নওয়াজিস খান: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(fix: </u>]])
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:Banglapedia]]
[[Category:Banglapedia]]
'''নওয়াজিস খান''' (১৭শ শতক)  মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের কবি। তাঁর রচিত [[১০১৩৬৮|গুলে বকাওলী]] '', ''গীতাবলী,'' ''বয়ানাত,'' ''প্রক্ষিপ্ত কবিতা,'' ''পাঠান প্রশংসা ও জোরওয়ার সিংহ কীর্তি শীর্ষক কাব্যগুলির সন্ধান পাওয়া গেছে। আত্মপরিচয়, রাজপ্রশস্তি ও ভণিতা থেকে কবির ব্যক্তিগত পরিচয় সম্পর্কে যা জানা যায়, তা হলো: চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার আমিরাবাদ নামক স্থানে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মোহাম্মদ এয়ার খন্দকার বনজঙ্গল পরিষ্কার করে আমিরাবাদ গ্রামের পত্তন করেন। কবির প্রপিতামহ ছিলিম খান (সেলিম খান) [[১০১৪২৫|গৌড়]] থেকে প্রথমে চট্টগ্রামে এসে ‘ছিলিমপুরে’ বসতি স্থাপন করেন। মাওলানা আতাউল্লাহ ছিলেন কবির পীর।  
'''নওয়াজিস খান''' (১৭শ শতক)  মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের কবি। তাঁর রচিত [[গুলে বকাওলী|গুলে বকাওলী]], গীতাবলী, বয়ানাত, প্রক্ষিপ্ত কবিতা, পাঠান প্রশংসা ও জোরওয়ার সিংহ কীর্তি শীর্ষক কাব্যগুলির সন্ধান পাওয়া গেছে। আত্মপরিচয়, রাজপ্রশস্তি ও ভণিতা থেকে কবির ব্যক্তিগত পরিচয় সম্পর্কে যা জানা যায়, তা হলো: চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার আমিরাবাদ নামক স্থানে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মোহাম্মদ এয়ার খন্দকার বনজঙ্গল পরিষ্কার করে আমিরাবাদ গ্রামের পত্তন করেন। কবির প্রপিতামহ ছিলিম খান (সেলিম খান) [[গৌড়|গৌড়]] থেকে প্রথমে চট্টগ্রামে এসে ‘ছিলিমপুরে’ বসতি স্থাপন করেন। মাওলানা আতাউল্লাহ ছিলেন কবির পীর।  
 
নওয়াজিস খানের বয়ানাত ও গীতাবলীতে সুফিতত্ত্বের প্রভাব আছে। কবি স্থানীয় জমিদার বৈদ্যনাথ রায়ের নিকট থেকে গুলে বকাওলী রচনার প্রেরণা লাভ করেন। চট্টগ্রামের দোহাজারির জমিদার জোরওয়ার সিংহের প্রশংসা করে জোরওয়ার সিংহ কীর্তি রচিত হয়। অপর জমিদার হোসেন খানের স্ত্ততি করে রচিত হয় পাঠান প্রশংসা। এগুলি ফারসি ক্বাসিদার আদর্শে রচিত ক্ষুদ্র পুস্তিকা। রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য গুলে বকাওলী কবির শ্রেষ্ঠ রচনা। এর কাহিনীর উৎস ভারতবর্ষ। ফারসি ও উর্দুতে রচিত দুখানি গুলে বকাওলী কাব্যের নাম জানা যায়, যার একটি ১৬২৫ সালে রচিত। শেখ ইজ্জতুল্লাহ হিন্দি কাব্যের অনুসরণে ফারসি ভাষায় তাজুলমুলক গুলে বকাওলী (১৭২২) নামে একখানা গদ্যগ্রন্থ রচনা করেন। নওয়াজিস খানের বর্ণনা সরস ও কবিত্বময়। তাঁর গুলে বকাওলী বাংলার পাঠকের নিকট খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল, তাই উনিশ শতক পর্যন্ত অনেকেই এ বিষয়ে গদ্যে-পদ্যে [[১০০৯১১|কাব্য]] রচনা করেছেন।  [ওয়াকিল আহমদ]
__NOTOC__
<!-- imported from file: 102773.html-->


