশ্বিক পরিসরে আত্মিক ও সামাজিক উৎকর্ষ সাধনের একটি ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা। বীরভূমে কর্মরত অবস্থায় গুরুসদয় দত্ত পরিচালিত শিক্ষাশিবিরের (ফেব্রুয়ারি ১৯৩১) পথ ধরে ১৯৩২ সালে এর সূচনা হয়। এই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল জাতি-ধর্ম-বর্ণ, স্ত্রী-পুরুষ ও বয়সনির্বিশেষে সব দেশের মানুষের মধ্যে একটা বৈশ্বিক নাগরিকত্ববোধ ও জাতীয়চেতনা প্রতিষ্ঠা করা। সঙ্ঘবদ্ধভাবে জাতীয় ও লোকসংস্কৃতি, বিশেষত লোকনৃত্য ও লোকসঙ্গীত চর্চার মাধ্যমে শরীর, মন ও আত্মাকে বিকশিত করা এবং দেশ ও মানবসেবায় সপ্রতিজ্ঞ হয়ে কাজ করা ছিল এই আন্দোলনের মুখ্য উদ্দেশ্য। এ লক্ষ্যে গুরুসদয় দত্ত ‘বাংলা ব্রতচারী সমিতি’ গঠন করেন। তাঁর প্রচেষ্টায় বাংলাদেশসহ অনেক স্থানে এ আন্দোলন ব্যাপক বিস্তার লাভ করে। এমনকি ভারতবর্ষের বাইরেও, বিশেষত ইউরোপে এ আন্দোলন বিশেষভাবে প্রশংসিত হয় এবং সেখানকার অনেকেই এতে অংশগ্রহণ করেন। এই আন্দোলনের সূত্রে ইউরোপ ও ভারতের মধ্যে একটা সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে বলেও অনেকে অভিমত ব্যক্ত করেন। তৎকালীন ইংরেজ সরকারেরও এর প্রতি সপ্রশংস সমর্থন ছিল। ব্রতচারী আন্দোলনের মূল কার্যালয় ছিল কলকাতার ১২ নং লাউডন স্ট্রিটে।
ব্রতচারিগণকে জ্ঞান, শ্রম, সত্য, ঐক্য ও আনন্দ এই পঞ্চব্রতে দীক্ষিত হয়ে চরিত্র গঠন ও দেশসেবায় আত্মোৎসর্গ করতে হতো। ব্রতচারী সাধনা চারটি পর্যায়ে বিভক্ত ছিল: চরিত্র, কৃত্য, সঙ্ঘ ও নৃত্য। ব্রতচারী হতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে নিম্নরূপ প্রতিজ্ঞা করতে হতো:
ব্রত লয়ে সাধব মোরা বাংলাদেশের কাজ
তরুণতার সজীব ধারা আনবো জীবন-মাঝ
চাই আমাদের শক্ত দেহ, মুক্ত উদার মন।
রীতিমতো পালবো মোরা মোদের প্রতিপণ\
ব্রতচারীকে আরও তিনটি পণ করতে হতো:
আমি বাংলাকে ভালবাসি
আমি বাংলার সেবা করবো
আমি বাংলার ব্রতচারী হব।
অখন্ড বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে ব্রতচারী সমিতি গড়ে উঠেছিল। তন্মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলা ব্রতচারী সমিতি, কালীঘাট উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় ব্রতচারী সঙ্ঘ (কলকাতা) উল্লেখযোগ্য। এছাড়া সর্বভারতীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সাউথ ইন্ডিয়া ব্রতচারী সোসাইটি এবং সর্বভারতীয় ব্রতচারী সমাজ।
বাংলাদেশে ব্রতচারী আন্দোলন বাস্তবায়নের জন্য যেসব সংগঠন গড়ে উঠেছে সেসবের মধ্যে ফরিদপুর ব্রতচারী সমিতি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এছাড়া আরো কয়েকটি সংগঠন হলো: কুমিল্লা ব্রতচারী সমিতি, মাদারিপুর উচ্চ ইংরেজি ব্রতচারী সঙ্ঘ, পাংশা ব্রতচারী সঙ্ঘ, খুলনা জেলা ব্রতচারী, ঢাকা জেলা ব্রতচারী, ভাঙ্গা ব্রতচারী সঙ্ঘ, গোপালগঞ্জ মথুরালয় উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় ব্রতচারী সঙ্ঘ, শিবচর নন্দকুমার উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় ব্রতচারী সঙ্ঘ, ময়মনসিংহ জেলা ব্রতচারী উপসাধনা শিবির, সিরাজগঞ্জ সাবডিভিশন ব্রতচারী প্রভৃতি। সংগঠনের সদস্যরা বিভিন্ন শিক্ষা শিবিরে অংশ নিতেন এবং তাদের মান নিরূপণের জন্য পরীক্ষা গ্রহণেরও ব্যবস্থা ছিল।
ফরিদপুর ব্রতচারী সমিতির মুখপত্র হিসেবে ব্রতচারী বার্ত্তা নামে একটি মাসিক পত্রিকা প্রকাশিত হতো। এর প্রথম বর্ষ প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয় ১৯৩৪ সালের নভেম্বর মাসে। এটি ছিল ব্রতচারী আন্দোলন সম্বন্ধীয় একমাত্র পত্রিকা। এর সহকারী সম্পাদক ছিলেন মৌলবি দলিলউদ্দীন আহম্মদ (খানসাহেব)। ১৯৪১ সালে গুরুসদয় দত্তের মৃত্যুর পর ব্রতচারী আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়ে এবং এক সময় তা বন্ধ হয়ে যায়। [সমবারু চন্দ্র মহন্ত]