নওয়াজিস খানের বয়ানাত ও গীতাবলীতে সুফিতত্ত্বের প্রভাব আছে। কবি স্থানীয় জমিদার বৈদ্যনাথ রায়ের নিকট থেকে গুলে বকাওলী রচনার প্রেরণা লাভ করেন। চট্টগ্রামের দোহাজারির জমিদার জোরওয়ার সিংহের প্রশংসা করে জোরওয়ার সিংহ কীর্তি রচিত হয়। অপর জমিদার হোসেন খানের স্ত্ততি করে রচিত হয় পাঠান প্রশংসা। এগুলি ফারসি ক্বাসিদার আদর্শে রচিত ক্ষুদ্র পুস্তিকা। রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য গুলে বকাওলী কবির শ্রেষ্ঠ রচনা। এর কাহিনীর উৎস ভারতবর্ষ। ফারসি ও উর্দুতে রচিত দুখানি গুলে বকাওলী কাব্যের নাম জানা যায়, যার একটি ১৬২৫ সালে রচিত। শেখ ইজ্জতুল্লাহ হিন্দি কাব্যের অনুসরণে ফারসি ভাষায় তাজুলমুলক গুলে বকাওলী (১৭২২) নামে একখানা গদ্যগ্রন্থ রচনা করেন। নওয়াজিস খানের বর্ণনা সরস ও কবিত্বময়। তাঁর গুলে বকাওলী বাংলার পাঠকের নিকট খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল, তাই উনিশ শতক পর্যন্ত অনেকেই এ বিষয়ে গদ্যে-পদ্যে [[কাব্য|কাব্য]] রচনা করেছেন।  [ওয়াকিল আহমদ]


[[en:Nawajish Khan]]
[[en:Nawajish Khan]]

০৮:৪২, ২৬ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

নওয়াজিস খান (১৭শ শতক)  মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের কবি। তাঁর রচিত গুলে বকাওলী, গীতাবলী, বয়ানাত, প্রক্ষিপ্ত কবিতা, পাঠান প্রশংসা ও জোরওয়ার সিংহ কীর্তি শীর্ষক কাব্যগুলির সন্ধান পাওয়া গেছে। আত্মপরিচয়, রাজপ্রশস্তি ও ভণিতা থেকে কবির ব্যক্তিগত পরিচয় সম্পর্কে যা জানা যায়, তা হলো: চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার আমিরাবাদ নামক স্থানে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মোহাম্মদ এয়ার খন্দকার বনজঙ্গল পরিষ্কার করে আমিরাবাদ গ্রামের পত্তন করেন। কবির প্রপিতামহ ছিলিম খান (সেলিম খান) গৌড় থেকে প্রথমে চট্টগ্রামে এসে ‘ছিলিমপুরে’ বসতি স্থাপন করেন। মাওলানা আতাউল্লাহ ছিলেন কবির পীর।

নওয়াজিস খানের বয়ানাত ও গীতাবলীতে সুফিতত্ত্বের প্রভাব আছে। কবি স্থানীয় জমিদার বৈদ্যনাথ রায়ের নিকট থেকে গুলে বকাওলী রচনার প্রেরণা লাভ করেন। চট্টগ্রামের দোহাজারির জমিদার জোরওয়ার সিংহের প্রশংসা করে জোরওয়ার সিংহ কীর্তি রচিত হয়। অপর জমিদার হোসেন খানের স্ত্ততি করে রচিত হয় পাঠান প্রশংসা। এগুলি ফারসি ক্বাসিদার আদর্শে রচিত ক্ষুদ্র পুস্তিকা। রোম্যান্টিক প্রণয়কাব্য গুলে বকাওলী কবির শ্রেষ্ঠ রচনা। এর কাহিনীর উৎস ভারতবর্ষ। ফারসি ও উর্দুতে রচিত দুখানি গুলে বকাওলী কাব্যের নাম জানা যায়, যার একটি ১৬২৫ সালে রচিত। শেখ ইজ্জতুল্লাহ হিন্দি কাব্যের অনুসরণে ফারসি ভাষায় তাজুলমুলক গুলে বকাওলী (১৭২২) নামে একখানা গদ্যগ্রন্থ রচনা করেন। নওয়াজিস খানের বর্ণনা সরস ও কবিত্বময়। তাঁর গুলে বকাওলী বাংলার পাঠকের নিকট খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল, তাই উনিশ শতক পর্যন্ত অনেকেই এ বিষয়ে গদ্যে-পদ্যে কাব্য রচনা করেছেন।  [ওয়াকিল আহমদ]